কাজী শামিম আহমেদ, খুলনা

সিডর, আইলা, ফণী, বুলবুল, আম্পান, রিমালের মতো ঘূর্ণিঝড় থেকে বাংলাদেশকে বুক চিতিয়ে রক্ষা করতে গিয়ে প্রায় প্রতিবছরই ক্ষতিগ্রস্ত হয় সুন্দরবন। আবার মনুষ্যসৃষ্ট নানা কর্মকাণ্ডে বিরূপ প্রভাব পড়ে ম্যানগ্রোভ এই বনের ওপর। এর মধ্যে রয়েছে নিজ স্বার্থে বনে আগুন লাগিয়ে দেওয়া; কাঠ, মধু এবং অন্যান্য বনজ সম্পদ অতি আহরণ, অতিরিক্ত মাছ ধরা, ভ্রমণে গিয়ে যত্রতত্র পলিথিন, প্লাস্টিকের বোতলসহ নানা বর্জ্য ফেলা প্রভৃতি। তা ছাড়া, অতিমাত্রায় পর্যটক যাওয়াও সুন্দরবনের জন্য ক্ষতি বলে মনে করছেন পরিবেশবিদেরা।
সম্প্রতি বাগেরহাটের সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জ আন্দারমানিক ইকো ট্যুরিজম সেন্টার, হারবাড়িয়া পর্যটন স্পট, শরণখোলার কটকা, করমজলের কুমির প্রজননকেন্দ্রসহ বিভিন্ন পর্যটন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বনের ভেতর কোথাও ইটের রাস্তা, কোথাও পাথরের ঢালাই করা সড়ক, বাড়ি, অফিস, মোবাইল নেটওয়ার্ক টাওয়ারসহ নানা স্থাপনা নির্মাণ করেছে বন বিভাগ ও বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ফলে বাঘ-হরিণসহ বন্য প্রাণীদের অবাধ চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব সুন্দরবন (টোয়াস) সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে তাদের সংগঠনের রেজিস্ট্রেশনভুক্ত ৬৫টি এবং এর বাইরে ৫-৭টি লঞ্চ খুলনা থেকে পর্যটকদের সুন্দরবন ভ্রমণে নিয়ে যায়-আসে। মোংলা থেকে ট্রলার ও জালিবোটে করে সুন্দরবনের করমজল ও হাড়বাড়িয়া এলাকায় ঘুরতে যান পর্যটকেরা। সেখানে এই কাজে নিযুক্ত আছে অর্ধশতাধিক নৌযান। এ ছাড়া সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার মুন্সীগঞ্জ ও খুলনা থেকে করমজল ও কালাবগী পর্যটন এলাকা থেকেও একইভাবে পর্যটকেরা সুন্দরবন ভ্রমণে যান।
বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে সুন্দরবন ভ্রমণে যান ১ লাখ ২৮ হাজার ১৭৫ জন পর্যটক। সর্বশেষ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সুন্দরবন ভ্রমণ করেন ২ লাখ ১১ হাজার ৫৭ জন পর্যটক।
জানতে চাইলে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম জানান, আগে কটকা, কচিখালি, দুবলারচর, হিরণ পয়েন্ট, হাড়বাড়িয়া, কলাগাছিয়া ও করমজল—এই সাতটি স্থানে পর্যটন স্পট ছিল। নতুন করে শরণখোলার আলীবান্ধা, চাঁদপাই রেঞ্জের আন্ধারমানিক, খুলনা রেঞ্জের শেখেরটেক ও কৈলাশগঞ্জে হয়েছে আরও চারটি পর্যটন স্পট।
কটেজ মালিকেরা জানান, ইতিমধ্যে বনের কৈলাশগঞ্জ, ঢাংমারী ও আশপাশের এলাকায় চালু হয়েছে কমপক্ষে ২৩টি ইকো রিসোর্ট ও কটেজ। এর মধ্যে জঙ্গলবাড়ি, ইরাবতী, গোলকানন, বনলতা, বনবাস, বনবিবি, বনমালী, বাদাবন, সুন্দরী, শর্মিলা, ম্যানগ্রোভ হ্যাভেন, পিয়ালি, নির্বাসন জঙ্গলভিলা অন্যতম। এ ছাড়া নির্মাণাধীন রয়েছে আরও সাতটি।
অতিমাত্রায় পর্যটক সুন্দরবনের জন্য ক্ষতি বলে মনে করছেন পরিবেশবিদেরা। তাঁরা বলছেন, সুন্দরবনকেন্দ্রিক পর্যটনকে যদি সুন্দর করে নিয়ন্ত্রণ কিংবা পরিচালনা করা না যায় তাহলে এর সম্ভাবনা শঙ্কায় পরিণত হবে। এ ছাড়া সুন্দরবনে পর্যটককেন্দ্রিক যেসব নৌযান আছে, সেগুলোকে নিয়ন্ত্রিতভাবে পরিচালনা করা না গেলে জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি হবে।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি ডিসিপ্লিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. খান মেহেদী হাসান বলেন, দেশের মানুষের মধ্যে আগের তুলনায় ভ্রমণের প্রতি আগ্রহ বেড়েছে। পদ্মা সেতু চালুর পর রাজধানীর সঙ্গে খুলনার যোগাযোগ সহজ হয়েছে। ফলে পর্যটকদের জন্য সুন্দরবন ভ্রমণ এখন সহজ। কিন্তু সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা করা না গেলে তা ক্ষতির কারণ হতে পারে।
সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, সুন্দরবন ভ্রমণের নীতিমালা কঠোরভাবে প্রয়োগ করতে হবে। তা না হলে সঠিক পরিকল্পনার অভাবে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ ছাড়া বন্য প্রাণীর অবাধ বিচরণ নিশ্চিত করতে হবে। পরিকল্পিতভাবে পর্যটকদের সুন্দরবন ভ্রমণের ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে কারও কোনো ক্ষতি না হয়।
জানতে চাইলে বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দো বলেন, ‘আমরা চাই সহনশীল মাত্রায় সুন্দরবনে পর্যটক আসুক। যাতে করে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্যের ওপর বিরূপ প্রভাব না পড়ে। কারণ, সুন্দরবন একটি সংরক্ষিত বন। এটি বিশ্ব ঐতিহ্য। এটিকে সুরক্ষিত রাখা সকলের দায়িত্ব।’
সুন্দরবন দিবস আগামীকাল
সুন্দরবনকে বিপন্ন অবস্থা থেকে রক্ষা করতে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্য নিয়ে আগামীকাল পালিত হচ্ছে সুন্দরবন দিবস। খুলনার বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা রূপান্তরের নির্বাহী পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম খোকন জানান, ২০০১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি খুলনায় প্রথম জাতীয় সুন্দরবন সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। ওই সম্মেলনে ১৪ ফেব্রুয়ারি ‘সুন্দরবন দিবস’ পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং জাতীয়ভাবে ‘সুন্দরবন দিবস’ ঘোষণার দাবি জানানো হয় সরকারের কাছে। তবে এখন পর্যন্ত জাতীয়ভাবে সুন্দরবন দিবস পালনের সাড়া মেলেনি।
রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে সুন্দরবনকে ভালোবাসুন’ স্লোগানে এবারেও সুন্দরবন দিবস পালন করা হবে।
সুন্দরবন একাডেমির নির্বাহী পরিচালক আনোয়ারুল কাদির বলেন, তাঁরা সুন্দরবন সংরক্ষণ ও বনসংলগ্ন মানুষের জীবন-জীবিকার মানোন্নয়নের জন্য সুন্দরবন পরিচালনার ক্ষেত্রে পৃথক মন্ত্রণালয় গঠনের দাবি জানিয়ে আসছেন। তাঁদের দাবি পূরণ হলে বন এবং বনসংলগ্ন মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটবে।
আনোয়ারুল কাদির জানান, সুন্দরবনের পাশের ৫টি জেলার ১৭টি উপজেলা যেগুলো সুন্দরবনের ইমপ্যাক্ট জোন হিসেবে পরিচিত, সেখানে নানাবিধ সচেতনতামূলক কর্মসূচি পালন করা হবে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আলোচনা সভা, র্যালি, সিগনেচার ক্যাম্পেইন, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, সাইকেল র্যালি, মানববন্ধন এবং ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতা ইত্যাদি।

সিডর, আইলা, ফণী, বুলবুল, আম্পান, রিমালের মতো ঘূর্ণিঝড় থেকে বাংলাদেশকে বুক চিতিয়ে রক্ষা করতে গিয়ে প্রায় প্রতিবছরই ক্ষতিগ্রস্ত হয় সুন্দরবন। আবার মনুষ্যসৃষ্ট নানা কর্মকাণ্ডে বিরূপ প্রভাব পড়ে ম্যানগ্রোভ এই বনের ওপর। এর মধ্যে রয়েছে নিজ স্বার্থে বনে আগুন লাগিয়ে দেওয়া; কাঠ, মধু এবং অন্যান্য বনজ সম্পদ অতি আহরণ, অতিরিক্ত মাছ ধরা, ভ্রমণে গিয়ে যত্রতত্র পলিথিন, প্লাস্টিকের বোতলসহ নানা বর্জ্য ফেলা প্রভৃতি। তা ছাড়া, অতিমাত্রায় পর্যটক যাওয়াও সুন্দরবনের জন্য ক্ষতি বলে মনে করছেন পরিবেশবিদেরা।
সম্প্রতি বাগেরহাটের সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জ আন্দারমানিক ইকো ট্যুরিজম সেন্টার, হারবাড়িয়া পর্যটন স্পট, শরণখোলার কটকা, করমজলের কুমির প্রজননকেন্দ্রসহ বিভিন্ন পর্যটন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বনের ভেতর কোথাও ইটের রাস্তা, কোথাও পাথরের ঢালাই করা সড়ক, বাড়ি, অফিস, মোবাইল নেটওয়ার্ক টাওয়ারসহ নানা স্থাপনা নির্মাণ করেছে বন বিভাগ ও বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ফলে বাঘ-হরিণসহ বন্য প্রাণীদের অবাধ চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব সুন্দরবন (টোয়াস) সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে তাদের সংগঠনের রেজিস্ট্রেশনভুক্ত ৬৫টি এবং এর বাইরে ৫-৭টি লঞ্চ খুলনা থেকে পর্যটকদের সুন্দরবন ভ্রমণে নিয়ে যায়-আসে। মোংলা থেকে ট্রলার ও জালিবোটে করে সুন্দরবনের করমজল ও হাড়বাড়িয়া এলাকায় ঘুরতে যান পর্যটকেরা। সেখানে এই কাজে নিযুক্ত আছে অর্ধশতাধিক নৌযান। এ ছাড়া সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার মুন্সীগঞ্জ ও খুলনা থেকে করমজল ও কালাবগী পর্যটন এলাকা থেকেও একইভাবে পর্যটকেরা সুন্দরবন ভ্রমণে যান।
বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে সুন্দরবন ভ্রমণে যান ১ লাখ ২৮ হাজার ১৭৫ জন পর্যটক। সর্বশেষ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সুন্দরবন ভ্রমণ করেন ২ লাখ ১১ হাজার ৫৭ জন পর্যটক।
জানতে চাইলে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম জানান, আগে কটকা, কচিখালি, দুবলারচর, হিরণ পয়েন্ট, হাড়বাড়িয়া, কলাগাছিয়া ও করমজল—এই সাতটি স্থানে পর্যটন স্পট ছিল। নতুন করে শরণখোলার আলীবান্ধা, চাঁদপাই রেঞ্জের আন্ধারমানিক, খুলনা রেঞ্জের শেখেরটেক ও কৈলাশগঞ্জে হয়েছে আরও চারটি পর্যটন স্পট।
কটেজ মালিকেরা জানান, ইতিমধ্যে বনের কৈলাশগঞ্জ, ঢাংমারী ও আশপাশের এলাকায় চালু হয়েছে কমপক্ষে ২৩টি ইকো রিসোর্ট ও কটেজ। এর মধ্যে জঙ্গলবাড়ি, ইরাবতী, গোলকানন, বনলতা, বনবাস, বনবিবি, বনমালী, বাদাবন, সুন্দরী, শর্মিলা, ম্যানগ্রোভ হ্যাভেন, পিয়ালি, নির্বাসন জঙ্গলভিলা অন্যতম। এ ছাড়া নির্মাণাধীন রয়েছে আরও সাতটি।
অতিমাত্রায় পর্যটক সুন্দরবনের জন্য ক্ষতি বলে মনে করছেন পরিবেশবিদেরা। তাঁরা বলছেন, সুন্দরবনকেন্দ্রিক পর্যটনকে যদি সুন্দর করে নিয়ন্ত্রণ কিংবা পরিচালনা করা না যায় তাহলে এর সম্ভাবনা শঙ্কায় পরিণত হবে। এ ছাড়া সুন্দরবনে পর্যটককেন্দ্রিক যেসব নৌযান আছে, সেগুলোকে নিয়ন্ত্রিতভাবে পরিচালনা করা না গেলে জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি হবে।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি ডিসিপ্লিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. খান মেহেদী হাসান বলেন, দেশের মানুষের মধ্যে আগের তুলনায় ভ্রমণের প্রতি আগ্রহ বেড়েছে। পদ্মা সেতু চালুর পর রাজধানীর সঙ্গে খুলনার যোগাযোগ সহজ হয়েছে। ফলে পর্যটকদের জন্য সুন্দরবন ভ্রমণ এখন সহজ। কিন্তু সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা করা না গেলে তা ক্ষতির কারণ হতে পারে।
সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, সুন্দরবন ভ্রমণের নীতিমালা কঠোরভাবে প্রয়োগ করতে হবে। তা না হলে সঠিক পরিকল্পনার অভাবে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ ছাড়া বন্য প্রাণীর অবাধ বিচরণ নিশ্চিত করতে হবে। পরিকল্পিতভাবে পর্যটকদের সুন্দরবন ভ্রমণের ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে কারও কোনো ক্ষতি না হয়।
জানতে চাইলে বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দো বলেন, ‘আমরা চাই সহনশীল মাত্রায় সুন্দরবনে পর্যটক আসুক। যাতে করে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্যের ওপর বিরূপ প্রভাব না পড়ে। কারণ, সুন্দরবন একটি সংরক্ষিত বন। এটি বিশ্ব ঐতিহ্য। এটিকে সুরক্ষিত রাখা সকলের দায়িত্ব।’
সুন্দরবন দিবস আগামীকাল
সুন্দরবনকে বিপন্ন অবস্থা থেকে রক্ষা করতে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্য নিয়ে আগামীকাল পালিত হচ্ছে সুন্দরবন দিবস। খুলনার বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা রূপান্তরের নির্বাহী পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম খোকন জানান, ২০০১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি খুলনায় প্রথম জাতীয় সুন্দরবন সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। ওই সম্মেলনে ১৪ ফেব্রুয়ারি ‘সুন্দরবন দিবস’ পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং জাতীয়ভাবে ‘সুন্দরবন দিবস’ ঘোষণার দাবি জানানো হয় সরকারের কাছে। তবে এখন পর্যন্ত জাতীয়ভাবে সুন্দরবন দিবস পালনের সাড়া মেলেনি।
রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে সুন্দরবনকে ভালোবাসুন’ স্লোগানে এবারেও সুন্দরবন দিবস পালন করা হবে।
সুন্দরবন একাডেমির নির্বাহী পরিচালক আনোয়ারুল কাদির বলেন, তাঁরা সুন্দরবন সংরক্ষণ ও বনসংলগ্ন মানুষের জীবন-জীবিকার মানোন্নয়নের জন্য সুন্দরবন পরিচালনার ক্ষেত্রে পৃথক মন্ত্রণালয় গঠনের দাবি জানিয়ে আসছেন। তাঁদের দাবি পূরণ হলে বন এবং বনসংলগ্ন মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটবে।
আনোয়ারুল কাদির জানান, সুন্দরবনের পাশের ৫টি জেলার ১৭টি উপজেলা যেগুলো সুন্দরবনের ইমপ্যাক্ট জোন হিসেবে পরিচিত, সেখানে নানাবিধ সচেতনতামূলক কর্মসূচি পালন করা হবে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আলোচনা সভা, র্যালি, সিগনেচার ক্যাম্পেইন, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, সাইকেল র্যালি, মানববন্ধন এবং ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতা ইত্যাদি।
কাজী শামিম আহমেদ, খুলনা

সিডর, আইলা, ফণী, বুলবুল, আম্পান, রিমালের মতো ঘূর্ণিঝড় থেকে বাংলাদেশকে বুক চিতিয়ে রক্ষা করতে গিয়ে প্রায় প্রতিবছরই ক্ষতিগ্রস্ত হয় সুন্দরবন। আবার মনুষ্যসৃষ্ট নানা কর্মকাণ্ডে বিরূপ প্রভাব পড়ে ম্যানগ্রোভ এই বনের ওপর। এর মধ্যে রয়েছে নিজ স্বার্থে বনে আগুন লাগিয়ে দেওয়া; কাঠ, মধু এবং অন্যান্য বনজ সম্পদ অতি আহরণ, অতিরিক্ত মাছ ধরা, ভ্রমণে গিয়ে যত্রতত্র পলিথিন, প্লাস্টিকের বোতলসহ নানা বর্জ্য ফেলা প্রভৃতি। তা ছাড়া, অতিমাত্রায় পর্যটক যাওয়াও সুন্দরবনের জন্য ক্ষতি বলে মনে করছেন পরিবেশবিদেরা।
সম্প্রতি বাগেরহাটের সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জ আন্দারমানিক ইকো ট্যুরিজম সেন্টার, হারবাড়িয়া পর্যটন স্পট, শরণখোলার কটকা, করমজলের কুমির প্রজননকেন্দ্রসহ বিভিন্ন পর্যটন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বনের ভেতর কোথাও ইটের রাস্তা, কোথাও পাথরের ঢালাই করা সড়ক, বাড়ি, অফিস, মোবাইল নেটওয়ার্ক টাওয়ারসহ নানা স্থাপনা নির্মাণ করেছে বন বিভাগ ও বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ফলে বাঘ-হরিণসহ বন্য প্রাণীদের অবাধ চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব সুন্দরবন (টোয়াস) সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে তাদের সংগঠনের রেজিস্ট্রেশনভুক্ত ৬৫টি এবং এর বাইরে ৫-৭টি লঞ্চ খুলনা থেকে পর্যটকদের সুন্দরবন ভ্রমণে নিয়ে যায়-আসে। মোংলা থেকে ট্রলার ও জালিবোটে করে সুন্দরবনের করমজল ও হাড়বাড়িয়া এলাকায় ঘুরতে যান পর্যটকেরা। সেখানে এই কাজে নিযুক্ত আছে অর্ধশতাধিক নৌযান। এ ছাড়া সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার মুন্সীগঞ্জ ও খুলনা থেকে করমজল ও কালাবগী পর্যটন এলাকা থেকেও একইভাবে পর্যটকেরা সুন্দরবন ভ্রমণে যান।
বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে সুন্দরবন ভ্রমণে যান ১ লাখ ২৮ হাজার ১৭৫ জন পর্যটক। সর্বশেষ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সুন্দরবন ভ্রমণ করেন ২ লাখ ১১ হাজার ৫৭ জন পর্যটক।
জানতে চাইলে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম জানান, আগে কটকা, কচিখালি, দুবলারচর, হিরণ পয়েন্ট, হাড়বাড়িয়া, কলাগাছিয়া ও করমজল—এই সাতটি স্থানে পর্যটন স্পট ছিল। নতুন করে শরণখোলার আলীবান্ধা, চাঁদপাই রেঞ্জের আন্ধারমানিক, খুলনা রেঞ্জের শেখেরটেক ও কৈলাশগঞ্জে হয়েছে আরও চারটি পর্যটন স্পট।
কটেজ মালিকেরা জানান, ইতিমধ্যে বনের কৈলাশগঞ্জ, ঢাংমারী ও আশপাশের এলাকায় চালু হয়েছে কমপক্ষে ২৩টি ইকো রিসোর্ট ও কটেজ। এর মধ্যে জঙ্গলবাড়ি, ইরাবতী, গোলকানন, বনলতা, বনবাস, বনবিবি, বনমালী, বাদাবন, সুন্দরী, শর্মিলা, ম্যানগ্রোভ হ্যাভেন, পিয়ালি, নির্বাসন জঙ্গলভিলা অন্যতম। এ ছাড়া নির্মাণাধীন রয়েছে আরও সাতটি।
অতিমাত্রায় পর্যটক সুন্দরবনের জন্য ক্ষতি বলে মনে করছেন পরিবেশবিদেরা। তাঁরা বলছেন, সুন্দরবনকেন্দ্রিক পর্যটনকে যদি সুন্দর করে নিয়ন্ত্রণ কিংবা পরিচালনা করা না যায় তাহলে এর সম্ভাবনা শঙ্কায় পরিণত হবে। এ ছাড়া সুন্দরবনে পর্যটককেন্দ্রিক যেসব নৌযান আছে, সেগুলোকে নিয়ন্ত্রিতভাবে পরিচালনা করা না গেলে জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি হবে।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি ডিসিপ্লিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. খান মেহেদী হাসান বলেন, দেশের মানুষের মধ্যে আগের তুলনায় ভ্রমণের প্রতি আগ্রহ বেড়েছে। পদ্মা সেতু চালুর পর রাজধানীর সঙ্গে খুলনার যোগাযোগ সহজ হয়েছে। ফলে পর্যটকদের জন্য সুন্দরবন ভ্রমণ এখন সহজ। কিন্তু সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা করা না গেলে তা ক্ষতির কারণ হতে পারে।
সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, সুন্দরবন ভ্রমণের নীতিমালা কঠোরভাবে প্রয়োগ করতে হবে। তা না হলে সঠিক পরিকল্পনার অভাবে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ ছাড়া বন্য প্রাণীর অবাধ বিচরণ নিশ্চিত করতে হবে। পরিকল্পিতভাবে পর্যটকদের সুন্দরবন ভ্রমণের ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে কারও কোনো ক্ষতি না হয়।
জানতে চাইলে বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দো বলেন, ‘আমরা চাই সহনশীল মাত্রায় সুন্দরবনে পর্যটক আসুক। যাতে করে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্যের ওপর বিরূপ প্রভাব না পড়ে। কারণ, সুন্দরবন একটি সংরক্ষিত বন। এটি বিশ্ব ঐতিহ্য। এটিকে সুরক্ষিত রাখা সকলের দায়িত্ব।’
সুন্দরবন দিবস আগামীকাল
সুন্দরবনকে বিপন্ন অবস্থা থেকে রক্ষা করতে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্য নিয়ে আগামীকাল পালিত হচ্ছে সুন্দরবন দিবস। খুলনার বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা রূপান্তরের নির্বাহী পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম খোকন জানান, ২০০১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি খুলনায় প্রথম জাতীয় সুন্দরবন সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। ওই সম্মেলনে ১৪ ফেব্রুয়ারি ‘সুন্দরবন দিবস’ পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং জাতীয়ভাবে ‘সুন্দরবন দিবস’ ঘোষণার দাবি জানানো হয় সরকারের কাছে। তবে এখন পর্যন্ত জাতীয়ভাবে সুন্দরবন দিবস পালনের সাড়া মেলেনি।
রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে সুন্দরবনকে ভালোবাসুন’ স্লোগানে এবারেও সুন্দরবন দিবস পালন করা হবে।
সুন্দরবন একাডেমির নির্বাহী পরিচালক আনোয়ারুল কাদির বলেন, তাঁরা সুন্দরবন সংরক্ষণ ও বনসংলগ্ন মানুষের জীবন-জীবিকার মানোন্নয়নের জন্য সুন্দরবন পরিচালনার ক্ষেত্রে পৃথক মন্ত্রণালয় গঠনের দাবি জানিয়ে আসছেন। তাঁদের দাবি পূরণ হলে বন এবং বনসংলগ্ন মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটবে।
আনোয়ারুল কাদির জানান, সুন্দরবনের পাশের ৫টি জেলার ১৭টি উপজেলা যেগুলো সুন্দরবনের ইমপ্যাক্ট জোন হিসেবে পরিচিত, সেখানে নানাবিধ সচেতনতামূলক কর্মসূচি পালন করা হবে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আলোচনা সভা, র্যালি, সিগনেচার ক্যাম্পেইন, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, সাইকেল র্যালি, মানববন্ধন এবং ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতা ইত্যাদি।

সিডর, আইলা, ফণী, বুলবুল, আম্পান, রিমালের মতো ঘূর্ণিঝড় থেকে বাংলাদেশকে বুক চিতিয়ে রক্ষা করতে গিয়ে প্রায় প্রতিবছরই ক্ষতিগ্রস্ত হয় সুন্দরবন। আবার মনুষ্যসৃষ্ট নানা কর্মকাণ্ডে বিরূপ প্রভাব পড়ে ম্যানগ্রোভ এই বনের ওপর। এর মধ্যে রয়েছে নিজ স্বার্থে বনে আগুন লাগিয়ে দেওয়া; কাঠ, মধু এবং অন্যান্য বনজ সম্পদ অতি আহরণ, অতিরিক্ত মাছ ধরা, ভ্রমণে গিয়ে যত্রতত্র পলিথিন, প্লাস্টিকের বোতলসহ নানা বর্জ্য ফেলা প্রভৃতি। তা ছাড়া, অতিমাত্রায় পর্যটক যাওয়াও সুন্দরবনের জন্য ক্ষতি বলে মনে করছেন পরিবেশবিদেরা।
সম্প্রতি বাগেরহাটের সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জ আন্দারমানিক ইকো ট্যুরিজম সেন্টার, হারবাড়িয়া পর্যটন স্পট, শরণখোলার কটকা, করমজলের কুমির প্রজননকেন্দ্রসহ বিভিন্ন পর্যটন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বনের ভেতর কোথাও ইটের রাস্তা, কোথাও পাথরের ঢালাই করা সড়ক, বাড়ি, অফিস, মোবাইল নেটওয়ার্ক টাওয়ারসহ নানা স্থাপনা নির্মাণ করেছে বন বিভাগ ও বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ফলে বাঘ-হরিণসহ বন্য প্রাণীদের অবাধ চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব সুন্দরবন (টোয়াস) সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে তাদের সংগঠনের রেজিস্ট্রেশনভুক্ত ৬৫টি এবং এর বাইরে ৫-৭টি লঞ্চ খুলনা থেকে পর্যটকদের সুন্দরবন ভ্রমণে নিয়ে যায়-আসে। মোংলা থেকে ট্রলার ও জালিবোটে করে সুন্দরবনের করমজল ও হাড়বাড়িয়া এলাকায় ঘুরতে যান পর্যটকেরা। সেখানে এই কাজে নিযুক্ত আছে অর্ধশতাধিক নৌযান। এ ছাড়া সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার মুন্সীগঞ্জ ও খুলনা থেকে করমজল ও কালাবগী পর্যটন এলাকা থেকেও একইভাবে পর্যটকেরা সুন্দরবন ভ্রমণে যান।
বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে সুন্দরবন ভ্রমণে যান ১ লাখ ২৮ হাজার ১৭৫ জন পর্যটক। সর্বশেষ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সুন্দরবন ভ্রমণ করেন ২ লাখ ১১ হাজার ৫৭ জন পর্যটক।
জানতে চাইলে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম জানান, আগে কটকা, কচিখালি, দুবলারচর, হিরণ পয়েন্ট, হাড়বাড়িয়া, কলাগাছিয়া ও করমজল—এই সাতটি স্থানে পর্যটন স্পট ছিল। নতুন করে শরণখোলার আলীবান্ধা, চাঁদপাই রেঞ্জের আন্ধারমানিক, খুলনা রেঞ্জের শেখেরটেক ও কৈলাশগঞ্জে হয়েছে আরও চারটি পর্যটন স্পট।
কটেজ মালিকেরা জানান, ইতিমধ্যে বনের কৈলাশগঞ্জ, ঢাংমারী ও আশপাশের এলাকায় চালু হয়েছে কমপক্ষে ২৩টি ইকো রিসোর্ট ও কটেজ। এর মধ্যে জঙ্গলবাড়ি, ইরাবতী, গোলকানন, বনলতা, বনবাস, বনবিবি, বনমালী, বাদাবন, সুন্দরী, শর্মিলা, ম্যানগ্রোভ হ্যাভেন, পিয়ালি, নির্বাসন জঙ্গলভিলা অন্যতম। এ ছাড়া নির্মাণাধীন রয়েছে আরও সাতটি।
অতিমাত্রায় পর্যটক সুন্দরবনের জন্য ক্ষতি বলে মনে করছেন পরিবেশবিদেরা। তাঁরা বলছেন, সুন্দরবনকেন্দ্রিক পর্যটনকে যদি সুন্দর করে নিয়ন্ত্রণ কিংবা পরিচালনা করা না যায় তাহলে এর সম্ভাবনা শঙ্কায় পরিণত হবে। এ ছাড়া সুন্দরবনে পর্যটককেন্দ্রিক যেসব নৌযান আছে, সেগুলোকে নিয়ন্ত্রিতভাবে পরিচালনা করা না গেলে জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি হবে।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি ডিসিপ্লিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. খান মেহেদী হাসান বলেন, দেশের মানুষের মধ্যে আগের তুলনায় ভ্রমণের প্রতি আগ্রহ বেড়েছে। পদ্মা সেতু চালুর পর রাজধানীর সঙ্গে খুলনার যোগাযোগ সহজ হয়েছে। ফলে পর্যটকদের জন্য সুন্দরবন ভ্রমণ এখন সহজ। কিন্তু সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা করা না গেলে তা ক্ষতির কারণ হতে পারে।
সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, সুন্দরবন ভ্রমণের নীতিমালা কঠোরভাবে প্রয়োগ করতে হবে। তা না হলে সঠিক পরিকল্পনার অভাবে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ ছাড়া বন্য প্রাণীর অবাধ বিচরণ নিশ্চিত করতে হবে। পরিকল্পিতভাবে পর্যটকদের সুন্দরবন ভ্রমণের ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে কারও কোনো ক্ষতি না হয়।
জানতে চাইলে বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দো বলেন, ‘আমরা চাই সহনশীল মাত্রায় সুন্দরবনে পর্যটক আসুক। যাতে করে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্যের ওপর বিরূপ প্রভাব না পড়ে। কারণ, সুন্দরবন একটি সংরক্ষিত বন। এটি বিশ্ব ঐতিহ্য। এটিকে সুরক্ষিত রাখা সকলের দায়িত্ব।’
সুন্দরবন দিবস আগামীকাল
সুন্দরবনকে বিপন্ন অবস্থা থেকে রক্ষা করতে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্য নিয়ে আগামীকাল পালিত হচ্ছে সুন্দরবন দিবস। খুলনার বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা রূপান্তরের নির্বাহী পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম খোকন জানান, ২০০১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি খুলনায় প্রথম জাতীয় সুন্দরবন সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। ওই সম্মেলনে ১৪ ফেব্রুয়ারি ‘সুন্দরবন দিবস’ পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং জাতীয়ভাবে ‘সুন্দরবন দিবস’ ঘোষণার দাবি জানানো হয় সরকারের কাছে। তবে এখন পর্যন্ত জাতীয়ভাবে সুন্দরবন দিবস পালনের সাড়া মেলেনি।
রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে সুন্দরবনকে ভালোবাসুন’ স্লোগানে এবারেও সুন্দরবন দিবস পালন করা হবে।
সুন্দরবন একাডেমির নির্বাহী পরিচালক আনোয়ারুল কাদির বলেন, তাঁরা সুন্দরবন সংরক্ষণ ও বনসংলগ্ন মানুষের জীবন-জীবিকার মানোন্নয়নের জন্য সুন্দরবন পরিচালনার ক্ষেত্রে পৃথক মন্ত্রণালয় গঠনের দাবি জানিয়ে আসছেন। তাঁদের দাবি পূরণ হলে বন এবং বনসংলগ্ন মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটবে।
আনোয়ারুল কাদির জানান, সুন্দরবনের পাশের ৫টি জেলার ১৭টি উপজেলা যেগুলো সুন্দরবনের ইমপ্যাক্ট জোন হিসেবে পরিচিত, সেখানে নানাবিধ সচেতনতামূলক কর্মসূচি পালন করা হবে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আলোচনা সভা, র্যালি, সিগনেচার ক্যাম্পেইন, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, সাইকেল র্যালি, মানববন্ধন এবং ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতা ইত্যাদি।

নদী যেন দিন দিন মরে যাচ্ছে পৌরসভার ফেলে যাওয়া ময়লা-আবর্জনায়। যে নদীর পানিতে একসময় শিশুদের হাসি ও খেলাধুলার শব্দ ভেসে উঠত, সেই নদী আজ দুর্গন্ধে দম বন্ধ হয়ে আসা এক বিষাক্ত নর্দমায় পরিণত হচ্ছে পৌরসভার বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অবহেলায়।
১৫ মিনিট আগে
নোয়াখালীর সুবর্ণচরে কয়েক দিন ধরে তীব্র ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। দিনের অধিকাংশ সময়েই রোদের দেখা মিলছে না। এই অবস্থায় বেড়েছে ঠান্ডাজনিত রোগ। দেখা দিচ্ছে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস ও অ্যাজমার প্রকোপ। এসব রোগে আক্রান্তদের অধিকাংশই শিশু ও বৃদ্ধ।
২৩ মিনিট আগে
সুনামগঞ্জের একমাত্র বোরো ফসল রক্ষা বাঁধের কার্যক্রম যেন চলছে কচ্ছপগতিতে। প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠনের সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও তা হয়নি। শেষ হয়নি জরিপ এবং প্রাক্কলনের কাজও। হাওরের অনেক জায়গা বাঁধ করার উপযোগী মনে হলেও ধীরগতির কারণে যথাসময়ে শেষ না হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
২৮ মিনিট আগে
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পটুয়াখালী-১ আসনের মনোনীত প্রার্থী মুফতি হাবিবুর রহমান তাঁর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পটুয়াখালী-৪ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
৩ ঘণ্টা আগেগুরুদাসপুর (নাটোর) সংবাদদাতা

নদী যেন দিন দিন মরে যাচ্ছে পৌরসভার ফেলে যাওয়া ময়লা-আবর্জনায়। যে নদীর পানিতে একসময় শিশুদের হাসি ও খেলাধুলার শব্দ ভেসে উঠত, সেই নদী আজ দুর্গন্ধে দম বন্ধ হয়ে আসা এক বিষাক্ত নর্দমায় পরিণত হচ্ছে পৌরসভার বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অবহেলায়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পৌরসভা প্রতিষ্ঠার পর থেকে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা চাঁচকৈড় রসুনহাট, গরুর হাট ও গুরুদাসপুর বাজারঘাট এলাকার আবর্জনা গাড়িতে তুলে এনে নদীর তীরে বা সরাসরি পানিতে ফেলে দিচ্ছে। শুধু ঘরবাড়ির বর্জ্য নয়, বিভিন্ন কারখানা ও ক্লিনিক থেকে আসা রাসায়নিক বর্জ্য এবং পয়োনিষ্কাশনের নালা-পাইপের বর্জ্যও নন্দকুঁজা নদীতে পড়ছে। এতে নদীর পানি যেমন ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে, অন্যদিকে দ্রুত ভরাট হয়ে যাচ্ছে নদী। তবু পরিস্থিতি মোকাবিলায় দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ নেই।
রসুনহাটসংলগ্ন নদীপাড়ের ব্যবসায়ীরা বলেন, শহরজুড়ে ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের ফেলা নানান আবর্জনা কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে জমে থাকে। পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা সেসব বর্জ্য সংগ্রহ করে পৌরসভার গাড়িতে করে এনে নদীর ধারে ফেলে রাখেন। এতে এতটাই দুর্গন্ধ ছড়ায় যে আশপাশে বসবাস করা দুরূহ হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় কয়েকজন নদীপারের বাসিন্দা জানান, একসময় এই নদীতে দল বেঁধে গোসল করতেন তাঁরা, মাছ ধরতেন, শিশুদের খেলাধুলার জায়গা ছিল এটি। এখন নদীতে নামাই যায় না। দূষিত পানিতে শরীর চুলকায়, আগের মতো মাছও আর মেলে না। নদীর প্রতি মানুষের নির্ভরতা কমে যাচ্ছে, তারা চান, আগের সেই স্বাভাবিক নদী ফিরে আসুক।
জানতে চাইলে গুরুদাসপুর উপজেলা নদী রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান বলেন, ‘নদী রক্ষায় বহুবার আন্দোলন করেছি, পৌর মেয়রকেও অনুরোধ জানিয়েছিলাম; তবু নদীতে আবর্জনা ফেলা বন্ধ হয়নি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাহমিদা আফরোজ আজকের পত্রিকাকে জানান, ব্যস্ততার কারণে বিষয়টি তাঁর নজরে আসেনি। এখন তিনি পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের নির্দেশ দেবেন, যেন নদীতে আর আবর্জনা ফেলা না হয়।

নদী যেন দিন দিন মরে যাচ্ছে পৌরসভার ফেলে যাওয়া ময়লা-আবর্জনায়। যে নদীর পানিতে একসময় শিশুদের হাসি ও খেলাধুলার শব্দ ভেসে উঠত, সেই নদী আজ দুর্গন্ধে দম বন্ধ হয়ে আসা এক বিষাক্ত নর্দমায় পরিণত হচ্ছে পৌরসভার বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অবহেলায়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পৌরসভা প্রতিষ্ঠার পর থেকে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা চাঁচকৈড় রসুনহাট, গরুর হাট ও গুরুদাসপুর বাজারঘাট এলাকার আবর্জনা গাড়িতে তুলে এনে নদীর তীরে বা সরাসরি পানিতে ফেলে দিচ্ছে। শুধু ঘরবাড়ির বর্জ্য নয়, বিভিন্ন কারখানা ও ক্লিনিক থেকে আসা রাসায়নিক বর্জ্য এবং পয়োনিষ্কাশনের নালা-পাইপের বর্জ্যও নন্দকুঁজা নদীতে পড়ছে। এতে নদীর পানি যেমন ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে, অন্যদিকে দ্রুত ভরাট হয়ে যাচ্ছে নদী। তবু পরিস্থিতি মোকাবিলায় দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ নেই।
রসুনহাটসংলগ্ন নদীপাড়ের ব্যবসায়ীরা বলেন, শহরজুড়ে ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের ফেলা নানান আবর্জনা কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে জমে থাকে। পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা সেসব বর্জ্য সংগ্রহ করে পৌরসভার গাড়িতে করে এনে নদীর ধারে ফেলে রাখেন। এতে এতটাই দুর্গন্ধ ছড়ায় যে আশপাশে বসবাস করা দুরূহ হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় কয়েকজন নদীপারের বাসিন্দা জানান, একসময় এই নদীতে দল বেঁধে গোসল করতেন তাঁরা, মাছ ধরতেন, শিশুদের খেলাধুলার জায়গা ছিল এটি। এখন নদীতে নামাই যায় না। দূষিত পানিতে শরীর চুলকায়, আগের মতো মাছও আর মেলে না। নদীর প্রতি মানুষের নির্ভরতা কমে যাচ্ছে, তারা চান, আগের সেই স্বাভাবিক নদী ফিরে আসুক।
জানতে চাইলে গুরুদাসপুর উপজেলা নদী রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান বলেন, ‘নদী রক্ষায় বহুবার আন্দোলন করেছি, পৌর মেয়রকেও অনুরোধ জানিয়েছিলাম; তবু নদীতে আবর্জনা ফেলা বন্ধ হয়নি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাহমিদা আফরোজ আজকের পত্রিকাকে জানান, ব্যস্ততার কারণে বিষয়টি তাঁর নজরে আসেনি। এখন তিনি পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের নির্দেশ দেবেন, যেন নদীতে আর আবর্জনা ফেলা না হয়।

সিডর, আইলা, ফণী, বুলবুল, আম্পান, রিমালের মতো ঘূর্ণিঝড় থেকে বাংলাদেশকে বুক চিতিয়ে রক্ষা করতে গিয়ে প্রায় প্রতিবছরই ক্ষতিগ্রস্ত হয় সুন্দরবন। আবার মনুষ্যসৃষ্ট নানা কর্মকাণ্ডে বিরূপ প্রভাব পড়ে ম্যানগ্রোভ এই বনের ওপর। এর মধ্যে রয়েছে নিজ স্বার্থে বনে...
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
নোয়াখালীর সুবর্ণচরে কয়েক দিন ধরে তীব্র ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। দিনের অধিকাংশ সময়েই রোদের দেখা মিলছে না। এই অবস্থায় বেড়েছে ঠান্ডাজনিত রোগ। দেখা দিচ্ছে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস ও অ্যাজমার প্রকোপ। এসব রোগে আক্রান্তদের অধিকাংশই শিশু ও বৃদ্ধ।
২৩ মিনিট আগে
সুনামগঞ্জের একমাত্র বোরো ফসল রক্ষা বাঁধের কার্যক্রম যেন চলছে কচ্ছপগতিতে। প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠনের সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও তা হয়নি। শেষ হয়নি জরিপ এবং প্রাক্কলনের কাজও। হাওরের অনেক জায়গা বাঁধ করার উপযোগী মনে হলেও ধীরগতির কারণে যথাসময়ে শেষ না হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
২৮ মিনিট আগে
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পটুয়াখালী-১ আসনের মনোনীত প্রার্থী মুফতি হাবিবুর রহমান তাঁর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পটুয়াখালী-৪ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
৩ ঘণ্টা আগেমুজাহিদুল ইসলাম সোহেল, সুবর্ণচর (নোয়াখালী)

নোয়াখালীর সুবর্ণচরে কয়েক দিন ধরে তীব্র ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। দিনের অধিকাংশ সময়েই রোদের দেখা মিলছে না। এই অবস্থায় বেড়েছে ঠান্ডাজনিত রোগ। দেখা দিচ্ছে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস ও অ্যাজমার প্রকোপ। এসব রোগে আক্রান্তদের অধিকাংশই শিশু ও বৃদ্ধ। এক সপ্তাহে এসব রোগে আক্রান্ত হয়ে কয়েক শ শিশু জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এসব রোগে আক্রান্ত হয়ে এক সপ্তাহে উপজেলায় পাঁচ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। হঠাৎ করে রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকেরা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে চলতি (ডিসেম্বর) মাসের প্রথম আট দিনে (১ থেকে ৮ তারিখ পর্যন্ত) মোট ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৭৮৪ জনের মধ্যে শিশু ৬৭২ জন। এদের সবাই ঠান্ডাজনিত রোগ নিয়ে ভর্তি হয়েছে। এই আট দিনে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ৬১৯টি শিশু। গতকাল সোমবার ভর্তি ছিল ৪৮ জন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, হাসপাতালের মেঝেতেও রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। নার্সরা ব্যস্ত রোগীর চাপ সামলাতে। শিশু ওয়ার্ডে কথা হয় গৃহবধূ আসমা আক্তারের সঙ্গে। চার দিন ধরে তাঁর সাড়ে তিন বছর বয়সী মেয়ে মুনতাহা জ্বরে আক্রান্ত। প্রথমে বাড়িতে রেখে পল্লিচিকিৎসকের কাছ থেকে চিকিৎসা দিলেও জ্বর কমেনি। নিরুপায় হয়ে হাসপাতালে আসেন। শয্যা না পেয়ে মেঝেতে রেখে মেয়ের চিকিৎসা করাচ্ছেন।
আসমা বলেন, ‘বাচ্চাটা চার দিনের জ্বরে কাহিল হয়ে গেছে। ঘাড় তুলতে পারছে না। চিকিৎসকেরা বলেছেন, ঠান্ডাজনিত রোগ (নিউমোনিয়া) প্রতিদিন অনেক শিশু ভর্তি হচ্ছে। এখন ইনজেকশন ও অন্যান্য ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা চলছে। শয্যা পাচ্ছি না। বলতে পারছি না কবে সন্তানকে সুস্থ করে বাড়িতে ফিরতে পারব।’
চর আলাউদ্দিনের বাসিন্দা শেফালী আক্তারের পাঁচ বছর বয়সী ছেলে সৈকত ছয় দিন ধরে জ্বরে আক্রান্ত। অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে জোসনার চোখেমুখে দুশ্চিন্তার ছাপ। তিনি জানান, ছেলের নিউমোনিয়া হয়েছে, আগে বুঝতে পারেননি। প্রথমে স্থানীয় চিকিৎসকদের দিয়ে চিকিৎসা করিয়েছিলেন। ভেবেছিলেন সাধারণ জ্বর। কিন্তু হাসপাতালে দুই দফায় পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়েছেন, ছেলের নিউমোনিয়া হয়েছে। এখন চিকিৎসা চলছে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের শিশু বিশেষজ্ঞ মো. সোহেল সারওয়ার জানান, সুবর্ণচরের চরাঞ্চল থেকে শিশুরা বেশি আসছে। প্রতিবছরের মতো এ বছর তীব্র ঠান্ডা পড়েছে। ফলে ঠান্ডাজনিত রোগও দেখা দিয়েছে। সাধারণ ওয়ার্ডে রোগীর চাপ বেশি হওয়ায় চিকিৎসা দিতেও হিমশিম খেতে হয়। তিনি বলেন, ‘যে শিশুগুলো মারা যাচ্ছে, বেশির ভাগ নবজাতক ও পাঁচ বছরের মধ্যে। পল্লিচিকিৎসকদের কাছে চিকিৎসা নিয়ে তাদের অবস্থা যখন বেশি খারাপ হয়, তখন হাসপাতালে আসেন এতে আমাদেরও কিছু করার থাকে না। আমরা সাধ্য অনুযায়ী এ হাসপাতালে সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করছি।’
এদিকে জেলা আবহাওয়া অধিদপ্তরের উপপরিচালক রফিকুল ইসলামের কাছে তাপমাত্রা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আবহাওয়ার কোনো রেকর্ড আমাদের কাছে নেই। আগামীকাল (৯ ডিসেম্বর) জানাতে পারব।’
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ‘হাসপাতালে অনেক শিশুকে ক্রিটিক্যাল অবস্থায় নিয়ে আসে। আমরা সেসব শিশুকে জেলা সদর হাসপাতালে পাঠাই। অনেক রোগীর অভিভাবক আছেন, জেলা হাসপাতালে না গিয়ে বাড়ি ফিরে যান। তখন সঠিক চিকিৎসা না পেয়ে বাড়িতে মারা যায়।’

নোয়াখালীর সুবর্ণচরে কয়েক দিন ধরে তীব্র ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। দিনের অধিকাংশ সময়েই রোদের দেখা মিলছে না। এই অবস্থায় বেড়েছে ঠান্ডাজনিত রোগ। দেখা দিচ্ছে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস ও অ্যাজমার প্রকোপ। এসব রোগে আক্রান্তদের অধিকাংশই শিশু ও বৃদ্ধ। এক সপ্তাহে এসব রোগে আক্রান্ত হয়ে কয়েক শ শিশু জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এসব রোগে আক্রান্ত হয়ে এক সপ্তাহে উপজেলায় পাঁচ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। হঠাৎ করে রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকেরা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে চলতি (ডিসেম্বর) মাসের প্রথম আট দিনে (১ থেকে ৮ তারিখ পর্যন্ত) মোট ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৭৮৪ জনের মধ্যে শিশু ৬৭২ জন। এদের সবাই ঠান্ডাজনিত রোগ নিয়ে ভর্তি হয়েছে। এই আট দিনে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ৬১৯টি শিশু। গতকাল সোমবার ভর্তি ছিল ৪৮ জন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, হাসপাতালের মেঝেতেও রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। নার্সরা ব্যস্ত রোগীর চাপ সামলাতে। শিশু ওয়ার্ডে কথা হয় গৃহবধূ আসমা আক্তারের সঙ্গে। চার দিন ধরে তাঁর সাড়ে তিন বছর বয়সী মেয়ে মুনতাহা জ্বরে আক্রান্ত। প্রথমে বাড়িতে রেখে পল্লিচিকিৎসকের কাছ থেকে চিকিৎসা দিলেও জ্বর কমেনি। নিরুপায় হয়ে হাসপাতালে আসেন। শয্যা না পেয়ে মেঝেতে রেখে মেয়ের চিকিৎসা করাচ্ছেন।
আসমা বলেন, ‘বাচ্চাটা চার দিনের জ্বরে কাহিল হয়ে গেছে। ঘাড় তুলতে পারছে না। চিকিৎসকেরা বলেছেন, ঠান্ডাজনিত রোগ (নিউমোনিয়া) প্রতিদিন অনেক শিশু ভর্তি হচ্ছে। এখন ইনজেকশন ও অন্যান্য ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা চলছে। শয্যা পাচ্ছি না। বলতে পারছি না কবে সন্তানকে সুস্থ করে বাড়িতে ফিরতে পারব।’
চর আলাউদ্দিনের বাসিন্দা শেফালী আক্তারের পাঁচ বছর বয়সী ছেলে সৈকত ছয় দিন ধরে জ্বরে আক্রান্ত। অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে জোসনার চোখেমুখে দুশ্চিন্তার ছাপ। তিনি জানান, ছেলের নিউমোনিয়া হয়েছে, আগে বুঝতে পারেননি। প্রথমে স্থানীয় চিকিৎসকদের দিয়ে চিকিৎসা করিয়েছিলেন। ভেবেছিলেন সাধারণ জ্বর। কিন্তু হাসপাতালে দুই দফায় পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়েছেন, ছেলের নিউমোনিয়া হয়েছে। এখন চিকিৎসা চলছে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের শিশু বিশেষজ্ঞ মো. সোহেল সারওয়ার জানান, সুবর্ণচরের চরাঞ্চল থেকে শিশুরা বেশি আসছে। প্রতিবছরের মতো এ বছর তীব্র ঠান্ডা পড়েছে। ফলে ঠান্ডাজনিত রোগও দেখা দিয়েছে। সাধারণ ওয়ার্ডে রোগীর চাপ বেশি হওয়ায় চিকিৎসা দিতেও হিমশিম খেতে হয়। তিনি বলেন, ‘যে শিশুগুলো মারা যাচ্ছে, বেশির ভাগ নবজাতক ও পাঁচ বছরের মধ্যে। পল্লিচিকিৎসকদের কাছে চিকিৎসা নিয়ে তাদের অবস্থা যখন বেশি খারাপ হয়, তখন হাসপাতালে আসেন এতে আমাদেরও কিছু করার থাকে না। আমরা সাধ্য অনুযায়ী এ হাসপাতালে সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করছি।’
এদিকে জেলা আবহাওয়া অধিদপ্তরের উপপরিচালক রফিকুল ইসলামের কাছে তাপমাত্রা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আবহাওয়ার কোনো রেকর্ড আমাদের কাছে নেই। আগামীকাল (৯ ডিসেম্বর) জানাতে পারব।’
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ‘হাসপাতালে অনেক শিশুকে ক্রিটিক্যাল অবস্থায় নিয়ে আসে। আমরা সেসব শিশুকে জেলা সদর হাসপাতালে পাঠাই। অনেক রোগীর অভিভাবক আছেন, জেলা হাসপাতালে না গিয়ে বাড়ি ফিরে যান। তখন সঠিক চিকিৎসা না পেয়ে বাড়িতে মারা যায়।’

সিডর, আইলা, ফণী, বুলবুল, আম্পান, রিমালের মতো ঘূর্ণিঝড় থেকে বাংলাদেশকে বুক চিতিয়ে রক্ষা করতে গিয়ে প্রায় প্রতিবছরই ক্ষতিগ্রস্ত হয় সুন্দরবন। আবার মনুষ্যসৃষ্ট নানা কর্মকাণ্ডে বিরূপ প্রভাব পড়ে ম্যানগ্রোভ এই বনের ওপর। এর মধ্যে রয়েছে নিজ স্বার্থে বনে...
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
নদী যেন দিন দিন মরে যাচ্ছে পৌরসভার ফেলে যাওয়া ময়লা-আবর্জনায়। যে নদীর পানিতে একসময় শিশুদের হাসি ও খেলাধুলার শব্দ ভেসে উঠত, সেই নদী আজ দুর্গন্ধে দম বন্ধ হয়ে আসা এক বিষাক্ত নর্দমায় পরিণত হচ্ছে পৌরসভার বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অবহেলায়।
১৫ মিনিট আগে
সুনামগঞ্জের একমাত্র বোরো ফসল রক্ষা বাঁধের কার্যক্রম যেন চলছে কচ্ছপগতিতে। প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠনের সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও তা হয়নি। শেষ হয়নি জরিপ এবং প্রাক্কলনের কাজও। হাওরের অনেক জায়গা বাঁধ করার উপযোগী মনে হলেও ধীরগতির কারণে যথাসময়ে শেষ না হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
২৮ মিনিট আগে
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পটুয়াখালী-১ আসনের মনোনীত প্রার্থী মুফতি হাবিবুর রহমান তাঁর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পটুয়াখালী-৪ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
৩ ঘণ্টা আগেবিশ্বজিত রায়, সুনামগঞ্জ

সুনামগঞ্জের একমাত্র বোরো ফসল রক্ষা বাঁধের কার্যক্রম যেন চলছে কচ্ছপগতিতে। প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠনের সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও তা হয়নি। শেষ হয়নি জরিপ এবং প্রাক্কলনের কাজও। হাওরের অনেক জায়গা বাঁধ করার উপযোগী মনে হলেও ধীরগতির কারণে যথাসময়ে শেষ না হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
গত শুক্রবার তাহিরপুরের শনির হাওর এবং জামালগঞ্জের হালি হাওর ঘুরে দেখা যায়, কোনো কোনো জায়গা দিয়ে পানি নামছে নদীতে। অধিকাংশ বাঁধ এলাকায় কাজ শুরুর মতো উপযুক্ত পরিবেশ রয়েছে। শনির হাওরের সাহেবনগর, জালালপুর, নয়ানগর, মারালা, ইগ্রামপুর, নিশ্চিন্তপুর, মুরাদনগর, শ্রীপুর হয়ে তাহিরপুর পর্যন্ত যেসব জায়গায় প্রতিবছর বাঁধের কাজ হয়, সেসব জায়গায় বাঁধের কাজ এগিয়ে নেওয়ার মতো কোনো আলামত চোখে পড়েনি। শুধু তা-ই নয়, হালি হাওরের একাংশ ঘুরে একই রকম পরিস্থিতি দেখা গেছে।
হাওর-সচেতন মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হাওরের রাজধানীখ্যাত সুনামগঞ্জ বোরো ফসলের ওপর নির্ভরশীল। ওই বোরো ফসল হাতছাড়া হলে দুঃখের সীমা থাকে না এখানকার মানুষের। টেকসই ঝুঁকিমুক্ত বাঁধই পারে এক ফসলি বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে নিরাপদ রাখতে। এর মধ্যে বাঁধের কাজে ব্যত্যয় ঘটলে গোটা হাওরাঞ্চল ঝুঁকিতে পড়বে।
কথা হয় তাহিরপুরের শনির হাওর পারের নয়ানগর গ্রামের কৃষক বাপ্পি মিয়ার সঙ্গে। বাঁধের প্রাক্কলন-জরিপের কাজ হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরার গেরামের আশপাশে প্রতিবছরই পিআইসিরা বাঁধের কাজ করে। এই বছর জরিপের কাজ এখনো হইছে না, কয়দিনের মধ্যে হয়তো করব। সময় তো চইল্যা যাইতাছে (চলে যাচ্ছে)। তাড়াতাড়ি (দ্রুত) কাজ না করলে তো পরে আমরার দৌড়াদৌড়ি করন (করা) লাগে।’
জানা যায়, ২০১৭ সালে সুনামগঞ্জে ভয়াবহ হাওর বিপর্যয়ের পর নড়েচড়ে বসে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ। ওই বছর ফসল রক্ষা বাঁধের কাজে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি হয়। সেই দুর্নীতি ঠেকাতে নতুন কাবিটা নীতিমালা প্রণয়ন করে সরকার। এই নীতিমালার আলোকে বিলুপ্ত হয় আগের ঠিকাদারি প্রথা। হাওরপারের কৃষিজীবী মানুষের সমন্বয়ে পিআইসি গঠন করে বাঁধের কাজ এগিয়ে নেওয়ার নতুন নির্দেশনা জারি করা হয় নীতিমালায়। কিন্তু পুরোনো প্রথাই বলবৎ আছে ফসল রক্ষা বাঁধের কাজে।
নীতিমালায় ৩০ নভেম্বরের মধ্যে পিআইসি গঠন; ১৫ ডিসেম্বর কাজ শুরু এবং ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাঁধের কাজ শেষ করার কথা বলা আছে। কিন্তু পিআইসি গঠন দূরের কথা, এখন পর্যন্ত প্রাক্কলন ও জরিপের কাজই শেষ করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে কৃষক ও হাওর-সচেতন মানুষের মাঝে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, সুনামগঞ্জে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ সংস্কার ও মেরামতে এ বছর ৬৯০টি পিআইসি গঠন করা হতে পারে। এ কাজে প্রাথমিক বরাদ্দ হয়েছে ৪৭ কোটি টাকা। জেলার ৯৫টি হাওরের মধ্যে বাঁধের কাজ হবে ৫৩টি হাওরে। চলতি বছরে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার বাঁধ এলাকায় সংস্কার ও মেরামতের কাজ হবে। ধর্মপাশা ও শাল্লায় বাঁধের কাজ সবচেয়ে বেশি।
শাল্লা হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি তরুণ কান্তি দাস বলেন, ‘২০১৭ সালের প্রলয়ংকরী হাওর বিপর্যয়ের পর বড় ধরনের কোনো দুর্যোগ আসেনি। যে কারণে বাঁধ হওয়া না হওয়া নিয়ে তেমন প্রভাব পড়েনি। যদি অকালবন্যা পেয়ে বসে, তাহলে কৃষকের সর্বনাশ হবে। এখনো প্রাক্কলন-জরিপের কাজই চলছে। কাজের এই মন্থরগতি বিপদে ফেলতে পারে হাওরবাসীকে।’
পিআইসি গঠনপ্রক্রিয়া চলমান আছে জানিয়ে পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, হাওরে এখন পর্যন্ত ৮৬টি ক্লোজার (বাঁধের বড় ভাঙা) শনাক্ত করা হয়েছে। এর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। জেলার ১ হাজার ১০০ কিলোমিটার বাঁধের মধ্যে প্রায় ৮০০ কিলোমিটার বাঁধে জরিপ কাজ শেষ হয়েছে। প্রাক্কলনের কাজও ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে সমাপ্ত হবে। ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শুরু করা হবে বলে জানান তিনি।

সুনামগঞ্জের একমাত্র বোরো ফসল রক্ষা বাঁধের কার্যক্রম যেন চলছে কচ্ছপগতিতে। প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠনের সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও তা হয়নি। শেষ হয়নি জরিপ এবং প্রাক্কলনের কাজও। হাওরের অনেক জায়গা বাঁধ করার উপযোগী মনে হলেও ধীরগতির কারণে যথাসময়ে শেষ না হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
গত শুক্রবার তাহিরপুরের শনির হাওর এবং জামালগঞ্জের হালি হাওর ঘুরে দেখা যায়, কোনো কোনো জায়গা দিয়ে পানি নামছে নদীতে। অধিকাংশ বাঁধ এলাকায় কাজ শুরুর মতো উপযুক্ত পরিবেশ রয়েছে। শনির হাওরের সাহেবনগর, জালালপুর, নয়ানগর, মারালা, ইগ্রামপুর, নিশ্চিন্তপুর, মুরাদনগর, শ্রীপুর হয়ে তাহিরপুর পর্যন্ত যেসব জায়গায় প্রতিবছর বাঁধের কাজ হয়, সেসব জায়গায় বাঁধের কাজ এগিয়ে নেওয়ার মতো কোনো আলামত চোখে পড়েনি। শুধু তা-ই নয়, হালি হাওরের একাংশ ঘুরে একই রকম পরিস্থিতি দেখা গেছে।
হাওর-সচেতন মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হাওরের রাজধানীখ্যাত সুনামগঞ্জ বোরো ফসলের ওপর নির্ভরশীল। ওই বোরো ফসল হাতছাড়া হলে দুঃখের সীমা থাকে না এখানকার মানুষের। টেকসই ঝুঁকিমুক্ত বাঁধই পারে এক ফসলি বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে নিরাপদ রাখতে। এর মধ্যে বাঁধের কাজে ব্যত্যয় ঘটলে গোটা হাওরাঞ্চল ঝুঁকিতে পড়বে।
কথা হয় তাহিরপুরের শনির হাওর পারের নয়ানগর গ্রামের কৃষক বাপ্পি মিয়ার সঙ্গে। বাঁধের প্রাক্কলন-জরিপের কাজ হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরার গেরামের আশপাশে প্রতিবছরই পিআইসিরা বাঁধের কাজ করে। এই বছর জরিপের কাজ এখনো হইছে না, কয়দিনের মধ্যে হয়তো করব। সময় তো চইল্যা যাইতাছে (চলে যাচ্ছে)। তাড়াতাড়ি (দ্রুত) কাজ না করলে তো পরে আমরার দৌড়াদৌড়ি করন (করা) লাগে।’
জানা যায়, ২০১৭ সালে সুনামগঞ্জে ভয়াবহ হাওর বিপর্যয়ের পর নড়েচড়ে বসে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ। ওই বছর ফসল রক্ষা বাঁধের কাজে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি হয়। সেই দুর্নীতি ঠেকাতে নতুন কাবিটা নীতিমালা প্রণয়ন করে সরকার। এই নীতিমালার আলোকে বিলুপ্ত হয় আগের ঠিকাদারি প্রথা। হাওরপারের কৃষিজীবী মানুষের সমন্বয়ে পিআইসি গঠন করে বাঁধের কাজ এগিয়ে নেওয়ার নতুন নির্দেশনা জারি করা হয় নীতিমালায়। কিন্তু পুরোনো প্রথাই বলবৎ আছে ফসল রক্ষা বাঁধের কাজে।
নীতিমালায় ৩০ নভেম্বরের মধ্যে পিআইসি গঠন; ১৫ ডিসেম্বর কাজ শুরু এবং ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাঁধের কাজ শেষ করার কথা বলা আছে। কিন্তু পিআইসি গঠন দূরের কথা, এখন পর্যন্ত প্রাক্কলন ও জরিপের কাজই শেষ করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে কৃষক ও হাওর-সচেতন মানুষের মাঝে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, সুনামগঞ্জে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ সংস্কার ও মেরামতে এ বছর ৬৯০টি পিআইসি গঠন করা হতে পারে। এ কাজে প্রাথমিক বরাদ্দ হয়েছে ৪৭ কোটি টাকা। জেলার ৯৫টি হাওরের মধ্যে বাঁধের কাজ হবে ৫৩টি হাওরে। চলতি বছরে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার বাঁধ এলাকায় সংস্কার ও মেরামতের কাজ হবে। ধর্মপাশা ও শাল্লায় বাঁধের কাজ সবচেয়ে বেশি।
শাল্লা হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি তরুণ কান্তি দাস বলেন, ‘২০১৭ সালের প্রলয়ংকরী হাওর বিপর্যয়ের পর বড় ধরনের কোনো দুর্যোগ আসেনি। যে কারণে বাঁধ হওয়া না হওয়া নিয়ে তেমন প্রভাব পড়েনি। যদি অকালবন্যা পেয়ে বসে, তাহলে কৃষকের সর্বনাশ হবে। এখনো প্রাক্কলন-জরিপের কাজই চলছে। কাজের এই মন্থরগতি বিপদে ফেলতে পারে হাওরবাসীকে।’
পিআইসি গঠনপ্রক্রিয়া চলমান আছে জানিয়ে পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, হাওরে এখন পর্যন্ত ৮৬টি ক্লোজার (বাঁধের বড় ভাঙা) শনাক্ত করা হয়েছে। এর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। জেলার ১ হাজার ১০০ কিলোমিটার বাঁধের মধ্যে প্রায় ৮০০ কিলোমিটার বাঁধে জরিপ কাজ শেষ হয়েছে। প্রাক্কলনের কাজও ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে সমাপ্ত হবে। ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শুরু করা হবে বলে জানান তিনি।

সিডর, আইলা, ফণী, বুলবুল, আম্পান, রিমালের মতো ঘূর্ণিঝড় থেকে বাংলাদেশকে বুক চিতিয়ে রক্ষা করতে গিয়ে প্রায় প্রতিবছরই ক্ষতিগ্রস্ত হয় সুন্দরবন। আবার মনুষ্যসৃষ্ট নানা কর্মকাণ্ডে বিরূপ প্রভাব পড়ে ম্যানগ্রোভ এই বনের ওপর। এর মধ্যে রয়েছে নিজ স্বার্থে বনে...
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
নদী যেন দিন দিন মরে যাচ্ছে পৌরসভার ফেলে যাওয়া ময়লা-আবর্জনায়। যে নদীর পানিতে একসময় শিশুদের হাসি ও খেলাধুলার শব্দ ভেসে উঠত, সেই নদী আজ দুর্গন্ধে দম বন্ধ হয়ে আসা এক বিষাক্ত নর্দমায় পরিণত হচ্ছে পৌরসভার বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অবহেলায়।
১৫ মিনিট আগে
নোয়াখালীর সুবর্ণচরে কয়েক দিন ধরে তীব্র ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। দিনের অধিকাংশ সময়েই রোদের দেখা মিলছে না। এই অবস্থায় বেড়েছে ঠান্ডাজনিত রোগ। দেখা দিচ্ছে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস ও অ্যাজমার প্রকোপ। এসব রোগে আক্রান্তদের অধিকাংশই শিশু ও বৃদ্ধ।
২৩ মিনিট আগে
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পটুয়াখালী-১ আসনের মনোনীত প্রার্থী মুফতি হাবিবুর রহমান তাঁর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পটুয়াখালী-৪ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
৩ ঘণ্টা আগেকলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পটুয়াখালী-১ আসনের মনোনীত প্রার্থী মুফতি হাবিবুর রহমান তাঁর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পটুয়াখালী-৪ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
তবে তিনি কোন রাজনৈতিক দল থেকে নির্বাচন করবেন, তা এখনো নিশ্চিত করেননি।
আজ সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় পটুয়াখালীর কলাপাড়া প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন তিনি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন কলাপাড়া উপজেলা কমিটি থেকে অব্যাহতি পাওয়া জেড এম কাওসার, মাওলানা মো. মোস্তাফিজুর রহমান, মো. আসাদুজ্জামান ইউসুফসহ মুফতি হাবিবুর রহমানের অনুসারীরা।
প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণার মাধ্যমে পটুয়াখালী-১ ও ৪ আসনে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি হতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
লিখিত বক্তব্যে হাবিবুর রহমান জানান, দলীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাঁর ইচ্ছা না থাকা সত্ত্বেও আমির পটুয়াখালী-১ আসনে নির্বাচন করার জন্য নির্ধারণ করে দেন। এ কারণে তিনি প্রচণ্ড অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং স্ট্রোক করে তিনি বুঝতে পারেন, এই অঞ্চল ছেড়ে যাওয়ায় তাঁর হৃদয়ের রক্তনালি ছিঁড়ে গেছে। তাই তিনি ফিরে এসেছেন।
হাবিবুর রহমান আরও জানান, তিনি এমপি নির্বাচিত হতে পারলে এলাকার মানুষের পাশে থাকবেন এবং আগামী দিনে তিনি এই অঞ্চলের চাঁদাবাজ, দখলবাজ, দুর্নীতিবাজ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সর্বস্তরের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে রুখে দাঁড়াবেন। বর্তমানে যেভাবে তিনি সাধারণ জীবন যাপন করছেন, এরচেয়ে বেশি বিলাসী জীবন যাপন করবেন না, গাড়ি হবে না, বাড়ি হবে না, তিনি যা আছেন, তা-ই থাকবেন।
এর আগে বিকেলে তিনি শতাধিক মোটরসাইকেল নিয়ে কলাপাড়া পৌর শহরে শোডাউন দেন।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পটুয়াখালী-১ আসনের মনোনীত প্রার্থী মুফতি হাবিবুর রহমান তাঁর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পটুয়াখালী-৪ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
তবে তিনি কোন রাজনৈতিক দল থেকে নির্বাচন করবেন, তা এখনো নিশ্চিত করেননি।
আজ সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় পটুয়াখালীর কলাপাড়া প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন তিনি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন কলাপাড়া উপজেলা কমিটি থেকে অব্যাহতি পাওয়া জেড এম কাওসার, মাওলানা মো. মোস্তাফিজুর রহমান, মো. আসাদুজ্জামান ইউসুফসহ মুফতি হাবিবুর রহমানের অনুসারীরা।
প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণার মাধ্যমে পটুয়াখালী-১ ও ৪ আসনে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি হতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
লিখিত বক্তব্যে হাবিবুর রহমান জানান, দলীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাঁর ইচ্ছা না থাকা সত্ত্বেও আমির পটুয়াখালী-১ আসনে নির্বাচন করার জন্য নির্ধারণ করে দেন। এ কারণে তিনি প্রচণ্ড অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং স্ট্রোক করে তিনি বুঝতে পারেন, এই অঞ্চল ছেড়ে যাওয়ায় তাঁর হৃদয়ের রক্তনালি ছিঁড়ে গেছে। তাই তিনি ফিরে এসেছেন।
হাবিবুর রহমান আরও জানান, তিনি এমপি নির্বাচিত হতে পারলে এলাকার মানুষের পাশে থাকবেন এবং আগামী দিনে তিনি এই অঞ্চলের চাঁদাবাজ, দখলবাজ, দুর্নীতিবাজ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সর্বস্তরের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে রুখে দাঁড়াবেন। বর্তমানে যেভাবে তিনি সাধারণ জীবন যাপন করছেন, এরচেয়ে বেশি বিলাসী জীবন যাপন করবেন না, গাড়ি হবে না, বাড়ি হবে না, তিনি যা আছেন, তা-ই থাকবেন।
এর আগে বিকেলে তিনি শতাধিক মোটরসাইকেল নিয়ে কলাপাড়া পৌর শহরে শোডাউন দেন।

সিডর, আইলা, ফণী, বুলবুল, আম্পান, রিমালের মতো ঘূর্ণিঝড় থেকে বাংলাদেশকে বুক চিতিয়ে রক্ষা করতে গিয়ে প্রায় প্রতিবছরই ক্ষতিগ্রস্ত হয় সুন্দরবন। আবার মনুষ্যসৃষ্ট নানা কর্মকাণ্ডে বিরূপ প্রভাব পড়ে ম্যানগ্রোভ এই বনের ওপর। এর মধ্যে রয়েছে নিজ স্বার্থে বনে...
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
নদী যেন দিন দিন মরে যাচ্ছে পৌরসভার ফেলে যাওয়া ময়লা-আবর্জনায়। যে নদীর পানিতে একসময় শিশুদের হাসি ও খেলাধুলার শব্দ ভেসে উঠত, সেই নদী আজ দুর্গন্ধে দম বন্ধ হয়ে আসা এক বিষাক্ত নর্দমায় পরিণত হচ্ছে পৌরসভার বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অবহেলায়।
১৫ মিনিট আগে
নোয়াখালীর সুবর্ণচরে কয়েক দিন ধরে তীব্র ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। দিনের অধিকাংশ সময়েই রোদের দেখা মিলছে না। এই অবস্থায় বেড়েছে ঠান্ডাজনিত রোগ। দেখা দিচ্ছে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস ও অ্যাজমার প্রকোপ। এসব রোগে আক্রান্তদের অধিকাংশই শিশু ও বৃদ্ধ।
২৩ মিনিট আগে
সুনামগঞ্জের একমাত্র বোরো ফসল রক্ষা বাঁধের কার্যক্রম যেন চলছে কচ্ছপগতিতে। প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠনের সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও তা হয়নি। শেষ হয়নি জরিপ এবং প্রাক্কলনের কাজও। হাওরের অনেক জায়গা বাঁধ করার উপযোগী মনে হলেও ধীরগতির কারণে যথাসময়ে শেষ না হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
২৮ মিনিট আগে