Ajker Patrika

মেহেরপুরে কালবৈশাখীর আধা ঘণ্টার তাণ্ডবে আম-লিচুসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

মেহেরপুর প্রতিনিধি
কালবৈশাখীর তাণ্ডবে মেহেরপুরে নুয়ে পড়েছে কলাগাছ। ছবি: আজকের পত্রিকা
কালবৈশাখীর তাণ্ডবে মেহেরপুরে নুয়ে পড়েছে কলাগাছ। ছবি: আজকের পত্রিকা

মাত্র আধা ঘণ্টার কালবৈশাখীর তাণ্ডবে মেহেরপুরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষক ও বাগানমালিকেরা। গতকাল শনিবার সন্ধ্যার ঝড়ে আম, লিচু, কলা, ধান ও পেঁপেখেতের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। ভেঙে পড়েছে অসংখ্য গাছ, উড়ে গেছে ঘরের টিন। জেলাজুড়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল রাতভর।

চাঁদবিল গ্রামের কৃষক সাজিবুল ইসলামের দুই বিঘা কলাখেত মাটিতে শুয়ে পড়েছে ঝড়ের আঘাতে। তিনি বলেন, ‘দুই বিঘা জমিতে কলা চাষে খরচ হয়েছে দেড় লাখ টাকা। বাজারমূল্য অনুযায়ী তিন লাখ টাকার কলা বিক্রি করতে পারতাম। এখন একটি টাকাও ঘরে তুলতে পারব না। সব পুঁজি শেষ। কীভাবে পরবর্তী আবাদ করব, তা বুঝতে পারছি না।’

একই গ্রামের কৃষক রাশিদুল ইসলামের দুই বিঘা জমির ধান ও এক বিঘার পেঁপেখেতও ঝড়ে ব্যাপক ক্ষতির শিকার হয়েছে। তিনি জানান, ধান পেকে গিয়েছিল, দু-এক দিনের মধ্যেই গোলায় তুলতাম। কিন্তু ঝড়ে ধান মাটিতে শুয়ে পড়েছে, এখন কাটলে চিটা হয়ে যাবে। পেঁপের গাছগুলোও মাঝখান থেকে ভেঙে গেছে। লোকসান ছাড়া কিছুই থাকবে না।

কালবৈশাখীর তাণ্ডবে মেহেরপুরে নুয়ে পড়েছে ধানখেত। ছবি: আজকের পত্রিকা
কালবৈশাখীর তাণ্ডবে মেহেরপুরে নুয়ে পড়েছে ধানখেত। ছবি: আজকের পত্রিকা

সদর উপজেলার কোলা গ্রামের বাগানমালিক শুভ বলেন, ‘চলতি মৌসুমে ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকার আম-লিচুর বাগান কিনেছি। ১৫ মে থেকে গুটি ও বোম্বাই জাতের আম সংগ্রহ শুরু করেছি। ২২ মে থেকে হিমসাগর তোলা শুরু হতো। কিন্তু ঝড়ে গাছের ৪০ থেকে ৫০ ভাগ আম পড়ে গেছে, অনেক গাছও ভেঙে পড়েছে। এখন ফল বিক্রি করে লগ্নি ফেরত পাওয়ার কোনো উপায় দেখছি না।’

আমঝুপি গ্রামের আমবাগান মালিক সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘খরায় আগেই আম পাকতে শুরু করেছে। হিমসাগর আম গাছে থাকলেও প্রশাসনের বাধ্যবাধকতায় তুলতে পারিনি। শনিবারের ঝড়ে মোটা ও পাকা আমগুলো একেবারে পড়ে গেছে। এখন গাছের নিচে কাদার ভেতর পড়ে আছে শুধু লোকসান।’

ঝড়ের কারণে শহর ও গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে গাছ ভেঙে পড়ে সড়কে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। উড়ে গেছে ঘরের টিন। রাতভর বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন ছিল পুরো জেলা। আজ বিকেল পর্যন্ত শহরের কিছু অংশে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হলেও গ্রামের অধিকাংশ এলাকায় এখনো বিদ্যুৎ সংযোগ চালু হয়নি। ফলে জরুরি অনেক কাজেই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘মাঠে কলা, পেঁপে, ধান ও বাগানের আম-লিচুর ক্ষতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি। জেলা অফিসে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ পাঠানোর নির্দেশনা পাওয়া গেছে। আমরা মাঠে কাজ করছি।’

উপপরিচালক সামসুল আলম জানান, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণে মাঠপর্যায়ে কাজ চলছে। সোমবারের মধ্যে তা জানানো যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আজহারুলের আপিলে তাজুলের প্রসিকিউশন টিম, স্বার্থের সংঘাত দেখছেন ডেভিড বার্গম্যানও

ডিসেম্বরে নির্বাচন চায় শুধু একটি দল—প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যের যে ব্যাখ্যা দিল প্রেস উইং

মুক্তিযুদ্ধে অস্ত্র হাতে লড়েছিলেন বলেই কি জামিন পেলেন না অধ্যাপক আনোয়ারা

হঠাৎ ব্যাংকের ভেতরে সবাই অচেতন

সৌদি আরবে পুরুষের ‘অবাধ্য’ হলে নারীর যে পরিণতি হয়

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত