Ajker Patrika

কুমারখালীতে অগ্নিকাণ্ডে নিঃস্ব ৮ পরিবার, প্রায় ১৫ লাখ টাকার ক্ষতি

কুমারখালী (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ০২ এপ্রিল ২০২২, ১৪: ২২
কুমারখালীতে অগ্নিকাণ্ডে নিঃস্ব ৮ পরিবার, প্রায় ১৫ লাখ টাকার ক্ষতি

কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার জোতমোড়া গ্রামের পশ্চিমপাড়ায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে আটটি পরিবারের ১২টি ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। গতকাল শুক্রবার রাত ২টার দিকে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। আগুন নিয়ন্ত্রণের সময় অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

ক্ষতিগ্রস্তরা হলেন—ওই গ্রামের মো. লেকমান শেখের ছেলে মো. লুৎফর রহমান (৫০), মৃত রাজাই শেখের ছেলে মো. লোকমান হোসেন (৭৫), ফেলু শেখের ছেলে হেকমত আলী (৫৫), আব্দুল হাকিম (৫২), আরিফুল ইসলাম (৪০) ও শহিদুল ইসলাম (৩৬), লুৎফর রহমানের ছেলে শাহীন (২২) ও আক্তার। ক্ষতিগ্রস্তরা পেশায় দিনমজুর, কৃষক ও ব্যবসায়ী।

এলাকাবাসী ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাত ২টার দিকে লুৎফর রহমানের গোয়ালঘর থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে মুহূর্তের মধ্যে আগুন আশপাশের ঘরবাড়িতে ছড়িয়ে পড়ে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের চিৎকার চেঁচামেচিতে স্থানীয়রা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন এবং কুমারখালী ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট এলাকাবাসীদের সঙ্গে নিয়ে প্রায় আড়াই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। 

আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও আটটি পরিবারের ১২টি ঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এতে বসতঘর, আসবাবপত্র, গয়না, ফসল, নগদ টাকা, গবাদিপশুসহ ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, গোয়ালঘরে দেওয়া মশার কয়েল থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। এতে ১০-১৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণের সময় অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। স্থানীয়ভাবে আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। 

মশার কয়েলের আগুনে ৮টি পরিবারের ১২টি ঘর পুড়ে ছাইক্ষতিগ্রস্ত লুৎফর রহমান বলেন, ‘আগুনে আমার বসতঘর, গোয়ালঘর, রান্নাঘর, একটা গরু, তিনটা ছাগল, নগদ ৪০ হাজার টাকা, গয়না, আসবাবপত্রসহ সবকিছু পুড়ে গেছে। এখন আমি নিঃস্ব। কোথায় যাব, কী করব কিছুই বুঝতে পারছি না।’ 

ক্ষতিগ্রস্ত গরুর ব্যবসায়ী লোকমান হোসেন বলেন, ‘নগদ দেড় লাখ টাকাসহ সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এখন আমি সর্বস্বান্ত।’ 

পান ব্যবসায়ী আব্দুল হাকিম বলেন, ‘একবেলা রান্না করার মতোও আমার কিছুই নেই। খোলা আকাশ ছাড়া কিছুই চোখে পড়ছে না।’ 

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্কুলশিক্ষক মিজানুর রহমান কামাল বলেন, গতকাল রাত ২টার দিকে গোয়ালঘর থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। এলাকাবাসী ও ফায়ার সার্ভিসের আড়াই ঘণ্টা চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও আটটি পরিবার একদম নিঃস্ব হয়ে গেছে। তাঁদের পরনের কাপড় ছাড়া আর কিছুই নেই। এ সময় আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। 

এ বিষয়ে যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান বলেন, আগুনের খবর পেয়ে রাতেই সেখানে গিয়েছিলাম। আটটি পরিবার একদম নিঃস্ব হয়ে গেছে। সরকারি ও বেসরকারি সহযোগীদের নিয়ে তাঁদের পাশে দাঁড়ানো হবে। 

কুমারখালী ফায়ার সার্ভিসের পরিদর্শক বখতিয়ার উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট এলাকাবাসীর সহযোগিতায় প্রায় আড়াই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। কিন্তু ততক্ষণে আটটি পরিবারের সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ধারণা করা হচ্ছে, গোয়ালঘর থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। এতে ১০-১৫ লাখ টাকা ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিতান কুমার মণ্ডল বলেন, ‘খবর পেয়েছি। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে। তাঁদের সরকারি সহযোগিতা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত