Ajker Patrika

নালিতাবাড়ীতে ৩ দিন ধরে পানির নিচে আমন খেত

নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি
নালিতাবাড়ীতে ৩ দিন ধরে পানির নিচে আমন খেত

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার বাঘবেড় ইউনিয়নের কৃষক জমির উদ্দীন (৫৫)। প্রায় এক মাস আগে দুই একর জমিতে আমনের চারা লাগিয়েছেন। খেত প্রস্তুত করতে হালচাষ ও চারা রোপণ বাবদ ২৫ হাজার টাকা তাঁর খরচ হয়েছে। গত শনিবার রাত থেকে ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে তাঁর খেতের ফসল তিন দিন ধরে পানিতে ডুবে আছে। ধান খেতে এসে জমেছে কচুরিপানা। 

ফসল নিয়ে এই দুশ্চিন্তা শুধু জমির উদ্দীনের একার নয়। উপজেলার যোগানিয়া, বাঘবেড় ও কলসপাড় ইউনিয়নের প্রায় শতাধিক কৃষকের। তাঁদের প্রায় ৬০ একরের জমির ফসল তিন দিন ধরে পানিতে ডুবে রয়েছে। 

উপজেলা কৃষি কার্যালয়, জনপ্রতিনিধি ও কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলায় ১২টি ইউনিয়নে ২০ হাজার ২২৬ হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে বাঘবেড়, যোগানিয়া ও কলসপাড় ইউনিয়নে প্রায় ৭ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ হয়েছে। 

গত শনিবার রাতের ভারী বর্ষণ ও উপজেলার ভোগাই ও চেল্লাখালী নদীতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নদীর পানি প্লাবিত হয়। এ পানিতে তিনটি ইউনিয়নের ১২টি গ্রামের আমনের খেত আংশিক ক্ষতির মুখে পড়ে। এতে তিন দিন যাবৎ পানিতে ডুবে আছে উপজেলার প্রায় ৬০ একর আমন আবাদ। 

আজ সোমবার দুপুরে উপজেলার বাঘবেড় ইউনিয়নের কালিনগর ও রাণীগাঁও এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, আবাদের অধিকাংশ জমির ফসল পানির নিচে ডুবে আছে। পানি নামতে শুরু করায় কিছু কিছু খেতের ফসল ভেসে উঠেছে। সেই ফসলের ওপর ভাসমান কচুরিপানা জমাট বেঁধেছে, কৃষক তা লাঠি দিয়ে পরিষ্কার করছেন। খেত তিন দিন ধরে পানি ডুবে থাকায় অনেকেই নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন। 

উপজেলার কালিনগর গ্রামের কৃষক সুরুজ মিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তিন দিন যাবৎ আমনের আবাদ পানির নিচে রইছে। আইজ সারা দিন খেতে পানির সাথে আসা কচুরিপানাগুলা সরাইলাম। পানি না নামলে তো বিপদে পড়মু।’ 

কলসপাড় গ্রামের কৃষক আলী আকবর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কলসপাড় নিম্নাঞ্চল তুলনামূলক নিচু এলাকা। এখানে একটু দেরি করেই আমরা আমনের চাষ শুরু করি। কিন্তু দুই সপ্তাহ আগে আমন ধানের চারা লাগাইছি। কিন্তু শনিবারের রাত থেকে বৃষ্টির পানিতে সেই আবাদ ডুবে আছে। পলি মাটিতে আবাদ নষ্ট হয়। পানি কমলে বোঝা যাবে ফসলের কী পরিমাণ ক্ষতি হইছে। 

বাঘবেড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুস সবুর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বৃষ্টির পানিতে কৃষকের ফসলি জমি ডুবে রয়েছে। পানি কমে গেলে কী রকম ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা বোঝা যাবে। আজ-কালের মধ্যে পানি নেমে গেলে রক্ষা। তা না হলে কৃষকেরা চরম ক্ষতির মুখে পড়বে।’ 

এমন পরিস্থিতিতে কী পরিমাণ ক্ষতি হবে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবদুল ওয়াদুদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আজ সোমবার থেকে ফসলি জমি থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। কৃষকদের দুশ্চিন্তার কারণ নেই। আবারও ভারী বর্ষণ না হলে এই পানিতে আবাদের কোনো ক্ষতি হবে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত