Ajker Patrika

প্রতারণার দায়ে সাজা ভোগ করেও চাকরিতে বহাল ইবি কর্মচারী

ইবি প্রতিনিধি
প্রতারণার দায়ে সাজা ভোগ করেও চাকরিতে বহাল ইবি কর্মচারী

প্রতারণার দায়ে সাজা ভোগ করেও চাকরিতে বহাল আছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের এলএমএসএস (ঝাড়ুদার) হাফিজুর রহমান। তাঁর অপসারণ চেয়ে প্রতারণার শিকার ব্যক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর আবেদন করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ভুক্তভোগী আকবর হোসেন কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার তেবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা।

জানা গেছে, আকবর হোসেনের কাছ থেকে ৭ লাখ টাকা ধার নিয়েছিলেন ইবি কর্মচারী হাফিজুর রহমান। ধারের টাকা পরিশোধের জন্য ২০১৪ সালের ২১ সেপ্টেম্বর অগ্রণী ব্যাংক কুষ্টিয়া শাখার সঞ্চয়ী হিসাব নম্বর ০২০০০০২৯০৫৫৫১ থেকে হাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত ৭ লাখ টাকার একটি চেক (নম্বর O1A ৪৪৩০৩১৩) দিয়ে নগদায়নের পরামর্শ দেন।

তিন দিন পর ওই বছরেরই ২৪ সেপ্টেম্বর ব্যাংক থেকে টাকা নগদায়নের জন্য গেলে অ্যাকাউন্টে অপর্যাপ্ত তহবিল ও স্বাক্ষর মেলে না বলে ব্যাংক থেকে চেক ডিজ-অনার স্লিপ দেওয়া হয়। বিষয়টি জানানো হলেও হাফিজুর অর্থ পরিশোধ করেননি। পরে হাফিজুরের ঠিকানায় ৩০ দিনের মধ্যে অর্থ পরিশোধের জন্য লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হলেও তিনি নোটিশ গ্রহণ করেননি। পরে কুষ্টিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন আকবর হোসেন।

হাফিজুরের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ হওয়ায় গ্রেপ্তার অথবা আদালতে আত্মসমর্পণের তারিখ থেকে ১০ মাসের কারাদণ্ড এবং চেকে উল্লিখিত ৭ লাখ টাকা জরিমানা করেন আদালত। পরে ২০২১ সালের ২২ আগস্ট হাফিজুরকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়। সাজা ভোগ শেষে আবার তিনি কাজে যোগ দেন। তবে এখনো টাকা পরিশোধ করেননি বলে জানান আকবর হোসেন।

জানতে চাইলে ভুক্তভোগী আকবর হোসেন বলেন, ‘হাফিজুর রহমান প্রতারক চক্রের একজন সদস্য। তিনি আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। সেটি আদালতে প্রমাণিত হয়েছে। জেল খেটে বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানে হাফিজ কীভাবে চাকরি করেন? আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে হাফিজের অপসারণ চেয়ে আবেদন করেছি।’ দেরিতে অভিযোগ করার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাঁর চাকরিতে বহাল থাকার বিষয়টি তিনি আগে জানতেন না।

তবে এসব অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে হাফিজুর রহমান বলেন, ‘তিনি আমার চাকরি খাওয়ার জন্য এ রকম করছেন।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান বলেন, কোনো কর্মচারীকে আদালত শাস্তি দিলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিধি মোতাবেক তাঁকে বরখাস্ত করার এখতিয়ার রাখে। অভিযুক্ত কর্মচারী যেহেতু হল প্রশাসনের অধীন, তাই হল প্রশাসনের সিদ্ধান্ত সুপারিশ আকারে পাঠাতে হবে। তারপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ ব্যাপারে বিধি মোতাবেক বরখাস্ত করবে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মাহবুবুল আরফিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘হাফিজুর ১০ মাস জেলে থাকার পরও চাকরিতে বহাল থাকবেন কিনা না, সেটা তো আমার হাতে না। বিষয়গুলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হাতে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত