Ajker Patrika

আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজে সবদিকে ঘাটতি, শুধু আসন বাড়তি

  • চার শিক্ষাবর্ষে আসন বেড়েছে ৮০ শতাংশ।
  • আইন অনুযায়ী ঘাটতি অন্তত ১০ বিষয়ে।
  • রাজনৈতিক আনুকূল্য পাওয়ার অভিযোগ।
  • অনুমোদন নিয়ে শিক্ষকদের উদ্বেগ।
মুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা ও সাজন আহম্মেদ পাপন, কিশোরগঞ্জ
আপডেট : ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৫: ১৪
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানী ঢাকা থেকে ৭০ মাইল দূরে কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে ১০ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বেসরকারি চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়টি। মাত্র দুই বছরের মধ্যে শিক্ষার্থীদের আসন বাড়ে ২০ শতাংশ। এর পর থেকে অব্যাহতভাবে বেড়ে চার শিক্ষাবর্ষের মধ্যেই আসন বৃদ্ধি পায় ৮০ শতাংশ। অথচ সরকারি বিধিবিধান অনুযায়ী মেডিকেল কলেজটির অন্তত ১০টি মৌলিক ঘাটতি রয়েছে।

কলেজটির কর্তৃপক্ষ বরাবর সাবেক সরকারের কাছে যা-ই দাবি করেছে, কার্যত তা-ই পেয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, এসবই সম্ভব হয়েছে কলেজটি কিশোরগঞ্জের প্রভাবশালী রাজনীতিক তৎকালীন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের নামে বলে। আওয়ামী লীগের এই নেতা দীর্ঘদিন সংসদ সদস্য এবং স্পিকারও ছিলেন।

প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজ নামের চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়টি নিয়মিত পরিদর্শন করেছে সরকারের সংশ্লিষ্ট কমিটি। তবে তাদের প্রতিবেদনে কলেজের ঘাটতি বা ত্রুটিগুলোর খুব কমই তুলে ধরা হয়েছে। পরিণতিতে কলেজ কর্তৃপক্ষের চাহিদামতোই আসন বৃদ্ধি অনুমোদন করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

আজ থেকে দুই বছর আগে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও ডেন্টাল কলেজ আইন ২০২২ কার্যকর করে সরকার। এ আইনটি কার্যকর হওয়ার আগে বেসরকারি চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়গুলো ‘বেসরকারি মেডিকেল কলেজ স্থাপন ও পরিচালনা নীতিমালা ২০১১ (সংশোধিত)’ অনুযায়ী পরিচালিত হওয়ার বাধ্যবাধকতা ছিল। আইন কার্যকর হওয়ার আগে ২০১১ সালের নীতিমালাও মেনে চলেনি প্রেসিডেন্ট আবদুল হমিদ মেডিকেল কলেজ।

আসন বৃদ্ধিতে রেকর্ড

দেশের বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোর মধ্যে আসন বৃদ্ধির রেকর্ড করেছে প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজ। স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৩ সালের নভেম্বরে কলেজটি এমবিবিএস ডিগ্রির জন্য ৫০ জন শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমোদন পায়। ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে আনুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে ১০টি আসন বৃদ্ধির অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে বাড়ে আরও ১০টি আসন। এর পরের বছর এক ধাপে আসন বাড়ে আরও ২০টি। দেশে বর্তমানে ৬৭টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ রয়েছে। এগুলোর কোনোটিতেই এত কম সময়ে ৮০ শতাংশ আসন বৃদ্ধির রেকর্ড নেই।

স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে জানান, সর্বশেষ ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে আসন বাড়িয়ে ৯০টি করা হলে অধিদপ্তর থেকে আপত্তি জানানো হয়। কিন্তু তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বিষয়টি উড়িয়ে দিয়ে বলেছিলেন, রাষ্ট্রপতির নামে কলেজ। এখানে কোনো আপত্তি দেওয়া যাবে না।

হাসপাতালের শয্যা ও ভর্তির হারে শর্ত

সর্বশেষ ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে কলেজটি পরিদর্শন করে সাত সদস্যের সরকারি পরিদর্শন কমিটি। আইন অনুযায়ী, ৫০ শিক্ষার্থীবিশিষ্ট মেডিকেল কলেজের একাডেমিক কার্যক্রমের জন্য ১ লাখ বর্গফুট ও হাসপাতাল পরিচালনার জন্য স্বতন্ত্র ভবনে ১ লাখ বর্গফুট ফ্লোর স্পেস থাকতে হবে। তবে আকারের দিক থেকে আবদুল হামিদ কলেজের একাডেমিক ভবনে ৩৮ হাজার ও হাসপাতালে ৯১ হাজার বর্গফুট কম রয়েছে। প্রয়োজনীয় ভৌত অবকাঠামোসহ হাসপাতালের শয্যায় রোগী ভর্তির হার ৭০ শতাংশ থাকার কথা। তবে তাতে ঘাটতি রয়েছে ৪৭ শতাংশ।

প্রশিক্ষণের জন্য শিক্ষার্থীপ্রতি পাঁচটি শয্যা থাকার কথা। তাতে শয্যাসংখ্যা হবে ৪৫০টি। পরিদর্শন কমিটি শয্যা পেয়েছে মাত্র ২৮৮টি।

কলেজ ভবনেই অন্য স্থাপনা

আইন বলছে, মেট্রোপলিটন এলাকার বাইরের বেসরকারি মেডিকেল কলেজের জন্য অন্তত চার একর জমিতে স্বতন্ত্র ভবনে কলেজ ও হাসপাতাল হতে হবে।

গত সপ্তাহে ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখা যায়, তিনতলা হাসপাতাল ভবনের ওপরের তলায় এখনো নির্মাণকাজ চলছে। বহির্বিভাগে রোগীর সংখ্যাও আপাতদৃষ্টিতে বেশ কম দেখা যায়। সাততলাবিশিষ্ট কলেজ ভবনের নিচ থেকে তিনটি তলা পর্যন্ত চলে একাডেমিক কার্যক্রম। চার থেকে ছয়তলা পর্যন্ত ছাত্রী হোস্টেল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। সপ্তম তলায় রয়েছে প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ নার্সিং ইনস্টিটিউট। অথচ আইন অনুযায়ী, একাডেমিক ভবনে অন্য কার্যক্রম চালানো নিষেধ।

অনুমোদন ও নিবন্ধনের ঘাটতি

প্রতি শিক্ষাবর্ষে নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) নিবন্ধন থাকার কথা থাকলেও সর্বশেষ নিবন্ধিত শিক্ষাবর্ষটি হলো ২০১৭-১৮। আসনসংখ্যা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে প্রথম শিক্ষার্থী ভর্তির পাঁচ বছর অতিবাহিত হওয়ার পর নিয়মমতো অধিভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন নেওয়া হয়নি। বিএমডিসি প্রতি শিক্ষাবর্ষের অনুমোদন না দিলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা ডিগ্রি শেষে ইন্টার্নি করতে পারবেন না। তাঁরা চিকিৎসক হিসেবে নিবন্ধনও পাবেন না।

বিএমডিসির রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মো. লিয়াকত হোসেন আজকের পত্রিকাকে সম্প্রতি এ বিষয়ে বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজ ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের অনুমোদন চেয়ে আবেদন করেছে। শিগগিরই বিএমডিসি থেকে কলেজটি পরিদর্শনে যাওয়ার কথা রয়েছে। তবে ওই শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা ইতিমধ্যে পঞ্চম বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষার পর ফলাফলের অপেক্ষায় আছে।’

যা বলছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা

অন্তত পাঁচজন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী বলেছেন, একাডেমিক উৎকর্ষের তুলনায় কলেজের কর্তৃপক্ষ রাজনৈতিক যোগসূত্রকে গুরুত্ব দিয়েছে। তবে তাঁদের কেউ নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি। মন্তব্যকারী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বক্তব্য, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির মান বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় সারির শেষ দিকে। কলেজ কর্তৃপক্ষ ল্যাব উন্নত করা ও শিক্ষক ঘাটতির সমাধানসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়ে একাডেমিক মানোন্নয়নে চেষ্টা করেনি। প্রতি ১০ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে ১ জন শিক্ষক থাকার কথা থাকলেও সেখানে ঘাটতি রয়েছে। এসব দিকে মনোযোগ না দিয়ে কর্তৃপক্ষ প্রায় প্রতিবছর আসন বৃদ্ধিতে বেশি মনোযোগ দিয়েছে।

কলেজটির অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. আ ন ম নওশাদ খান সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের শ্যালক। কলেজসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ও এলাকাবাসী মনে করেন, রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক গুরুত্ব পাওয়ার জন্য প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদের নামে কলেজটির নাম রাখা হয়।

কলেজের একজন শিক্ষক আজকের পত্রিকাকে অনুমোদন নিয়ে তাঁদের উদ্বেগের কথা জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা খুবই দুশ্চিন্তায় আছি। ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা যদি বিএমডিসির অনুমোদন না পায়, তাহলে তারা ইন্টার্নশিপ করতে পারবে না।’

চিকিৎসা শিক্ষা নিয়েই উদ্বেগ

চিকিৎসা শিক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে গত দুই দশকে চিকিৎসা শিক্ষার মানকে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। মেডিকেল কলেজের সংখ্যা নির্বিচারে বেড়েছে। সার্বিকভাবে বেসরকারি মেডিকেলগুলোর শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মান নিম্নমুখী। যথাযথ শিক্ষাদানের জন্য যা প্রয়োজন, সেদিকে নজর দেওয়া হয়নি। এতে মানসম্মত চিকিৎসক তৈরি হচ্ছে না। এতে বাংলাদেশের চিকিৎসকেরা ভবিষ্যতে ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন ফর মেডিকেল এডুকেশনের (ডব্লিউএফএমই) স্বীকৃতি পাবেন না। তাহলে তাঁরা বিশ্বের অন্য কোনো দেশে কাজের সুযোগ ও স্বীকৃতিও পাবেন না।

ডব্লিউএফএমইর সাবেক জ্যেষ্ঠ পরামর্শক ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াবিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. মোজাহেরুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শর্ত বিবেচনা না করে আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজের আসন যেভাবে বাড়ানো হয়েছে, তাতে নিয়মের চরম লঙ্ঘন হয়েছে। প্রায় সব মেডিকেল কলেজের অবস্থা এক। এতে চিকিৎসা শিক্ষার মান খুবই নিচে থাকছে। খুব অল্পসংখ্যক কলেজই মান ধরে রাখতে পেরেছে। বর্তমানে বাংলাদেশে চিকিৎসা শিক্ষার মান সর্বকালের সর্বনিম্নে রয়েছে।’

কলেজ কর্তৃপক্ষের বক্তব্য

প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন অভিযোগের জবাবে বলেছেন, কলেজের সমস্যা অস্বীকার করা যাচ্ছে না। তবে তা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা চলছে।

অধ্যক্ষ অধ্যাপক নওশাদ খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শয্যাসংখ্যা এখন বেড়েছে। তবে শিক্ষার্থী অনুপাতে এখনো কিছু ঘাটতি রয়েছে। কয়েক মাসের মধ্যে তার সমাধান হয়ে যাবে।’

আসন বৃদ্ধিতে রাজনৈতিক প্রভাব কাজ করেছে কি না এমন প্রশ্নে অধ্যক্ষ বলেন, ‘আমরা নিজেরা রাজনৈতিক কোনো প্রভাব খাটাইনি। মন্ত্রণালয়ের কাছে আসন বাড়াতে আবেদন করেছি, তারা অনুমতি দিয়েছে। শিক্ষক আগের তুলনায় বেড়েছে। ছাত্রী হোস্টেল সরিয়ে নেওয়ার জন্য চেষ্টা করছি।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে বারবার শর্ত পূরণের জন্য বলা হলেও পদক্ষেপ না নেওয়ার বিষয়ে নওশাদ খান বলেন, তাঁদের ‘চেষ্টার ত্রুটি নেই’।

সরকারি কর্তৃপক্ষ যা বললেন

আইন অনুযায়ী, বেসরকারি মেডিকেল বা ডেন্টাল কলেজগুলো প্রতিষ্ঠার পর বিধিবিধান মানছে কি না তা যাচাইয়ে প্রথম পাঁচ বছরে অন্তত একবার পরিদর্শন করবে সরকারি কমিটি। আর প্রথম পাঁচ বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পর প্রতি দুই বছরে একবার পরিদর্শন করতে হবে। গত দুটি কমিটির অন্তত তিনজন সদস্য আজকের পত্রিকাকে জানান, তাঁরা আইন অনুযায়ী কাজের চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তৎকালীন রাষ্ট্রপতির নামে কলেজটি হওয়ায় এবং ‘ওপরমহলের চাপে’ তারা ‘শক্তভাবে’ প্রতিবেদন তৈরি করতে পারেননি।

স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের সচিব ডা. মো. সারোয়ার বারী এ বিষয়ে বলেন, ‘কমিটির সুপারিশে মন্ত্রণালয় কলেজের আসন বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন বিষয় বাস্তবায়ন করে। আসন বৃদ্ধি কমিটির সভাপতি থাকেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। ওই কলেজটির আসন নিয়ম অনুযায়ী বেড়েছে কি না তা এখন বলতে পারছি না। এ বিষয়ে খোঁজ নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৪ হাজার এএসআই নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি

দেড় মাস ধরে কর্মস্থলে নেই সহকারী কমিশনার, নিয়োগ বাতিল করল সরকার

জুবায়েদ হত্যার নেপথ্যে ‘প্রেমের সম্পর্ক’, সিসিটিভির ফুটেজ দেখে আটক ৩

মাদ্রাসাছাত্রীকে তুলে রেস্তোরাঁয় নিয়ে ধর্ষণ, আড়াল করতে সাউন্ডবক্সে চলে গান

পর্নো সাইটে বাংলাদেশি যুগলের ১১২ ভিডিও, র‍্যাঙ্কিংয়ে অষ্টম: সিআইডি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ধোঁয়া-ধুলায় দূষিত রাজশাহীর বাতাস

  • রাজশাহী শহরে গতকাল বাতাস ছিল দেশের সবচেয়ে দূষিত।
  • যানবাহনের কালো ধোঁয়ায় এবং নির্মাণকাজে বাড়ছে দূষণ।
  • কালো ধোঁয়া নির্গমনকারী যানবাহনের ব্যাপারে নিষ্ক্রিয় ট্রাফিক পুলিশ।
 রিমন রহমান, রাজশাহী
গাড়ি থেকে কালো ধোঁয়া বের হয়ে বায়ুদূষণ হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাড়ি থেকে কালো ধোঁয়া বের হয়ে বায়ুদূষণ হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

যানবাহন থেকে নির্গত কালো ধোঁয়া আর নির্মাণকাজের ধুলার কারণে দূষিত হয়ে উঠেছে রাজশাহীর বাতাস। অথচ ২০১৬ সালে বাতাসে ক্ষতিকর ধূলিকণা কমানোয় বিশ্বসেরার খেতাব পেয়েছিল রাজশাহী শহর। ৯ বছরের ব্যবধানে এখন নিয়মিতই রাজশাহীর বায়ুদূষণের কথা উঠে আসছে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের প্রতিবেদনে। গতকাল সোমবারও এখানকার বাতাস ছিল দেশের আট বিভাগীয় শহরের মধ্যে সবচেয়ে দূষিত।

আইকিউএয়ার বাতাসের মান নির্ধারণে একটি তাৎক্ষণিক সূচক তৈরি করে, যা কোনো নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটা নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় এবং সতর্ক করে। গতকাল দেশের বিভাগীয় শহরগুলোর মধ্যে রাজশাহীতে বায়ুর মান সূচক সবচেয়ে বেশি ছিল, ১৬৭। তারপরই ছিল খুলনায়, ১৫৭। এ ছাড়া রংপুরে বায়ুর মান সূচক ১৩৭, বরিশালে ১১৪, ময়মনসিংহে ১১৩, ঢাকায় ১০২, সিলেটে ৮২ এবং চট্টগ্রামে ৭৩ রেকর্ড করা হয়েছে।

গবেষকেরা বলছেন, বায়ুদূষণের নানা নিয়ামকের মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিকর হলো অতিক্ষুদ্র কণা, যা পিএম ২.৫ নামে পরিচিত। বাতাসে মিশে থাকা অতি সূক্ষ্ম ধূলিকণা, গাড়ি ও কলকারখানার ধোঁয়া, ইটভাটা ও নির্মাণকাজ থেকে এই কণা তৈরি হয়। রাজশাহীতে এখন ইটভাটাগুলো বন্ধ। কলকারখানাও তেমন নেই। বায়ুদূষণ করছে মূলত যানবাহনের কালো ধোঁয়া এবং শহরজুড়ে চলমান নির্মাণকাজ থেকে তৈরি হওয়া ধূলিকণা।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ শংকর কে রায় আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রাজশাহীর মতো শহরে আমরা এমন বায়ুদূষণ কল্পনাও করতে পারি না। এখন এমনিতেই আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে সর্দি, জ্বর, কাশি, ফ্লু, ডেঙ্গু রয়েছে। এর সঙ্গে দূষিত বায়ু ফুসফুসে গেলে শিশু ও বয়স্ক এবং যারা আগে থেকে হাঁপানি ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত, তাদের নানা অসুখ দেখা দেবে।’

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের সভাপতি অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শহরজুড়ে প্রচুর নির্মাণকাজ হচ্ছে। বালু রাখা হচ্ছে রাস্তার ওপর। গাড়ি সেদিক দিয়ে গেলে চাকা উঠছে বালুর ওপর। এতে বালু উড়ছে। বাতাসে ধূলিকণা বাড়ছে। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা পরিবেশবান্ধব হলেও সংখ্যা এতটাই বেড়েছে যে সেগুলোও চলাচলের কারণে ধুলোবালি ওড়াচ্ছে; পাশাপাশি অন্যান্য যানবাহন থেকে কালো ধোঁয়া নির্গত হচ্ছে। এগুলোর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার কথা তো শোনা যায় না।’

ধোঁয়া দেখে সনদ

রাজশাহী নগরের ভেতর দিয়ে এখনো বিভিন্ন রুটের বাস চলাচল করে। শিরোইল বাস টার্মিনাল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, লক্কড়ঝক্কড় বাস এক জেলা থেকে আরেক জেলায় চলাচল করছে। গতকাল দুপুরে নগরের ভদ্রা এলাকায় একটি বাস থেকে কালো ধোঁয়া নির্গত হতে দেখা যায়।

সড়ক পরিবহন আইন অনুযায়ী এসব গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার কথা। কিন্তু ট্রাফিক পুলিশ এ ব্যাপারে নিষ্ক্রিয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ব্যাপারে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) ট্রাফিক বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) নূরে আলম সিদ্দিকী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের দেশে মোটরসাইকেল একবার কেনার পর আর কখনো ধোঁয়া পরীক্ষা হয় না। এ ব্যাপারে মামলা হয় না। আমাদের দেশে বিষয়টা ওই পর্যায়ে যায়নি। তবে বাস-ট্রাকের মতো অন্যান্য যানবাহন কালো ধোঁয়া নির্গত করলে আমরা ব্যবস্থা নিই। এটা অবশ্য দেখার মূল দায়িত্ব বিআরটিএর। আমরা বিআরটিএকে বলি, যেসব গাড়ি কালো ধোঁয়া নির্গত করে, তাদের যেন ফিটনেস সার্টিফিকেট না দেওয়া হয়।’

বিআরটিএর রাজশাহী কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তাঁরা যানবাহনের কালো ধোঁয়া চোখে দেখেই ফিটনেস সনদ দেন। ধোঁয়ার মান পরীক্ষার জন্য তাঁদের কাছে কোনো ডিভাইস নেই। অথচ গ্যাস, পেট্রল বা অকটেনচালিত মোটরযানের ধোঁয়া পরীক্ষার জন্য গ্যাস অ্যানালাইজার ও ডিজেলচালিত গাড়ির জন্য স্মোক মিটার আছে। এ যন্ত্র শুধু বিআরটিএর ঢাকা কার্যালয়ে আছে। দেশের আর কোথাও নেই।

জানতে চাইলে বিআরটিএর রাজশাহীর সহকারী পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ারিং) ফয়সাল হাসান বলেন, প্রধান কার্যালয়ের অনুমতি ছাড়া গণমাধ্যমে কথা বলার জন্য আগে একবার তাঁকে শোকজ (কারণ দর্শানোর নোটিশ) দেওয়া হয়েছিল। তাই প্রধান কার্যালয়ের অনুমতি ছাড়া তিনি কথা বলবেন না।

রাসিকে জরুরি বৈঠক

রাজশাহীর বাতাসের মান দেশের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ হয়ে পড়ার খবর জানতে পেরে গতকাল দুপুরে জরুরি বৈঠক করেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) কর্মকর্তারা। সেখানে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে নির্মাণাধীন বেশ কয়েকটি ফ্লাইওভারের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের উদ্যোগে নির্মাণাধীন বাসাবাড়ির বিষয়টিও আলোচনায় এসেছে। এ বৈঠকে ধূলিকণা কমানোর ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রাসিকের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শেখ মো. মামুন ডলারকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে রাসিকের পরিবেশ উন্নয়ন কর্মকর্তা মাহমুদ-উল-হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাতাসের মান নিয়ে যে খবর এসেছে, তা দুঃখজনক। এখন শহরে বেশ কয়েকটি ফ্লাইওভারের কাজ চলছে। সে কারণে মাটি খোঁড়াখুঁড়ি হয়েছে। বৃষ্টি থেমে যাওয়ায় ধুলোবালি উড়ছে। পানি ছিটিয়ে এটা কমানো যায় কি না, সে জন্য সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল শাখাকে বলা হয়েছে। ফ্লাইওভারগুলোর নির্মাণকাজ শেষ হলে এটা থাকবে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৪ হাজার এএসআই নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি

দেড় মাস ধরে কর্মস্থলে নেই সহকারী কমিশনার, নিয়োগ বাতিল করল সরকার

জুবায়েদ হত্যার নেপথ্যে ‘প্রেমের সম্পর্ক’, সিসিটিভির ফুটেজ দেখে আটক ৩

মাদ্রাসাছাত্রীকে তুলে রেস্তোরাঁয় নিয়ে ধর্ষণ, আড়াল করতে সাউন্ডবক্সে চলে গান

পর্নো সাইটে বাংলাদেশি যুগলের ১১২ ভিডিও, র‍্যাঙ্কিংয়ে অষ্টম: সিআইডি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন

মনোনয়ন লড়াইয়ে দুই শিল্পপতি

সাবিত আল হাসান, নারায়ণগঞ্জ 
আবু জাফর আহমেদ বাবুল ও মাসুদুজ্জামান মাসুদ। ছবি: সংগৃহীত
আবু জাফর আহমেদ বাবুল ও মাসুদুজ্জামান মাসুদ। ছবি: সংগৃহীত

নারায়ণগঞ্জ-৫ (সদর-বন্দর) আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেতে ব্যাপক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন দুই শিল্পপতি। দৃশ্যত তাঁদের দুজনের প্রতিযোগিতার মাঝে পিছিয়ে পড়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য থেকে শুরু করে দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নেতারা। এমনকি মহানগর বিএনপির অনেক নেতা, যাঁরা ৫ আগস্টের পর নিজেদের সম্ভাব্য দলীয় প্রার্থী হিসেবে পরিচয় দিতেন, তাঁদের কেউ কেউ এখন দুই ব্যবসায়ীর পাশে দাঁড়িয়েছেন।

আসনটিতে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী দুই শিল্পপতি হচ্ছেন মডেল ডি ক্যাপিটাল গ্রুপের মালিক ও নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি মাসুদুজ্জামান মাসুদ। অপরজন প্রাইম গ্রুপের মালিক ও বিকেএমইএর সাবেক পরিচালক আবু জাফর আহমেদ বাবুল। দুজনের কেউই বিএনপির পদধারী কোনো নেতা নন। মাসুদুজ্জামান মাসুদ গত ২৩ সেপ্টেম্বর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর কাছ থেকে দলীয় সদস্যপদ গ্রহণ করেন। তবে এলাকায় উভয় ব্যবসায়ী আগে থেকেই বিএনপিপন্থী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। জেলা, মহানগর এমনকি কেন্দ্রীয় বিএনপির নেতাদের সঙ্গেও তাঁদের সুসম্পর্ক রয়েছে বলে শোনা যায়।

দুই ব্যবসায়ীর বাইরে আসনটিতে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক এমপি আবুল কালাম, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্যসচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু, যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুস সবুর খান সেন্টু, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সাখাওয়াত ইসলাম রানা, মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। তবে মাসুদ ও বাবুলের কারণে ইতিমধ্যেই আলোচনা থেকেও ছিটকে পড়েছেন তাঁরা। এমনকি কয়েকজনকে এই দুই শিল্পপতির পাশে দাঁড়িয়ে প্রকাশ্যে তাঁদের সমর্থন দিতেও দেখা গেছে।

পুরো মহানগর বিএনপি এখন মাসুদ ও বাবুলে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। নেতা-কর্মীদের অধিকাংশই দৌড়াচ্ছেন তাঁদের পেছনে। দলে পদপদবি না থাকা সত্ত্বেও মনোনয়ন নিয়ে তাঁদের দৌড়ঝাঁপ আলোচনার জন্ম দিয়েছে। নেতা-কর্মীদের ধারণা, এ দুজনের একজনই পাবেন আসনটিতে বিএনপির মনোনয়ন।

মনোনয়নপ্রত্যাশী মাসুদুজ্জামান মাসুদ বলেন, ‘জুলাই আন্দোলন থেকে শুরু করে বিএনপির বহু রাজনৈতিক কর্মসূচিতে আর্থিকভাবে পাশে ছিলাম। এমনকি আওয়ামী লীগ আমলে আমার বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের অর্থায়নের অভিযোগে মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। আমার কারখানা পুড়িয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র হয়েছে। ফলে বিএনপির পদপদবিতে না থেকেও ঝুঁকিতে ছিলাম। আমি দলীয় মনোনয়ন চেয়েছি। বাকিটা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সিদ্ধান্ত নেবেন।’

অপর মনোনয়নপ্রত্যাশী আবু জাফর আহমেদ বাবুল বলেন, ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী দীর্ঘ আন্দোলনে আমি ছায়া হয়ে ছিলাম। দলের নির্দেশনা পেয়েই সাধারণ মানুষের কাছে যাচ্ছি। মনোনয়ন পাব কি না সেটা নির্ভর করছে হাইকমান্ডের ওপর। তবে দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে মেনে নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৪ হাজার এএসআই নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি

দেড় মাস ধরে কর্মস্থলে নেই সহকারী কমিশনার, নিয়োগ বাতিল করল সরকার

জুবায়েদ হত্যার নেপথ্যে ‘প্রেমের সম্পর্ক’, সিসিটিভির ফুটেজ দেখে আটক ৩

মাদ্রাসাছাত্রীকে তুলে রেস্তোরাঁয় নিয়ে ধর্ষণ, আড়াল করতে সাউন্ডবক্সে চলে গান

পর্নো সাইটে বাংলাদেশি যুগলের ১১২ ভিডিও, র‍্যাঙ্কিংয়ে অষ্টম: সিআইডি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পদ্মা সেতু রেলসংযোগ

ট্রেন আসে, ট্রেন যায়, স্টেশন তাকিয়ে রয়

  • সাড়ে ৩৮ হাজার কোটির প্রকল্পে চলে ৬টি আন্তনগর ট্রেন।
  • ২০ স্টেশনের ৮টিতে এখনো কোনো ট্রেন থামছে না।
  • কার্যক্রম না থাকা স্টেশন ভবন থেকে চুরি হচ্ছে সরঞ্জাম।
  • দিনে ৪৮টি ট্রেন চলার সক্ষমতা থাকলেও বাড়ছে না ট্রেন।
  • ১,৫৭৪ জনকে নিয়োগের প্রস্তাব ফেরত গেছে পাঁচবার।
তৌফিকুল ইসলাম, ঢাকা 
পদ্মা সেতু রেলসংযোগ প্রকল্পের ৮টি স্টেশনে থামে না কোনো ট্রেন। ফলে এই রেলপথের সুবিধা থেকে বঞ্চিত এসব এলাকার মানুষ। একই সঙ্গে জনবলের অভাবে কিছু স্টেশন থেকে সরঞ্জাম চুরি হচ্ছে। সম্প্রতি পদ্মবিলা জংশন এলাকায়।	ছবি: আজকের পত্রিকা
পদ্মা সেতু রেলসংযোগ প্রকল্পের ৮টি স্টেশনে থামে না কোনো ট্রেন। ফলে এই রেলপথের সুবিধা থেকে বঞ্চিত এসব এলাকার মানুষ। একই সঙ্গে জনবলের অভাবে কিছু স্টেশন থেকে সরঞ্জাম চুরি হচ্ছে। সম্প্রতি পদ্মবিলা জংশন এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

পদ্মা সেতু রেলসংযোগ প্রকল্পের ২০টি স্টেশনের ৮টিতেই কোনো ট্রেন থামে না। ফলে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত রেললাইন চালুর ১০ মাস পরও ট্রেন থামার অপেক্ষায় এসব স্টেশন। ট্রেন না থামায় এই রেলপথের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এসব এলাকার মানুষ। অন্যদিকে কার্যক্রম একপ্রকার বন্ধ থাকায় আধুনিক এসব স্টেশন ভবন নষ্ট হচ্ছে। পর্যাপ্ত জনবলের অভাবে কিছু স্টেশন থেকে সরঞ্জাম চুরি হচ্ছে।

ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত রেলপথের দৈর্ঘ্য ২৩৬ দশমিক ২৭ কিলোমিটার। সাড়ে ৩৮ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পে নিয়মিত ট্রেন চলে মাত্র ৬টি; অথচ সক্ষমতা রয়েছে ৪৮টি ট্রেন চলাচলের। ফলে এই রেলপথ বাণিজ্যিকভাবে এখনো লাভজনক হয়ে উঠতে পারেনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পদ্মা সেতু রেলসংযোগ প্রকল্পের আওতায় ১৭টি নতুন স্টেশন নির্মাণ করা হয়েছে এবং ৩টি পুরোনো স্টেশন সংস্কার করা হয়েছে। সংস্কার করা তিন স্টেশনের মধ্যে রয়েছে কমলাপুর, কাশিয়ানী ও ভাঙ্গা। গেন্ডারিয়ায় আগে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেলপথে ছোট স্টেশন ছিল। সেখানে আধুনিক স্টেশন নির্মাণ করা হয়েছে। এই স্টেশনে এখনো শুধু ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটের ট্রেনই থামে। কিন্তু পদ্মা সেতু হয়ে চলাচলকারী ট্রেনগুলো থামে ১১টি স্টেশনে। এগুলো হলো ভাঙ্গা জংশন, কাশিয়ানী, লোহাগড়া, নড়াইল, সিঙ্গিয়া, শ্রীনগর, মাওয়া, পদ্মা, শিবচর, ভাঙ্গা স্টেশন ও কমলাপুর রেলস্টেশন। ট্রেন থামায় এসব স্টেশনে যাত্রী ওঠানামা করতে পারে। পদ্মা সেতু দিয়ে চলাচল করা ট্রেন যে ৯টি স্টেশনে থামছে না, সেগুলো হলো গেন্ডারিয়া, কেরানীগঞ্জ, নিমতলা, নগরকান্দা, মুকসুদপুর, মহেশপুর, জামদিয়া, পদ্মবিলা, রূপদিয়া। এসব স্টেশনে বর্তমানে কয়েকজন ওয়েম্যান ও প্রহরী আছেন, কার্যক্রম একপ্রকার বন্ধ।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ট্রেন না থামায় কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত আধুনিক স্টেশন ভবনগুলো ব্যবহৃত না হওয়ায় নষ্ট হচ্ছে। ঢাকায় একটি সরকারি দপ্তরে কর্মরত মো. জুবায়ের হোসেনের বাড়ি মুন্সিগঞ্জ। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঢাকা-মুন্সিগঞ্জ সড়কপথ এখন বেশ ভালো, তাই প্রতিদিন বাড়ি থেকে অফিসে যাতায়াত করেন। সিরাজদিখানের কাছে নিমতলা রেলস্টেশন নির্মিত হলেও কোনো ট্রেন থামে না। ফলে ট্রেনের সুবিধা তিনি পান না। সরকারি টাকায় স্টেশন তৈরি করে ব্যবহার না হওয়া অর্থের অপচয়।

পদ্মা সেতু রেলসংযোগ প্রকল্পের কর্মকর্তারা জানান, কার্যক্রম না থাকা কিছু স্টেশন থেকে এরই মধ্যে দামি ইলেকট্রিক ফিটিংস, বাথরুমের সরঞ্জাম ও ভায়াডাক্টের গ্রিটিং চুরি হয়েছে। ট্রেনের যাত্রাবিরতি নেই বলেই এসব স্টেশন চালু করা হয়নি। পূর্ণরূপে পরিচালনার আগে জনবল অনুমোদন এবং সময়সূচি চূড়ান্ত করা প্রয়োজন।

২০২৩ সালে পদ্মা সেতু রেলসংযোগ প্রকল্পের একাংশ চালু হয়। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ঢাকা থেকে সরাসরি যশোর পর্যন্ত ট্রেন চলাচল শুরু হয়। বর্তমানে এই রুটে সুন্দরবন এক্সপ্রেস, রূপসী বাংলা, মধুমতি, জাহানাবাদ, বেনাপোল এক্সপ্রেসসহ ছয়টি ট্রেন নিয়মিত চলাচল করছে। নতুন রেললাইন চালু হলেও বাড়েনি ট্রেনের সংখ্যা।

প্রকল্প সূত্র জানায়, এই রুট দিয়ে দিনে ৪৮টি যাত্রী ও পণ্যবাহী ট্রেন চালানোর সক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু পর্যাপ্ত জনবল, কোচ, লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) না থাকায় পূর্ণ সক্ষমতায় পৌঁছানো যায়নি। প্রকল্পে প্রস্তাবিত ১ হাজার ৫৭৪ জন নতুন জনবল নিয়োগের অনুমোদন এখনো দেয়নি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এরই মধ্যে পাঁচবার সেই প্রস্তাব ফেরত পাঠানো হয়েছে।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, আন্তনগর ট্রেন সব স্টেশনে থামানো সম্ভব নয়। গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলোতেই ট্রেনের বিরতি দেওয়া হয়। তবে কিছু স্টেশন এখন বন্ধ আছে। ধীরে ধীরে লোকাল বা কমিউটার ট্রেন চালু হলে সব স্টেশনে যাত্রী ওঠানামা করতে পারবে। এ ছাড়া জনবলসংকটের কারণে এখনই সব স্টেশন চালু করা যায়নি। তিনি বলেন, সব স্টেশনে আন্তনগর ট্রেনের বিরতি দিলে সময়সূচি ব্যাহত হবে। কিছু স্টেশনের সরঞ্জাম চুরির ঘটনায় জিআরপি মোতায়েনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।

প্রকল্পের নথি থেকে জানা যায়, ডিপিপি অনুযায়ী এই প্রকল্পের মোট ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছিল ৩৮ হাজার ৬২৮ দশমিক ৯০ কোটি টাকা। এর মধ্যে নির্মাণ চুক্তির আওতায় ছিল ২৪ হাজার ৭৪১ কোটি টাকা। অবশিষ্ট খরচ হয়েছে ভ্যাট ও ট্যাক্স ৮ হাজার কোটি, ভূমি অধিগ্রহণে ৪ হাজার কোটি, পুনর্বাসনে ২০০ কোটি, ইউটিলিটি পরিষেবা স্থানান্তরে ৩০০ কোটি, পরামর্শক ব্যয় ১ হাজার ৩৩৩ কোটি, বেতন-ভাতা ও অন্যান্য প্রশাসনিক খরচ ৫০ কোটি টাকা।

২০২৬ সালের জুনে এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হচ্ছে।

দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, যে প্রকল্পে কয়েক হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন অবকাঠামো তৈরি হয়, সেখানে ব্যবহারের আগেই স্টেশন বন্ধ থাকা পরিকল্পনার দুর্বলতা নির্দেশ করে। এ ছাড়া বড় বড় প্রকল্প নেওয়া থেকে মনোযোগ কমাতে হবে রেলওয়েকে। রেলসেবাকে টেকসই করতে হলে স্টেশনভিত্তিক ব্যবসা এবং কমিউটার সার্ভিস চালুর দিকে নজর দিতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৪ হাজার এএসআই নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি

দেড় মাস ধরে কর্মস্থলে নেই সহকারী কমিশনার, নিয়োগ বাতিল করল সরকার

জুবায়েদ হত্যার নেপথ্যে ‘প্রেমের সম্পর্ক’, সিসিটিভির ফুটেজ দেখে আটক ৩

মাদ্রাসাছাত্রীকে তুলে রেস্তোরাঁয় নিয়ে ধর্ষণ, আড়াল করতে সাউন্ডবক্সে চলে গান

পর্নো সাইটে বাংলাদেশি যুগলের ১১২ ভিডিও, র‍্যাঙ্কিংয়ে অষ্টম: সিআইডি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কার্গো ভিলেজে আগুন

পণ্য পেরিয়ে দ্রুত পৌঁছাতে পারেনি বেবিচকের দল

আমানুর রহমান রনি, ঢাকা 
বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে লাগা আগুনে বহু ব্যবসায়ীর পণ্য পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। পুড়েছে কয়েক শ কোটি টাকার মালপত্র। গতকাল হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে লাগা আগুনে বহু ব্যবসায়ীর পণ্য পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। পুড়েছে কয়েক শ কোটি টাকার মালপত্র। গতকাল হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আগুন নেভানোর জন্য বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) নিজস্ব একটি বিভাগ রয়েছে। তবে গত শনিবার কার্গো ভিলেজের আমদানি কার্গো কমপ্লেক্সে আগুন লাগার পর বিভাগটি বিভিন্ন কারণে তাৎক্ষণিক আগুন নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখতে পারেনি। ফলে আগুন ছড়িয়ে পড়ে এবং ভবনের সবকিছু পুড়ে যায়। বিমানবন্দর-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

বেবিচক বলেছে, ভবনটির যেখানে আগুন লাগে, তার সামনে একটি টিনের শেড এবং নিচে আমদানি করা টন টন পণ্যের স্তূপ থাকায় বেবিচকের অগ্নিনির্বাপণ বিভাগ গাড়ি নিয়ে দ্রুত পানি দিতে পারেনি। এতে দেরি হয়। পরে তারা বাইরে ভবনের সামনের সড়ক দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। এর মধ্যে ফায়ার সার্ভিসসহ অন্যরা এসে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে।

বেবিচক জানায়, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ের উত্তর পাশে বেবিচক কর্তৃপক্ষের অগ্নিনির্বাপণ বিভাগের দপ্তর। এই বিভাগের নেতৃত্বে রয়েছেন পরিচালক আবু সালেহ মো. খালেক। এই বিভাগের সদস্যরা দুই বছর পরপর শাহজালাল বিমানবন্দরের রানওয়েতে ডামি উড়োজাহাজ তৈরি করে আগুন নেভানোর মহড়া করেন। সর্বশেষ ২০২৪ সালের জুনে মহড়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী তাদের জনবল, যানবাহন, প্রশিক্ষণ ও নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা রয়েছে।

বেবিচক সূত্র জানায়, হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে অগ্নিনির্বাপণ বিভাগের আগুন নেভানোর চারটি যানবাহন রয়েছে, একটি প্রোটেক্টর গাড়ি, একটি রোজেনবাওয়ার ও দুটি মরিতা। তবে একটি মরিতা গাড়ি নষ্ট। প্রোটেক্টর গাড়িতে একবারে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার লিটার পানি ও ১ হাজার ৫০০ লিটার ফোম বহন করা যায়। অপর গাড়িগুলোতে ১০ হাজার লিটার পানি ও ১ হাজার ২০০ লিটার ফোম বহন করা যায়। গাড়ির পানি বা ফোম শেষ হলে আবার ভরতে হয়।

সূত্র জানায়, এসব গাড়ির নকশা আলাদা। এগুলো উড়োজাহাজের আগুন নেভানোর জন্য তৈরি। এসব গাড়ির সঙ্গে বড় পাইপের সংযোগ কম করা থাকে। অর্থাৎ ফায়ার সার্ভিসের পানিবাহী গাড়ির চেয়ে এগুলো ভিন্ন। তাই বেবিচকের অগ্নিনির্বাপণ বিভাগ আমদানি কার্গো কমপ্লেক্সের আগুনে পানি ছুড়ে তেমন সফল হয়নি।

দুটি সংস্থার প্রত্যক্ষদর্শী অন্তত ৯ জনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাঁরা শুরুর দিকে বেবিচকের অগ্নিনির্বাপণ দলকে সাহায্য করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি বাহিনীর একজন কর্মকর্তা বলেন, ঘটনাস্থলের ৩০০ মিটারের মধ্যেই বেবিচকের অগ্নিনির্বাপণ বিভাগ। কিন্তু তারা আগুনের কাছে এসে তাৎক্ষণিক পানি দিতে পারেনি। প্রথমে ধোঁয়া দেখে ভবনটির সামনের সড়কের আনসার সদস্যরা দ্রুত বিষয়টি জানান। এরপর বিমানবন্দরের অগ্নিনির্বাপণ দলের একটি গাড়ি মাঠ দিয়ে আগুনের দিকে এগোনের চেষ্টা করে। কিন্তু আগুনের সূত্রপাতস্থলের সামনে একটি টিনের বড় শেড ও তার সামনে খোলা মাঠে কয়েক শ’ টন আমদানি করা ভারি মালামাল রাখা ছিল। এসব মালামাল সরিয়ে ওই গাড়ির পানি পৌঁছাতে পারেনি। এরপর বাইরে এসে পানি দেওয়ার চেষ্টা করার সময় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে যায়। নিরাপত্তাজনিত কারণে এলাকাটির প্রতিটি ফটকে ছিল কড়াকড়ি। কেউ প্রথমে ধারণা করেননি, আগুন এত তীব্র হবে। এর মধ্যে ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নেভাতে যোগ দেয়। বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা আন্তর্জাতিক কুরিয়ার এলাকার সামনের ফটক ভেঙে ফেলেন। কিন্তু আগুন এর মধ্যেই ছড়িয়ে যায়।

সূত্র জানায়, বেবিচকের অগ্নিনির্বাপক দলের প্রতিটি গাড়ির জন্য চালকসহ ছয়জন স্টাফ রয়েছেন। সেই হিসাবে চার গাড়ির জন্য ২৪ জন ফায়ার ফাইটার রয়েছেন। তারা শিফটে দায়িত্ব পালন করেন।

ফায়ার সার্ভিসের অপারেশন ও মেনটেইন্যান্স শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী আগুন নেভার পর সাংবাদিকদের বলেন, ভবনটিতে অগ্নিকাণ্ডের জন্য যথেষ্ট প্রটেকশন ছিল না।

এসব বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে বেবিচকের কর্মকর্তারা জানান, বেবিচকের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক আজ মঙ্গলবার সব বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলবেন।

শনিবার বেলা সোয়া ২টার দিকে বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজের আমদানি কার্গো ভবনের আন্তর্জাতিক কুরিয়ারের জায়গায় আগুনের সূত্রপাত হয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে বিভিন্ন বাহিনীর অন্তত ৩৬ জন আহত হন। তাঁদের মধ্যে ৫ জন চিকিৎসাধীন এবং বাকিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আগুন নেভানোর কাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে বিপুল নামে আনসারের এক সদস্য গাড়ি চাপায় বিমানবন্দরের সামনের সড়কে নিহত হন।

গতকাল দেখা গেছে, শাহজালাল বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের তিন দিনের মাথায় বিকল্প ব্যবস্থা চালু হলেও আমদানি পণ্য ছাড় ও ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়নি। সচল করা যায়নি পুড়ে যাওয়া আমদানি কার্গো ভিলেজের নেটওয়ার্কিং সিস্টেম। ফলে আমদানির মালামাল ছাড়ের আংশিক কার্যক্রম চলছে বিমানের কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত ল্যাপটপ দিয়ে। এতে কার্যক্রমে ধীরগতিতে ভোগান্তিতে পড়েছেন আমদানিকারক ও এজেন্টরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৪ হাজার এএসআই নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি

দেড় মাস ধরে কর্মস্থলে নেই সহকারী কমিশনার, নিয়োগ বাতিল করল সরকার

জুবায়েদ হত্যার নেপথ্যে ‘প্রেমের সম্পর্ক’, সিসিটিভির ফুটেজ দেখে আটক ৩

মাদ্রাসাছাত্রীকে তুলে রেস্তোরাঁয় নিয়ে ধর্ষণ, আড়াল করতে সাউন্ডবক্সে চলে গান

পর্নো সাইটে বাংলাদেশি যুগলের ১১২ ভিডিও, র‍্যাঙ্কিংয়ে অষ্টম: সিআইডি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত