Ajker Patrika

সন্তান রেখে উধাও মা, দায়িত্ব নিলেন চেয়ারম্যান

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
আপডেট : ০৮ এপ্রিল ২০২৩, ২২: ০৭
সন্তান রেখে উধাও মা, দায়িত্ব নিলেন চেয়ারম্যান

অসহায়ত্বের কথা বলে ময়মনসিংহের তারাকান্দায় এক বাড়িতে গত বৃহস্পতিবার রাতে আশ্রয় নেন দেড় বছরের সন্তানসহ এক মা। গতকাল শুক্রবার দুপুরে ওই বাড়িতে সন্তান রেখে উধাও হয়েছেন তিনি। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলে শিশুটির দেখভালের সাময়িক দায়িত্ব নিয়েছেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান। শিশুটির পরিবারের খোঁজে মাইকিংসহ প্রচার চালাচ্ছে প্রশাসন। 

বৃহস্পতিবার রাতে তারাকান্দা উপজেলার গালাগাঁও ইউনিয়নের ধারাকান্দী গ্রামের দিনমজুর সায়েদুল ইসলামের বাড়িতে অসহায়ত্বে কথা বলে শিশুছেলেকে নিয়ে আশ্রয় নেন ওই মা। এ সময় তিনি নাম-পরিচয় দেননি। পরদিন দুপুরে শিশুটিকে সায়েদুলের স্ত্রী মনোয়ারা বেগমের কাছে ফেলে উধাও হন তিনি। এ ঘটনা ওই দিন রাতে স্থানীয়রা পুলিশে জানান। 

সায়েদুলের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘প্রতিবেশী আলমগীর হোসেন বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে ছেলেসহ এক অসহায় নারীকে আমাদের ঘরে আশ্রয় দিতে বলেন। পরে মানবিক দিক বিবেচনা করে তাঁদের আশ্রয় দিলে পরদিন ছেলেকে রেখে মা পালিয়ে যান। বিষয়টি আমরা পুলিশকে জানাই। আজ দুপুরে শিশুটিকে ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রহমানের কাছে বুঝিয়ে দিই।’ 

ছেলেশিশুসহ মাকে আশ্রয় দেওয়ার বিষয়ে আলমগীর হোসেন বলেন, ‘সন্তানকে নিয়ে এক নারী থাকার আকুতি করছিলেন। আমাদের ঘরে জায়গা না থাকায় সায়েদুলের ঘরে নিয়ে যাই। কিন্তু এমন হবে জানলে তাঁকে আশ্রয়ের জন্য সহযোগিতা করতাম না। দোয়া করি প্রশাসন যেন শিশুটির পরিবারকে খুঁজে পায়।’ 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নির্দেশে শিশুটির দায়িত্ব নিয়েছেন বলে জানান গালাগাঁও ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আদালতের নির্দেশনার আগ পর্যন্ত শিশুটির সমস্ত দায়িত্ব আমি নিলাম। আমি আমার তত্ত্বাবধানে শিশুর সেবাযত্ন করব।’ 

তারাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়ের জানান, গতকাল শুক্রবার রাতে আলমগীরসহ স্থানীয় কয়েকজন থানায় বিষয়টি জানালে তা অভিযোগ আকারে নেয় পুলিশ। পরে বিষয়টি ইউএনওসহ সংশ্লিষ্টদের জানানো হয়। ওসি বলেন, ‘শিশুর পরিবারের খোঁজে প্রচার চালানো হচ্ছে। তার বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য আদালতে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

ইউএনও মেজাবে রহমত বলেন, ‘আজ সকালে শিশুটির থাকার সিদ্ধান্তের জন্য উপজেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আপাতত স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের হেফাজতে রাখা হয়েছে। আদালতে পুলিশের মাধ্যমে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। নির্দেশনা মোতাবেক আমরা পরবর্তী ব্যবস্থা নেব। আজ দুপুরে থানার ওসিকে সঙ্গে নিয়ে শিশুর খাবার, কাপড় কিনে দিয়ে এসেছি। শিশুটি ভালো রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত