Ajker Patrika

আগস্টে হত্যা মামলার সেই বাদীর এবার লাশ উত্তোলনে বাধা, ফিরে গেলেন ম্যাজিস্ট্রেট

ইসলামপুর (জামালপুর) প্রতিনিধি  
লাশ উত্তোলনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আসমা উল হুসনা এবং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার এসআই খাইরুল ইসলামসহ অন্যান্যরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
লাশ উত্তোলনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আসমা উল হুসনা এবং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার এসআই খাইরুল ইসলামসহ অন্যান্যরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ঢাকায় গুলিতে নিহত জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা রিপন মিয়ার (২৮) লাশ উত্তোলনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে বাধা দিয়েছেন মামলার বাদী ও নিহতের বড় ভাই আক্তার হোসেন।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে আদালতের নির্দেশে বকশীগঞ্জ উপজেলার বাট্টাজোড় ইউনিয়নের পানাতিয়াপাড়া গ্রামের পারিবারিক কবরস্থান থেকে রিপনের লাশ উত্তোলনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু আক্তার হোসেন লাশ উত্তোলনে বাধা দিলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও বকশীগঞ্জের সহকারী কমিশনার (ভূমি) আসমা উল হুসনা এবং মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা পূর্ব থানার এসআই খাইরুল ইসলাম লাশ উত্তোলন না করেই ফিরে যান।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট উত্তরায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন রিপন মিয়া। পরদিন তার লাশ নিজ গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। ঢাকায় সেলসম্যান হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি।

পরে ২৬ আগস্ট উত্তরা পূর্ব থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন রিপনের বড় ভাই আক্তার হোসেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানসহ ১৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও দুই শতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। মামলায় জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার সাবেক মেয়র, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় ১৩ জনের নামও রয়েছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই খাইরুল ইসলাম বলেন, ‘জুলাই-আগস্টের ঘটনার সময় রিপন নিহত হলেও তাকে ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন করা হয়। মামলার তদন্তের স্বার্থে লাশ উত্তোলনের জন্য আদালতে আবেদন করা হলে আদালত আদেশ দেন। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী লাশ উত্তোলনে গিয়েছিলাম।’

এ বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আসমা উল হুসনা বলেন, ‘মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আদালতের নির্দেশে আমরা রিপন মিয়ার লাশ উত্তোলন করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু রিপনের বড় ভাই ও মামলার বাদী আক্তার লাশ উত্তোলনে বাধা দেন। এ বিষয়ে আদালতের নির্দেশের পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।’

মামলার বাদী আক্তার হোসেন বলেন, ‘রিপন গুলিতে মারা গেছে, এ ব্যাপারে প্রমাণ আছে। লাশ উত্তোলনের ব্যাপারে আমাকে কিছুই জানানো হয়নি, তাই বাধা দিয়েছি।’

এদিকে আক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা পুঁজি করে চাঁদাবাজির অভিযোগও উঠেছে। গত ১৮ জানুয়ারি বকশীগঞ্জ পৌর শহরের একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলন করে নিহত রিপনের স্ত্রী খাদিজা বেগম অভিযোগ করেন, ‘আমার স্বামী উত্তরায় নিহত হলেও আমার ভাশুর মামলার বাদী হয়ে এলাকার নিরীহ লোকদের আসামি করেছেন। পরে তাঁদের ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজি করছেন।’ তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আক্তার হোসেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত