Ajker Patrika

পাউবোর খাল দখল করে পুকুর-খেত

আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, ঝিনাইদহ 
আপডেট : ১১ এপ্রিল ২০২৫, ০৯: ৪৩
ঝিনাইদহে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জিকে সেচ প্রকল্পের খালে চলছে চাষাবাদ। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঝিনাইদহে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জিকে সেচ প্রকল্পের খালে চলছে চাষাবাদ। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঝিনাইদহে দখলদারদের কবলে চলে গেছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) জিকে সেচ প্রকল্পের খাল। কেউ খালে খনন করে বানিয়েছেন পুকুর, কেউ আবার ভরাট করে করছেন চাষাবাদ। এতে করে খালটির অস্তিত্ব বিলীন হওয়ার পথে।

ফলে চাষের মৌসুমে যেমন সেচের পানি মেলে না, তেমনি বর্ষাকালে অতিরিক্ত পানি সরতে না পেরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। নষ্ট হয় কৃষিজমির ফসল। তবে পাউবোর কর্মকর্তারা বলছেন, খাল দখলের বিষয়টি তাঁরা জানেন না। এটি সত্য হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাউবো সূত্রে জানা গেছে, গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জিকে) সেচ প্রকল্পের আওতায় খনন করা খালটি শৈলকুপার শাপখোলা ও সদরের বাকড়ী এলাকার মধ্য দিয়ে গিয়ে নবগঙ্গা নদীতে মিশেছে।

সম্প্রতি শাপখোলা-পোড়া বাকড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় ইলিয়াস মিয়া তাঁর বাড়ির সামনে খালে বাঁধ দিয়ে পুকুর খনন করেছেন। ভেঙে ফেলা হয়েছে কালভার্ট। পুকুরের আগপর্যন্ত খালটি থাকলেও এরপর পুরো বিলীন হয়ে গেছে।

জানতে চাইলে ইলিয়াস বলেন, ‘খালে পানি না আসায় যার যার জমির পাশে তারা খালে ফসল আবাদ করছে। ফলে খাল আস্তে আস্তে ভরাট হয়ে গেছে। সবাই খাল ব্যবহার করছে বলে আমিও কিছুদিন হলো মাছ চাষ করছি। পানি উন্নয়ন বোর্ড খাল খনন করুক। খালে আবার পানি আসুক। আমরা সরে যাব।’

স্থানীয় বাসিন্দা জানান, খালটি একসময় বহমান ছিল। কিন্তু স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী লোক খালে পুকুর খনন ও পাড় ভেঙে জমির সঙ্গে মিশিয়ে নিয়েছেন। খাল দখলের ফলে উজানের এলাকাগুলোয় বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে ব্যাপক ফসলহানি হয়।

ইকবাল মোল্লা নামের এক কৃষক বলেন, ‘৭-৮ বছর ধরে খালে কোনো পানি আসে না। আস্তে আস্তে ভরাট হয়ে গেছে। সে জন্য খালে চাষ দিয়ে ফসল লাগাই। এতে তো দোষের কিছু দেখছি না। খাল খনন করুক, আমরা আর চাষ করব না।’

আক্কেল মোল্লা নামের আরেক কৃষক বলেন, ‘পাড়ে যাদের জমি আছে, সবাই কমবেশি খাল দখল করে চাষাবাদ করছে। তাদের দেখে আমিও ফসল লাগিয়েছি। খালটি পুনরায় খনন হলে পানি এলে আমাদের চাষের জন্যই ভালো। খাল দ্রুত খনন করলে আমরা আর চাষ করব না।’

এ নিয়ে কথা হলে ঝিনাইদহ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী রঞ্জন কুমার দাস আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা ছিল না। দ্রুত সময়ের মধ্যে খালটি দখলদারদের কবল থেকে উদ্ধারের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত