Ajker Patrika

ঈশ্বরদীতে রেললাইনে আগুন–গাড়ি ভাঙচুর, যুবলীগের ধাওয়া

পাবনা প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ নভেম্বর ২০২৩, ০০: ৩০
ঈশ্বরদীতে রেললাইনে আগুন–গাড়ি ভাঙচুর, যুবলীগের ধাওয়া

পাবনার ঈশ্বরদীর রেলগেটে কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ, রেললাইনে আগুন, একটি ট্রাক ও একটি মাইক্রোবাস ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার পর অবরোধ সমর্থনে মিছিলকারী ও স্থানীয় যুবলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, পৌর বিএনপি নেতার ব্যক্তিগত কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়। এতে কেউ আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। 

বিএনপি ও জামায়াতের ডাকা দ্বিতীয় দফা অবরোধের প্রথম দিন আজ রোববার সন্ধ্যায় ঈশ্বরদী শহরের রেলগেটে এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে শহরে দুই প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে। এ ছাড়া র‍্যাব পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও টহল দিচ্ছে। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে বেশ কয়েকজন যুবক রেলগেট এলাকায় অবরোধের সমর্থনে মিছিল করে। এ সময় রেললাইনে আগুন জ্বালিয়ে কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় তারা। তারপর একটি ট্রাক ও একটি মাইক্রোবাসের গ্লাস ভাঙচুর করা হয়।

ভাঙচুর করা ট্রাকঘটনা জানতে পেরে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি শিরহান শরীফ তমাল, উপজেলা যুবলীগ কর্মী মিলন চৌধুরী, তৌহিদুজ্জামান দোলন বিশ্বাস, স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক মাসুদ রানাসহ যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের শতাধিক নেতাকর্মীরা ধাওয়া দিলে অবরোধের সমর্থকেরা পিছু হটে। 

এর কিছুক্ষণ পরই অবরোধ বিরোধীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে রেলগেটস্থ পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টুর ব্যক্তিগত অফিস ও পশ্চিটেংরি এলাকায় যুবদল কর্মী মেহেদী হাসানের ব্যক্তিগত অফিস ভাঙচুর করে। বর্তমানে জাকারিয়া পিন্টু কারাগারে আছেন। 

খবর পেয়ে পুলিশ, বিজিবি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাসহ ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুবীর কুমার দাশ ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) টিএম রাহসিন কবির ঘটনাস্থলে পৌঁছালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। 

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় বিজিবিসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাভাঙচুর করা ট্রাকচালক সুমন হোসেন জানান, তিনি রেলগেট অতিক্রমকালে তাঁর ট্রাকের সামনের কাচ ভেঙে দেয় অবরোধের সমর্থনে বিক্ষোভকারীরা। 

এ বিষয়ে উপজেলা যুবলীগের সদস্য মিলন চৌধুরী বলেন, শান্ত ঈশ্বরদীকে অশান্ত করার জন্য যারা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। 

ঈশ্বরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ মিন্টু বলেন, ধ্বংসাত্মক রাজনীতির অংশ হিসেবে অগ্নি সন্ত্রাসীরা চোরের মতো ককটেল ফাটিয়ে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। বিস্ফোরণের পর আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা ধাওয়া করলে তারা পালিয়ে যায়। 

পৌরসভা মেয়র ইছাহক আলী মালিথা বলেন, ‘শান্ত শহরে বিএনপি নেতাকর্মীরা আজ সন্ধ্যায় হঠাৎ করে রেলগেটের ব্যস্ততম এলাকায় গাড়ি ভাঙচুরের পর বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। আমরা বিএনপির এই আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে মিছিল করেছি।’ 

এ বিষয়ে পৌর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ফজলুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি। 

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার বলেন, ‘কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছি। রেললাইনে আগুন তাৎক্ষণিক নিভিয়ে ফেলা হয়। পুলিশ যাওয়ার আগেই তারা পালিয়ে যায়। পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’ 

পুলিশের রিকুইজিশন করা একটি হায়েস গাড়ির গ্লাস ভাঙচুর করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। 

ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার গোস্বামী জানান, এ ঘটনায় পুলিশ সতর্ক অবস্থায় আছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ও টহল পুলিশের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। 

ঈশ্বরদী ইউএনও সুবীর কুমার দাস জানান, শহরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ইতিমধ্যে দুই প্লাটুন বিজিবি নিয়োগ করা হয়েছে। এছাড়া র‍্যাব ও পুলিশ সদস্যরা শহরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কাপের অবশিষ্ট কফি ড্রেনে ঢেলে দেওয়ায় নারীকে ২৪ হাজার টাকা জরিমানা

এনসিপিকে ‘নাস্তিকদের সংগঠন’ বলে আমাকে মাদ্রাসা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে: মুফতি আমিনীর নাতি

সোনার বড় দরপতন, একলাফে ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা কমল ভরিতে

নারায়ণগঞ্জে ইট দিয়ে থেঁতলে যুবককে হত্যার ভিডিও ভাইরাল, গ্রেপ্তার ৩

এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরকারি কর্মকর্তাদের সভাপতি মনোনয়নের প্রজ্ঞাপন স্থগিত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সাক্ষাৎকারে আবদুস সালাম

বিএনপির ক্ষতি করার জন্য যা যা করা দরকার জামায়াত করছে

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
গতকাল সকালে আজকের পত্রিকার সঙ্গে একান্তে আলাপে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম। ছবি: আজকের পত্রিকা
গতকাল সকালে আজকের পত্রিকার সঙ্গে একান্তে আলাপে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম। ছবি: আজকের পত্রিকা

‘জামায়াত আমাদের (বিএনপির) কাঁধের ওপর ভর করেই এ পর্যন্ত এসেছে। আসলে সত্যি কথা যেটা, তাদের দুঃসময়ে আমরা কিন্তু তাদের ফেলে দিইনি। হঠাৎ করে এমন কী হয়ে গেল যে অভ্যুত্থানের পরে বিএনপির ক্ষতি করার জন্য যা যা করার দরকার, তারা তা-ই করছে।’ বুধবার সকালে আজকের পত্রিকার সঙ্গে একান্তে আলাপকালে এসব কথা বলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম। রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী পৌর বিএনপি আয়োজিত এক জনসভায় যোগ দেওয়ার আগে তিনি আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেন।

এ সময় তাঁর সঙ্গে রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাইদ চাঁদ, নগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা এরশাদ আলী ঈশা, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য দেবাশীষ রায় মধু, জেলার সদস্য গোলাম মোস্তফা মামুন ও আড়ানী পৌর বিএনপির সভাপতি তোজাম্মেল হক উপস্থিত ছিলেন।

আবদুস সালাম বলেন, ‘জামায়াত বিএনপির ক্ষতি করার চেষ্টা করলেও তারা কোথা থেকে এটা করছে, সেটা দেশবাসী ইতিমধ্যে বুঝে গেছে। বিএনপি সকল ক্রাইসিস ফেস করেই এ পর্যন্ত এসেছে। আমরা কোনো ক্রাইসিসকে ভয় পাই না। সেগুলোকে মোকাবিলা করার জন্য সব সময় প্রস্তুত।’ তিনি বলেন, ‘জামায়াত মনে করছে, তারা বোধ হয় সবচেয়ে জনপ্রিয় হয়ে গেছে। এটা তো নির্বাচনেই বোঝা যাবে, দেশের মানুষ কাদেরকে চায়। কারণ, আমরা যেটা জানি, বাংলাদেশের মানুষ ধর্মভীরু, কিন্তু কট্টর না। পাকিস্তান আমলে আমরা যখন যুদ্ধ করি, এই দলটা সব সময় বলত—“ইসলাম গেল, ইসলাম গেল।” অর্থাৎ দেশ স্বাধীন হয়ে গেলে তখন আর ইসলাম থাকবে না। কিন্তু কী প্রমাণিত হয়েছে? না, ইসলাম আমাদের এখানে শক্তিশালী হয়েছে। আওয়ামী লীগের আমলে আওয়ামী লীগ বলত— “ইসলাম আইল, ইসলাম আইল।” এগুলো করে অনেকে অনেক রকম চেষ্টা করেছে। বিএনপি একটা মধ্যপন্থার দল। বামপন্থীও না, ডানপন্থীও না। এখানে সবার ভালোভাবে থাকার অধিকার আছে।’

সালাম বলেন, ‘বিএনপির একটা অতীত আছে। এই দেশের মুক্তিযুদ্ধ, এই দেশের স্বাধীনতার ঘোষণা, এই দেশের পুনর্গঠন—সবকিছুর মধ্যে বিএনপি আছে। সেই জায়গায় দেশের মানুষের যে আস্থা, তার নামটা হলো বিএনপি। তাই অত সহজে বিএনপিকে আস্থার জায়গা থেকে সরানো যাবে না। যতই তারা চেষ্টা করুক। বিএনপির নেতা-কর্মীদের জেলে দিয়ে ভয় দেখাতে পারেনি। গুম করে ফেলেছে, হত্যা করেছে। তা-ও পারেনি। কাজেই এখন আর কেউ ভয় পায় না। দীর্ঘ ১৭ বছর আগুনে পুড়ে বিএনপির নেতা-কর্মীরা খাঁটি সোনায় পরিণত হয়েছে। কাজেই তাদের আর ভয়ভীতি দেখিয়ে কোনোরকম লাভ হবে না।’

নির্বাচন বিলম্বিত করতেই জামায়াত পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবি তুলেছে বলে মনে করেন বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা। তিনি বলেন, ‘আমরা ১৭ বছর আন্দোলন করেছি একটা কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য। তখন কি এই জামায়াতসহ কেউ পিআরের কথা বলেছে? বলে নাই। অভ্যুত্থানের পর কি কেউ পিআরের কথা বলেছে? সংস্কার কমিশন গঠনের পর তাদের আলোচ্যসূচির মধ্যে কি এটা ছিল? কোনোকিছুই ছিল না। হঠাৎ করে নিয়ে আসল। যখন দেখল, বিএনপি নির্বাচন চাইছে, দেশের মানুষও সমর্থন দিচ্ছে। নির্বাচন দিলেই বিএনপি চলে আসবে। তারা বিএনপিকে কোনোভাবেই ঠেকাতে পারছে না। তখন এটা নিয়ে আসল। তারা ভাবছে, নির্বাচন পেছালে বিএনপিকে ঠেকানো যাবে।’

আবদুস সালাম বলেন, ‘বাংলাদেশটা ভঙ্গুর অবস্থায় আছে। রাষ্ট্রীয় কোনো প্রতিষ্ঠান কাজ করছে না ঠিকমতো। সবকিছু চিন্তা করলে একটা শক্তিশালী সরকার দরকার। পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে একটা ঝুলন্ত পার্লামেন্ট হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকবে। যদি পিআর সিস্টেমে নির্বাচন হয়, জনগণ তার প্রতিনিধি নির্বাচন করার অধিকার হারাবে। তখন শুধু দল দেখে ভোট দিতে হবে। এটা আসলে হয় না। জনগণকে প্রতিনিধি ঠিক করা থেকে বঞ্চিত করা কোনোভাবেই গণতান্ত্রিক উপায় হতে পারে না। সব তো জনগণের ওপর ছেড়ে দিতে হবে।’

নির্বাচন বিলম্বিত হওয়ার কারণে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ নিজেদের গুছিয়ে নেওয়ার সময় পেয়েছে বলেও মনে করেন আবদুস সালাম। তিনি বলেন, ‘আমরা যে আগে নির্বাচন চেয়েছিলাম, তার যৌক্তিকতা এখন সবাই বুঝতে পারছে। এখন যে সমস্যাগুলো প্রকট আকার ধারণ করেছে, তা হতো না যদি ৬ মাস বা ৯ মাসের মধ্যে একটা নির্বাচন হতো। পরাজিত ফ্যাসিবাদ আবার নতুন করে ষড়যন্ত্র করার সুযোগ পেয়ে গেছে। নির্বাচন হলে অন্তত তারা এই ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করতে পারত না, সেই সময় তারা ভয়ে ছিল। এ সময়টা দেওয়ার কারণে তারা নিজেদের অনেকটা গুছিয়ে এনে এখন চেষ্টা করছে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার। কথা নেই, বার্তা নেই বিভিন্ন জায়গায় আগুন জ্বলছে। এগুলো কিসের আলামত?’

আবদুস সালাম প্রশ্ন তোলেন, ‘বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি যে কয়টা জায়গা নিরাপদ থাকে, তার মধ্যে বিমানবন্দর একটি। সেখানেই যদি আগুন লাগে, তাহলে প্রশ্ন ওঠে—দেশটা কি অনিরাপদ হয়ে গেল?’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কাপের অবশিষ্ট কফি ড্রেনে ঢেলে দেওয়ায় নারীকে ২৪ হাজার টাকা জরিমানা

এনসিপিকে ‘নাস্তিকদের সংগঠন’ বলে আমাকে মাদ্রাসা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে: মুফতি আমিনীর নাতি

সোনার বড় দরপতন, একলাফে ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা কমল ভরিতে

নারায়ণগঞ্জে ইট দিয়ে থেঁতলে যুবককে হত্যার ভিডিও ভাইরাল, গ্রেপ্তার ৩

এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরকারি কর্মকর্তাদের সভাপতি মনোনয়নের প্রজ্ঞাপন স্থগিত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ছোট ফেনী নদী থেকে বালু উত্তোলন: ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ২ কর্মকর্তার এক বছর কারাদণ্ড

নোয়াখালী প্রতিনিধি
অভিযানের পর দুজনকে দণ্ড দেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
অভিযানের পর দুজনকে দণ্ড দেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ছোট ফেনী নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে সেই বালু নদীটির ওপর সেতু নির্মাণকাজে ব্যবহারের অভিযোগে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলীসহ দুই কর্মকর্তাকে এক বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় বালু উত্তোলনের কাজে ব্যবহৃত প্রায় ১.৫ কিলোমিটার পাইপ ধ্বংস এবং একটি ইঞ্জিন জব্দ করা হয়। সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্ট্যান্ডার্ড ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডের ডেপুটি প্রজেক্ট ম্যানেজার নূর নবী (৩৮) ও সাইট ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ রিয়াজুল (৩২)।

গতকাল বুধবার রাতে চরহাজারী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের তেল্লারঘাট-ধনীপাড়া কানেক্টিং ব্রিজ এলাকায় অভিযান চালানো হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভীর ফরহাদ শামীম।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানভীর ফরহাদ শামীম বলেন, ছোট ফেনী নদীর ওপর এলজিইডি নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘স্ট্যান্ডার্ড ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড’ তেল্লার ঘাট-ধনীপাড়া সংযোগ ব্রিজ নির্মাণ করার ফাঁকে নির্মাণাধীন ব্রিজের পাশ থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে, যা সম্পূর্ণ নিয়মবহির্ভূত। এটি নদী ও সেতু উভয়ের জন্য ক্ষতিকর। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন অনুযায়ী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দুজনকে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ সময় ১.৫ কিলোমিটার পাইপ ধ্বংস করা হয় এবং একটি ইঞ্জিন জব্দ করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে থানা থেকে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হবে বলে জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কাপের অবশিষ্ট কফি ড্রেনে ঢেলে দেওয়ায় নারীকে ২৪ হাজার টাকা জরিমানা

এনসিপিকে ‘নাস্তিকদের সংগঠন’ বলে আমাকে মাদ্রাসা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে: মুফতি আমিনীর নাতি

সোনার বড় দরপতন, একলাফে ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা কমল ভরিতে

নারায়ণগঞ্জে ইট দিয়ে থেঁতলে যুবককে হত্যার ভিডিও ভাইরাল, গ্রেপ্তার ৩

এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরকারি কর্মকর্তাদের সভাপতি মনোনয়নের প্রজ্ঞাপন স্থগিত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মব সৃষ্টি করে নারীর টাকা-চেইন ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে

বড়াইগ্রাম (নাটোর) প্রতিনিধি 
এআই দিয়ে তৈরি প্রতীকী ছবি
এআই দিয়ে তৈরি প্রতীকী ছবি

নাটোরের বড়াইগ্রামে ফুল কুমারী গোমেজ (৪৬) নামের এক নারীর বাড়িতে মব সৃষ্টি করে টাকা ও সোনার চেইন ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদলের কয়েকজন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে। বুধবার দিবাগত রাতে ওই নারী বাদী হয়ে চারজনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১২ জনকে আসামি করে বড়াইগ্রাম থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। এর আগে মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার দিঘইর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। ফুল কুমারী গোমেজ দিঘইর গ্রামের মৃত করনেলিউস গোমেজের স্ত্রী।

অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার চরগোবিন্দপুর গ্রামের গোলজার হোসেনের ছেলে নিসান হাসান (২২), কুশমাইল গ্রামের আজিমুদ্দিনের ছেলে নয়ন হোসেন (২৩) সরাবাড়িয়া গ্রামের ইউসুব আলীর ছেলে কামরুল ইসলাম (২০) ও ময়লাল আলীর ছেলে হৃদয় হাসান (২১)। তাঁদের মধ্যে নিসান হাসান জোনাইল ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি এবং অন্যরা কর্মী হিসেবে পরিচিত।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কয়েক বছর আগে ওই নারীর স্বামী মারা গেছেন। একমাত্র মেয়ে ঢাকায় লেখাপড়া করেন। বাড়িতে ওই নারী একাই বসবাস করেন। মঙ্গলবার রাতে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা বাড়িতে এসে দরজা খুলতে বলেন। দরজা খুলতে না চাইলে তাঁরা ভয়ভীতি দেখিয়ে ঘরে আগুন দিয়ে মারার হুমকি দেন। পরে ঘরের দরজা খুলে দিলে তাঁরা ঘরে প্রবেশ করে তল্লাশি চালান। এ সময় বিছানার নিচ থেকে ৫ হাজার টাকা ও ওই নারীর গলা থেকে সোনার চেইন নিয়ে চলে যান।

ফুল কুমারী গোমেজ বলেন, ‘আমি বারবার অনুরোধ করার পরও তারা আমার কথা শোনে না। তারা আমার বিরুদ্ধে অপবাদ দিয়ে মব সৃষ্টি করে টাকা ও স্বর্ণ নিয়ে গেল। আমি এই ঘটনার বিচার চাই।’

অভিযুক্ত নিসান হাসান বলেন, ‘অভিযোগের বিষয়ে আমার জানা নাই। তবে ওই মহিলা মদ তৈরি করেন। ধারণা করছি, আমরা বাধা দেওয়ার কারণে এই ধরনের অভিযোগ করেছেন।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে চরগোবিন্দপুর গ্রামের এক ব্যক্তি বলেন, নিসান হাসান হত্যা মামলার আসামি। তবে তিনি এখন জামিনে আছেন। তাঁর বাবা গোলজার হোসেন ধর্ষণচেষ্টা মামলার আসামি হিসেবে জেলহাজতে রয়েছেন।

বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম সারোয়ার হোসেন বলেন, ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। তদন্ত করে ব্যবস্থ্যা গ্রহণ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কাপের অবশিষ্ট কফি ড্রেনে ঢেলে দেওয়ায় নারীকে ২৪ হাজার টাকা জরিমানা

এনসিপিকে ‘নাস্তিকদের সংগঠন’ বলে আমাকে মাদ্রাসা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে: মুফতি আমিনীর নাতি

সোনার বড় দরপতন, একলাফে ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা কমল ভরিতে

নারায়ণগঞ্জে ইট দিয়ে থেঁতলে যুবককে হত্যার ভিডিও ভাইরাল, গ্রেপ্তার ৩

এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরকারি কর্মকর্তাদের সভাপতি মনোনয়নের প্রজ্ঞাপন স্থগিত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মাছের অঙ্গের কেজি কোটি টাকা

  • পিটুইটারি গ্লান্ড মাছের প্রজননক্ষমতা বাড়ায়।
  • ৩৫টি দেশে মাছের এ প্রাকৃতিক হরমোনের চাহিদা রয়েছে।
মো. জাহিদ হাসান, যশোর 
পিটুইটারি গ্লান্ড মেডিসিনযুক্ত ছোট বোতলে সংরক্ষণ করে রাখা হয়।
পিটুইটারি গ্লান্ড মেডিসিনযুক্ত ছোট বোতলে সংরক্ষণ করে রাখা হয়।

যশোর শহরের চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড মাছবাজারে এক দশকের বেশি সময় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ কাটাকুটি করে আসছেন বিল্লাল হোসেন সানি। দীর্ঘদিন মাছ কাটার কাজ করলেও মাথার ভেতরে থাকা ছোট্ট মুক্তাসদৃশ দানা কী সেটা কখনো ভাবেননি। বছর চারেক আগে স্থানীয় একটি সংস্থার মাধ্যমে সাদা এই দানার গুরুত্ব বুঝতে পেরে এখন প্রতিনিয়ত করছেন সংরক্ষণ।

সানির মতো যশোর শহরের মাছের বাজারগুলোতে মাছের মাথার ভেতরের এই সাদা দানাটি মাছের উচ্ছিষ্ট বস্তু হিসেবেই ফেলে দিতেন। এখন মাছ কেটেকুটে দেওয়ার পরই মাছের মাথা থেকে এই দানা সংগ্রহ করে রাখছেন বঁটিওয়ালা। মূলত মাছের মাথার ভেতরে থাকা ছোট্ট এই দানার নাম ‘পিটুইটারি গ্লান্ড’, যা মাছের প্রজননক্ষমতা বাড়িয়ে বছরে তিন থেকে চারবার ডিম ছাড়তে সহায়তা করে।

বিল্লাল হোসেন সানি জানান, সব মাছের মাথায় একটি করে পিটুইটারি গ্লান্ড থাকে। তবে সব ধরনের মাছ থেকে তিনি সেটা সংগ্রহ করেন না। কার্পজাতীয় মাছ থেকে সংগ্রহ করেন।

সানি বলেন, ‘মাথা থেকে পিটুইটারি গ্লান্ডটি মেডিসিনযুক্ত ছোট বোতলে সংরক্ষণ করি। প্রতি সপ্তাহে কোম্পানির এজেন্টরা এসে টাকা দিয়ে সেগুলো নিয়ে যান। প্রতি পিছ চার থেকে পাঁচ টাকা দেয়।’ তিনি জানান, মাছ কাটার পরে এটা থেকে তাঁদের বাড়তি আয় হয়। দিনে ৩০ থেকে ৫০ পিছ পর্যন্ত হয়ে থাকে। বাড়তি আয়ের জোগান হওয়ায় বাজারে প্রায় সব বঁটিওয়ালাই পিটুইটারি গ্লান্ড সংরক্ষণ করছেন বলে জানান তিনি।

সম্প্রতি শহরের বড় বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, মাছের আঁশ ছাড়িয়ে মাছ পিছ করে কেটে দেওয়ার জন্য বঁটি নিয়ে বাজারে বসেছেন কয়েক ব্যক্তি। ক্রেতারা খুচরা মাছ কিনে তাঁদের কাছে দিলে তাঁরা আঁশ ছাড়িয়ে পিছ করে কেটে দিচ্ছেন। প্রত্যেকের বঁটির পাশে রাসায়নিক ভর্তি ছোট ছোট দু-একটি কাচের বোতল রাখা আছে। মাছ কাটার সময় কার্পজাতীয় মাছ যেমন রুই, কাতলা, সিলভার, মৃগেলসহ বিভিন্ন মাছের মাথার ভেতর থেকে ছোট একটি দানা (পিজি) সংগ্রহ করে বোতলে সংরক্ষণ করছেন তাঁরা।

মৎস্য বিভাগ ও সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, হ্যাচারির পুকুরে প্রজননের সময় মা ও পুরুষ মাছের দেহে নির্দিষ্ট মাত্রায় পিজি সিরিঞ্জের মাধ্যমে পুশ করা হয়। এতে মাছের দেহে উত্তেজনা আসে। এ সময় মাছের প্রজনন হয়। প্রাকৃতিক এ হরমোন ব্যবহারে মাছের জীবনচক্রে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয় না। মাছের প্রজননের প্রধান নিয়ামক এই হরমোন রপ্তানি করে দেশে বিদেশি মুদ্রা আনছেন উদ্যোক্তারা। মৎস্য অঞ্চল যশোর-সাতক্ষীরায় এই হরমোন নিয়ে কাজ করে আলোড়ন তৈরি করেছেন যশোরের মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত আলী। প্রথম দিকে কাঁচা পিটুইটারি গ্লান্ড সংগ্রহ করলেও আন্তর্জাতিক বাজার ধরতে শুরু করেন সংরক্ষণের। তাই শহরে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমপ্লেক্সে একটি ভবন ভাড়া নিয়ে গড়ে তোলেন ল্যাবরেটরি। নাম দিয়েছেন ইউনাইটেড এগ্রো ফিশারিজ। এখানে বাছাই শেষে অ্যালকোহল থেকে আলাদা করে গ্লান্ড শুকানো হয় ড্রাইং মেশিনে। ময়েশ্চার টেস্টসহ নানা পরীক্ষা শেষে বোতলজাত করে পাঠানো হয় দেশি-বিদেশি হ্যাচারিতে।

জেলার বিভিন্ন বাজার থেকে একইভাবে প্রাকৃতিক এই হরমোন সংগ্রহ করেন তাঁরা।

রপ্তানির পাশাপাশি ময়মনসিংহ, ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন জেলার হ্যাচারিতে এ হরমোনের পিজি পাঠায় ইউনাইটেড এগ্রো। বাংলাদেশ ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, ইরান, ইরাকসহ ৩৫টি দেশে মাছের এ প্রাকৃতিক হরমোনের চাহিদা রয়েছে বলে জানান লিয়াকত আলী। তিনি বলেন, ‘বছরে দেড় থেকে দুই কোটি টাকা মূল্যের পিজি দেশে-বিদেশে সরবরাহ করি। প্রতি গ্রাম পিজি বর্তমানে ৮০ মার্কিন ডলারে রপ্তানি হয়।’

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মনিরুল মামুন বলেন, কৃত্রিম প্রজননের জন্য দেশ-বিদেশের হ্যাচারিতে হরমোন বিক্রি হচ্ছে কোটি টাকার ওপরে। এ থেকে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আনা সম্ভব। দেশের চাহিদা মিটিয়ে উৎপাদন বাড়াতে বঁটিওয়ালাসহ উদ্যাক্তাদের প্রশিক্ষণসহ নানা পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কাপের অবশিষ্ট কফি ড্রেনে ঢেলে দেওয়ায় নারীকে ২৪ হাজার টাকা জরিমানা

এনসিপিকে ‘নাস্তিকদের সংগঠন’ বলে আমাকে মাদ্রাসা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে: মুফতি আমিনীর নাতি

সোনার বড় দরপতন, একলাফে ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা কমল ভরিতে

নারায়ণগঞ্জে ইট দিয়ে থেঁতলে যুবককে হত্যার ভিডিও ভাইরাল, গ্রেপ্তার ৩

এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরকারি কর্মকর্তাদের সভাপতি মনোনয়নের প্রজ্ঞাপন স্থগিত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত