Ajker Patrika

ময়মনসিংহে ডিবির অভিযানের পর যুবকের মৃত্যু, তদন্তে কমিটি

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
নিহত ফয়সাল খান শুভ। ছবি: সংগৃহীত
নিহত ফয়সাল খান শুভ। ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহ নগরীতে জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ফয়সাল খান শুভর (৩০) মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে জেলা পুলিশ সুপার।

আজ সোমবার বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা পুলিশ সুপার আজিজুল ইসলাম বলেন, কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

এর আগে গত ১৫ নভেম্বর ঢাকা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলা হয়েছে।

নিহত ফয়সাল খান শুভ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার কাশিপুর এলাকার মো. সেলিম খানের ছেলে। তিনি কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ সম্পন্ন করে নগরীর কেওয়াটখালী পাওয়ার হাউজ রোডে বোন জামাইয়ের বাসায় থেকে চাকরির জন্য চেষ্টা করছিলেন।

নিহত ফয়সালের স্বজনেরা জানায়, ফয়সালের সঙ্গে একই গ্রামের সুলতান উদ্দিনের মেয়ের চার বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। সম্প্রতি ওই মেয়ের অর্থ মন্ত্রণালয়ে চাকরি হয়। সেখান থেকে এক ট্রেনিংয়ে গিয়ে ব্যাচমেটের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান তিনি এবং ফয়সালের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন।

এদিকে ব্যাচমেটের সঙ্গে ওই মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়। গত ১৫ নভেম্বর তাঁদের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। বিষয়টি ফয়সাল জানতে পেরে ওই ছেলের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করে কিছু ছবি-ভিডিও পাঠান। এ ঘটনায় ওই মেয়ের বাবা সুলতান আহমেদ গত ১ নভেম্বর ঈশ্বরগঞ্জ থানায় ফয়সালসহ চারজনের বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি আইনে অভিযোগ দায়ের করেন।

ফয়সালের দুলাভাই মো. মোহসিনের দাবি, এ ঘটনার পর গত ১০ নভেম্বর রাত সাড়ে ৯টার দিকে ডিবি পুলিশ তাঁর বাসায় আসে। এ সময় ডিবি পুলিশের সঙ্গে মেয়ের বাবা ও তাঁর দুই ভাইও আসেন। ডিবি পুলিশ এলে তিনি গেট খুলে দেন। এ সময় মেয়ের বাবা ও তাঁর দুই ভাই বাসার ছাদে গিয়ে ফয়সালকে পেয়ে ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দেন। পরে ডিবি পুলিশসহ তাঁরা সবাই চলে যান। প্রতিবেশীর মাধ্যমে জানতে পারেন ফয়সাল পড়ে আছে। পরে তাকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ঢাকা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফয়সাল মারা যান।

ময়মনসিংহ আদালতের সিনিয়র আইনজীবী এ এইচ এম খালেকুজ্জামান বলেন, কারও বাসায় অভিযান করলে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিকে সঙ্গে নিতে পারে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। আইন অনুযায়ী পুলিশ বাদীপক্ষের লোকজন নিয়ে অভিযানে যেতে পারে না।

অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) সোহরাব উদ্দিন বলেন, ‘অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা ছয়জন পুলিশ সদস্য ওই বাসায় গিয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের সঙ্গে সিসিটিভি ফুটেজে যে দুইজনকে দেখা গেছে, তাদের বিষয়ে অবগত নই। হয়ত তারা আমাদের অভিযানে কৌশলে ঢুকে যেতে পারে। তাদের ছাদে যাওয়ার বিষয়টিও আমরা জানি না।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাসায় ঢুকে যখন শুনেছি ফয়সাল নেই তখন আমরা চলে এসেছি। আসার পরদিন শুনি ফয়সাল পাঁচতলার ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে আহত হয়েছে, এমন হতে পারে পুলিশের ভয়ে ছাদে গিয়ে নিচে নামার চেষ্টা করলে ফসকে পড়ে গেছে।’

এ ঘটনায় ১২ নভেম্বর কোতোয়ালি মডেল থানায় ফয়সালের বাবা সেলিম খান বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। ডিবি পুলিশ পরিচয়ে বাসায় ঢুকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করে ফয়সালকে বাসার নিচে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ করা হয়।

মামলায় তরুণীর বাবাসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৪–৫ জনকে আসামি করা হয়। এ ঘটনায় আজ সোমবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত কোনো আসামি গ্রেপ্তার করা যায়নি বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার আজিজুল ইসলাম।

মামলা বাদী ফয়সালের বাবা সেলিম খান বলেন, ‘আমার ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এর আগেও মেয়ের পরিবারের লোকজন আমার এক ভাইয়ের ওপর আক্রমণ করতে চেয়েছিল। যদি হত্যার উদ্দেশ্য না হতো তাহলে পুলিশের অভিযানে কেন অন্য কেউ যাবে? ঘটনার কয়েকদিন হলেও এখন পর্যন্ত পুলিশ কাউকে ধরছে না।’

জেলা পুলিশ সুপার আজিজুল ইসলাম বলেন, ফয়সাল মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের গাফিলতি আছে কি না সেই লক্ষ্যে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। রোববার রাতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রামই এন্ড অপস) মো. শামীম হোসেনকে প্রধান করে গঠিত তদন্ত কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। সেই প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় আসামিরা অচিরেই ধরা পরবে। আমাদের কয়েকটি টিম মাঠে রয়েছে। তারা গ্রেপ্তার হলেই সঠিক রহস্য উন্মোচিত হবে।

অপরদিকে আজ সোমবার সকালে ফয়সাল হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার দাবিতে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার কাশিপুর এলাকায় ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন স্থানীয়রা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

সুদান: সবুজ স্বর্গে পচে যাচ্ছে খাবার, অন্য পাশে দুর্ভিক্ষে মারা যাচ্ছে শিশু

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শাপলা প্রতীক না পেলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি সারজিসের

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
শাপলা প্রতীক না পেলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি সারজিসের
শাপলা প্রতীক না পেলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি সারজিসের

শাপলা প্রতীক পেতে এনসিপিকে যদি রাজপথে নামতে হয়, তাহলে নির্বাচন কমিশন (ইসি) পুনর্গঠনের আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দলটির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।

আজ রোববার কিশোরগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) জেলা ও উপজেলা কমিটির সমন্বয় সভার মধ্যাহ্ন বিরতিতে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

সারজিস আলম বলেন, ‘আইনগতভাবে শাপলা প্রতীক পেতে এনসিপির কোনো বাধা নেই। এ ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন তাদের পক্ষ থেকে স্বেচ্ছাচারিতা করছে এবং পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করছে। আমরা অভ্যুত্থান-পরবর্তী নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে এ ধরনের স্বেচ্ছাচারদুষ্ট আচরণ কখনো প্রত্যাশা করি না।

‘তারা যদি তাদের জায়গা থেকে স্বাধীন-স্বকীয়তা প্রদর্শন না করতে পারে, তাহলে আগামীর নির্বাচনে তাদের ওপর আমাদের আস্থা রাখতে পারব না। আমরা মনে করি, তাদের নিরপেক্ষতা কাজে এবং কথার মাধ্যমে প্রমাণ করতে হবে। যদি এনসিপিকে শাপলা প্রতীক পেতে রাজপথের কর্মসূচিতে যেতে হয়, তাহলে এনসিপি ওই স্বেচ্ছাচারী নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের আন্দোলনেও যাবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, আওয়ামী লীগ ও ভারতীয় আধিপত্যবাদ প্রশ্নে বিএনপি এবং জামায়াত এককভাবে নেতৃত্ব দিতে পারবে না। সেই জায়গায় তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধিত্ব আবশ্যক। এনসিপির প্রতিনিধিত্ব আবশ্যক। আমরা এটাও মনে করি, জুলাই সনদের বাস্তবায়ন, প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কার এবং বিচারিক প্রক্রিয়ার ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করতে এককভাবে বিএনপি এবং জামায়াত তাদের জায়গা থেকে নেতৃত্ব দিতে পারবে না। সেই জায়গা থেকে তরুণ প্রজন্মের এনসিপির অংশগ্রহণ আবশ্যক।’

জুলাই সনদে স্বাক্ষর করা প্রসঙ্গে সারজিস আলম বলেন, ‘এই অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশ বাস্তবতায় আমরা মনে করি, গণতান্ত্রিক উত্তরণের যে প্রক্রিয়া, সেই প্রক্রিয়ায় এনসিপিসহ তরুণদের অংশগ্রহণ অতীব জরুরি। সেই জন্য জুলাই সনদ নিয়ে আমরা আমাদের আপসহীন অবস্থান ব্যক্ত করেছি। অন্যান্য রাজনৈতিক দল যখন জুলাই সনদের প্রশ্নে নিশ্চয়তার যেটি প্রয়োজন ছিল, সেই নিশ্চয়তার প্রসেসিং কীভাবে হবে, কবে হবে—সেটি ঠিক না করে শুধুমাত্র নির্বাচনমুখী আচরণ করে জুলাই সনদে স্বাক্ষর করল; তখন এনসিপি তাদের জায়গা থেকে মেরুদণ্ড সোজা করে নিশ্চয়তা চেয়েছে এবং জুলাই সনদে স্বাক্ষর করেনি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, যেদিন জুলাই সনদ বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা দেওয়া হবে, যেদিন সেই আদেশ জারি করা হবে প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে এবং গণভোটে যদি জুলাইয়ের পক্ষে রায় আসে, তখন কোনো নোট অব ডিসেন্টকে বিবেচনা করা হবে না—এই নিশ্চয়তা যখন আসবে, তখন জনগণের পক্ষে আমরা জুলাই সনদে স্বাক্ষর করব। এনসিপি কোনো নিশ্চয়তা ছাড়া একটি কাগজে স্বাক্ষর করে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করতে পারে না।’

নির্বাচনী জোট প্রসঙ্গে এনসিপির উত্তরাঞ্চলের এ মুখ্য সংগঠক বলেন, ‘এনসিপি শুধু আগামী নির্বাচনে কয়েকটি সিটের জন্য সংসদে যাওয়ার জন্য জোট করার জন্য কাজ করছে না। এনসিপি মনে করে, কোনো রাজনৈতিক দল যদি তাদের জায়গা থেকে জুলাই সনদের প্রত্যেকটি সংস্কার বাস্তবায়নে কমিটেড থাকে, বিচারিক প্রক্রিয়াকে ধারাবাহিকভাবে সামনে এগিয়ে নিয়ে সম্পূর্ণ করতে কমিটেড থাকে, ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কমিটেড থাকে, আওয়ামী লীগ-জাতীয় পার্টিসহ ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কমিটেড থাকে, তাহলে ওই নির্বাচনে তাদের সঙ্গে অ্যালায়েন্স হতে পারি।’

প্রশাসন সম্পর্কিত প্রশ্নের জবাবে এনসিপি নেতা বলেন, ‘প্রশাসনে ঘুরেফিরে এখন পর্যন্ত যাঁরা আছেন, তাঁরা কেউ বিএনপিপন্থী আচরণ করেন, কেউ জামায়াতপন্থী আচরণ করেন, কেউ পূর্বের আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ততা ছিল বলে ওই পন্থী আচরণ করেন। বিশেষ করে যাঁরা ইউএনও আছেন, ওসি আছেন, তাঁদের আচরণটা দলীয় আচরণ আসে। তাঁরা বিভিন্ন দলীয় ইউএনও, দলীয় ওসি হয়ে উঠতে চান। আমাদের জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপার যাঁরা আছেন, তাঁরাও দলীয় জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার হয়ে উঠতে চান।

‘মন্ত্রণালয়ে কিছু সচিব আছেন, তাঁরা দলীয় সচিব হয়ে উঠতে চান। আমরা তাঁদের স্পষ্ট করে বলি, এবার তাঁরা অনেকটাই পার পেয়ে গিয়েছে। কারণ, এই অভ্যুত্থানের অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের মানুষের আগে ছিল না। কিন্তু আগামীতে যদি তাঁরা এই আচরণ বহাল রাখেন, আর আমাদের আবার এই রকম একটা বড় ঘটনার দিকে যেতে হয়, তখন কেউ আর বিন্দুমাত্র আশ্রয় পাবেন না, প্রশ্রয় পাবেন না। আমি অনুরোধ করব আপনাদের যে আপনারা দলীয় প্রশাসন না হয়ে ওঠেন। আপনারা বাংলাদেশের প্রশাসন হয়ে উঠুন। বাংলাদেশের মানুষের হয়ে উঠুন।’

সারজিস আলম বলেন, ‘জুলাইয়ে যারা রাজপথের যোদ্ধা ছিল, শহীদ পরিবাররা ছিল, তাদের এখন হুমকি দেয়। হুমকি দেয় কারা—যারা ’২৪-এ আমাদের এই সহযোদ্ধাদের ওপর হামলা করেছিল, গুলি ছুড়েছিল। তারা এখন টাকার বিনিময়ে, তারা এখন বিভিন্ন নেগোসিয়েশনের বিনিময়ে, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পেছন থেকে আঁতাত করে, ক্ষমতায় থাকা প্রশাসনের কিংবা বিচার বিভাগে থাকা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে আঁতাত করে, তারা জামিন নিয়ে আসছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মনে করি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট যাঁরা আছেন, তাঁরা যদি এই বিষয়ে কঠোর না হন, তাহলে আগামীর বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা আপনারা নিশ্চিত করতে পারবেন না, নির্বাচন একটা অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে যাবে। এই কথাটা দিয়ে আপনারা এই দিকে টানবেন না যে নির্বাচনে অনিশ্চয়তার কথা বলেছে; তার মানে এনসিপি বলে নির্বাচন পেছাতে চায়। না। এটা হচ্ছে বর্তমান বাস্তবতা।

‘যদি আমার একজন আহত যোদ্ধা, আমার একজন শহীদ পরিবারের ওপরে এই ধরনের আক্রমণ হয় এবং অনিরাপত্তায় ভোগে, তাহলে আগামীতে পরিস্থিতি কিছুটা অস্থিতিশীল হবে।’

আহনাফ সাঈদ খানের সভাপতিত্বে সমন্বয় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন এনসিপি ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল্লাহ হায়দার, কেন্দ্রীয় সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) খায়রুল কবির ও সাঈদ উজ্জ্বল এবং কেন্দ্রীয় সদস্য দিদার শাহ। এ সময় এনসিপির জেলা ও উপজেলা কমিটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

সুদান: সবুজ স্বর্গে পচে যাচ্ছে খাবার, অন্য পাশে দুর্ভিক্ষে মারা যাচ্ছে শিশু

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইদের সংসারও সামলাতেন, এখন চার পরিবারে হাহাকার

শরীয়তপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ২০: ২৮
নিহত আবুল কালাম চোকদার। ছবি: সংগৃহীত
নিহত আবুল কালাম চোকদার। ছবি: সংগৃহীত

শরীয়তপুরের আবুল কালাম চোকদারের সঙ্গে বাড়ির লোকজনের শেষবারের মতো কথা হয়েছিল আজ রোববার দুপুরে। বেলা ১১টার দিকে ভাবি আসমা বেগমকে তিনি জানিয়েছিলেন, কয়েক দিন পরই বাড়ি ফিরবেন। কিন্তু ফেরা আর হলো না তাঁর। মেট্রোরেলের একটি বিয়ারিং প্যাড তাঁর প্রাণ কেড়ে নিল। রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত এই যুবকের মৃত্যুর খবর পৌঁছালে গ্রামজুড়ে নেমে আসে শোকের ছায়া।

নিহত কালামের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার মোক্তারের চর ইউনিয়নের ঈশ্বরকাঠী গ্রামের মৃত আব্দুল জলিল চোকদারের ছেলে আবুল কালাম (৩৬)। চার ভাইয়ের মধ্যে ছোট ছিলেন তিনি। স্ত্রী ও দুই শিশুসন্তান নিয়ে বসবাস করতেন নারায়ণগঞ্জের পাঠানটুলি এলাকায়। গ্রামে থাকা ভাইদের সংসারের জন্যও নিয়মিত টাকা পাঠাতেন তিনি।

আজ রোববার দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড খুলে তাঁর ওপর পড়ে। ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। পরে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।

স্বজনদের কান্না। ছবি: আজকের পত্রিকা
স্বজনদের কান্না। ছবি: আজকের পত্রিকা

আবুল কালামের ভাবি আসমা আক্তার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সকালে ফোনে কথা হইছিল। আমি বলছিলাম, ভাইয়ের সাথে কথা বলো, বাড়িতে চলে আসো। সে বলেছিল, কয়েক দিনের মধ্যেই আসবে। কিন্তু ঘণ্টাখানেক পর শুনি—মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে মারা গেছে!’

সরকারের কাছে সুষ্ঠু তদন্ত ও ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়ে আসমা বলেন, ‘আমাদের সংসারের হাল ও-ই ধরেছিল। এখন ওর সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা দুশ্চিন্তায় আছি।’

ছোটবেলা থেকেই কালাম পরিশ্রমী ছিলেন বলে জানান তাঁর চাচাতো ভাই আব্দুল গণি মিয়া চোকদার। তিনি বলেন, ‘সংসারের বোঝা একা কাঁধে নিয়েছিল সে। হঠাৎ এমন মৃত্যুকে মেনে নেওয়া কঠিন।’

এ বিষয়ে নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল কাইয়ুম খান বলেন, ‘বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা ইতিমধ্যে খবর পেয়েছি। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী পরিবারটিকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

সুদান: সবুজ স্বর্গে পচে যাচ্ছে খাবার, অন্য পাশে দুর্ভিক্ষে মারা যাচ্ছে শিশু

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

র‍্যাবের হাতে ‘জিনের বাদশা’ ধরা

ভোলা প্রতিনিধি
র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার জাহাঙ্গীর মাঝি। ছবি: সংগৃহীত
র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার জাহাঙ্গীর মাঝি। ছবি: সংগৃহীত

জিনের বাদশাহ সেজে প্রতারণার অভিযোগে মো. জাহাঙ্গীর মাঝি (৬০) নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। আজ রোববার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার মানিকার হাটবাজার এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার জাহাঙ্গীর মাঝি লালমোহন উপজেলার চর কালাই দাস গ্রামের বাসিন্দা মৃত আজগর মাঝির ছেলে।

তাঁকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র‍্যাব-৮-এর ভোলা ক্যাম্পের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার শাহরিয়ার রিফাত অভি। তিনি আজকের পত্রিকাকে জানান, জাহাঙ্গীর মাঝি ও মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন মীর নামের দুজনসহ কয়েকজন প্রতারক জিনের বাদশাহ সেজে সাধারণ মানুষের সঙ্গে দীর্ঘদিন যাবৎ প্রতারণা করে আসছিলেন। সম্প্রতি চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি থানার মো. দিদারুল আলম (৪০) নামের এক ব্যক্তি অনলাইনে বিজ্ঞাপন দেখে তাঁদের দেওয়া মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করেন। তিনি তাঁর ব্যক্তিগত সমস্যার কথা বললে প্রতারকেরা বিভিন্ন কৌশলে তাঁর সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন। এর জন্য গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে বিকাশে ৫৩ লাখ ৫ হাজার টাকাও হাতিয়ে নেন। পরে প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে ভুক্তভোগী দিদারুল আলম চট্টগ্রামের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবেদন করেন। পরে আদালতের নির্দেশে ফটিকছড়ি থানায় একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়।

লেফটেন্যান্ট কমান্ডার শাহরিয়ার রিফাত অভি বলেন, ‘মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা রোববার সন্ধ্যা ৬টার দিকে বোরহানউদ্দিন উপজেলার মানিকার হাটবাজার এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করি। আমরা এর আগে ১ সেপ্টেম্বর সোমবার রাতে অভিযান চালিয়ে প্রতারক কামাল উদ্দিনকেও গ্রেপ্তার করি। অন্য প্রতারকদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

সুদান: সবুজ স্বর্গে পচে যাচ্ছে খাবার, অন্য পাশে দুর্ভিক্ষে মারা যাচ্ছে শিশু

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এক সপ্তাহ পর উৎপাদনে ফিরল বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র

ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি 
দিনাজপুরের পার্বতীপুরের বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র। ছবি: সংগৃহীত
দিনাজপুরের পার্বতীপুরের বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র। ছবি: সংগৃহীত

যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এক সপ্তাহ বন্ধ থাকার পর দিনাজপুরের পার্বতীপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক ৫২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ইউনিট সচল করা হয়েছে। আজ রোববার বেলা ২টার দিকে ১২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতাসম্পন্ন ১ নম্বর ইউনিটটি চালু হয়।

বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু বক্কর সিদ্দিক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, চালু হওয়া ইউনিট থেকে প্রতিদিন ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। ইউনিটটি চালু রাখতে দৈনিক ৮০০ থেকে ৯০০ টন কয়লার প্রয়োজন হবে।

এর আগে ১৯ অক্টোবর রাত সাড়ে ৮টার দিকে প্রথম ইউনিটের বয়লারের পাইপ ফেটে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। তারও আগে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ১৬ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তৃতীয় ইউনিট বন্ধ হয়। এর ফলে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় কয়লাভিত্তিক ৫২৫ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্রের তিনটি ইউনিটের উৎপাদন কার্যক্রম। তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের তিনটি ইউনিটের মধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় ইউনিট দুটি ১২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন এবং তৃতীয় ইউনিটটি ২৭৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন। ওই কেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটটি যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ২০২০ সালের নভেম্বর থেকে ৪ বছর ১১ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে।

বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু বক্কর সিদ্দিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রথম ইউনিটের মেরামতের কাজ শেষে দুপুর ১২টায় বয়লারে ফায়ারিং করা হয়। বেলা ২টা থেকে বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটটির চালু হলে সন্ধ্যায় আবারও আংশিক ত্রুটি দেখা দেয়, কিছু পরে পুরোপুরি উৎপাদন শুরু হয়। বর্তমানে উৎপাদিত ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে। এতে উত্তরাঞ্চলের লোডশেডিং কিছুটা কমে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন।

আবু বক্কর সিদ্দিক আরও বলেন, কেন্দ্রের তৃতীয় ইউনিটটি মেরামতের কাজ চলমান রয়েছে। চায়না থেকে মেশিন এনে সেটি বিদ্যুৎ উৎপাদনে ফিরতে প্রায় ৯০ দিন সময় লাগবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

সুদান: সবুজ স্বর্গে পচে যাচ্ছে খাবার, অন্য পাশে দুর্ভিক্ষে মারা যাচ্ছে শিশু

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত