Ajker Patrika

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে বছরে ৮ মাসই ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ

পল্লব আহমেদ সিয়াম, ইবি
Thumbnail image

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) বছরে প্রায় আট মাস ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকে। ছুটির তালিকা অনুযায়ী রোজা, দুটি ঈদসহ বিভিন্ন দিবস মিলিয়ে বছরে ছুটি ৭০ দিন। বৃহস্পতি ও শুক্রবার দুই দিন হিসেবে ৫২ সপ্তাহে সাপ্তাহিক বন্ধ ১০৪ দিন। এ ছাড়া ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে বন্ধ আরও তিন দিন। এ হিসাবে বছরে সব মিলিয়ে বন্ধ থাকে ১৭৭ দিন বা প্রায় ৬ মাস।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় ছুটির তালিকায় নতুন করে যুক্ত হয়েছে সপ্তাহে এক দিন অনলাইন ক্লাস। তবে অধিকাংশ বিভাগেই অনলাইন ক্লাস হয় না। তাতে আরও যুক্ত হচ্ছে ৫২ দিন। এ হিসাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে সশরীরে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকছে মোট ২২৯ দিন বা প্রায় আট মাস।

হিসাব অনুযায়ী, ৩৬৫ দিনে ক্লাস হয় মাত্র ১৩৬ দিন। অর্থাৎ ১২ মাসে ক্লাস হয় মাত্র সাড়ে চার মাস। এমন অবস্থায় ক্লাস-পরীক্ষা, ব্যবহারিক ও গবেষণার জন্য পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যাচ্ছে না বলে মনে করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

অন্যদিকে এত বন্ধ থাকার কারণে বিপাকে পড়েছেন প্রকৌশল, বিজ্ঞান ও জীববিজ্ঞান অনুষদের অধীনে থাকা ১২ বিভাগের শিক্ষার্থীরা। মূল পরীক্ষার পাশাপাশি ল্যাব পরীক্ষায় আরও অতিরিক্ত সময় দরকার হয় তাঁদের। এ কারণে বিভাগগুলোতে অধিকাংশ সময় পরীক্ষা লেগেই থাকে।

কিছুদিন পর পর ছুটি থাকায় ও সপ্তাহের সোমবার পরীক্ষা বন্ধ থাকায় ধারাবাহিকভাবে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাতে পিছিয়ে পড়ছে স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম। সৃষ্টি হচ্ছে সেশনজট।

অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী, একজন শিক্ষক প্রতি সেমিস্টারে কমপক্ষে সাড়ে তিন মাস ক্লাস নেবেন। ক্লাস শেষে ১৫ দিনের বিরতি দিয়ে সেমিস্টার পরীক্ষা নেবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমিস্টার সিস্টেম চালু থাকায় বছরে দুটি সেমিস্টার পরীক্ষায় বিভাগভেদে সময় লাগে দুই থেকে তিন মাস। সে হিসাবে বছর শেষ করতে সময় লাগার কথা ৯ মাস। তবে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সময় পান মাত্র সাড়ে চার মাস।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘ছুটির সঙ্গে সিলেবাসের সম্পর্ক বিপরীতমুখী হওয়ায় অল্প সময়ের মধ্যে কোর্স শেষ করতে হচ্ছে। তাতে পর্যাপ্ত ক্লাস নিতে ব্যর্থ হচ্ছেন শিক্ষকেরা। আমরাও সঠিকভাবে জ্ঞান আহরণ করতে ব্যর্থ হচ্ছি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি বিভাগের শিক্ষার্থী আলী নোমান বলেন, বছরের অর্ধেক সময় ছুটি থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ নেই। এভাবে চলতে থাকলে ইবি শিক্ষার্থীরা প্রতিযোগিতা থেকে পিছিয়ে পড়বে। তাই প্রশাসনের উচিত বার্ষিক ছুটি কমানো এবং সাপ্তাহিক অনলাইন ক্লাস বন্ধ করা।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ছুটির ব্যাপারে আমাদের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকেও দেখতে হবে। স্টেক হোল্ডাররা যদি মনে করে, ছুটি কিছু কমানো যায়। তাহলে তাদের সেই তালিকা দিতে আহ্বান করব। আপাতত সোমবারের অনলাইন ক্লাস তুলে দেওয়ার চেষ্টা করব। তবে অনলাইন ক্লাস সোমবার এটা ছুটির মধ্যে পড়ে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত