Ajker Patrika

ভারী বৃষ্টিতে ময়মনসিংহে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, নতুন করে প্লাবিত ২৫ গ্রাম 

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
আপডেট : ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ১৪: ৪৯
ভারী বৃষ্টিতে ময়মনসিংহে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, নতুন করে প্লাবিত ২৫ গ্রাম 

কয়েক ঘণ্টার টানা বৃষ্টিতে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট, ধোবাউড়া ও ফুলপুর উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হচ্ছে। আজ মঙ্গলবার ভোর ৫টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত ভারী বৃষ্টি হওয়ায় কংস ও নেতাই নদ-নদীর পানি কিছুটা বেড়েছে। এতে বন্যার পঞ্চম দিনে নতুন করে তিন উপজেলায় অন্তত ২৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। জেলায় পানিবন্দী হয়ে আছেন ২ লক্ষাধিক মানুষ। 

জেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. সানোয়ার হোসেন বলেন, মঙ্গলবার ভোর থেকে বৃষ্টি হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি হয়েছে। কংস ও নেতাই নদ-নদীর পানি কিছুটা বেড়েছে। অন্তত ২৫টি গ্রাম নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। তিন উপজেলায় নগদ ৭ লাখ টাকা ও ৬৩ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ত্রাণসহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন। বৃষ্টি না হলে পানি কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, হালুয়াঘাট, ধোবাউড়া ও ফুলপুর উপজেলার বন্যাকবলিত এলাকার প্রাথমিক, মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এগুলোতে নারী-শিশুসহ কয়েক শতাধিক মানুষ উঠেছে। তাদের শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে।

কংস নদীর পাড় ঘেঁষে গড়ে ওঠা ধোবাউড়া উপজেলার আইলাতলী আশ্রয়ণ প্রকল্পের বেশ কয়েকটি ঘরে মঙ্গলবার সকালে পানি ওঠায় দুর্ভোগ বেড়েছে বাসিন্দাদের।

এখানকার বাসিন্দা আমেনা বেগম বলেন, ‘কংস নদের পাড়ে আমাদের আশ্রয়ণ প্রকল্প হওয়ায় গত এক সপ্তাহ ধরে ঘরের চারপাশে পানি। পোলাপান নিয়ে পানির মধ্যে খুব কষ্টে আছি। গতকাল শুধু একটি সংগঠন আমাদের বিরিয়ানি দিয়েছে, প্রশাসন থেকে কেউ কোনো খোঁজ-খবর এখনো নেয়নি।’

সাহাব উদ্দিন বলেন, ‘মঙ্গলবার সকালে পানি বাড়ায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের কয়েকটি ঘরে পানি প্রবেশ করেছে। নদীর পাশে আমাদের বসবাস। তাই সব সময় আতঙ্কের মধ্যে সময় কাটাতে হচ্ছে। কখন জানি পানি বেড়ে ঘর ডুবে যায়।’

নদীর পাড় ঘেঁষে গড়ে ওঠা ধোবাউড়ার আইলাতলী আশ্রয়ণ প্রকল্পের বেশ কয়েকটি ঘরে মঙ্গলবার সকালে পানি উঠেছেআশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা মিনতি রানী পাল বলেন, ‘বন্যায় পূজার আনন্দ ম্লান হয়েছে। দুবেলা খাবারই কপালে জুটছে না, পূজা কীভাবে করব। সরকার সহযোগিতা করলে অন্তত সন্তানসন্ততি নিয়ে চলতে পারতাম।’ 

ধোবাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিশাত শারমিন বলেন, ‘পঞ্চম দিনে সকালের দিকে বৃষ্টি হওয়ায় পানি কিছুটা বেড়েছে, সেই সঙ্গে নতুন কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। আমরা বানভাসি মানুষকে শুকনো খাবারের পাশাপাশি ওষুধ সরবরাহ করছি। বৃষ্টি না হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।’ 

ফুলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘সকালের কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে নতুন করে উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নসহ চারটি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। এতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ১৬টি গ্রাম। বন্যার্তদের সহযোগিতার জন্য বেশ কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। দিনের অবস্থা ভালো থাকলে দুই একদিনের মধ্যে পানি নেমে যেতে পারে।’ 

হালুয়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এরশাদুল আহমেদ বলেন, ‘উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণে হালুয়াঘাটে বন্যার সৃষ্টি হয়। উজানের পানি কমে এখন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। ১৮ হাজার পরিবার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সাময়িকভাবে তাদের সহযোগিতা করার পাশাপাশি ক্ষতি নিরূপণ করে সামগ্রিক সহযোগিতা করতে মন্ত্রণালয়ে আবেদন পাঠানো হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দিনাজপুরে হিন্দু নেতাকে অপহরণ করে হত্যা: ভারত সরকার ও বিরোধী দল কংগ্রেসের উদ্বেগ

লুটপাটে শেষ ৫ কোটির প্রকল্প

আজ থেকে ৫০০ টাকায় মিলবে ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল, বেশির ভাগই ভারতীয়, আছে বাংলাদেশিও

বৃদ্ধের চার বিয়ে, থানায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার জেরার মুখে হাসির রোল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত