Ajker Patrika

খরচ বেড়েছে দ্বিগুণ, অনাবৃষ্টিতে আমনের আবাদ নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
Thumbnail image

আমনের ভরা মৌসুমে কৃষকের চাহিদামতো বৃষ্টি নেই। পানি সংকটের কারণে আমন আবাদ প্রায় ১ মাস পিছিয়ে গেছে, সেই সঙ্গে বেড়েছে সার এবং ডিজেলের দাম। এতে করে আমন আবাদের ক্ষেত্রে কৃষকের খরচ বাড়ছে প্রায় দ্বিগুণ। ফলে চরম বিপাকে পড়েছেন কুষ্টিয়া অঞ্চলের কৃষকেরা, ব্যাহত হচ্ছে আমন ধানের আবাদ। 

এ দিকে এসব অভিযোগ স্বীকার করে কৃষি বিভাগ বলছে, কৃষকের লোকসান পোষাতে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে। 

কুষ্টিয়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, জেলায় এবার আমনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮৮ হাজার ৮৯৫ হেক্টর। কিন্তু মৌসুমের মাঝামাঝি সময় পার হয়ে গেলেও মঙ্গলবার পর্যন্ত অর্জিত হয়েছে ৮৮ হাজার ৫ হেক্টর। একদিকে অনাবৃষ্টিতে পানির জন্য কৃষকের হাহাকার সেই সঙ্গে ডিজেলের দাম বৃদ্ধিতে বাড়ছে সেচ খরচ। তাই চলতি মৌসুমের ধান আবাদ নিয়ে চিন্তার ভাঁজ কৃষকের কপালে। 

এই এলাকার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আমন মৌসুমে কৃষকের মূল ভরসা থাকে বৃষ্টির ওপর। কিন্তু ভরা মৌসুমে বৃষ্টি না হওয়ায় ধান লাগাতে বেশ কয়েক দিন দেরি হয়েছে। যার ফলে নির্ধারিত সময়ের অনেক পরে ধান উঠবে। যার প্রভাব পড়বে ধানের বাজারের ওপর। 

আছাদুল ইসলাম মিরপুর উপজেলার মশান এলাকার কৃষক। মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, তিনি তাঁর জমিতে ধান লাগাচ্ছেন। জানতে চাইলে আছাদুল ইসলাম বলেন, ‘এবার সময়মতো বৃষ্টি হয়নি। বৃষ্টির আশায় থাকতে গিয়ে প্রায় এক মাস ধান আবাদে পিছিয়ে পড়েছি। মাঝে কয়েক দিন বৃষ্টি হয়েছে, সেকারনে এখন ধান লাগাতে শুরু করেছি। কিন্তু কয়েক দিন পরেই আবার সেচ দেওয়া লাগবে। এর মধ্যে যদি বৃষ্টি নাহয় তাহলে বিকল্প পথে পানির ব্যবস্থা করতে হবে।’ 

আমনের ভরা মৌসুমে কৃষকের চাহিদামতো বৃষ্টি নেই, পানি সংকটের কারণে কুষ্টিয়ায় আমন আবাদ প্রায় ১ মাস পিছিয়ে গেছেশরিফুল ইসলাম নামের মিরপুরের সুলতানপুর মঠের একজন কৃষক বলেন, ‘যে সময় ধানের গোছা মোটা হয়ে যাওয়ার কথা এবার সেই সময় ধানের চারা লাগাচ্ছি। বৃষ্টির অভাবেই এমনটা হয়েছে। ধানের ভরা মৌসুমেও চাহিদামতো বৃষ্টির দেখা না মেলায় সেচের জন্য স্যালোম্যাশিনের ওপর নির্ভর হতে হচ্ছে। কিন্তু ডিজেলের দাম বৃদ্ধির কারণে সেখানেও অতিরিক্ত টাকা গুনতে হচ্ছে। সঙ্গে বেড়েছে সারের দামসহ কীটনাশক এবং শ্রমিকের দাম। যার ফলে ধানের উৎপাদন খরচ বেড়েছে কয়েক গুন। ধানের যা দাম তাতে কৃষকেরা আর পুষিয়ে উঠতে পারছে না। যার ফলে বিপাকে আছে কৃষকেরা তার ধান আবাদে বিমুখ হয়ে পড়ছে তারা। এতে করে আমন আবাদ চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।’ 
 
এ সব বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুষ্টিয়ার উপপরিচালক হায়াত মাহামুদ বলেন, ‘আমন ধান আবাদের মৌসুমে কৃষকেরা মূলত বৃষ্টির ওপরেই অনেকটা নির্ভরশীল থাকে। তাই অনাবৃষ্টি এবং একইসময় ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধি কৃষকদের খরচ কিছুটা বাড়াবে। কিন্তু কৃষকদের লোকসান পোষাতে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শসহ সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত