Ajker Patrika

স্কুল ফটকের সামনে সরকারি জমিতে গর্ত খুঁড়ে মাছ চাষ, ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা

অভয়নগর (যশোর) প্রতিনিধি
আপডেট : ১১ এপ্রিল ২০২৩, ২১: ৩২
স্কুল ফটকের সামনে সরকারি জমিতে গর্ত খুঁড়ে মাছ চাষ, ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে সরকারি জমি দখল করার অভিযোগ উঠেছে মো. আব্দুল হাকিম নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। ওই জমিতে গর্ত করে মাছ ছেড়ে দেওয়ায় যাতায়াতে ভোগান্তিতে পড়ছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া মাছ নিধনের অভিযোগ তুলে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নামে মামলা করেছেন হাকিম। ঘটনাটি ঘটেছে যশোরের অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া পৌরসভার কাপাশাহাটি গ্রামের শহীদ স্মৃতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। 

বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা ও এলাকার লোকজন জানান, বিদ্যালয়ের সামনে যশোর-খুলনা মহাসড়কের পাশের সরকারি জমি দখল করে গর্ত করে রেখেছেন কাপাশহাটি গ্রামের মো. আব্দুল হাকিম। এতে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের সমস্যা হচ্ছে। এ কারণে গত বছরের ২৯ আগস্ট বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অবৈধ উচ্ছেদের দাবি জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে লিখিত অভিযোগ দেন। এ ছাড়া বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিষয়টি সুষ্ঠু সমাধানের জন্য চলতি বছরের শুরুর দিকে সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) অভিযোগ দেন হাকিমের বিরুদ্ধে। 

অভিযোগ থেকে জানা গেছে, শিক্ষার্থীরা যাতে যশোর-খুলনা মহাসড়কে দুর্ঘটনায় না পড়ে এই জন্য বিদ্যালয়ে ২০১৬ সালে সীমানা প্রাচীর তৈরি করা হয়। বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের জায়গা সড়ক ও জনপথ বিভাগের, যা হাকিম গর্ত করে দখল করে রেখেছেন। এ ছাড়া বর্ষা মৌসুমে হাকিম ছোট ছোট গর্তে দুই হাজার টাকার পোনা মাছ ছেড়ে, মাছ মারা যাওয়ার নাটক করছেন। তিনি বিপদে পড়বেন জেনে ৮০ হাজার টাকার মাছ মরে যাওয়ার ঘটনা এনে আদালতে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নামে মামলা দায়ের করেছেন। 

মামলায় আসামি করা হয়েছে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফাতেমা খাতুন, সভাপতি আবু তাহের চৌধুরী, জমিদাতা মৃত সাজেদুর রহমান, সহকারী শিক্ষক শহিদুল ইসলামকে। 

এ বিষয়ে অভিভাবক খলিল চৌধুরী, আব্দুল বাতেন, শাহিন ভুঁইয়া ও আব্দুল্লা আল মামুন বলেন, ‘১৯৭৩ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত। এর সামনের মহাসড়কের সরকারি জায়গা আব্দুল হাকিম দখল গর্ত করে রেখেছেন। বাচ্চাদের যাওয়ার জায়গা নেই। খাস জমিটি বিদ্যালয় ভোগদখল করলে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে আর সমস্যা থাকবে না।’ 

পঞ্চম শ্রেণির কয়েকজন শিক্ষার্থী বলে, ‘বিদ্যালয়ের সামনে যাতায়াতের পথে আসা যাওয়ায় আমরা পড়ে গিয়ে আহত হই। জায়গাটা দখলমুক্ত করা হোক।’ 

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক প্রিয়া রানী দাস বলেন, ‘মহাসড়কের জায়গায় গর্ত করে দখল করে রেখেছেন হাকিম। তিনি কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কথা ভাবেন না। বিদ্যালয়ের ফটকে জরাজীর্ণ অবস্থা। আমরাসহ ছাত্র-ছাত্রীদের যাতায়াতে সমস্যা হয়।’ 
 
প্রধান শিক্ষক ফাতেমা খাতুন বলেন, ‘বিদ্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ পরিদর্শন করতে এলে গাড়ি ঢুকতেও পারে না। ভ্যান, সাইকেল নিয়ে যাওয়া-আসা করা যায় না। বাচ্চারা দুর্ঘটনায় পড়ে। আমরা কয়েক দফায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অভিযোগ দিয়েছি।’ 

বিদ্যালয়ের সভাপতি আবু তাহের চৌধুরী বলেন, ‘আব্দুল হাকিম ছোট গর্তে ২ হাজার টাকার পোনা মাছ ছেড়ে নাটক সাজানোর বাহানা করছেন। তিনি বিপদে পড়বেন জেনে ৮০ হাজার টাকার মাছ মরে যাওয়ার ঘটনা এনে আদালতে আমাদের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন।’ 
 
অভিযোগের বিষয়ে মো. আব্দুল হাকিম বলেন, ‘আমার বাড়ির পাশে বিদ্যালয়ের সামনে মহাসড়কের জায়গা আমি ভোগদখল করে আসছি। এটা খাস জমি না। মহাসড়কের জমি যার পাশে থাকবে সে দখল করবে। আমি আদালতে মামলা করেছি। আমার মাছ মরে গেছে। তাঁদের কারণে কয়েকজন ছাই ফেলে দিয়ে গর্ত ভরাট করে। যে কারণে বিষাক্ত গ্যাসে মাছ মরে যায়। আমি এই বিষয়টির মীমাংসা করতে চাই। বিদ্যালয়ের সামনের অংশ আমি ছেড়ে দেব।’ 

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কাসেম বলেন, ‘আমি কয়েক দিন আগে যোগ দিয়েছি। বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে আমি বিদ্যালয় পরিদর্শনে যাব।’ 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন বলেন, ‘এ বিষয়ে মীমাংসার জন্য সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা হলেই মেয়াদ শেষ নতুন পরিচালনা কমিটির

এনসিপিকে চাঁদা দিচ্ছেন ধনীরা, ক্রাউডফান্ডিং করেও অর্থ সংগ্রহ করা হবে: নাহিদ ইসলাম

ঢাবি ছাত্রীকে যৌন হেনস্তাকারীর পক্ষে নামা ‘তৌহিদী জনতার’ আড়ালে এরা কারা

ভ্যানিটি ব্যাগ ধরে টান, সন্তানসহ ছিটকে পড়তেই তরুণীর গালে ছুরিকাঘাত

‘মবের হাত থেকে বাঁচাতে’ পলকের বাড়ি হয়ে গেল অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত