Ajker Patrika

৭৩ কৃষি কর্মকর্তার পদ শূন্য, ভোগান্তিতে কৃষকেরা

মাদারীপুর প্রতিনিধি
ফসলের পরিচর্যায় ব্যস্ত এক কৃষক। ছবি: আজকের পত্রিকা
ফসলের পরিচর্যায় ব্যস্ত এক কৃষক। ছবি: আজকের পত্রিকা

মাদারীপুরের বিভিন্ন উপজেলার ইউনিয়নগুলোতে পর্যাপ্ত কৃষি উপসহকারী কর্মকর্তা পদায়ন না থাকায় নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে কৃষকদের। এতে করে চরমভাবে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে জেলার কৃষকদের।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাদারীপুর জেলায় ৫৯টি ইউনিয়ন ও ৪টি পৌরসভা আছে। সে অনুয়ায়ী এখানে ১৮১ জন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা থাকার কথা। কিন্তু উপসহকারী কর্মকর্তা আছে মাত্র ১০৮ জন। দীর্ঘদিন ধরে জেলায় ৭৩ জন কর্মকর্তা নেই। প্রতিটি ইউনিয়নে তিনজন করে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা থাকার নিয়ম আছে। জনবলসংকটের কারণে কৃষকেরা ঠিকমতো পরামর্শ বা দিকনির্দেশনা পাচ্ছে না বলে একাধিক কৃষক সূত্রে জানা গেছে।

জানতে চাইলে মাদারীপুরের ঝাউদি ইউনিয়নের মাদ্রা গ্রামের কৃষক মো. জয়নাল বলেন, ‘আমরা যদি সব সময় কৃষি কর্মকর্তাদের দিকনির্দেশনায় কাজ করতে পারতাম, তা হলে আমাদের অনেক উপকার হতো। আমরা আরও বেশি ফসল ফলাতে পারতাম। কিন্তু আমরা সব সময় তাঁদের পাই না।’

কালকিনি উপজেলার রমজানপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ রমজানপুর গ্রামের কৃষক আয়ুইব আলী বলেন, ‘দু-তিন মাস পরপর আমাদের এখানে কৃষি অফিস থেকে কর্মকর্তা আসেন। তখন তিনি আমাদের নানা পরামর্শ দেন। কিন্তু তাতে আমাদের তেমন একটা কাজে লাগে না। কারণ, বেশি ভাগ সময়ই আমরা একাই আমাদের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী কাজ করে থাকি।’

রাজৈর উপজেলার আমগ্রামের কৃষক কালাম মৃধা বলেন, ‘নিজেদের অভিজ্ঞতা ও উদ্যোগে বাজার থেকে সার, কীটনাশক কিনে জমিতে দিতে হয়। কিন্তু আমাদের যদি একজন কৃষি কর্মকর্তা সব সময় পরামর্শ দিতেন। তাহলে আমরা সবকিছু ঠিকমতো করতে পারতাম। আর এতে করে ফসলও বেশি হতো। আমাদেরও অনেক উপকার হতো।’

এ বিষয়ে মাদারীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. রহিমা খাতুন বলেন, ‘ইতিমধ্যেই জনবল চাহিদার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে জানানো হয়েছে। আশা করছি, খুব দ্রুত মাদারীপুর জেলায় ইউনিয়নভিত্তিক উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার সংকট কমে যাবে। আর এতে করে কৃষকেরা উপকৃত হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বাবুবাজার সেতুর যানজটে ভোগান্তিতে লাখো মানুষ

  • ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান প্রবেশপথ এই সেতু।
  • আধা মিনিটের রাস্তা পার হতে লাগছে ৩-৪ ঘণ্টা।
  • উল্টো পথে অটো-ভ্যান, সেতুর ওপর অস্থায়ী বাজার।
কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) সংবাদদাতা
বাবুবাজার সেতুর ওপর যানবাহনের সারি। দীর্ঘ যানজটে ভোগান্তিতে পড়ছে যাত্রীরা। সম্প্রতি সেতুর জিঞ্জিরা পয়েন্টে। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাবুবাজার সেতুর ওপর যানবাহনের সারি। দীর্ঘ যানজটে ভোগান্তিতে পড়ছে যাত্রীরা। সম্প্রতি সেতুর জিঞ্জিরা পয়েন্টে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকার বাবুবাজার এলাকায় বুড়িগঙ্গা নদীর ওপর নির্মিত বাবুবাজার সেতু সাধারণ মানুষের জন্য এখন যেন গলার কাঁটা। রাজধানীর সঙ্গে মাওয়া, মুন্সিগঞ্জ এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোর সড়ক যোগাযোগের প্রধান প্রবেশদ্বার এটি। ১৯৯৪ সালে নির্মাণকাজ শুরু হওয়া সেতুটি ২০০২ সালের মে মাসে যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এটির দৈর্ঘ্য ৭৫০ মিটার, প্রস্থ ১৭ দশমিক ৫ মিটার। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মানুষের চাপ বেড়ে যাওয়ায় এই সেতুকে কেন্দ্র করে বেড়েছে যানজট। এটি পরিণত হয়েছে লাখো মানুষের দুর্ভোগের স্থানে।

এ বিষয়ে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা ও যানজট নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা আছে। বাবুবাজার সেতুর যানজট নিয়ে দ্রুত কাজ শুরু করব। কোনো অসাধু কর্মকর্তা অবৈধ স্টেশনসংক্রান্ত সুবিধা নিলে তা কঠোরভাবে দমন করা হবে।’

কেরানীগঞ্জ, নবাবগঞ্জ, দোহার, সিরাজদিখান, লৌহজংসহ দক্ষিণাঞ্চলের অসংখ্য মানুষ প্রতিদিন এই সেতু দিয়ে ঢাকায় প্রবেশ করে। মিটফোর্ড হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগী আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রেও এটি ব্যবহার করতে হয় তাদের। অথচ যানজটের কারণে মাত্র আধা মিনিটের রাস্তা পার হতে সময় লাগে তিন থেকে চার ঘণ্টা পর্যন্ত।

এতে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি ছাড়াও জরুরি চিকিৎসাসেবা বাধাগ্রস্ত হয় অনেকের। যানজটে যথাসময়ে হাসপাতালে পৌঁছাতে না পেরে মাঝপথে রোগীর অবস্থা আরও সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে।

ভুক্তভোগীরা জানান, উল্টো পথে অটোরিকশা ও ভ্যানের বিশৃঙ্খলা, সেতুর ওপর অস্থায়ী বাজার, দুই পাশে অবৈধ সিএনজি, ট্রাক ও বাসস্টেশন গড়ে ওঠা, সড়কে স্থায়ীভাবে পার্ক করা গাড়ি; সব মিলিয়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত যানজট লেগে থাকে। একদিকে প্রশাসনিক তদারকির অভাব, অন্যদিকে নিয়মনীতি না মানার প্রবণতায় পুরো এলাকায় দেখা যায় গাড়ির দীর্ঘ সারি।

সাইফুল করিম নামের একজন পথচারী বলেন, অবিলম্বে এই সমস্যার সমাধান না হলে সাধারণ মানুষের রক্ষা নেই। মুমূর্ষু রোগীদের বহনকারী গাড়ি ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকে। এতে ঢাকার হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে, অথচ প্রশাসন নীরব। পান্না নামের একজন গৃহবধূ বলেন, ‘ব্রিজে এমন যানজট যে চিনকুটিয়া চৌরাস্তা থেকে গুলিস্তান পর্যন্ত একটানা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। বাচ্চাদের স্কুলে আনা-নেওয়াতেও অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে আমাদের।’

কদমতলী চৌরাস্তার আরিফ খান বলেন, লাখো মানুষের যাতায়াতের সুবিধা হলেও বাবুবাজার সেতু

এখন নিত্যদিনের দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী নতুন সেতু নির্মাণ, অবৈধ দখল উচ্ছেদসহ কার্যকর তদারকি না হলে এই ভোগান্তি আরও বাড়বে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, সেতুতে ২০০-২৫০ অটো-ভ্যান চলাচল করে। এগুলোর প্রতিটি থেকে মাসে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা ওঠানো হয়; যা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের পকেটে ঢোকে। এটা বন্ধ করতে না পারলে যানজট কমবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাজশাহীর ৬টি আসন: বিএনপির কাঁটা বঞ্চিতরা, ঐক্যবদ্ধ জামায়াত

  • তিন আসনে বিএনপির মনোনয়নবঞ্চিত নেতাদের সমর্থকেরা বিক্ষোভ করছেন।
  • ঐক্যবদ্ধভাবে ভোটের মাঠে রয়েছেন জামায়াতের নেতারা।
  • তিনটি আসনে প্রার্থী দিতে চায় জাতীয় নাগরিক পার্টি।
 রিমন রহমান, রাজশাহী
শরীফ উদ্দিন, মিজানুর রহমান মিনু, মুজিবুর রহমান, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, শফিকুল হক মিলন, আবু সাঈদ চাঁদ, জিয়াউর রহমান, আব্দুল বারী ও নুরুজ্জামান লিটন। ছবি: সংগৃহীত
শরীফ উদ্দিন, মিজানুর রহমান মিনু, মুজিবুর রহমান, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, শফিকুল হক মিলন, আবু সাঈদ চাঁদ, জিয়াউর রহমান, আব্দুল বারী ও নুরুজ্জামান লিটন। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন ঘোষণার পর অস্থিরতা দেখা দিয়েছে রাজশাহীর তিনটি সংসদীয় আসনে। ছয়টি আসনের মধ্যে এই তিন আসনে মনোনয়নবঞ্চিত নেতাদের অনুসারীরা প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে নানা কর্মসূচি পালন করছেন। প্রার্থী ঘোষণার পর বিএনপিতে এমন সংকট দেখা দিলেও ভিন্ন চিত্র তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী জামায়াতে ইসলামী। সব আসনে ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নেমেছেন দলটির নেতারা।

এ ছাড়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ছয়টি, খেলাফত মজলিস পাঁচটি, বাসদ তিনটি, গণসংহতি আন্দোলন দুটি, গণঅধিকার পরিষদ একটি, এবি পার্টি তিনটি, বিজেপি একটিসহ কয়েকটি দলের প্রার্থীরা ভোটের মাঠে নেমেছেন। জাতীয় নাগরিক পার্টিও (এনসিপি) অন্তত তিনটি আসনে প্রার্থী দিতে চায়। সব মিলিয়ে নির্বাচনমুখী এসব দলের কার্যক্রমে এলাকায় ভোটের আবহ তৈরি হয়েছে।

রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) শরীফ উদ্দিন। তাঁর ভাই ব্যারিস্টার আমিনুল হক এই আসনের তিনবারের এমপি ও মন্ত্রী ছিলেন। আরেক ভাই এম এনামুল হকও একবার দলীয় মনোনয়ন পেয়েছিলেন। সেই ধারাবাহিকতায় দল বেছে নিয়েছে শরীফকে। স্বাধীনতার পর থেকে এই আসনে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ পাঁচবার করে, জামায়াতে ইসলামী একবার ও একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী একবার জয়ী হয়েছেন। আওয়ামী লীগের পাঁচবারের মধ্যে ২০১৪ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত তিনটি নির্বাচন নিয়ে রয়েছে বিতর্ক। বিএনপির ‘ঘাঁটি’ হিসেবে পরিচিত এই আসন পুনরুদ্ধারে প্রার্থী করা হয়েছে শরীফ উদ্দিনকে।

তবে তাঁর বিরোধিতা করে মাঠে নেমেছেন আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী সুলতানুল ইসলাম তারেকের অনুসারীরা। তাঁরা বিক্ষোভ ও মহাসড়ক অবরোধের মতো কর্মসূচি পালন করছেন। তারেক অনুসারীদের আশা, শেষ পর্যন্ত এখানে প্রার্থী বদল করা হবে।

রাজশাহী-১ আসনে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মুজিবুর রহমান দলের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে মাঠে আছেন। এ ছাড়া গণঅধিকার পরিষদের মীর মো. শাহজাহান, এবি পার্টির মুহাম্মাদ আব্দুর রহমান মুহসেনী, বাসদের আফজাল হোসেন ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আরিফুল ইসলাম এই আসনে দলের মনোনীত প্রার্থী। এনসিপির মহানগরের সদস্যসচিব আতিকুর রহমানও এই আসনে প্রার্থী হতে পারেন।

রাজশাহী সিটি করপোরেশন এলাকা নিয়ে গঠিত রাজশাহী-২ (সদর) আসন। ১৯৮৬ সালের নির্বাচনের আগে সীমানা পুনর্গঠিত হয় এই আসনে। আসনটিতে বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন পেয়েছেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু। মনোনয়ন ঘোষণার আগে নগর বিএনপির একটি অংশ তাঁর বিরোধিতা করে আসছিল। তাঁরা এখানে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে প্রার্থী চাচ্ছিলেন। মনোনয়ন ঘোষণার পর রিজভী এসে সবাইকে এক কাতারে এনেছেন। তাই এই আসনে বিএনপির কোনো দ্বন্দ্ব-বিভেদ নেই। আসনটিতে জামায়াতের প্রার্থী মোহাম্মদ জাহাঙ্গীরও নেতা-কর্মীদের নিয়ে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন মহানগর এনসিপির আহ্বায়ক মোবাশ্বের আলীও।

রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনেরও সীমানা পুনর্গঠন করা হয় ১৯৮৬ সালের নির্বাচনের আগে। এরপর বিএনপি তিনবার, আওয়ামী লীগ চারবার, জাতীয় পার্টি দুবার ও বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ একবার জয়ী হয়েছে। এই আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসনবিষয়ক সহসম্পাদক শফিকুল হক মিলন। তাঁকে ‘বহিরাগত’ উল্লেখ করে প্রার্থী বদলের দাবিতে মাঠে আছেন দুই মনোনয়নপ্রত্যাশী রায়হানুল আলম রায়হান ও নাসির হোসেনের অনুসারীরা। এই আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ ভোটের মাঠে আছেন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ থেকে ফজলুর রহমান, এবি পার্টি থেকে আফজাল হোসেন, খেলাফত মজলিস থেকে গোলাম মোস্তফা, গণসংহতি আন্দোলন থেকে জুয়েল রানা ও গণতন্ত্র মঞ্চ থেকে শফিকুর রহমান বাবর মনোনয়ন পেয়েছেন। তবে তাঁদের ভোটের মাঠে দেখা যায় না।

রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সীমানা পুনর্গঠনের পর বিএনপি তিনবার, আওয়ামী লীগ পাঁচবার ও জাতীয় পার্টি এবং বাংলাদেশ মুসলিম লীগ একবার করে জয় পেয়েছে। এই আসনে বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডি এম জিয়াউর রহমান জিয়া। তাঁকে নিয়ে নেতা-কর্মীদের চরম অসন্তোষ। এখানে বিক্ষোভ-সমাবেশের মতো কর্মসূচি পালিত না হলেও মনোনয়ন ঘোষণার পরও নেতা-কর্মীদের বড় অংশই জিয়ার কাছে যাচ্ছে না। অনেকটা কর্মী সংকটে পড়েছেন জিয়া। সম্প্রতি প্রার্থী বদলের দাবিতে উপজেলা বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের ৩৭ জন নেতা লিখিতভাবে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করেছেন।

এই আসনে জামায়াতের প্রার্থী ডা. আবদুল বারী সরদার। এ ছাড়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ থেকে আবু মুসা, বাসদ থেকে ফিরোজ আলম, খেলাফত মজলিস থেকে ফেরদাউসুর রহমান ও গণতন্ত্র মঞ্চ থেকে ভাসানী জনশক্তি পার্টির আবু ইউসুফ সেলিম মনোনয়ন পেয়েছেন। এনসিপি থেকে মীর ফারুক হোসেন, জাতীয় পার্টির ফারুক হোসেন ছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারেন আবু হেনা মোস্তফা কামাল।

রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসন পুনর্গঠনের পর জাতীয় পার্টি একবার, বিএনপি চারবার এবং আওয়ামী লীগ ছয়বার জয় পেয়েছে। এর মধ্যে সর্বশেষ তিনটি বিতর্কিত নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা জয় পান। এই আসনে এবার বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন নজরুল ইসলাম মণ্ডল। তাঁকেও বদলের জন্য দুই উপজেলায় বিক্ষোভ-সমাবেশ ও মহাসড়ক অবরোধ হচ্ছে। মনোনয়নপ্রত্যাশী আবু বকর সিদ্দিক, ইশফা খায়রুল হক ও নাঈম মোস্তফার সমর্থকেরা এসব কর্মসূচি পালন করে আসছেন। এই আসনে জামায়াতের প্রার্থী নুরুজ্জামান লিটন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের রুহুল আমিন, খেলাফত মজলিসের মুফতি আব্দুল হামিদ ও এলডিপির জহুরা শারমিন মাঠে আছেন।

রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনে স্বাধীনতার পর জাতীয় পার্টি দুবার, বিএনপি চারবার ও আওয়ামী লীগ পাঁচবার জয় পায়। এই আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন দলের জেলা আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ। আসনটিতে জামায়াতের প্রার্থী নাজমুল হক, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমিনুল ইসলাম ও খেলাফত মজলিসের তোফায়েল আহমেদ ভোটের মাঠে আছেন। এ ছাড়া আসনটিতে প্রার্থী হতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন এনসিপির বিভাগীয় সংগঠক ইমরান ইমন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বাগেরহাটের চিতলমারী: হাসপাতাল চলছে ২ চিকিৎসকে

  • উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মাত্র তিনজন চিকিৎসক আছেন, সেবা দেন দুজন।
  • যে দুজন চিকিৎসক সেবা দিচ্ছেন, তাঁরাও মার্চে চলে যাবেন ঢাকায়।
  • প্রায় চার শ রোগী প্রতিদিন হাসপাতালটিতে চিকিৎসা নিতে আসে।
সেলিম সুলতান সাগর, চিতলমারী (বাগেরহাট) 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলায় প্রায় ২ লাখ মানুষের বসবাস। এই ২ লাখ মানুষের চিকিৎসাসেবায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মাত্র দুজন চিকিৎসক কাজ করছেন। রাতদিন ২৪ ঘণ্টা সেবা দিতে গিয়ে তাঁরা এখন হিমশিম খাচ্ছেন। যে দুজন চিকিৎসক বর্তমানে সেবা দিচ্ছেন, তাঁরাও উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের জন্য আগামী মার্চে ঢাকায় চলে যাবেন। তখন এ উপজেলার সাধারণ মানুষের চিকিৎসাসেবা বন্ধ হয়ে যাবে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, প্রায় ২ লাখ মানুষের জন্য ৫০ শয্যার এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বর্তমানে তিনজন চিকিৎসক আছেন। তবে তাঁদের মধ্যে একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী। তাই দুজন চিকিৎসক দিয়েই চলছে চিকিৎসাসেবা।

সম্প্রতি উপজেলা মাসিক আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা চিকিৎসক শর্মী রায় এ বিষয়ে জানিয়েছেন।

জানা গেছে, এ উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের ৬৩টি ওয়ার্ডের ১২৮টি গ্রাম থেকে প্রতিদিন প্রায় ৪০০ রোগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসে। তাদের অধিকাংশই অসহায় ও গরিব। বর্তমানে এখানে মোট ১৬৪টি পদের মধ্যে ৫১টি পদই শূন্য রয়েছে। এর মধ্যে ইউনিয়ন পর্যায়সহ ২৭ জন চিকিৎসকের স্থলে ১০ জন কর্মরত আছেন। তাঁদের মধ্যে দুজন প্রেষণে (ডেপুটেশনে) কর্মরত। এখানে বর্তমানে আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও), জুনিয়র কনসালট্যান্ট (সার্জারি), জুনিয়র কনসালট্যান্ট (স্কিন অ্যান্ড ভিডি), জুনিয়র কনসালট্যান্ট (অপথালমোলজি), দুজন জুনিয়র কনসালট্যান্ট (শিশু), জুনিয়র কনসালট্যান্ট (মেডিসিন), জুনিয়র কনসালট্যান্ট (কার্ডিওলজি), জুনিয়র কনসালট্যান্ট (অর্থোপেডিক), জুনিয়র কনসালট্যান্ট (অ্যানেসথেসিওলজি), দুজন সহকারী সার্জন ও ইউনিয়ন পর্যায়ে ৪ জন সহকারী সার্জনের পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে।

এ ছাড়া এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রধান সহকারী কাম হিসাবরক্ষক, পরিসংখ্যানবিদ, ক্যাশিয়ার, স্টোরকিপার, অফিস সহকারী কাম মুদ্রাক্ষরিক, নার্সিং সুপারভাইজার, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব), মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (এসআই), সহকারী নার্স, স্বাস্থ্য সহকারী ১৭টিসহ দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির ২৫টি, চতুর্থ শ্রেণির ৬টি পদসহ মোট ৫১টি পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে।

এদিকে জনবলসংকটের কারণে প্রতিদিন দূরদূরান্ত থেকে আসা অসহায়, গরিব রোগীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তাঁরা বলছেন, হাসপাতালে এসে ঠিকমতো সেবা পাওয়া যায় না। চিকিৎসক না থাকায় সেবা নিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। এ সংকট দ্রুত দূর করতে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও জানান তাঁরা।

এ বিষয়ে কথা হয় চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা সুরশাইল গ্রামের রুহুল আমিন মিঠু, সোহেল সুলতান, মো. টিটাল শেখ ও ব্রহ্মগাতি গ্রামের মো. কামাল বিশ্বাসের সঙ্গে। তাঁরা অভিযোগ করেন, এখানে চিকিৎসা নিতে এলে কাঙ্ক্ষিত বিভাগের চিকিৎসক পাওয়া যায় না। চিকিৎসক যাঁরা আছেন, তাঁদের দিয়ে দেখাতে গেলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। তাঁরা জরুরি ভিত্তিতে শূন্য পদগুলোয় চিকিৎসক নিয়োগের জোর দাবি জানান।

চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ফার্মাসিস্ট শিশির মজুমদার ও ক্যাশিয়ার মো. কুতুবুদ্দিন বলেন, ‘পদগুলো শূন্য থাকায় আমাদের একেকজনকে ৪-৫ জনের দায়িত্ব পালন করতে হয়। তাতেও আমাদের কোনো অসুবিধা নেই। কিন্তু চিকিৎসকের সংকটে রোগীদের অনেক ভোগান্তি হচ্ছে। এ সমস্যা দূর করা খুব জরুরি।’

চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও মুক্তি বিশ্বাস বলেন, ‘সেবার ব্রত নিয়ে আমরা

কাজ করছি। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সব কার্যক্রম চালু আছে। আমাদের দুজন চিকিৎসকের ওপর দিয়ে অনেক চাপ যাচ্ছে। শূন্য পদগুলো পূরণ করা খুব দরকার।’

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা চিকিৎসক শর্মী রায় জানান, বর্তমানে এখানে তিনজন চিকিৎসক কাজ করছেন। তাঁদের মধ্যে একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী। তাই দুজন চিকিৎসক রাতদিন ২৪ ঘণ্টা সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন। এ দুজনও উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের জন্য আগামী মার্চে ঢাকায় চলে যাবেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাজশাহীর দুর্গাপুর: ভেজাল সার কিনে প্রতারিত কৃষক

  • জব্দ করা ২০ কেজি নকল সার ধ্বংস করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
  • মোড়কে ৩৬% দস্তা লেখা হলেও ল্যাব পরীক্ষা করে মিলেছে ১%।
দুর্গাপুর (রাজশাহী) প্রতিনিধি  
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

চকচকে মোড়কে লেখা সারে জিংকের (দস্তা) মাত্রা ৩৬ শতাংশ আর সালফেট ১৭.৫ শতাংশ। মোড়কে এমন তথ্যে ভরসা করে বাজার থেকে সার কিনছেন কৃষকেরা।

তবে ল্যাব পরীক্ষায় জানা গেছে, ছোয়াদ অ্যাগ্রো অ্যান্ড ডেইরি কোম্পানির ভাইটাল জিংক নামের মোড়কের এই দস্তা সার আসলে নকল। এতে দস্তা ৩৬ শতাংশ থাকার কথা বলা হলেও রয়েছে মাত্র ১ শতাংশ। সালফেট রয়েছে মাত্র ৩ দশমিক ৫ শতাংশ। নকল সার কিনে প্রতারিত হচ্ছেন কৃষকেরা।

সম্প্রতি রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার সিংগা বাজারে অভিযান চালিয়ে ২০ কেজি নকল ভাইটাল জিংক সার জব্দ করেছে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। ল্যাব পরীক্ষার তথ্য আসার পর গতকাল সোমবার দুপুরে এই নকল সার ধ্বংস করা হয়।

রবি মৌসুমে আলু ও পেঁয়াজ চাষে জমিতে ব্যাপকহারে জিংক সালফেট (দস্তা) সার ব্যবহার করা হয়। একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী ও প্রতিষ্ঠান বাজারে নকল ও ভেজাল সার সরবরাহ করছে। আর এই সার কিনে কৃষকের সর্বনাশ হচ্ছে।

নকল সার বিক্রি প্রসঙ্গে দুর্গাপুর পৌর সদর বাজারের শাফায়েত এন্টারপ্রাইজের প্রোপ্রাইটর মিলন আলী বলেন, ‘কোম্পানির লোকজন এসে দিয়ে যায়। প্যাকেটে সবকিছু লেখা থাকে। আমরাও বুঝতে পারি না।’

পৌর এলাকার সিংগা গ্রামের নাইমুল ইসলাম বলেন, ‘আমিও এই কোম্পানির দস্তা কিনে গতবার প্রতারিত হয়েছি।’

সম্প্রতি দুর্গাপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর পৌর এলাকার সিংগা বাজারে শাফায়েত এন্টারপ্রাইজে অভিযান চালিয়ে ২০ কেজি ভাইটাল জিংক (দস্তা) সার জব্দ করে। পরে নমুনা পরীক্ষার জন্য রাজশাহী বিভাগীয় গবেষণাগার মৃত্তিকাসম্পদ ইনস্টিটিউট পাঠায় তারা। ল্যাব পরীক্ষায় জানানো হয়, বাজার সয়লাব হয়ে যাওয়া ছোয়াদ অ্যাগ্রো অ্যান্ড ডেইরি কোম্পানির ভাইটাল জিংক দস্তা সার নকল। ল্যাব পরীক্ষায় কোম্পানির প্যাকেটে লেখা তথ্যের সঙ্গে সারের গুণগত মানের মিল পাওয়া যায়নি।

বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাহারা শারমিন লাবণী বলেন, ছোয়াদ অ্যাগ্রো অ্যান্ড ডেইরি কোম্পানির প্যাকেটে জিংক দস্তা দেওয়া আছে ৩৬ ভাগ। কিন্তু ল্যাব পরীক্ষায় পাওয়া গেছে মাত্র ১ ভাগ। এ ছাড়াও সালফেট ১৭ দশমিক ৫ ভাগ থাকলেও সেখানে পাওয়া গেছে মাত্র ৩ দশমিক ৫ ভাগ। তার মানে এই কোম্পানির জিংক দস্তা সার নকল ও ভুয়া।

এ বিষয়ে আইনি কী ব্যবস্থা নিয়েছেন, জানতে চাইলে আজকের পত্রিকাকে এই কৃষি কর্মকর্তা বলেন, নকল সারগুলো সবার উপস্থিতিতে মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়েছে। ওই কোম্পানিকে শোকজ করা হয়েছে। এরপর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ বিষয়ে কোম্পানির বিরুদ্ধে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।

সাহারা শারমিন লাবণী বলেন, ‘কৃষক যাতে প্রতারিত না হন, সেজন্য আমাদের মনিটরিং জোরদার করা হবে। এ ছাড়াও এই কোম্পানির ভাইটাল জিংক দস্তা সার ব্যবহার না করতে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’

গতকাল দুপুরে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের চত্বরে জব্দ করা জিংক দস্তা স্যার ল্যাব পরীক্ষায় নকল প্রমাণিত হওয়া ছোয়াদ অ্যাগ্রো অ্যান্ড ডেইরি কোম্পানির সারগুলো মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়। এ সময় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাহারা শারমিন লাবণী, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জান্নাতুল ফেরদাউসসহ দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

অভিযোগের ব্যাপারে জানতে ছোয়াদ অ্যাগ্রো অ্যান্ড ডেইরি কোম্পানির এমডি সাজ্জাদ হোসেন মিঠু বলেন, ‘ল্যাব পরীক্ষায় এমন রেজাল্ট আসায় আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত। কৃষক যাতে কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হন, সেদিকে খেয়াল রাখছি। দ্রুত বাজার থেকে ছোয়াদ অ্যাগ্রো অ্যান্ড ডেইরি কোম্পানির দস্তা সার তুলে নেওয়ার নির্দেশ দেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত