Ajker Patrika

এসিল্যান্ডের অফিসসংলগ্ন নদ থেকে বালু তোলার অভিযোগ প্যানেল মেয়রের বিরুদ্ধে

আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ১১: ৪৪
এসিল্যান্ডের অফিসসংলগ্ন নদ থেকে বালু তোলার অভিযোগ প্যানেল মেয়রের বিরুদ্ধে

যশোরের মনিরামপুরে সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়সংলগ্ন হরিহর নদে মেশিন বসিয়ে প্রকাশ্যে বালু তোলা হচ্ছে। মনিরামপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র কামরুজ্জামান কামরুল শ্রমিক খাঁটিয়ে বালু তুলে পৌরসভার মাঠ ভরাট করছেন। এর আগে একই স্থান থেকে বালু তুলে এসিল্যান্ড অফিস-সংলগ্ন প্রভাতী বিদ্যাপীঠ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ ভরাট করেছেন প্যানেল মেয়র। 

প্যানেল মেয়র কামরুজ্জামানের দাবি, পৌরসভার স্বার্থে বালু তোলা হচ্ছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ ভরাটে অনুমতি নেওয়া ছিল। তবে, কার কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছেন সেটা বলেননি তিনি। 

এদিকে নদ খুঁড়ে বালু তোলায় ক্ষতির আশঙ্কায় উপজেলা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন হরিহর নদপারের তাহেরপুর এলাকার বাসিন্দারা। কোনো প্রতিকার না হওয়ায় উদ্বিগ্ন তাঁরা। 

মনিরামপুর এসিল্যান্ড অফিসের ঠিক পেছনে হরিহর নদীতে সম্প্রতি বালু তোলা যন্ত্র। ছবি: আজকের পত্রিকাস্থানীয়রা জানান, গত নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে এসিল্যান্ড অফিসের পাশের হরিহর নদে বালু তোলার দুটি যন্ত্র বসানো হয় প্যানেল মেয়র কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে। তাহেরপুর এলাকার রবিউল ইসলাম নামে এক যুবক বালু তোলার কাজে নিয়োজিত আছেন। রাত ৮টার দিকে বালু তোলা শুরু হয়ে বন্ধ হয় ভোরবেলায়। দিনের বেলায় প্রকাশ্যে নদীতে বালু তোলার যন্ত্র ফেলা থাকে। 

স্থানীয়রা আরও জানান, নদ থেকে পাইপে বালু টেনে এনে প্রথমে প্রভাতী বিদ্যাপীঠের নতুন ভবনের ভেতরে ও মাঠ ভরাট করা হয়েছে। এখন পাকা সড়কের ওপর দিয়ে পাইপ টেনে নদের বালু দিয়ে পৌরসভার মাঠ ভরাটের কাজ চলমান আছে। 

অভিযোগকারীদের একজন খানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাজেদা খাতুন বলেন, ‘হরিহর নদের পারে আমার দোতলা বাড়ি। যেভাবে বালু তোলা হচ্ছে, তাতে যেকোনো সময় আমাদের বাড়িঘর ধসে নদীতে পড়ার আশঙ্কা করছি। বালু তোলা বন্ধ করার জন্য আমরা নদের পশ্চিম পাড়ের পাঁচ-সাত জন বাসিন্দা ইউএনও ও এসিল্যান্ডের দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। একদিন রাতে মেশিন চলার সময় আমি এসিল্যান্ডকে ফোনে জানিয়েছি। তার পরও বালু তোলা বন্ধ হচ্ছে না।’ 
 
নদীর বালু তুলে ভরা হয়েছে প্রভাতী বিদ্যাপীঠের নতুন ভবনের ভেতরে। ছবি: আজকের পত্রিকাবালু উত্তোলনের কাজে নিয়োজিত তাহেরপুর গ্রামের রবিউল ইসলাম বলেন, ‘পৌরসভার মাঠ সমান করাচ্ছেন মেয়র। প্যানেল মেয়র সঙ্গে আছেন। আমরা চারজন শ্রমিক তাঁর কাজ করছি। দুইটা মেশিন দিয়ে তিন দিন পৌরসভার মাঠে ২৫-৩০ ট্রাক বালু তুলিছি। প্রাইমারি স্কুলে ৩০ ট্রাক তোলা হয়েছে। রাতে বেশি সময় বালু তোলা হয়।’ 

জানতে চাইলে প্যানেল মেয়র কামরুজ্জামান বলেন, কারও ক্ষতি হয় এমন কাজ করা যাবে না। পৌরসভার স্বার্থে বালু তোলা হচ্ছে। সাংবাদিক হলেও বিষয়টি আপনারা বিবেচনা করে দেখতে পারেন। 

কামরুজ্জামান কামরুল আরও বলেন, প্রভাতী বিদ্যাপীঠের মাঠে বালু তোলার সময় অনুমতি নিয়ে করেছি। পৌরসভার মাঠের জন্য অনুমতি নেওয়া হয়নি। 

মনিরামপুর পৌরসভার মেয়র কাজী মাহমুদুল হাসান বলেন, মাটি ফেলে পৌরসভার মাঠ ভরাট করেছি। আগে ওরা স্কুলের মাঠ ভরাট করেছে। সেখান থেকে লাইন টেনে একদিন মাত্র পৌরসভার মাঠে বালু ফেলা হয়েছে। 

হরিহর নদ থেকে সম্প্রতি রাতে বালু তোলার দৃশ্য। ছবি: আজকের পত্রিকাখোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১ কোটি ৩৪ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রভাতী বিদ্যাপীঠ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তিনতলা একাডেমিক ভবন নির্মাণের কাজ পেয়েছেন প্যানেল মেয়র কামরুজ্জামান। কক্ষের ভেতরে ও মাঠ ভরাটে সরকারি বরাদ্দ থাকলেও তিনি নদী থেকে বালু তুলে মাঠ ভরাট করেছেন। এরপর কামরুজ্জামান ওই মেশিন দিয়ে হরিহর নদের একই স্থান থেকে বালু তুলে পৌরসভার নবনির্মিত তিনতলা নতুন ভবনের সামনের মাঠ ভরাটের কাজ করছেন। 

সহকারী কমিশনার (ভূমি) আলী হাসান বলেন, একটি লিখিত অভিযোগ পেয়ে লোক পাঠিয়েছিলাম। প্রমাণ পাওয়া যায়নি। 

তিনি আরও বলেন, গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে খোঁজ নিয়ে বালু তোলার বিষয়টি জানতে পেরেছি। এটি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকির হোসেন বলেন, ‘নদ থেকে বালু তোলার ব্যাপারে কাউকে অনুমতি দেওয়া হয়নি। বিষয়টি দেখছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঢাবির সিন্ডিকেটে সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের চূড়ান্ত অনুমোদন

শ্বশুরকে জামাতার ফোন: ‘আপনার মেয়েকে মাইরা ফেলছি, লাশ নিয়ে যান’

স্ত্রীকে হত্যার পর লাশ সেপটিক ট্যাংকে ফেলে গেলেন ইমামতি করতে

টিউলিপের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ দিতে ব্যর্থ দুদক: আইনজীবী

ঐতিহাসিক শিমলা চুক্তি বাতিল করল পাকিস্তান, এর প্রভাব কী

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত