Ajker Patrika

উত্তরে নদীর পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, বন্যার শঙ্কা

রংপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ জুন ২০২৪, ১৮: ১৯
উত্তরে নদীর পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, বন্যার শঙ্কা

ভারতের উত্তর সিকিমে ভারী বর্ষণসহ উজান থেকে নেমে আসা ঢলে রংপুর, গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রাম জেলার প্রধান প্রধান নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। এর মধ্যে রংপুর ও কুড়িগ্রামের তিস্তা, দুধকুমার নদীর দুই পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় এই তিন জেলায় স্বল্পমেয়াদি বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
 
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে রংপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে আজ বুধবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় ভারী (৪৪-৮৮ মিলিমিটার/ ২৪ ঘণ্টা) থেকে অতি ভারী (৯৮৯ মিলিমিটার/ ২৪ ঘণ্টা) বর্ষণ হতে পারে।
 
এদিকে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বন্যা মোকাবিলায় সম্ভাব্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরে থাকা মানুষজনকে নিরাপদে থাকার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
 
রংপুর: ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। তিস্তায় পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জেলার কাউনিয়া, পীরগাছা ও গঙ্গাচড়া উপজেলার তিস্তা অববাহিকার বেশ কয়েকটি এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে।
 
পাউবো কোনো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা না থাকায় ভাঙনকবলিত পরিবারগুলোর অনেকে নিরুপায় হয়ে বসতি সরিয়ে নিচ্ছে। কিছু চরাঞ্চলের বাড়িঘরের চারপাশে পানি প্রবেশ করার খবর পাওয়া গেছে। তলিয়ে গেছে গ্রামীণ সড়ক। ডুবে গেছে ওই সব এলাকার সবজিখেতসহ ফসলি মাঠ।
 
প্রধান নদ-নদীগুলোতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এ অবস্থায় আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রংপুরের নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যার পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
 
পাউবোর নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে জানা যায়, রংপুর জেলায় অবস্থিত সব নদ-নদীর পানি বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে আজ বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত) রংপুর অঞ্চলে ২২১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বুধবার সকাল নয়টায় তিস্তার কাউনিয়া পয়েন্টে শূন্য দশমিক ২০ সেন্টিমিটার পানি প্রবাহ বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এর আগে ভোর ছয়টায় ওই পয়েন্টে পানি প্রবাহ বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপরে ছিল। কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমা ২৮ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার ধরা হয়।
 
এদিকে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে আজ বুধবার সকাল নয়টায় পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫১ দশমিক ৯২ সেন্টিমিটার। যা বিপৎসীমার শূন্য দশমিক ২৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। এখানে ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হলে বিপৎসীমা অতিক্রম করে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে আজ বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ডালিয়া পয়েন্টে ১২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
 
তিস্তা নদীর কাউনিয়ার পাঞ্চরভাঙা গ্রামের কৃষক ইউসুফ আলী বলেন, ‘তিস্তা হামাক শ্যাষ করি দিছে। বছর বছর বাড়ি ভাঙে, ফসল কাড়ে, প্রাণ নেয়। আল্লাহ জানে আর কত কাল তিস্তার সঙ্গে যুদ্ধ করা নাগবে।’
 
কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আনছার আলী বলেন, তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদীর নিম্নাঞ্চল কিছুটা প্লাবিত হয়েছে। হঠাৎ করে পানি বাড়ায় গবাদি পশুপাখি নিয়ে এসব এলাকার মানুষ সমস্যায় পড়েছে। বাদাম ও শাক-সবজিসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি হবে।
 
কাউনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মহিদুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, কোনো পরিবার যাতে উজানের ঢলে সৃষ্ট বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে জন্য সরকারিভাবে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক নদীপাড়ের মানুষের পরিস্থিতির খোঁজ-খবর রাখা হচ্ছে। পরিস্থিতি যে রকম হবে, সেভাবেই পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
 
গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদ তামান্না জানান, তিস্তাবেষ্টিত গঙ্গাচড়ায় এখনো প্লাবন পরিস্থিতি হয়নি। তবুও তারা সতর্ক রয়েছেন। বন্যা হলে রেসকিউ করার জন্য টিম প্রস্তুত রেখেছেন।
 
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, উজানের ঢল আর গত কয়েক দিন ধরে বৃষ্টিপাতের কারণে ডালিয়া ও কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তায় পানি বাড়তে শুরু করেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ডালিয়া ব্যারেজের সব কটি গেটই খুলে রাখা হয়েছে। কাউনিয়া পয়েন্টে কিছুটা বাড়ছে পানি প্রবাহ। এ ছাড়া ভাটির অঞ্চলে সার্বক্ষণিক নদীপাড়ের পরিস্থিতির খোঁজ খবর রাখা হচ্ছে।
 
রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান বলেন, বন্যা মোকাবিলায় সম্ভাব্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এ জন্য মাঠ পর্যায়ে উপজেলা প্রশাসনকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরে থাকা মানুষজনকে নিরাপদে থাকার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
 
গাইবান্ধা: উজানের ঢলে গাইবান্ধায় সব নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করছে। এতে জেলার তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, ঘাঘট ও করতোয়া নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এসব নদ-নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
 
এদিকে পানি বৃদ্ধির কারণে গাইবান্ধা সদর উপজেলার কামারজানি, মোল্লারচর, গিদারি, ঘাগোয়া ও ফুলছড়ি উপজেলার এরান্ডাবাড়ি, ফুলছড়ি ও ফজলুপুর এবং সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর ও হরিপুর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলগুলোতে পানি ঢুকতে শুরু করছে। অন্যদিকে নদীতে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই সদরের মোল্লার চর ও ফুলছড়ির ফজলুপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে।
 
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নিয়ন্ত্রণকক্ষের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদের পানি ফুলছড়ি পয়েন্টে ৫২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। একইভাবে ঘাঘট নদের পানি জেলা শহরের নতুন ব্রিজ পয়েন্টে ৪৪ সেন্টিমিটার এবং তিস্তার পানি সুন্দরগঞ্জ উপজেলাসংলগ্ন কাউনিয়া পয়েন্টে ৩৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বেলা ৩টা থেকে আজ বুধবার ৩টা পর্যন্ত এই পরিমাণ পানি বৃদ্ধি পায়। তবে কোনো নদ-নদীর পানি বিপৎসীমা এখনো অতিক্রম করেনি।
 
গাইবান্ধা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক বলেন, ‘পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে স্বল্পমেয়াদি বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। তবে সার্বিক পরিস্থিতির ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখছি।’
 
এ বিষয়ে গাইবান্ধা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদ আল হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, আগামীকাল জেলা ও উপজেলায় দূর্যোগকালীন মিটিং ডাকা হয়েছে। নদী বেষ্টিত যে চারটি ইউনিয়ন রয়েছে, সেই সব ইউনিয়নের চেয়ারম্যানসহ প্রত্যক্ষ সদস্যদের বলে দেওয়া হয়েছে নদীর পাড়ে পার্শ্ববর্তী যে ওয়ার্ডগুলো আছে সেখানে গ্রুপ ভিত্তিক ভলান্টিয়ার মাধ্যমে সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখার জন্য।
 
এছাড়া ওই সব এলাকায় শুকনা খাবার বিতরণের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রাথমিক সব প্রস্তুতি নিয়েছেন বলে জানান এই কর্মকর্তার।
 
কুড়িগ্রাম: ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামের তিস্তা ও দুধকুমার নদের পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কুড়িগ্রামের নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যার পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
 
এদিকে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জেলার রাজারহাট উপজেলার তিস্তা অববাহিকার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে। পাউবো কোনো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা না নেওয়ায় ভাঙনকবলিত পরিবারগুলোর অনেকে নিরুপায় হয়ে বসতি সরিয়ে নিচ্ছে। ভাঙনের হুমকিতে আছে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও স্থানীয় বাজারসহ অন্তত শতাধিক পরিবার।
 
কুড়িগ্রামে পাউবোর নিয়ন্ত্রণকক্ষ জানায়, জেলার সব নদ-নদীর পানি বাড়ছে। গতকাল মঙ্গলবার ভোর ৬টা থেকে আজ বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় দুধকুমার নদের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে ৩১ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এবং তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে ৩৮ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। একই সময়ে ধরলা নদীর পানি কুড়িগ্রাম (ধরলা ব্রিজ) পয়েন্টে ৪৭ সেন্টিমিটার বেড়েছে। ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৪২ সেন্টিমিটার বেড়ে ক্রমশ বিপৎসীমার দিকে ধাবিত হচ্ছে।
 
ধরলা, দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় বন্যার চোখরাঙানির সঙ্গে তিস্তার তীরে শুরু হয়েছে ভাঙন। রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের তীরবর্তী কয়েকটি এলাকায় তিস্তার ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। পাড় ভেঙে একের পর এক বসতভিটা আর আবাদি জমি নিজের গর্ভে নিয়ে নিচ্ছে আগ্রাসী এই নদী। ভাঙনের কিনারে নিরুপায় দিন যাপন করছে অনেক দিনমজুর পরিবার। জরুরি ভিত্তিতে ভাঙন প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেওয়া না হলে তারা সর্বস্বান্ত হয়ে পড়বে বলে জানিয়েছে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো।
বন্যার পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের বরাতে কুড়িগ্রামে পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, ‘নদনদীর পানি বাড়ছে। আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় দুধকুমার, তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি সময় বিশেষে দ্রুত বাড়তে পারে। কয়েকটি স্থানে বিপৎসীমা অতিক্রম করে সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।’
 
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, ‘সম্ভাব্য বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় উপজেলাগুলোতে ত্রাণসহায়তা প্রস্তুত রয়েছে। দুর্যোগ পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলার দায়িত্বশীলদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতির ওপর আমরা সার্বক্ষণিক নজর রাখছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আদানিকে রক্ষায় গোপনে ৩৯০০ কোটি রুপির ব্যবস্থা করেন নরেন্দ্র মোদি

আজকের রাশিফল: মেজাজ সামলে রাখুন, ফেসবুকে দার্শনিকতা বন্ধ করুন

শিশুশিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে শিক্ষককে গণপিটুনি, প্রাণ বাঁচাতে পুলিশ বক্সে আশ্রয়

সিনেমায় কাজ করতে চান সাফা, তবে ভয়ও পাচ্ছেন

বাড়ি ফেরার পথে লালনশিল্পীকে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চট্টগ্রাম বন্দরে প্রকল্প সমন্বয়ে ‘পিপিপি সেল’ গঠন

নিজস্ব প্রতিবেদক
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক) আওতাধীন সব পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) প্রকল্প সমন্বয়ের জন্য একটি ‘পিপিপি সেল’ গঠন করা হয়েছে। চবকের বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই সেল গঠন করা হয়।

নবগঠিত সেলে আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন চবকের সদস্য (প্রকৌশল) কমোডর কাওছার রশিদ। সেলে আহ্বায়কসহ মোট ১১ জন সদস্য রয়েছেন। নির্বাহী প্রকৌশলী (সিসিপি) রাফিউল আলমকে সদস্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

সেলের অন্য সদস্যরা হলেন পরিচালক (পরিবহন) এনামুল করিম, চিফ প্ল্যানিং মো. মাহবুব মোরশেদ চৌধুরী, চিফ হাইড্রোগ্রাফার কমান্ডার মো. ওবায়দুর রহমান, আইন কর্মকর্তা (যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ) শাহনেওয়াজ মনির, সহকারী হারবার মাস্টার ক্যাপ্টেন মো. মুস্তাহিদুল ইসলাম, উপপ্রধান প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) মির্জা রাকিবুল ইসলাম, সহকারী ব্যবস্থাপক (এস্টেট) মুহাম্মদ শিহাব উদ্দিন এবং হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা জাহিদুল ইমাম।

সেলের আওতায় বাস্তবায়নযোগ্য পিপিপি প্রকল্প চিহ্নিত করে অগ্রাধিকার নির্ধারণে সুপারিশ প্রণয়ন, পিপিপি ট্রানজেকশন পরামর্শক নিয়োগ ও ফিজিবিলিটি স্টাডি সম্পাদন, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও পিপিপি কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার সঙ্গে সমন্বয়, দরপত্র আহ্বান ও চুক্তি সম্পাদন, চলমান প্রকল্পের তদারকি ও প্রতিবেদন দেওয়া হবে। ২১ অক্টোবর বন্দর কর্তৃপক্ষ থেকে এই পিপিপি সেল গঠনের নির্দেশনা জারি করা হয়।

চবকের হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা ও সেলের সদস্য জাহিদুল ইমাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবারই এ-সংক্রান্ত অফিস আদেশ পেয়েছি। চবক, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও পিপিপি কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করাই মূলত এই সেলের কাজ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আদানিকে রক্ষায় গোপনে ৩৯০০ কোটি রুপির ব্যবস্থা করেন নরেন্দ্র মোদি

আজকের রাশিফল: মেজাজ সামলে রাখুন, ফেসবুকে দার্শনিকতা বন্ধ করুন

শিশুশিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে শিক্ষককে গণপিটুনি, প্রাণ বাঁচাতে পুলিশ বক্সে আশ্রয়

সিনেমায় কাজ করতে চান সাফা, তবে ভয়ও পাচ্ছেন

বাড়ি ফেরার পথে লালনশিল্পীকে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ব্রেস্ট ক্যানসার প্রতিরোধে ৩ শতাধিক পুলিশ সদস্যকে প্রশিক্ষণ

 নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১৬: ৪০
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার নিষ্কৃতি চাকমা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার নিষ্কৃতি চাকমা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

অক্টোবর মাসব্যাপী ব্রেস্ট ক্যানসার সচেতনতা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে চট্টগ্রামের তিন শতাধিক নারী পুলিশ সদস্যকে ব্রেস্ট ক্যানসার প্রতিরোধে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। আজ শনিবার (২৫ অক্টোবর) সকালে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের মাল্টিপারপাস হলে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার নিষ্কৃতি চাকমা।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, সিএসসিআর এবং পিজিএস একাডেমিয়ার উদ্যোগে আয়োজিত কর্মসূচির প্রশংসা করে নিষ্কৃতি চাকমা বলেন, সঠিক সময়ে রোগ নির্ণয় করা গেলে ব্রেস্ট ক্যানসারে প্রাণহানির ঝুঁকি অনেক কমে আসে।

অনুষ্ঠানে ডা. সায়রা বানু শিউলীর নেতৃত্বে চিকিৎসক দল উদ্বুদ্ধকরণ ও ভিডিও প্রদর্শনীসহ নারী পুলিশ সদস্যদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ প্রদান করেন।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. রবিউল হাসান চৌধুরীর সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন সিএসসিআর চেয়ারম্যান ডা. খুরশীদ জামিল চৌধুরী, মহিলা শল্যচিকিৎসক দলের প্রধান সায়রা বানু শিউলী, ডা. বিন্দু রানী গোপ, ডা. অন্তরা কর, সিএসসিআর হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আজিজুর রহমান এবং ইঞ্জিনিয়ার মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন।

উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে এবং সিএসসিআর ও পিজিএস একাডেমিয়ার সহযোগিতায় অক্টোবর মাসজুড়ে বিনা মূল্যে চিকিৎসা, পরীক্ষায় ৫০ শতাংশ ছাড় এবং বিনা মূল্যে ব্রেস্ট সার্জারির ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতি শনি, সোম ও বুধবার বেলা ৩টা থেকে ৬টা পর্যন্ত সিএসসিআর হাসপাতালে বিনা মূল্যে স্ক্রিনিং ও পরামর্শ সেবা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া, মেয়রের সুপারিশে ব্রেস্ট ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীদের বিনা মূল্যে অস্ত্রোপচার কার্যক্রমও মাসব্যাপী অব্যাহত থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আদানিকে রক্ষায় গোপনে ৩৯০০ কোটি রুপির ব্যবস্থা করেন নরেন্দ্র মোদি

আজকের রাশিফল: মেজাজ সামলে রাখুন, ফেসবুকে দার্শনিকতা বন্ধ করুন

শিশুশিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে শিক্ষককে গণপিটুনি, প্রাণ বাঁচাতে পুলিশ বক্সে আশ্রয়

সিনেমায় কাজ করতে চান সাফা, তবে ভয়ও পাচ্ছেন

বাড়ি ফেরার পথে লালনশিল্পীকে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নালিতাবাড়ীতে নলকূপ খনন করতে গিয়ে গ্যাসের সন্ধান, ১১ দিন ধরে চলছে রান্নাবান্না

নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি 
গ্যাস দিয়ে রান্নাবান্না করছে এলাকাবাসী। ছবি: আজকের পত্রিকা
গ্যাস দিয়ে রান্নাবান্না করছে এলাকাবাসী। ছবি: আজকের পত্রিকা

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় নলকূপ খনন করতে গিয়ে প্রাকৃতিক গ্যাসের সন্ধান মিলেছে। উপজেলার রূপনারায়ণকুড়া ইউনিয়নের গাছগড়া গ্রামের হোটেলশ্রমিক নূর মোহাম্মদের বাড়িতে গভীর নলকূপের জন্য খনন করতে গিয়ে এই গ্যাসের সন্ধান মিলে। আর সেই গ্যাস দিয়েই নূর মোহাম্মদের পরিবারসহ আশপাশের কয়েকটি পরিবার ১১ দিন ধরে রান্নাবান্না করছে।

জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হোটেলশ্রমিক নূর মোহাম্মদের বাড়িতে ১৪ অক্টোবর সকালে মিস্ত্রিরা দেড় ইঞ্চি পাইপ দিয়ে প্রায় ৫৫ ফুট গভীরে মাটি খনন শুরু করেন। কিছু সময় পর পাইপ দিয়ে গ্যাস বের হতে শুরু করে। পরে আরও দুটি স্থানে ৪০ ফুট গভীর পর্যন্ত খনন করলেও একইভাবে গ্যাস পাওয়া যায়। দুটি খনন বন্ধ করে দেওয়া হলেও একটি স্থান দিয়ে অনবরত গ্যাস বের হতে থাকে।

আজ শনিবার সকালে গাছগড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, অনেক মানুষ জটলা করে আছেন নূর মোহাম্মদের বাড়িতে। কেউ কেউ রান্না করে চলে গেছেন। এক ব্যক্তি ভাত রান্না করার জন্য হাঁড়ি বসিয়েছেন। স্থানীয় যুবক কামরুল ইসলাম বলেন, ‘এটা সরকারের সম্পদ। পাশের জামালপুর জেলায় গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কারের খবর এসেছে। এখানেও অনুসন্ধান করলে গ্যাসক্ষেত্রের সম্ভাবনা থাকতে পারে। তবে এখন পর্যন্ত প্রশাসনের কেউ খোঁজ নিতে আসেনি।’

গৃহিণী শারমিন আক্তার (২৮) বলেন, ‘প্রায় ১০ দিন ধরে এই গ্যাস দিয়েই আমরা রান্না করতেছি। আশপাশের মহিলারাও এখানেই রান্না করছে। তবে কিছুটা ভয়ও লাগে। আমরা চাই দ্রুত যেন এই বিষয়ে একটা ব্যবস্থা হয়।’

বাড়ির মালিক নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘গ্যাস তো ঝুঁকিপূর্ণ জিনিস। নিচে কতটা গ্যাস আছে, তা বোঝা যাচ্ছে না। হঠাৎ কোনো দুর্ঘটনা হলে বিপদ হতে পারে। সরকার বিষয়টি দেখলে ভালো হতো।’

রূপনারায়ণকুড়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ হযরত বলেন, ‘ঘটনার খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে সত্যতা পাই এবং উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি। তবে আমরা কিছুটা আতঙ্কে আছি। কারণ, কখন কী ঘটে বলা যায় না।’

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা আক্তার ববি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঘটনাটি সম্পর্কে আমরা অবগত হয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলাম। আজ বিকেলে বাপেক্স এবং আগামীকাল তিতাস গ্যাসের প্রতিনিধিদল পরিদর্শনে আসবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আদানিকে রক্ষায় গোপনে ৩৯০০ কোটি রুপির ব্যবস্থা করেন নরেন্দ্র মোদি

আজকের রাশিফল: মেজাজ সামলে রাখুন, ফেসবুকে দার্শনিকতা বন্ধ করুন

শিশুশিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে শিক্ষককে গণপিটুনি, প্রাণ বাঁচাতে পুলিশ বক্সে আশ্রয়

সিনেমায় কাজ করতে চান সাফা, তবে ভয়ও পাচ্ছেন

বাড়ি ফেরার পথে লালনশিল্পীকে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজাপুরে বাসের ধাক্কায় ছিটকে ডোবায় পড়ে বিএনপির নেতার মৃত্যু

ঝালকাঠি, প্রতিনিধি
মো. নাসিম উদ্দিন আকন
মো. নাসিম উদ্দিন আকন

ঝালকাঠির রাজাপুরে বাসের ধাক্কায় মো. নাসিম উদ্দিন আকন নামের এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। তিনি উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। আজ শনিবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে উপজেলার গালুয়া ইউনিয়নের নলবুনিয়া বাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা আবুল খায়ের মাহমুদ রাসেল বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত অবস্থায় নাসিম আকনকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়। তাঁর মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাঁকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে পাঠানো হলে সেখানে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাঁকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে মৃত ঘোষণা করেন।

নাসিমের সঙ্গে দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেলচালক শহিদুল ইসলাম আহত হয়েছেন। তিনি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে ফিরেছেন।

শহিদুল ইসলামের বরাত দিয়ে উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবু সায়েম আকন বলেন, ‘নলবুনিয়া এলাকায় একটি ঠিকাদারির কাজ পরিদর্শন শেষে তাঁরা মোটরসাইকেলে রাজাপুরে ফিরছিলেন। পথে পাথরঘাটাগামী হামিম পরিবহনের একটি বাস পেছন থেকে মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দেয়। এতে নাসিম আকন ছিটকে একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে মাথায় আঘাত পান এবং ডোবায় পড়ে যান। শহিদুলও মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়ে যান।’

আবু সায়েম আকন আরও বলেন, ‘স্থানীয় লোকজন আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠান। শহিদুল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে ফিরেছেন। তবে নাসিমের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বরিশালে পাঠানো হয়। পরে সেখানে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।’

রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইসমাইল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে এসেছি। বাসটি শনাক্ত করে চালককে আটকের চেষ্টা চলছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আদানিকে রক্ষায় গোপনে ৩৯০০ কোটি রুপির ব্যবস্থা করেন নরেন্দ্র মোদি

আজকের রাশিফল: মেজাজ সামলে রাখুন, ফেসবুকে দার্শনিকতা বন্ধ করুন

শিশুশিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে শিক্ষককে গণপিটুনি, প্রাণ বাঁচাতে পুলিশ বক্সে আশ্রয়

সিনেমায় কাজ করতে চান সাফা, তবে ভয়ও পাচ্ছেন

বাড়ি ফেরার পথে লালনশিল্পীকে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত