Ajker Patrika

দেশে ফিরল ভারতে পাচার হওয়া শিশুসহ ২৫ বাংলাদেশি নারী

বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি
দেশে ফিরল ভারতে পাচার হওয়া শিশুসহ ২৫ বাংলাদেশি নারী

ভালো কাজের প্রলোভনে বিভিন্ন সময় ভারতে পাচারের শিকার শিশুসহ ২৫ বাংলাদেশি নারীকে উদ্ধারের পর দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভারত সরকারের দেওয়া বিশেষ ‘ট্রাভেল পারমিটের’ মাধ্যমে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে তাদের ফেরত পাঠায় কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাস কর্মকর্তারা। 

ইমিগ্রেশন আনুষ্ঠানিকতা শেষে তাদের আইনি সহায়তা ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার, মহিলা আইনজীবী সমিতি ও রাইটস যশোর নামে ৩টি মানবাধিকার সংস্থা। ফেরত আসা নারী ও শিশুদের বাড়ি যশোর, সাতক্ষীরা, নড়াইল, বাগেরহাট, খুলনা ও সিলেট জেলার বিভিন্ন এলাকায়। 

এদিকে বন্দী দশা থেকে মুক্তি পেয়ে দেশের মাটিতে পা রাখতেই চোখে-মুখে খুশির ঝিলিক দেখা মেলে পাচার হওয়া নারী ও শিশুদের। অভিভাবকেরা তাদের শিশুদের কাছে পেয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়ে। কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব শামীমা ইয়াসমিন স্মৃতি বলেন, ‘ভারতের বিভিন্ন সেফ হোম থেকে ২৫ বাংলাদেশিকে ছাড়িয়ে স্বদেশ প্রত্যাবাসন করা হয়েছে।’ সেই সঙ্গে পাচার প্রতিরোধে সবাইকে সচেতন হওয়ার অনুরোধ জানান তিনি। 

বেনাপোল ইমিগ্রেশন অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রাজু বলেন, ‘ফেরত আসা নারী ও শিশুদের ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া শেষে বন্দর থানা-পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী ব্যবস্থা তারা নেবেন।’ 

শিশুদের গ্রহণকারী বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতির অ্যাডভোকেট নাসিমা খাতুন বলেন, ‘সংসারে অভাব অনটনের কারণে গত ২ বছর থেকে ৫ বছর আগে এসব নারী ও শিশুরা ভালো কাজের আশায় দালালের খপ্পরে পড়ে বিভিন্ন সময় সীমান্ত পথে ভারতে যায়। পরে দালাল চক্র তাদের ভালো কাজের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে বিভিন্ন অসামাজিক ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজে বাধ্য করে। খবর পেয়ে ভারতীয় পুলিশ বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের উদ্ধার করে আদালতে পাঠায়।’ 

নাসিমা খাতুন আরও বলেন, ‘সেখান থেকে রেসকিউ ফাউন্ডেশন নামে ভারতের একটি এনজিও সংস্থা তাদের জেল থেকে ছাড়িয়ে নিজেদের শেল্টার হোমে রাখে। পরবর্তীতে দুই দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যমে তাদের দেশে ফেরার ব্যবস্থা করে কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাস।’ 

মানব পাচার প্রতিরোধ নিয়ে কাজ করা সংগঠন যশোর রাইটসের নির্বাহী পরিচালক বিনয় কৃষ্ণ মল্লিক বলেন, ‘পাচারের শিকার নারীরা যদি পাচারকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করতে চায় তাহলে তাদের আইনি সহায়তা করা হবে। পাচারের শিকার নারী ও শিশুদের আইনি সহযোগিতা করতে গিয়ে আমাদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। সমাজের প্রভাবশালী কিছু মানুষ পাচারকারীদের পক্ষ নিয়ে কাজ করায় পাচার মামলা আলোর মুখ দেখে না। এতে ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকছে পাচারকারীরা।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত