Ajker Patrika

শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানিয়ে জাতীয় পার্টির তোরণের যে ব্যাখ্যা মিলল

নিজস্ব প্রতিবেদক, ময়মনসিংহ থেকে
আপডেট : ১১ মার্চ ২০২৩, ১৩: ০৯
শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানিয়ে জাতীয় পার্টির তোরণের যে ব্যাখ্যা মিলল

ময়মনসিংহে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানিয়ে অস্থায়ী তোরণ নির্মাণ করেছে জাতীয় সংসদের বিরোধ দল জাতীয় পার্টি। স্থানীয় নেতারা বলছেন, বিকেলে শেখ হাসিনার সমাবেশে থাকবেন জাতীয় পার্টির কর্মীরাও। এ বিষয়ে দলের ভেতরে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। জাপার স্থানীয় নেতারা এটিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখলেও  কিছু জানা নেই বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতারা।

জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এটা আমাদের দলীয় সিদ্ধান্ত নয়। স্থানীয় নেতারা তোরণ লাগিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী গেছেন দলীয় সভায়। আমরা তো বিরোধী দল, আমাদের তো এ রকম তোরণ লাগানোর কথা নয়। স্থানীয়ভাবে কেন এগুলো লাগানো হয়েছে তা আমরা দেখব।’

এ দিকে প্রায় সাড়ে চার বছর পর আজ শনিবার ময়মনসিংহে আসছেন শেখ হাসিনা। আজ বেলা ৩টা থেকে ময়মনসিংহ সার্কিট হাউস মাঠের দলীয় জনসভায় বক্তব্য রাখবেন তিনি। শেখ হাসিনার আগমনে শুভেচ্ছা জানিয়ে জেলা ও নগরীর বিভিন্ন সড়কে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা লক্ষাধিক ব্যানার, পোস্টার, তোরণ লাগিয়েছেন। জনসমাবেশস্থল ও শহরের প্রবেশমুখসহ বিভিন্ন সড়কে জাতীয় পার্টির কয়েকটি তোরণ দেখা গেছে।

বিরোধী দলের তোরণ নির্মাণের বিষয়ে জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ময়মনসিংহ-৮ আসনের সংসদ সদস্য ফখরুল ইমামও দলটির মহাসচিবের মতো বক্তব্য দেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এটা তো আওয়ামী লীগের মিটিং। এখানে আমাদের কিছুই করার নেই। কারা, কোন গ্রুপ এই তোরণ নির্মাণ করেছে সেটাও জানি না।’

নগরীর কাচারি রোডে জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদের পৈতৃক বাড়ি সুন্দর মহল। এই বাড়ির সামনেই প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে বেশ কয়েকটি তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদের ছবি দিয়ে ওই তোরণে লেখা রয়েছে—‘ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে, তিলোত্তমা নগরী আমার প্রাণের শহর ময়মনসিংহে আপনার আগমনে আমি উচ্ছ্বসিত।’ এতে আরও লেখা রয়েছে—‘ব্রহ্মপুত্রের তীরে আপনাকে স্বাগতম মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।’

এসব তোরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদসহ সাবেক প্রেসিডেন্ট ও জাতীয় পার্টির প্রয়াত চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ, দলটির বর্তমান চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের, মহাসচিব  মুজিবুল হক চুন্নুসহ জেলার নেতাদের ছবি রয়েছে। কাচারি রোড ছাড়াও টাউন হল মোড় গাঙিনার পাড়সহ বেশ কয়েকটি সড়কে তোরণ নির্মাণ করেছে জাতীয় পার্টি।

ময়মনসিংহ মহানগর জাতীয় পার্টির সদস্যসচিব আবদুল আউয়াল সেলিম বলেন, ‘ময়মনসিংহ সদরের সংসদ সদস্য হচ্ছেন রওশন এরশাদ। এখানকার উন্নয়নের দাবিদার হচ্ছেন তিনি। কিন্তু এই দাবিগুলো পূরণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই হিসেবে আমাদের নেত্রী মনে করেন এই অঞ্চলের উন্নয়নের রূপকার প্রধানমন্ত্রী। তাই ওনাকে আমাদের দলের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানানো প্রয়োজন বলে মনে করেন বিরোধীদলীয় নেতা। সে কারণে তাঁর নির্দেশে আমরা প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে তোরণসহ বিলবোর্ড স্থাপন করেছি।’

প্রধানমন্ত্রীকে সম্মান জানানোর জন্যই তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে বলে জানান জাপার এই নেতা। দলীয় নেতা-কর্মীরাও জনসভায় যোগ দেবেন বলে জানান সেলিম। ২০০৮ সাল থেকেই ময়মনসিংহ-৪ আসন তথা সদরের সংসদ সদস্য রওশন এরশাদ। এখানে তাঁকে ঘিরেই জাতীয় পার্টির কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে।

বিরোধী দলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদের মুখপাত্র কাজী মামুনুর রশিদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ময়মনসিংহ-৪ আসনে অবস্থিত সার্কিট হাউস মাঠে জনসভায় বক্তব্য রাখবেন। এই আসনটি বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদের। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনা আমাদের সবার প্রধানমন্ত্রী। এ কারণে বিরোধীদলীয় নেতা তাঁর শহরে প্রধানমন্ত্রীকে উষ্ণ স্বাগতম জানিয়েছেন।’

কাজী মামুনুর রশিদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ ধরনের তোরণের মধ্য দিয়ে আমরা রাজনীতিতে একটি উদাহরণ তৈরি করেছি। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনাকে ময়মনসিংহে জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে স্বাগত জানানো হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘জাল রিপোর্টে’ কারাবাস

ভেনম রিসার্চ সেন্টার: সাপের বিষের ওষুধ দেশেই তৈরির চেষ্টা

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন: জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কাহিল ৫ অ্যান্টিবায়োটিক

আজকের রাশিফল: সহকর্মীকে জ্ঞান দিতে যাবেন না, প্রাপ্তিযোগে বাল্যকালের প্রেমপত্র

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর: পদ্মার দুর্গম চরে সক্রিয় ডজনখানেক বাহিনী

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

একাত্তর ও চব্বিশের পরাজিত শত্রুরা নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে: সেলিমুজ্জামান

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম। ছবি: আজকের পত্রিকা
মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম। ছবি: আজকের পত্রিকা

বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা এসেছে। কিন্তু স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি এবং ২০২৪ সালের পরাজিত শত্রুরা ঐক্যবদ্ধভাবে সেই নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে। শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯টায় গোপালগঞ্জের বড় বাজার পৌর মার্কেটে জেলা বিএনপির কার্যালয়ে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

সেলিমুজ্জামান সেলিম বলেন, যারা ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল, তারা আজও বাংলাদেশের অগ্রগতির বিরোধিতা করছে। তাদের কাছ থেকে জাতি ভালো কিছু আশা করতে পারে না। তিনি আরও বলেন, এখন দেশের প্রয়োজন দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে একটি রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠা করা। কারণ, দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি, শিক্ষা—সবকিছু নির্ভর করছে একটি নির্বাচিত সরকারের ওপর।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফা রূপরেখার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, বিএনপির জন্ম হয়েছে সংস্কারের মধ্য দিয়ে। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান একদলীয় শাসনব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, জনগণের মৌলিক অধিকার, নারীর শিক্ষা ও চাকরির সুযোগ সৃষ্টি, মহিলাবিষয়ক অধিদফতর প্রতিষ্ঠা—এসবই বিএনপির উদ্যোগে বাস্তবায়িত হয়েছে।

সভায় উপস্থিত ছিলেন গোপালগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শরীফ রাফিকুজ্জামান, ভারপ্রাপ্ত সদস্যসচিব আবুল খায়ের, গোপালগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, গোপালগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও ড্যাবের কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্যপ্রযুক্তি সম্পাদক কে এম বাবর আলী, সদস্য তৌফিকুল ইসলাম, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি সিকদার শহিদুল ইসলাম লেলিন, সাধারণ সম্পাদক ফজলুল কবির দারা, যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাহিত্য ও প্রকাশনা সহসম্পাদক মাহমুদুল হাসান বাপ্পী, গোপালগঞ্জ জেলা যুবদলের সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন লিপটন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সাজ্জাদ হোসেন হিরা, জেলা শ্রমিক দলের সদস্যসচিব মো. আবদুল্লাহ, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মিকাইল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, সিনিয়র সহসভাপতি ইমরুল হাসান প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘জাল রিপোর্টে’ কারাবাস

ভেনম রিসার্চ সেন্টার: সাপের বিষের ওষুধ দেশেই তৈরির চেষ্টা

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন: জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কাহিল ৫ অ্যান্টিবায়োটিক

আজকের রাশিফল: সহকর্মীকে জ্ঞান দিতে যাবেন না, প্রাপ্তিযোগে বাল্যকালের প্রেমপত্র

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর: পদ্মার দুর্গম চরে সক্রিয় ডজনখানেক বাহিনী

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বেতন-ভাতা বৃদ্ধিসহ ৪ দফা দাবিতে গ্রামীণ ডাক কর্মচারীদের মানববন্ধন

­যশোর প্রতিনিধি
আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে যশোর প্রেসক্লাবের সামনে দুই শতাধিক কর্মচারী মানববন্ধনে অংশ নেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে যশোর প্রেসক্লাবের সামনে দুই শতাধিক কর্মচারী মানববন্ধনে অংশ নেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

বেতন-ভাতা বৃদ্ধিসহ চার দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছেন যশোর গ্রামীণ ডাক কর্মচারী ইউনিয়নের সদস্যরা। আজ শনিবার (১ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে যশোর প্রেসক্লাবের সামনে দুই শতাধিক কর্মচারী এই মানববন্ধনে অংশ নেন।

মানববন্ধনে বক্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যশোরে গ্রামীণ ডাক বিভাগে ৫৫৩ জন কর্মচারী কর্মরত আছেন। আর সারা দেশে কর্মচারী রয়েছেন ২৬ হাজার। কিন্তু তাঁদের বেতনকাঠামো এখনো ব্রিটিশ আমলের পুরোনো কাঠামোতে রয়ে গেছে।

বক্তারা জানান, পোস্ট মাস্টারের বেতন ৪ হাজার ৪৬০ টাকা, পিয়নের বেতন ৪ হাজার ৩৫৪, রানারের বেতন ৪ হাজার ১৭৭ এবং আয়ার বেতন ৪ হাজার ৬০ টাকা। দ্রব্যমূল্যের বর্তমান বাজারে এই সামান্য বেতনে পরিবার-পরিজন নিয়ে খাবারের সংস্থান করা অসম্ভব। এর ওপর সন্তানদের শিক্ষা ও চিকিৎসার মতো দৈনন্দিন প্রয়োজন মেটানো লাগে। বক্তারা উল্লেখ করেন, বৈষম্য দূর করার চূড়ান্ত আন্দোলন গণ-অভ্যুত্থান হলেও গ্রামীণ ডাক বিভাগে এখনো সেই বৈষম্যমূলক বেতনকাঠামো বিদ্যমান।

গ্রামীণ ডাক কর্মচারীদের দাবিগুলো হলো—তাঁদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি করা, বর্তমান বাজারমূল্যের সঙ্গে বিবেচনা করে ন্যূনতম ২০ হাজার টাকার ওপরে নতুন পে স্কেল নির্ধারণ করা, বিলিকারীদের (ডাক বহনকারী) জন্য বাইসাইকেল ও পোশাকের ব্যবস্থা করা এবং উৎসব ভাতা নিশ্চিত করা।

গ্রামীণ ডাক কর্মচারী ইউনিয়ন যশোরের সাধারণ সম্পাদক আকাশ খান বলেন, ‘আমরা বর্তমানে জমির পর্চা বিলি, ড্রাইভিং লাইসেন্স, জরুরি চিঠিপত্র, ভিপি এবং মানি অর্ডারসহ সকল গুরুত্বপূর্ণ জিনিস মানুষের দুয়ারে দুয়ারে পৌঁছে দিই। অথচ আমাদের যে বেতনকাঠামো, তাতে বাজার করার টাকাও হয় না। পরিবার-স্বজনের দৈনন্দিন চাহিদা পূরণ করব কী করে? আমরা কষ্টে আছি। আমরা মানবেতর জীবন যাপন করছি। এই অবস্থা দেশে ২৬ হাজার কর্মচারীর।’

তাঁদের দাবি মানা না হলে তাঁরা বড় ধরনের আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন মানববন্ধন থেকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘জাল রিপোর্টে’ কারাবাস

ভেনম রিসার্চ সেন্টার: সাপের বিষের ওষুধ দেশেই তৈরির চেষ্টা

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন: জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কাহিল ৫ অ্যান্টিবায়োটিক

আজকের রাশিফল: সহকর্মীকে জ্ঞান দিতে যাবেন না, প্রাপ্তিযোগে বাল্যকালের প্রেমপত্র

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর: পদ্মার দুর্গম চরে সক্রিয় ডজনখানেক বাহিনী

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত সুবাস থাকে যে সড়কে

আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, ঝিনাইদহ 
আপডেট : ০১ নভেম্বর ২০২৫, ১২: ২০
ছাতিমগাছের সাদা ফুলে ভরে গেছে ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক মহাসড়কের দুই পাশ। সন্ধ্যার পর এসব ফুলের ঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়ে চারপাশে। ভোর পর্যন্ত এই সুবাস মুগ্ধ করে সবাইকে। ছবি: আজকের পত্রিকা
ছাতিমগাছের সাদা ফুলে ভরে গেছে ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক মহাসড়কের দুই পাশ। সন্ধ্যার পর এসব ফুলের ঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়ে চারপাশে। ভোর পর্যন্ত এই সুবাস মুগ্ধ করে সবাইকে। ছবি: আজকের পত্রিকা

সন্ধ্যায় ঝিনাইদহের একটি সড়ক পার হলেই পাশ থেকে ভেসে আসা মিষ্টি সুবাস যে কাউকে মুগ্ধ করবে। ফুলের ঘ্রাণ মুহূর্তে শরীর-মন চাঙা করে তুলবে।

ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক মহাসড়ক ঘেঁষে নানা জাতের গাছের সঙ্গে রয়েছে অনেক ছাতিমগাছ। এই গাছগুলো এখন সাদা ফুলে ভরপুর। দিনের বেলায় হয়তো অন্য গাছের ভিড়ে অনেকের দৃষ্টি এড়িয়ে যায়। তবে সূর্য ডুবলে বদলে যায় দৃশ্যপট। সন্ধ্যা হলে শিশিরের সঙ্গে ফুলের মিষ্টি গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে চারপাশে। ভোর পর্যন্ত এই সুবাস মোহিত করে সবাইকে।

ঝিনাইদহ শহর ছাড়িয়ে দশমাইল বাজার পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার সড়কে মাঝে মাঝেই ছাতিমগাছ। তবে সরকারি ভেটেরিনারি কলেজ, আব্দুর রউফ ডিগ্রি কলেজ ও রেশম উন্নয়ন বোর্ডের মাঠ এলাকায় এই গাছের সংখ্যা বেশি। সন্ধ্যার পর হালকা শীতের আবেশে এসব এলাকা পার হওয়ার সময় অন্যরকম অনুভূতি ছুঁয়ে যায় পথচারীদের।

সাগান্না গ্রামের কৃষক আফান মণ্ডল বলেন, ‘রাস্তার ধারে আমার ফসলি জমি রয়েছে। প্রতিদিন ভোরে খেত দেখতে আসি। ছাতিম ফুলের গন্ধে চারদিক ম-ম করে। খুব ভালো লাগে।’

একই গ্রামের বাসিন্দা আরিফ বলেন, ‘আমের চারা বাজার থেকে বৈডাঙ্গা পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে প্রচুর ছাতিমগাছ। সব গাছে অনেক ফুল ফুটেছে। সন্ধ্যার পর থেকে এই এলাকার বাতাস ফুলের সুবাসে ভরে থাকে। বন্ধুরা মিলে রাতে এখানে হাঁটতে আসি।’

ছাতিম ফুলের ঘ্রাণে মাতোয়ারা পুরো এলাকা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ছাতিম ফুলের ঘ্রাণে মাতোয়ারা পুরো এলাকা। ছবি: আজকের পত্রিকা

আব্দুর রউফ ডিগ্রি কলেজের সামনে রাস্তার ধারে টিনের বেড়া দিয়ে তৈরি আমেনাদের ঘর। ঘরের পাশেই সাত-আটটি ছাতিমগাছ। আমেনা খাতুন বলেন, ‘সন্ধ্যার পর থেকে আমাদের ঘর, উঠান—সব ফুলের গন্ধে ভরে যায়।’

ঝিনাইদহ সামাজিক বনায়ন নার্সারি ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক মহাসড়কের জোহান ড্রিম ভ্যালির সামনে থেকে বোড়াই গ্রাম পর্যন্ত রাস্তার ধারে কয়েক হাজার বনজ গাছের চারা রোপণ করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে ছাতিমগাছও আছে। বাতাস বিশুদ্ধকরণে এই গাছের ভূমিকা তাৎপর্যপূর্ণ। এ ছাড়া এর ঔষধি গুণও রয়েছে।

শরতের শেষে ফোটে ছাতিম ফুল। সন্ধ্যার পর শিশির পড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই ফুল থেকে তীব্র ঘ্রাণ বের হয়। রাত যত গভীর হয়, ঘ্রাণের তীব্রতা তত বাড়ে। উঁচু গাছ হওয়ায় এই ঘ্রাণ অনেক দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে।

সাধারণত গ্রামীণ রাস্তাঘাট, নদীর তীর, বসতবাড়ির অনাবাদি জায়গায় ছাতিমগাছ জন্মে। অঞ্চলভেদে এটিকে ছাতিয়ান, ছাইত্যান, ছাতইন, ছেতেনসহ নানা নামে ডাকা হয়। ছাতিমগাছ ১৫ থেকে ২০ মিটার উঁচু হয়। এটি চিরসবুজ দুধকষভরা সুশ্রী গাছ।

ছাতিমগাছ ‘অ্যাপোসাইনেসি’ বর্গের অন্তর্ভুক্ত একটি উদ্ভিদ। বৈজ্ঞানিক নাম অ্যালস্টনিয়া স্কলারিস। স্কলারিস শব্দটির সঙ্গে বিদ্যা, অর্থাৎ লেখাপড়ার যোগ আছে। এ ধরনের নামকরণের কারণ, ছাতিমের নরম কাঠ থেকে ব্ল্যাকবোর্ড ও পেনসিল তৈরি হয়।

এই গাছের আদি নিবাস ভারতীয় উপমহাদেশ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়। এর ছাল ও আঠা জ্বর, হৃদ্‌রোগ, হাঁপানি, ক্ষত, আমাশয় ও কুষ্ঠরোগের জন্য উপকারী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘জাল রিপোর্টে’ কারাবাস

ভেনম রিসার্চ সেন্টার: সাপের বিষের ওষুধ দেশেই তৈরির চেষ্টা

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন: জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কাহিল ৫ অ্যান্টিবায়োটিক

আজকের রাশিফল: সহকর্মীকে জ্ঞান দিতে যাবেন না, প্রাপ্তিযোগে বাল্যকালের প্রেমপত্র

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর: পদ্মার দুর্গম চরে সক্রিয় ডজনখানেক বাহিনী

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাতিয়ার নলচিরা-চেয়ারম্যানঘাট রুটে নতুন সি-ট্রাক চালু

হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
গতকাল বিকেলে দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে সি-ট্রাকটি উদ্বোধন করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
গতকাল বিকেলে দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে সি-ট্রাকটি উদ্বোধন করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

নোয়াখালীর হাতিয়ায় নদী পারাপারের সুবিধার্থে নলচিরা-চেয়ারম্যানঘাট রুটে নতুন করে যুক্ত হয়েছে সি-ট্রাক ‘এস টি সাঙ্গু’। শনিবার (১ নভেম্বর) সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে এই সি-ট্রাক যাত্রী পরিবহন কার্যক্রম শুরু করে। এর আগে গতকাল বিকেলে দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে সি-ট্রাকটি উদ্বোধন করা হয়।

নতুন সি-ট্রাকটি চালুর ফলে হাতিয়া মূল ভূখণ্ড ও চেয়ারম্যানঘাট রুটের যাত্রীদের দীর্ঘদিনের ভোগান্তি কিছুটা লাঘব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

সি-ট্রাক কর্তৃপক্ষ জানায়, নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী প্রথম ট্রিপে নলচিরা ঘাট থেকে সকাল ৯টায় ছাড়বে এবং চেয়ারম্যানঘাট থেকে সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে যাত্রা শুরু করবে। দ্বিতীয় ট্রিপে নলচিরা ঘাট থেকে দুপুর সাড়ে ১২টায় ছাড়বে এবং চেয়ারম্যানঘাট থেকে বেলা সাড়ে ৩টায় ছেড়ে যাবে। তবে দ্বিতীয় ট্রিপ যাত্রীর ওপর নির্ভর করবে।

সি-ট্রাক উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক ইসমাইল হোসেন, পৌরসভা যুবদলের আহ্বায়ক মুমিন উল্লাহ রাসেল, পৌরসভা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব খন্দকার সোহেল, বিএনপি নেতা অলি উল্লাহসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও যাত্রীরা।

গতকাল বিকেলে দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে সি-ট্রাকটি উদ্বোধন করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
গতকাল বিকেলে দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে সি-ট্রাকটি উদ্বোধন করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

উপস্থিত বক্তারা বলেন, নতুন এই সি-ট্রাক চালুর মাধ্যমে হাতিয়ার নলচিরা-চেয়ারম্যানঘাট রুটে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনে নতুন গতি আসবে। একই সঙ্গে দ্বীপবাসীর সঙ্গে মূল ভূখণ্ডের যোগাযোগ আরও সহজ ও নিরাপদ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তাঁরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘জাল রিপোর্টে’ কারাবাস

ভেনম রিসার্চ সেন্টার: সাপের বিষের ওষুধ দেশেই তৈরির চেষ্টা

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন: জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কাহিল ৫ অ্যান্টিবায়োটিক

আজকের রাশিফল: সহকর্মীকে জ্ঞান দিতে যাবেন না, প্রাপ্তিযোগে বাল্যকালের প্রেমপত্র

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর: পদ্মার দুর্গম চরে সক্রিয় ডজনখানেক বাহিনী

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত