Ajker Patrika

প্রকল্প দেখতে যান না তদারকি কর্মকর্তারা

এম কে দোলন বিশ্বাস, ইসলামপুর (জামালপুর) 
আপডেট : ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১২: ০২
প্রকল্প দেখতে যান না তদারকি কর্মকর্তারা

জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় অতিদরিদ্রদের কর্মসংস্থান কর্মসূচি (ইজিপিপি) প্রকল্পের তদারকি (ট্যাগ) কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কাজ সরেজমিনে তদারকি না করার অভিযোগ উঠেছে।

দুই সপ্তাহ আগে কার্যাদেশ অনুযায়ী সবগুলো প্রকল্পের কাজ একযোগে শুরু করার কথা থাকলেও এখনো সিংহভাগ প্রকল্পের কাজ শুরু করা হয়নি। আবার যেসব প্রকল্পের কাজ নামমাত্র শুরু করা হয়েছে, সে সবের তদারকি কর্মকর্তারা এখনো সরেজমিনে দেখেননি। কর্মকর্তাদের দাবি, নিজেদের দপ্তরের কাজে ব্যস্ত থাকায় সব সময় প্রকল্পে তদারকি করতে পারেন না তাঁরা।

তবে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মেহেদী হাসান টিটুর দাবি, আইন অনুযায়ী তদারকি কর্মকর্তাদের প্রকল্পের বিষয়ে অবগত করা হয়েছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে ৫৩টি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ১৫ এপ্রিল কার্যাদেশ অনুযায়ী সবগুলো প্রকল্পের বিপরীতে গ্রামীণ রাস্তা মেরামতে মাটি কাটার কাজ একযোগে শুরু করার কথা। ৩৩ দিন চলবে এ কাজ। এতে মাথাপিছু ৪০০ টাকা মজুরি ভিত্তিতে ২ হাজার ৮১৪ জন নিবন্ধিত শ্রমিক কাজ করতে পারবেন।

গতকাল শনিবার খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রকল্প কাজের উদ্বোধনের ১২ দিন পেরিয়ে গেলেও ১২টি ইউনিয়নের মধ্যে এখনো বেলগাছা, চিনাডুলি, নোয়ারপাড়া, ইসলামপুর সদর, পলবান্ধা, সাপধরী এবং চরগোয়ালিনী ইউনিয়নে কোনো কাজ শুরুই হয়নি।

প্রকল্পগুলো সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রতিটি ইউনিয়নে একজন করে তদারকি কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছেন প্রকল্প বাস্তবায়ন উপজেলা শাখা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। তদারকি কর্মকর্তারা হলেন কুলকান্দী ইউনিয়নের উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মিলন কান্তি সাহা, বেলগাছার সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আইয়ুব আলী, চিনাডুলির ইউআইটিআরসিই ব্যানবেইসের সহকারী প্রোগ্রামার মো. মনিরুল ইসলাম, সাপধরীর উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. রাশেদুজ্জামান, নোয়ারপাড়ার জনস্বাস্থ্যের সহকারী প্রকৌশলী মুহাম্মদ কামরুজ্জামান, ইসলামপুর সদরের পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা সেলিম আহমেদ, পাথর্শীর দারিদ্র্যবিমোচন কর্মকর্তা মো. আবুল কাশেম, পলবান্ধার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. হারুন মিয়া, উপজেলা আইসিটির সহকারী প্রোগ্রাম কর্মকর্তা, গোয়ালেরচরের এ কে এম মোস্তফা মনোয়ার, গাইবান্ধার একাডেমি সুপারভাইজার মোহাম্মদ মামুন-অর-রশিদ, চরপুটিমারীতে চরজীবিকায়ন প্রকল্পের সমন্বয়কারী মো. হুমায়ুন কবীর এবং চরগোয়ালিনী ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুল গফুর খান।

কুলকান্দী ইউনিয়নে তদারকি কর্মকর্তা মিলন কান্তি সাহা বলেন, ‘১৫ এপ্রিল প্রকল্পের কাজ শুরু করা হয়েছে। আমি সরেজমিনে কাজ দেখতে যাব।’

সাপধরী ইউনিয়নে প্রকল্পের তদারকি কর্মকর্তা মো. রাশেদুজ্জামান বলেন, ‘প্রকল্পের বিষয়ে এখনো চিঠি পাইনি। সে কারণেই কবে থেকে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে, তা বলতে পারছি না। তবে প্রকল্পের বিষয়ে ইউএনও স্যার আমাদের নিয়ে বৈঠক করেছেন।’

চরগোয়ালিনী ইউনিয়নে প্রকল্পের তদারকি কর্মকর্তা মো. আব্দুল গফুর খান বলেন, ‘প্রকল্পের কাজ শুরু করার কথা শুনেছি। তবে অন্য কাজে ব্যস্ত থাকায় কাজ দেখতে সরেজমিনে যেতে পারিনি।’

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মেহেদী হাসান টিটু বলেন, ‘প্রকল্পের কাজ দেখভাল করতে আইন অনুসারে তদারকি কর্মকর্তাদের অবগত করা হয়েছে। যাঁর যাঁর দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করা হলেই, কেবল সুষ্ঠুভাবে প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করা সম্ভব।’

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ও ইউএনও মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘প্রকল্পের কাজ তদারকি করার বিষয়ে গত সোমবার তদারকি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। যথাযথভাবে কাজ তদারকি করতে তাঁদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কাজ তদারকি না করার অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিধি অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত