Ajker Patrika

ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়ক ঘেঁষে ময়লার স্তূপ, মানুষের দুর্ভোগ

প্রতিনিধি
ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়ক ঘেঁষে ময়লার স্তূপ, মানুষের দুর্ভোগ

ময়মনসিংহ: ঢাকা–ময়মনসিংহ মহসড়কের পাশে ত্রিশাল পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সুতিয়া নদীর ধারে গড়ে উঠেছে বিশাল ময়লার স্তূপ। আবার এই ময়লার স্তূপের ওপরই শোভা পাচ্ছে বড় সাইনবোর্ড, যেখানে লেখা—`এখানে ময়লা ফেলা নিষেধ।' সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) নিষেধাজ্ঞা শুধু এই সাইনবোর্ডেই মানা হয়েছে। স্বয়ং ত্রিশালের পৌর কর্তৃপক্ষই প্রতি দিন মহাসড়কের পাশে বর্জ্য ফেলছে।

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ঘেঁষে সওজের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ত্রিশাল পৌরসভা থেকে প্রতিদিনই ময়লা ফেলা হচ্ছে সুতিয়া নদীর ধারে। ত্রিশাল বাজার থেকে নওধার হয়ে যে রাস্তাটি ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে মিশেছে, সেই স্থানেই এই ময়লার স্তূপ। ময়লার দুর্গন্ধে দুটি রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী লোকজনকে রুমাল বা কাপড়ে মুখ ডেকে চলাচল করতে হচ্ছে। এখানে ফেলা ময়লাগুলো আবার নদীর পানির সঙ্গে মিশে পানিকেও দূষিত করছে। পাশপাশি কঠিন বর্জ্য নদীতে পড়ছে বলে নদীও ভরাট হচ্ছে ক্রমেই।

এ বিষয়ে  স্থানীয় নওধার এলাকার এহ্তেশামুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে পৌরসভার ময়লা এখানে ফেলা হচ্ছে। ময়লাগুলো নদীর ধারে ও রাস্তার কিনারে ফেলতে পানি ও পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। লোকজনকে মুখে হাত চেপে বা রুমাল ব্যবহার করে চলাচল করতে হচ্ছে। তবে বেশ কিছুদিন হলো এখানে ময়লা ফেলতে নিষেধ করে সড়ক ও জনপদ বিভাগের (সওজ) পক্ষ থেকে একটি সাইনবোর্ড টানানো হয়েছে।

পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আওলাদুল ফরহাদ বলেন, `নিষেধ সত্ত্বেও পৌরসভার বর্জ্য এখানে ফেলা হচ্ছে। লোকালয় থেকে দূরে কোথাও এই ময়লা পরিবেশসম্মত উপায়ে সংরক্ষণ করা উচিত। সম্ভব হলে এগুলোকে রিসাইকেল করে জৈব শক্তিতে রূপান্তর করা যেতে পারে।''

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. আশরাফ আলী সিদ্দিকী আজকের পত্রিকাকে বলেন, `আমরা বুঝে না বুঝেই এভাবে যত্রতত্র ময়লা, আবর্জনা ফেলছি। এতে পানি ও বাতাস। এভাবে ময়লা, আবর্জনা ফেলে আমরা পরিবেশকে মারাত্মকভাবে দূষিত করছি। অথচ পরিবেশসম্মত উপায়ে লোকালয় থেকে দূরে এগুলো সংরক্ষণ করে এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে দূষণ কমানো সম্ভব। সুস্থ ও সুন্দরভাবে বাঁচতে হলে আমাদের সচেতন হওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই। আমরা অনেক শিক্ষিত ও ধনী হচ্ছি, কিন্তু সচেতন হচ্ছি না।'

বিষয়টি নিয়ে ত্রিশাল পৌর মেয়রের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানালেন ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, `পৌরসভার বর্জ্য এভাবে নদীর পাড়ে, মহাসড়কের পাশে ফেলায় পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। এ বিষয়ে পৌর মেয়রের সঙ্গে কথা বলব। পরিবেশসম্মত উপায়ে লোকালয় থেকে নিরাপদ দূরত্বে যেন ময়লা, আবর্জনা সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়।'

ত্রিশাল পৌরসভার মেয়র এ বি এম আনিছুজ্জামান আনিছ ময়লা, আবর্জনা ফেলার বিষয়ে বলেন, পৌরসভার বর্জ্য ফেলার জন্য এখনো নির্দিষ্ট কোনো জায়গা করতে পারিনি। তবে ডাম্পিং স্টেশন স্থাপনের জন্য পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের চং পাড়ায় পাঁচ একর জায়গা অধিগ্রহণের জন্য দেখা হয়েছে। আশা করছি এক বছরের মধ্যে এই সমস্যার সমাধান হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত