বিশ্ব পানি দিবস আজ
মো. জাকিরুল ইসলাম, হালুয়াঘাট (ময়মনসিংহ)
পাহাড়ি ঝিরি ও ছড়ায় বালু সরিয়ে গর্ত থেকে পানি তুলছিলেন জোসনা বেগম (৪০)। জিজ্ঞেস করতেই আক্ষেপ নিয়ে বললেন, ‘আমগো দুঃখ দেহার তো কেউ নাই। কতজন কত কথাই তো কইলো। কত ফডো (ছবি) তুইল্লা নিল, কেউ আর ভালা (বিশুদ্ধ) পানির ব্যবস্থা কইরা দিবার পাইলো না। এই পানি খাইয়া বাঁইচা আছি। আপনারা পারবেন এমন পানি খাইবার?’
আজ ২২ মার্চ বিশ্ব পানি দিবস। দিবসটি উপলক্ষে শুক্রবার (২১ মার্চ) দুপুরে ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার ভারতের মেঘালয়ের সীমান্তঘেঁষা দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়নের গিলাগড়া পাহাড়ি ছড়ায় গিয়ে পানি সংগ্রহ করতে দেখা যায় জোসনা বেগমকে। এই গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে গিলাগড়া পাহাড়ি ছড়া।
বিশুদ্ধ পানির সংকটের এই আক্ষেপ শুধু জোসনার একার নয়; উপজেলার দুটি ইউনিয়নের অন্তত কয়েক হাজার মানুষের। তারা বিশুদ্ধ পানির জন্য সংগ্রাম করছে বছরের পর বছর।
জানা গেছে, উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী দক্ষিণ মাইজপাড়া ও ঘোষগাঁও ইউনিয়নের ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা পাহাড়ি ১০ থেকে ১২টি গ্রামে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীসহ সব মানুষের বসবাস। পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় নলকূপের পাইপ মাটির গভীরে নেওয়া সম্ভব হয় না তাদের। শুষ্ক মৌসুমে পাহাড়ি ঝরনা, ছড়া ও পুকুরের দূষিত পানি দিয়ে রান্নাবান্না, গোসলসহ সব ধরনের কাজ করতে হচ্ছে। পান করতেও হচ্ছে সেই পানি। এতে তারা স্বাস্থ্যঝুঁকিতেও পড়ছে। ওই সব গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের কষ্ট এখন চরম আকার ধারণ করেছে। পানির সংকট সবচেয়ে বেশি গিলগড়া, কাশিপুর, বাকপাড়া, শানখলা, পঞ্চনন্দপুরসহ কয়েকটি গ্রাম ও ঘোষগাঁও গোলইভাংগা, চন্দকোনা এলাকায়।
শামছুদ্দিন নামের এক বৃদ্ধ বলেন, ‘আমগো কষ্ট দেখবার আইছুন? আমরা এখন নিরুপায়। পানির কষ্ট আর কত দিন। আমাগো ভালা পানি খাইয়া মরবার পাইবাম বলে মনে অই না। সরকার যদি আমাগো কূপ তৈরি করে নলকূপ দিলেও ভালো অই।’
গিলাগড়া এলাকার আদিবাসী নারী ইতি চিসিম বলেন, ‘আমার বাড়িতে নলকূপ না থাকায় পানির জন্য সারা বছর কষ্ট করতে হয়। আমরার কল (টিউবওয়েল) নাই। আমরা অনেক আগে থাইকা পাহাড়ের ঝরনার যে ছড়ার পানি আছে, ওইডাই খাই। রান্নাবান্নাসহ সব কাজ করি। খালি আমি না। সবারই এই অবস্থা। বর্ষাকালে বৃষ্টির পানি আর শুকনো মৌসুমে ঝরনার পানি ভরসা।’
উপজেলা জনস্বাস্থ্য কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়ন হচ্ছে উপজেলার মেঘালয় সীমান্তঘেঁষা। সীমান্তবর্তী হওয়ায় এই এলাকাগুলোয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীসহ সব মানুষের বসবাস। পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় নলকূপের পাইপ মাটির গভীরে নেওয়া সম্ভব হয় না। ৫০-৬০ মিটার গভীরে গেলেই পাইপ আটকে যায় পাথরে। তাই গভীর নলকূপ বসানো কষ্টসাধ্য। যারা নিজ উদ্যোগে অগভীর নলকূপ বসিয়েছে, তাদের সেই নলকূপে শুষ্ক মৌসুমে পানি থাকে না।
ঘোষগাঁওয়ের গোলইভাঙ্গা সীমান্ত এলাকার আমির উদ্দিন বলেন, ‘বাবা রে, আমরা শুষ্ক মৌসুমে হিসাব করে পানি পান করি। টিউবওয়েলে পানি ওঠে না। পুকুর আর ছড়াই আমাদের ভরসা।’
এ ব্যাপারে দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির বলেন, ‘আমার চেয়ারম্যান হওয়ার তিন বছরে সীমান্ত এলাকায় ১০টি গভীর নলকূপ দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। ওই এলাকার কেউ আবেদন করেননি। যদি কেউ করে, বিকল্প পদ্ধতিতে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা হবে।’
এ ব্যাপারে সরকারের জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী শফিউল আজম বলেন, সীমান্ত এলাকায় দুটি নলকূপ দেওয়া হয়েছে। কিছু এলাকায় নলকূপ বসানো সম্ভব হয় না। এখন যে প্রকল্প চলছে, সেগুলো প্রতিষ্ঠানভিত্তিক।
ধোবাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিশাত শারমিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পাহাড়ি এলাকায় পাথরের কারণে গভীর নলকূপ বসানো সম্ভব হয় না। এ জন্য এসব এলাকায় পানির সংকট রয়েছে। এই সংকট নিরসনে সব ধরনের চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা একটি প্রকল্পের মাধ্যমে কাজ করতে চাচ্ছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি। ওই গ্রামগুলোয় সুপেয় পানির ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা রয়েছে।’
পাহাড়ি ঝিরি ও ছড়ায় বালু সরিয়ে গর্ত থেকে পানি তুলছিলেন জোসনা বেগম (৪০)। জিজ্ঞেস করতেই আক্ষেপ নিয়ে বললেন, ‘আমগো দুঃখ দেহার তো কেউ নাই। কতজন কত কথাই তো কইলো। কত ফডো (ছবি) তুইল্লা নিল, কেউ আর ভালা (বিশুদ্ধ) পানির ব্যবস্থা কইরা দিবার পাইলো না। এই পানি খাইয়া বাঁইচা আছি। আপনারা পারবেন এমন পানি খাইবার?’
আজ ২২ মার্চ বিশ্ব পানি দিবস। দিবসটি উপলক্ষে শুক্রবার (২১ মার্চ) দুপুরে ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার ভারতের মেঘালয়ের সীমান্তঘেঁষা দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়নের গিলাগড়া পাহাড়ি ছড়ায় গিয়ে পানি সংগ্রহ করতে দেখা যায় জোসনা বেগমকে। এই গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে গিলাগড়া পাহাড়ি ছড়া।
বিশুদ্ধ পানির সংকটের এই আক্ষেপ শুধু জোসনার একার নয়; উপজেলার দুটি ইউনিয়নের অন্তত কয়েক হাজার মানুষের। তারা বিশুদ্ধ পানির জন্য সংগ্রাম করছে বছরের পর বছর।
জানা গেছে, উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী দক্ষিণ মাইজপাড়া ও ঘোষগাঁও ইউনিয়নের ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা পাহাড়ি ১০ থেকে ১২টি গ্রামে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীসহ সব মানুষের বসবাস। পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় নলকূপের পাইপ মাটির গভীরে নেওয়া সম্ভব হয় না তাদের। শুষ্ক মৌসুমে পাহাড়ি ঝরনা, ছড়া ও পুকুরের দূষিত পানি দিয়ে রান্নাবান্না, গোসলসহ সব ধরনের কাজ করতে হচ্ছে। পান করতেও হচ্ছে সেই পানি। এতে তারা স্বাস্থ্যঝুঁকিতেও পড়ছে। ওই সব গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের কষ্ট এখন চরম আকার ধারণ করেছে। পানির সংকট সবচেয়ে বেশি গিলগড়া, কাশিপুর, বাকপাড়া, শানখলা, পঞ্চনন্দপুরসহ কয়েকটি গ্রাম ও ঘোষগাঁও গোলইভাংগা, চন্দকোনা এলাকায়।
শামছুদ্দিন নামের এক বৃদ্ধ বলেন, ‘আমগো কষ্ট দেখবার আইছুন? আমরা এখন নিরুপায়। পানির কষ্ট আর কত দিন। আমাগো ভালা পানি খাইয়া মরবার পাইবাম বলে মনে অই না। সরকার যদি আমাগো কূপ তৈরি করে নলকূপ দিলেও ভালো অই।’
গিলাগড়া এলাকার আদিবাসী নারী ইতি চিসিম বলেন, ‘আমার বাড়িতে নলকূপ না থাকায় পানির জন্য সারা বছর কষ্ট করতে হয়। আমরার কল (টিউবওয়েল) নাই। আমরা অনেক আগে থাইকা পাহাড়ের ঝরনার যে ছড়ার পানি আছে, ওইডাই খাই। রান্নাবান্নাসহ সব কাজ করি। খালি আমি না। সবারই এই অবস্থা। বর্ষাকালে বৃষ্টির পানি আর শুকনো মৌসুমে ঝরনার পানি ভরসা।’
উপজেলা জনস্বাস্থ্য কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়ন হচ্ছে উপজেলার মেঘালয় সীমান্তঘেঁষা। সীমান্তবর্তী হওয়ায় এই এলাকাগুলোয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীসহ সব মানুষের বসবাস। পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় নলকূপের পাইপ মাটির গভীরে নেওয়া সম্ভব হয় না। ৫০-৬০ মিটার গভীরে গেলেই পাইপ আটকে যায় পাথরে। তাই গভীর নলকূপ বসানো কষ্টসাধ্য। যারা নিজ উদ্যোগে অগভীর নলকূপ বসিয়েছে, তাদের সেই নলকূপে শুষ্ক মৌসুমে পানি থাকে না।
ঘোষগাঁওয়ের গোলইভাঙ্গা সীমান্ত এলাকার আমির উদ্দিন বলেন, ‘বাবা রে, আমরা শুষ্ক মৌসুমে হিসাব করে পানি পান করি। টিউবওয়েলে পানি ওঠে না। পুকুর আর ছড়াই আমাদের ভরসা।’
এ ব্যাপারে দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির বলেন, ‘আমার চেয়ারম্যান হওয়ার তিন বছরে সীমান্ত এলাকায় ১০টি গভীর নলকূপ দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। ওই এলাকার কেউ আবেদন করেননি। যদি কেউ করে, বিকল্প পদ্ধতিতে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা হবে।’
এ ব্যাপারে সরকারের জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী শফিউল আজম বলেন, সীমান্ত এলাকায় দুটি নলকূপ দেওয়া হয়েছে। কিছু এলাকায় নলকূপ বসানো সম্ভব হয় না। এখন যে প্রকল্প চলছে, সেগুলো প্রতিষ্ঠানভিত্তিক।
ধোবাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিশাত শারমিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পাহাড়ি এলাকায় পাথরের কারণে গভীর নলকূপ বসানো সম্ভব হয় না। এ জন্য এসব এলাকায় পানির সংকট রয়েছে। এই সংকট নিরসনে সব ধরনের চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা একটি প্রকল্পের মাধ্যমে কাজ করতে চাচ্ছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি। ওই গ্রামগুলোয় সুপেয় পানির ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা রয়েছে।’
যশোর শহরের পুলেরহাটে মুক্তেশ্বরী নদীর আধা কিলোমিটার অংশ দখল করে বেসরকারি হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ নির্মাণ করা হয়েছে। আদ্-দ্বীন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল নামের এ প্রতিষ্ঠান দুটিতে যাতায়াতের জন্য মাঝ বরাবর মাটি দিয়ে ভরাট করে সরু করা হয় নদী। সেই সরু নদীর মাঝখানে কংক্রিটের খুঁটি দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে
২ ঘণ্টা আগে‘যেই শার্টটা ৩০০ টাকায় কিনলাম, এইটা শোরুমে গেলে হাজারের নিচে পাইতাম না। শার্টের গায়ে তো ফুটপাত বা শোরুম লেখা নাই। তাইলে বেশি দাম দিয়া শোরুম হাঁকানোর দরকার কী?’ রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকার ফুটপাতে গতকাল শুক্রবার ঈদের কেনাকাটা করতে আসা তরুণ আসাদুর রহমান এভাবেই জানালেন তাঁর অভিজ্ঞতা।
৪ ঘণ্টা আগেদীর্ঘদিন ধরে ঢাকার স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থা অচল। ট্রাফিক পুলিশ মোড়গুলোতে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করেন দূর অতীতের হাতের ইশারা পদ্ধতিতে। স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থা আবার চালু করতে গত প্রায় দুই দশকে ২০০ কোটি টাকার বেশি ব্যয়ের পরও চিত্র একই রয়ে গেছে।
৪ ঘণ্টা আগেনীলফামারীর ডিমলায় তিস্তা নদীর ভাঙনে বিলীন হয়ে যাওয়া তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বিপাকে পড়েছে। এখন তাঁদের পাঠদান চলছে বাঁধের ওপর অস্থায়ী ঘর ও আশ্রয়কেন্দ্রের খোলা বারান্দায়।
৫ ঘণ্টা আগে