Ajker Patrika

যশোরে নববর্ষের শোভাযাত্রার প্রথম উদ্যোক্তা ভাস্কর শামীমকে সংবর্ধনা

­যশোর প্রতিনিধি
যশোরে উৎসব-আনন্দ নানা আয়োজনে নতুন বছরকে স্বাগত জানানো হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
যশোরে উৎসব-আনন্দ নানা আয়োজনে নতুন বছরকে স্বাগত জানানো হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

উৎসব-আনন্দ আর বর্ণিল আয়োজনে নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়েছে যশোর। ১৪৩২ বরণ করতে আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১০টার দিকে যশোরের জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, ৩২টির অধিক সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল যশোর কালেক্টরেট চত্বরে অবস্থান করে।

সেখানে দেশব্যাপী নববর্ষের শোভাযাত্রার প্রথম উদ্যোক্তা ভাস্কর মাহবুব জামাল শামীমকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। জেলা প্রশাসক মো. আজাহারুল ইসলাম সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ভাস্কর মাহবুব জামাল শামীমের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট ও চেক তুলে দেন। অনুষ্ঠানে যশোরের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

অনুভূতি ব্যক্তকালে ভাস্কর মাহবুব জামাল শামীম বলেন, ‘এই সম্মাননা শুধু আমার একার নয়। যশোরের সব সাংস্কৃতিক কর্মী, সামাজিক ও রাজনীতিক সর্বোপরি গোটা দেশবাসীর। যশোর থেকে শুরু হওয়া পয়লা বৈশাখের আনন্দ শোভাযাত্রা আজ প্রতিবেশী ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বাঙালিরা সাড়ম্বরে পালন করছে। এই আনন্দ আজ সবার। আজকের এই সম্মাননায় আমি আপ্লুত, খুশি।’

এদিন ‘জাতীয় সংগীত’ ও ‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো’ গান গেয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়। সম্মাননা অনুষ্ঠানের পরপরই দেশবাসীর কল্যাণ কামনায় শহরে একটি বর্ণিল ও বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি যশোর কালেক্টরেট চত্বর থেকে বেরিয়ে বকুলতলা, দড়াটানা, চৌরাস্তা, কেশবলাল সড়ক হয়ে যশোর ইনস্টিটিউটে গিয়ে শেষ হয়।

এবারের শোভাযাত্রায় সুন্দরবন রক্ষায় বিভিন্ন প্রাণ প্রকৃতি পাখপাখালির মোটিফ, ঘোড়ার গাড়িসহ গ্রামবাংলার চিরায়ত বিভিন্ন সামগ্রী বহন করা হয় ও র‍্যালি হয়ে উঠে প্রাণবন্ত। এ সময় বিভিন্ন পেশার মানুষ নববর্ষের বাহারি রঙিন পোশাক পরিধান করে তাদের নিজস্ব বাদ্য বাজিয়ে নেচে গেয়ে তারা নববর্ষকে বরণ করে নিয়েছে।

যশোরে উৎসব-আনন্দ নানা আয়োজনে নতুন বছরকে স্বাগত জানানো হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
যশোরে উৎসব-আনন্দ নানা আয়োজনে নতুন বছরকে স্বাগত জানানো হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

এদিকে, সকাল ৬টা ৩১ মিনিটে নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়ে যশোর পৌর পার্কে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে যশোর উদীচী, নবকিশলয় স্কুলে বিবর্তন যশোর ও সুরধুনী ছাড়াও বিভিন্ন সংগঠন তাদের নিজ নিজ ভেন্যুতে কবিগান, পালাগান, পঞ্চকবির গান, আধুনিক গান, লোকসংগীত, লোকনৃত্য, বাউল গান পরিবেশন করা হয়। বর্ষবরণের এ অনুষ্ঠান সব বয়সের নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন। এ উৎসব দেশে সব ধর্ম-বর্ণের মানুষের মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধন সৃষ্টি করবে এমনটা আশা তাদের।

উল্লেখ্য, ১৯৮৫ সালের পয়লা বৈশাখ যশোরে প্রথম ব্যতিক্রমী শোভাযাত্রার সূচনা হয়। সে সময় দেশে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সামরিক শাসন জারি ছিল। এই শোভাযাত্রার মূল উদ্দেশ্য ছিল দেশের লোকজ সংস্কৃতি তুলে ধরার মাধ্যমে সব স্তরের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করা। একই সঙ্গে অশুভ শক্তির বিনাশ এবং শুভশক্তির আগমন কামনা করা হয়েছিল। এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগের নেপথ্যে ছিলেন চারুশিল্পী মাহবুব জামাল শামিম।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউট থেকে পড়াশোনা শেষ করে মাহবুব জামাল শামিম যশোরে ফিরে যান এবং সেখানে ‘চারুপিঠ’ নামে একটি শিল্পচর্চা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন। তবে যশোরের গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ থাকেনি এই শোভাযাত্রা।

১৯৮৯ সালের পয়লা বৈশাখে ঢাকার চারুকলা থেকেও শুরু হয় একই ধরনের শোভাযাত্রা। শুরুতে এর নাম ছিল ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’। তবে পরবর্তীতে এটি ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ নামেই পরিচিতি লাভ করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বৈশাখী মেলার নাগরদোলায় চড়িয়ে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা

জেলা প্রশাসনের আনন্দ শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়া সেই আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেপ্তার

এশিয়ার সেরা সুপ্ত সম্ভাবনা বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাত, বিপুল বিনিয়োগের সুযোগ

ডিবিপ্রধানকে সরানোর সঙ্গে মডেল মেঘনার ঘটনার সম্পর্ক নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ঢাকায় এসে ২০ জুলাইযোদ্ধার দৃষ্টিশক্তি ফেরালেন ব্রিটিশ চিকিৎসকেরা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত