Ajker Patrika

মরার আগে নাতি হত্যার বিচার দেখে যেতে চান আবরারের দাদা

কুমারখালী (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৭ অক্টোবর ২০২১, ২২: ৪১
মরার আগে নাতি হত্যার বিচার দেখে যেতে চান আবরারের দাদা

বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার দুই বছর পেরিয়ে গেলেও আসামিদের বিচার হয়নি। দ্রুত বিচারের দাবিতে আজ কুষ্টিয়ায় শোক র‍্যালি করেছে আবরারের পরিবার। আসামিদের দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে র‍্যালি শেষে আবরার ফাহাদের কবর জিয়ারত করেন তাঁরা।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে আবরারের নিজ গ্রাম কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের রায়ডাঙ্গা গ্রামে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় আবরার ফাহাদের দাদা আব্দুল গফুর বিশ্বাস, প্রতিবেশী, আত্মীয়-স্বজনসহ স্থানীয়রা উপস্থিত ছিলেন।

নিহত আবরারের দাদা আব্দুল গফুর বিশ্বাস বলেন, 'আমার বয়স ৯০ বছর, মৃত্যুর আগে আমি আমার নাতি আবরার হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর দেখে যেতে চাই। প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতিসহ সবাই বলেছেন আবরার হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি দেওয়া হবে, কিন্তু দীর্ঘ দুই বছর হয়ে গেলেও এখনো বিচার কাজ শেষ হয়নি।'

তিনি আরও বলেন, 'তখন সবাই বলেছিল দ্রুত বিচার কাজ শেষ হবে। তবে নানা কারণে তা হয়নি। এখন বিচার দ্রুত শেষ করে খুনিদের ফাঁসির রায় কার্যকর দেখতে চাই। আমার প্রিয় নাতির জন্য মন কাঁদে। তাঁকে হারিয়েছি দুই বছর হলো। এখনো বিচার শেষ হয়নি। মরার আগে অন্তত নাতি হত্যার বিচার দেখে যেতে চাই।'

আবরারের মা রোকেয়া খাতুন বলেন, আমার ছেলেকে অন্যায়ভাবে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। দুই বছর পেরিয়ে গেলেও নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের বিচার কাজ শেষ হয়নি। আসামিদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

নিহত আবরারের স্বজন ও প্রতিবেশীরা বলেন, আবরার দেশের সম্পদ ছিল। আবরার হত্যাকাণ্ডের দুই বছর পেড়িয়ে গেল। শুরুতে ব্যাপক আন্দোলনের মুখে দ্রুত বিচারের কথা বলা হলেও বিচারের তেমন অগ্রগতি হয়নি। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান তারা।

এ ছাড়াও এদিন দুপুরে আবরার ফাহাদের পরিবারের পক্ষ থেকে কুষ্টিয়া শহরের বিভিন্ন জায়গায় শতাধিক ছিন্নমূল মানুষদের মধ্যে খাবার বিতরণ করা হয়। 

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর বুয়েটের শেরেবাংলা হলের আবাসিক ছাত্র ও তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করে বুয়েট ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মী। ২০১৯ সালের ৫ অক্টোবর  বাংলাদেশ-ভারতের চুক্তি নিয়ে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেওয়ায় তাঁকে হত্যা করা হয়। ওই স্ট্যাটাসের জেরে ৬ অক্টোবর দিবাগত রাতে আবরারকে তার কক্ষ থেকে ডেকে ২০১১ নম্বর কক্ষে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে। পরে রাত ৩টার দিকে শেরে বাংলা হলের সিঁড়ি থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। দেশের অন্যতম এই বিদ্যাপীঠে একজন শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনাটি ব্যাপক সমালোচিত হয়। পরে এ ঘটনার সঙ্গে যুক্তদের শাস্তির দাবিতে মাঠে নামেন শিক্ষার্থীসহ দেশের সাধারণ মানুষ। পরে আবরারের বাবার করা মামলায় কয়েকজনকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত