হালুয়াঘাট (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
জীবিকার তাগিদে ভোরে সূর্য উঁকি দেওয়ার আগেই ঘুম ঘুম চোখে হাতে কাঁচি, কাঁধে ধান বহন করার জন্য বিশেষভাবে তৈরি তারবাঁশ নিয়ে ছোটেন তাঁরা। গন্তব্য ‘কামলার হাট’। হাটজুড়ে শুধু মানুষ আর মানুষ। যারা জড়ো হয়েছেন কারও আবাদি জমি নেই, কেউ এসেছেন ঘরে অসুস্থ স্ত্রী চিকিৎসা খরচ জোগাতে, কেউ অভাবের তাড়নায় এসেছেন কাজের সন্ধানে।
কামলার হাটে এ দৃশ্য চোখে পড়বে ময়মনসিংহের সীমান্তবর্তী হালুয়াঘাট উপজেলার ময়মনসিংহ-হালুয়াঘাট আঞ্চলিক মহাসড়কে। প্রতি বছর বোরো ও আমান ধান কাটার মৌসুমে কাজের খোঁজে দাঁড়ান দিনমজুর বা শ্রমিকেরা। আর এই জায়গাটি কামলার হাট নামে পরিচিত।
আজ সোমবার ভোরে সরেজমিনে কামলার হাটে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় শতাধিক মানুষের ভিড়। তারা সবাই দিনমজুরের কাজ করার জন্য এখানে জড়ো হয়েছেন। সেখানে আজকের পত্রিকার কথা হয় কয়েজন দিনমজুরের সঙ্গে। তাঁরা জানান, প্রায় দশ বছর ধরে এখানে জড়ো হয় কামলা (দিনমজুর) দিতে। প্রতি বছর বোরো ও আমান ধান কাটার মৌসুমে এ হাটে কাজের খোঁজে দাঁড়ান তাঁরা। গৃহস্থরাও আসেন কামলার খোঁজে। দামে মিললে তাঁরা চলে যান গৃহস্থের বাড়িতে। তবে প্রতিদিন সবার ভাগ্যে কাজ জোটে না। কারও কারও ফিরতে হয় দিন পার করার দুশ্চিন্তা নিয়ে। শ্রমিকেরা আরও জানান, এ বছর শ্রমিকের দাম তুলনামূলক কম। আর এ জন্য ধান কাটা ও মারাই করার জন্য হারভেস্টর মেশিনকে দায়ী করছেন অনেকেই।
এ হাটে কাজের সন্ধানে এসেছেন পার্শ্ববর্তী উপজেলা ফুলপুরের ৫০ বছর বয়সী আলকাছ আলী। সঙ্গে ওই উপজেলার নাগলা এলাকার রমজান আলী (৫৫)। দুজনই গত কয়েক বছর ধরে আসেন এ হাটে। রমজান আলী আজকের পত্রিকাকে জানান, ঘরে তাঁর অসুস্থ স্ত্রী। কয়েক দিন কাজ করলে যে টাকা পাবেন, খরচ বাদে যা থাকবে, তা দিয়ে স্ত্রীর চিকিৎসা করাবেন।
আলকাছ আলীর কাছে জানতে চাইলে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বন্দে আমার কোনো জমি-জমা নাই। চাইর পাঁচ কাডা (কাঠা) বাগি (বর্গা) করি খোরাকির লাইগা। সিজনে মাইনসের ধান কাইট্টা যা পাই কোনো রহম দিন কাডে। এইবার সবকিছুর দাম বাড়লেও কামলার দাম বাড়ে নাই। দেখছুইন না মেশিন (হারভেস্টর) নামছে। একদিনে সব খেত কাইট্টালায়। এহন আমগোর ময়না (মজুরি) কম।’
আলকাছ আলী জানালেন, গত বছর ১১-১৩ শ’ টাকায় ধান কাটছেন তিনি। এ বছর ৮-৯ শ’ টাকা দরে রোজ ধান কাটছেন।
পাশেই ৭-৮ জনের একটি দলে দাঁড়িয়ে রয়েছেন কিছু শ্রমিক। তাদের বাড়ি পার্শ্ববর্তী নালিতাবাড়ী উপজেলার রূপনারায়ণকুড়া ইউনিয়নে। তাঁরা জানান, গত চার দিন ধরে এক গৃহস্থের ধান কেটেছেন। আজ আবারও দাঁড়িয়েছেন তাঁরা।
এই দলের সদস্য খোকন আজকের পত্রিকাকে জানান, ‘মেশিন (হারভেস্টর) আইয়া আমাগো মজুরির দাম কম। সারা দিন কাম কইরা যে ময়না পাই, তেল, ডাইল, তরকারি কিনতে ফুরায় যায় গা। মাছ কিনাম কী দিয়া?
রুবেল নামের অপর একজন বলেন, ‘এই রোজা গেল একদিনও গোশত কিনবার পারি নাই। সবকিছুর দাম বাড়তি। এক কামলার ময়না দিয়ে বেগ ভর্তি বাজার অইনা।’
হালুয়াঘাট উপজেলার দর্শার পাড় এলাকার রোকন উদ্দিন (৫৫) দৈনিক ৮০০ টাকা পারিশ্রমিকে কাজ করেছেন ধুরাইল এলাকায়। নতুন কাজের আশায় আজও দাঁড়িয়েছেন এ হাটে। রোকন জানান, ছেলের পড়াশোনার খরচ জোগাতে এ বয়সে দিনমজুরি করতে হয় তাঁকে। তাঁর ছেলেও পড়াশোনার ফাঁকে তাঁর সঙ্গে দিনমজুরি করে।
সেখানেই কাজের সন্ধানে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় ২০ বছর বয়সী জুয়েল নামের এক যুবককে। তিনি জানান, ৬ মাস আগে বিয়ে করেছেন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাঁকে। ঘরে বৃদ্ধ বাবা-মা ও নতুন বউ। তাই কাজের সন্ধানে তিনিও দাঁড়িয়েছেন।
চোখে পড়ে অন্য দৃশ্যও। গত সপ্তাহে চার দিন এক গৃহস্থের বাড়িতে কাজ জুটলেও এ সপ্তাহে কোনো কাজের ডাক ছাড়াই প্রতিদিন বাড়ি ফিরে গেছেন ৬১ বছর বয়সী ফজলু হক।
আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘গরিব মানুষ আমি। জীবন পার করলাম মাইনসের বাড়ি কাম কইরা। এহন শেষ বয়সেও এই কাম পিছ ছাড়ে না।
হাটে কথা হয় শ্রমিক নিতে আসা ধুরাইল ইউনিয়নের আল আমিনের সঙ্গে। তিনি আজকের পত্রিকাকে জানান, বিলে ৫০ শতাংশ জমি আবাদ করেছেন। ধান পেকে গেছে। তার এলাকায় শ্রমিক না থাকায় এ হাটে এসেছেন শ্রমিকের সন্ধানে। দর-দাম চুকিয়ে শ্রমিককে সঙ্গে নিয়ে ফিরবেন তিনি।
ধারা বাজার এলাকার অপর এক গৃহস্থ রফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘হারভেস্টর মেশিনে ৭-৮ হাজার টাকা একরে ধান কাটতে পারছেন কৃষকেরা। তবে তুলনামূলক নিচু এবং ধান আনতে সুবিধা না হওয়ায় বাধ্য হয়ে শ্রমিক দিয়ে ধান কাটাতে হচ্ছে।’
জীবিকার তাগিদে ভোরে সূর্য উঁকি দেওয়ার আগেই ঘুম ঘুম চোখে হাতে কাঁচি, কাঁধে ধান বহন করার জন্য বিশেষভাবে তৈরি তারবাঁশ নিয়ে ছোটেন তাঁরা। গন্তব্য ‘কামলার হাট’। হাটজুড়ে শুধু মানুষ আর মানুষ। যারা জড়ো হয়েছেন কারও আবাদি জমি নেই, কেউ এসেছেন ঘরে অসুস্থ স্ত্রী চিকিৎসা খরচ জোগাতে, কেউ অভাবের তাড়নায় এসেছেন কাজের সন্ধানে।
কামলার হাটে এ দৃশ্য চোখে পড়বে ময়মনসিংহের সীমান্তবর্তী হালুয়াঘাট উপজেলার ময়মনসিংহ-হালুয়াঘাট আঞ্চলিক মহাসড়কে। প্রতি বছর বোরো ও আমান ধান কাটার মৌসুমে কাজের খোঁজে দাঁড়ান দিনমজুর বা শ্রমিকেরা। আর এই জায়গাটি কামলার হাট নামে পরিচিত।
আজ সোমবার ভোরে সরেজমিনে কামলার হাটে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় শতাধিক মানুষের ভিড়। তারা সবাই দিনমজুরের কাজ করার জন্য এখানে জড়ো হয়েছেন। সেখানে আজকের পত্রিকার কথা হয় কয়েজন দিনমজুরের সঙ্গে। তাঁরা জানান, প্রায় দশ বছর ধরে এখানে জড়ো হয় কামলা (দিনমজুর) দিতে। প্রতি বছর বোরো ও আমান ধান কাটার মৌসুমে এ হাটে কাজের খোঁজে দাঁড়ান তাঁরা। গৃহস্থরাও আসেন কামলার খোঁজে। দামে মিললে তাঁরা চলে যান গৃহস্থের বাড়িতে। তবে প্রতিদিন সবার ভাগ্যে কাজ জোটে না। কারও কারও ফিরতে হয় দিন পার করার দুশ্চিন্তা নিয়ে। শ্রমিকেরা আরও জানান, এ বছর শ্রমিকের দাম তুলনামূলক কম। আর এ জন্য ধান কাটা ও মারাই করার জন্য হারভেস্টর মেশিনকে দায়ী করছেন অনেকেই।
এ হাটে কাজের সন্ধানে এসেছেন পার্শ্ববর্তী উপজেলা ফুলপুরের ৫০ বছর বয়সী আলকাছ আলী। সঙ্গে ওই উপজেলার নাগলা এলাকার রমজান আলী (৫৫)। দুজনই গত কয়েক বছর ধরে আসেন এ হাটে। রমজান আলী আজকের পত্রিকাকে জানান, ঘরে তাঁর অসুস্থ স্ত্রী। কয়েক দিন কাজ করলে যে টাকা পাবেন, খরচ বাদে যা থাকবে, তা দিয়ে স্ত্রীর চিকিৎসা করাবেন।
আলকাছ আলীর কাছে জানতে চাইলে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বন্দে আমার কোনো জমি-জমা নাই। চাইর পাঁচ কাডা (কাঠা) বাগি (বর্গা) করি খোরাকির লাইগা। সিজনে মাইনসের ধান কাইট্টা যা পাই কোনো রহম দিন কাডে। এইবার সবকিছুর দাম বাড়লেও কামলার দাম বাড়ে নাই। দেখছুইন না মেশিন (হারভেস্টর) নামছে। একদিনে সব খেত কাইট্টালায়। এহন আমগোর ময়না (মজুরি) কম।’
আলকাছ আলী জানালেন, গত বছর ১১-১৩ শ’ টাকায় ধান কাটছেন তিনি। এ বছর ৮-৯ শ’ টাকা দরে রোজ ধান কাটছেন।
পাশেই ৭-৮ জনের একটি দলে দাঁড়িয়ে রয়েছেন কিছু শ্রমিক। তাদের বাড়ি পার্শ্ববর্তী নালিতাবাড়ী উপজেলার রূপনারায়ণকুড়া ইউনিয়নে। তাঁরা জানান, গত চার দিন ধরে এক গৃহস্থের ধান কেটেছেন। আজ আবারও দাঁড়িয়েছেন তাঁরা।
এই দলের সদস্য খোকন আজকের পত্রিকাকে জানান, ‘মেশিন (হারভেস্টর) আইয়া আমাগো মজুরির দাম কম। সারা দিন কাম কইরা যে ময়না পাই, তেল, ডাইল, তরকারি কিনতে ফুরায় যায় গা। মাছ কিনাম কী দিয়া?
রুবেল নামের অপর একজন বলেন, ‘এই রোজা গেল একদিনও গোশত কিনবার পারি নাই। সবকিছুর দাম বাড়তি। এক কামলার ময়না দিয়ে বেগ ভর্তি বাজার অইনা।’
হালুয়াঘাট উপজেলার দর্শার পাড় এলাকার রোকন উদ্দিন (৫৫) দৈনিক ৮০০ টাকা পারিশ্রমিকে কাজ করেছেন ধুরাইল এলাকায়। নতুন কাজের আশায় আজও দাঁড়িয়েছেন এ হাটে। রোকন জানান, ছেলের পড়াশোনার খরচ জোগাতে এ বয়সে দিনমজুরি করতে হয় তাঁকে। তাঁর ছেলেও পড়াশোনার ফাঁকে তাঁর সঙ্গে দিনমজুরি করে।
সেখানেই কাজের সন্ধানে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় ২০ বছর বয়সী জুয়েল নামের এক যুবককে। তিনি জানান, ৬ মাস আগে বিয়ে করেছেন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাঁকে। ঘরে বৃদ্ধ বাবা-মা ও নতুন বউ। তাই কাজের সন্ধানে তিনিও দাঁড়িয়েছেন।
চোখে পড়ে অন্য দৃশ্যও। গত সপ্তাহে চার দিন এক গৃহস্থের বাড়িতে কাজ জুটলেও এ সপ্তাহে কোনো কাজের ডাক ছাড়াই প্রতিদিন বাড়ি ফিরে গেছেন ৬১ বছর বয়সী ফজলু হক।
আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘গরিব মানুষ আমি। জীবন পার করলাম মাইনসের বাড়ি কাম কইরা। এহন শেষ বয়সেও এই কাম পিছ ছাড়ে না।
হাটে কথা হয় শ্রমিক নিতে আসা ধুরাইল ইউনিয়নের আল আমিনের সঙ্গে। তিনি আজকের পত্রিকাকে জানান, বিলে ৫০ শতাংশ জমি আবাদ করেছেন। ধান পেকে গেছে। তার এলাকায় শ্রমিক না থাকায় এ হাটে এসেছেন শ্রমিকের সন্ধানে। দর-দাম চুকিয়ে শ্রমিককে সঙ্গে নিয়ে ফিরবেন তিনি।
ধারা বাজার এলাকার অপর এক গৃহস্থ রফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘হারভেস্টর মেশিনে ৭-৮ হাজার টাকা একরে ধান কাটতে পারছেন কৃষকেরা। তবে তুলনামূলক নিচু এবং ধান আনতে সুবিধা না হওয়ায় বাধ্য হয়ে শ্রমিক দিয়ে ধান কাটাতে হচ্ছে।’
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে প্রধান শিক্ষক ছাড়াই দীর্ঘদিন ধরে চলছে ১১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা। প্রধান শিক্ষকবিহীন এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালিত হচ্ছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে। অভিযোগ রয়েছে, যেসব ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালিত হচ্ছে, তাঁদের অনেকেরই প্রধান শিক্ষক হওয়ার যোগ
৭ ঘণ্টা আগেদুই দশক কিছুটা শান্ত থাকার পর কুড়িগ্রামের চিলমারী-রৌমারী-রাজিবপুর নৌপথে আবার ডাকাতের দৌরাত্ম্য বেড়েছে। এক মাসের ব্যবধানে দুবার ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এ দুই ঘটনায় আইনগত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। প্রতিরোধেও কার্যকর উদ্যোগ নেই স্থানীয় প্রশাসনের। আবার ডাকাতি শুরু হওয়ায় ১৪ কিলোমিটার এই নৌপথের নৌযান, যাত্রী
৭ ঘণ্টা আগেরাত ১০টার দিকে ওই দুই যুবক মোটরসাইকেলে করে আড়ংঘাটা থানার লতার বাইপাস মোড় লিংক রোড থেকে বাইপাস মহাসড়ক পার হচ্ছিলেন। এ সময়ে আফিলগেট থেকে খুলনাগামী একটি বাস তাঁদের ধাক্কা দেয়।
৮ ঘণ্টা আগেনোয়াখালীর হাতিয়ায় গভীর রাতে বসতঘরে আগুন লেগে নিমাই চন্দ্র মজুমদার ও তাঁর স্ত্রী মিলনবালার মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (৩১ জানুয়ারী) চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে বিকেল ৫টায় নিমাই চন্দ্রের মৃত্যু হয়। হাসপাতালে পৌছার পর রাত ৯টার দিকে মিলন বালাও মারা যান।
৮ ঘণ্টা আগে