Ajker Patrika

ফুটবল খেলা নিয়ে দুই স্কুলের উত্তেজনা, প্রতিপক্ষের হামলায় আহত অনেকে

বাগেরহাট প্রতিনিধি
ফুটবল খেলা নিয়ে দুই স্কুলের উত্তেজনা, প্রতিপক্ষের হামলায় আহত অনেকে

বাগেরহাট সদর উপজেলার সি এন্ড বি বাজার এলাকায় ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলার শিকার হয়েছে সায়েড়া মধুদিয়া কলেজিয়েট স্কুলের শিক্ষার্থীরা। এতে প্রতিষ্ঠানটির ২৭ শিক্ষার্থী আহত হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। আজ বুধবার বিকেলে মধুদিয়া ইছাময়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে এ হামলার ঘটনা ঘটে। 

জানা গেছে, ৪৯ তম গ্রীষ্মকালীন খেলাধুলার অংশ হিসেবে স্থানীয় কিছু স্কুলের মধ্যে ফুটবল টুর্নামেন্ট চলছিল। টুর্নামেন্টের ফাইনালে আজ মুখোমুখি হয় মধুদিয়া ইছাময়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয় বনাম সায়েড়া মধুদিয়া কলেজিয়েট স্কুল। নির্ধারিত সময়ে কোনো দলই গোল দিতে না পারায় ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। টাইব্রেকারের শেষ পর্যায়ে দুই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়। কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে সায়েড়া মধুদিয়া কলেজিয়েট স্কুলের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানো হয়। 

নিজেদের মাঠে খেলা হওয়ায় মধুদিয়া ইছাময়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শিক্ষক ও স্থানীয়রাও সায়েড়া মধুদিয়া কলেজিয়েট স্কুলের শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হয় বলে জানা গেছে।

আহতদের বাগেরহাট জেলা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে এবং সোয়েব তরফদার নামের এক শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

হাসপাতালে ভর্তি সোয়েব তরফদার বলেন, ‘আজকে আমাদের ফাইনাল খেলা ছিল। শেষ টাইব্রেকারে গোল দিয়ে আমরা জিতে যাই। কিন্তু এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওই স্কুলের (মধুদিয়া ইছাময়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয়) শিক্ষার্থী, শিক্ষক, ও স্থানীয় অনেকে মিলে আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমাদের সবাইকে তারা ইচ্ছেমতো মারধর করে। আমাকে লাথি মারতে মারতে মাটিতে ফেলে দেয়।’

উবায়দুল ইসলাম নামের এক এস এস সি পরীক্ষার্থী বলেন, ‘খেলা শেষে কিছু বুঝে ওঠার আগেই চারপাশ থেকে আমাদের ওপর হামলা হয়। ছেলে-মেয়ে দেখাদেখি নেই, সায়েড়া মধুদিয়া নাম শুনলেই তারা আমাদের মারছিল।’

জাহিদুর রহমান নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, খেলায় আমাদের জয় নিশ্চিত ছিল। এটা বোঝার পরেই হামলার ঘটনা ঘটে। বাঁশের লাঠি ও রড দিয়ে আঘাত করা হয়। আমাদের অন্তত ২৭ জন আহত হয়েছে। আমরা এই ন্যক্কারজনক হামলার বিচার চাই।’

হামলার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মধুদিয়া ইছাময়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ সেলিম মাসুদ বলেন, ‘খেলা নিয়ে উত্তেজনার একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মারধরের ঘটনা ঘটে। তবে আমরা শিক্ষকরা সেটি থামিয়ে দেই। এতে কেউ আহত হয়েছে কিনা সে বিষয়ে আমার জানা নেই।’

এদিকে সায়েড়া মধুদিয়া কলেজিয়েট স্কুলের অধ্যক্ষ শেখ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের নিরাপদে নিয়ে আসার চেষ্টা করেছি। তারপরেও আমাদের কিছু শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতিকে জানানো হয়েছে। নির্দেশনা মোতাবেক পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ 

বাগেরহাট সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এস. এম মোর্শেদ বলেন, ‘মারধরের বিষয়টি আমরা শুনেছি। খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ 

বাগেরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মোছাব্বেরুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। মারধরের বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে গুরুত্বের সঙ্গে খোঁজ নিতে বলা হয়েছে। হামলার সঙ্গে যদি স্থানীয়দের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায় তাহলে স্থানীয়দের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। যেসব শিক্ষার্থীরা সরাসরি হামলা করেছে তাদের বিরুদ্ধে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত