Ajker Patrika

নড়াইলের সেই শিক্ষককে মোটরসাইকেল কিনে দিচ্ছেন রামেন্দু মজুমদার

আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২২, ১৫: ৩৫
নড়াইলের সেই শিক্ষককে মোটরসাইকেল কিনে দিচ্ছেন রামেন্দু মজুমদার

ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া নিয়ে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার শিকার নড়াইলের কলেজ শিক্ষক স্বপন কুমার বিশ্বাসকে মোটরসাইকেল কিনে দিচ্ছেন বাংলাদেশের খ্যাতিমান নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার। এবছরের মাঝামাঝি ঘটে যাওয়া ওই ঘটনায় নড়াইলের মির্জাপুর ইউনাইটেড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসের মোটরসাইকেলটি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। 

নড়াইল ঘুরতে গিয়ে স্বপন কুমার বিশ্বাসের সঙ্গে সাক্ষাতের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বিষয়টি জানতে পারেন। তিনি বিভিন্নজনের কাছে সহায়তার জন্য যোগাযোগ করেন। তাঁর ডাকে সাড়া দিয়েছেন রামেন্দু মজুমদার।

এবিষয়ে জানতে চাইলে রামেন্দু মজুমদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌসের মাধ্যমে শিক্ষক স্বপন কুমার বিশ্বাসের মোটরসাইকেলের ব্যাপারে শুনেছি। আমাদের সংগঠন এক্সপ্রেশনের মাধ্যমে দ্রুতই তাঁকে আমরা একটি মোটরসাইকেল কিনে দেব। এতে তাঁর কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব হবে।’

নড়াইলের কলেজ শিক্ষক স্বপন কুমার বিশ্বাস ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌসরোবায়েত ফেরদৌস আজকের পত্রিকাকে বলেন, স্বপন কুমার বিশ্বাস তাঁকে জানান, ‘অনেক দিনের জমানো টাকায় কেনা মোটরসাইকেলটি পুড়িয়ে দেওয়ার পর তিনি আর কিনতে পারেননি। পরিবারে একমাত্র তিনিই উপার্জনক্ষম। তিন মেয়েই পড়াশোনা করছে। মোটরসাইকেল ছাড়া তাঁর ও পরিবারের সদস্যদের চলাচলে যারপরনাই সমস্যা হচ্ছে।’

‘এরপর এ বিষয়ে ঢাকায় কিছু সহৃদয় ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে যোগাযোগ করলে রামেন্দু মজুমদার স্বপন কুমার বিশ্বাসকে মোটরসাইকেল কিনে দেওয়ার আশ্বাস দেন।’

হজরত মুহাম্মদকে (সা.) নিয়ে ‘বিরূপ মন্তব্যের’ জন্য বিতর্কিত ভারতের বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মাকে নিয়ে ফেসবুকে ওই কলেজের এক ছাত্রের ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে গত ১৮ জুন উত্তেজনা তৈরি হয়। কলেজের মুসলিম শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজনের বিক্ষোভের মুখে ওই ছাত্র ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের অফিসে আশ্রয় নেন।

তখন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ছাত্রের পক্ষ নিয়েছেন—এমন অভিযোগে বিক্ষোভ থেকে উত্তেজনা বেড়ে যায়। একপর্যায়ে পুলিশ ও প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে ওই শিক্ষককে জুতার মালা পরিয়ে হেনস্তা করা হয়।

এরপর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে শিক্ষক-ছাত্র, স্থানীয় বাসিন্দাসহ এক পুলিশ সদস্য আহত হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা অধ্যক্ষ ও দুজন শিক্ষকের মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়। ঘটনার ৯ দিন পর এঘটনায় মামলা হয়। দেড় মাস (৩ আগস্টের আগ পর্যন্ত) কর্মস্থলে ফিরতে পারেননি স্বপন কুমার বিশ্বাস।

ওই শিক্ষককে উদ্ধৃত করে রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, ‘কোনো অপরাধী আজ পর্যন্ত শাস্তি পায়নি। উল্টো অভিযুক্ত আকতার এখনো তাঁদের চাপে ও ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত