Ajker Patrika

ভোট টেম্পারিংয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নির্বাচনব্যবস্থা, প্রধানমন্ত্রী আর এটি চান না: এমপি নূর মোহাম্মদ

ইসলামপুর (জামালপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৭: ৪৩
ভোট টেম্পারিংয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নির্বাচনব্যবস্থা, প্রধানমন্ত্রী আর এটি চান না: এমপি নূর মোহাম্মদ

নির্বাচনব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন আর এটি চান না। আগামী নির্বাচন আরও কঠিন হবে।

অতীতের জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ইঙ্গিত করে এমন কথা বলেছেন জামালপুর-১ (বকশীগঞ্জ-দেওয়ানগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) নূর মোহাম্মদ।

সংসদ সদস্য বলেছেন, ‘ভোট টেম্পারিংয়ের কারণে দেশের নির্বাচনব্যবস্থাটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এটা প্রধানমন্ত্রী এখন আর চায় না। বরং আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। নেক্সট পার্লামেন্ট নির্বাচন দেখবেন যে আরও কঠিন হবে এবং এটিই হওয়া উচিত। জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত নেতা হোক। যাই-তাই নির্বাচনে দাঁড়াব, জোড়াতালি দিয়ে পাস করে যাবে, পরবর্তী পর্যায়ে এগুলো হয় না।’ 

গতকাল শনিবার বিকেলে দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন এমপি। 

আসন্ন বকশীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে স্থানীয় আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী চূড়ান্তের লক্ষ্যে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।

এ সময় উপস্থিত নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ও সংসদ সদস্য নূর মোহাম্মদ আরও বলেন, ‘যাই ভোটে নির্বাচিত হবে, তাঁকে দুটো কথা কয়ে আরাম পাবেন। উনিও কথা শুনে আরাম পাবে। আপনি দুটো গাল পারবেন যে আপনাকে ভোট দিয়েছি। আর এখন যদি কিছু কন, তবে তাঁরা বলবে, আপনার ভোটে তো আমি এমপি হইনি, চেয়ারম্যান হইনি। অনেক চেয়ারম্যান কথা শুনে না। কী জন্য কথা শুনে না। ভোট লাগে না।’ 

উপস্থিত নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে জেলা আওয়ামী লীগ নেতা নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘আমি আমার দলের প্রার্থীকে জিতানির জন্য দুই নম্বরি চিন্তাভাবনা করব, ওটাও কিন্তু আমি করব না। আপনাদের সবার সামনে বললাম। ফেয়ার ভোটে জিতা লাগবে। ফেয়ার ভোটে জিততে হবে। যদি আপনারা সিঙ্গেল (একক প্রার্থী) হন, তারপরেও কিন্তু আমি আমার প্রার্থীকে জিতানির জন্য আমি আমার ভোট চামু।’

উপজেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে বকশীগঞ্জ সরকারি কিয়ামত উল্লাহ কলেজ মাঠে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। 

এ সময় নির্বাচনী আচরণবিধির প্রতি ইঙ্গিত করে আওয়ামী লীগের এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘যেহেতু এখানে আমার আসার নিয়ম নাই। আমি যেখানে থাকি, জামালপুর থাকি, ঢাকায় থাকি, ইন্ডিয়া যাইয়ে থাকি। সব জায়গায় তো ফোনের যোগাযোগ আছে। সবার কাছেই ফোন আছে। ফোনে আমার প্রার্থীকে জিতানোর চেষ্টা করব। যেহেতু এখানে এসে ওপেনলি নির্বাচন করতে পারব না। আমি যেই জায়গায় থাকি, ওই জায়গা থেকে নির্বাচন করে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে জিতানোর জন্য চেষ্টা করব।’ 

পার্শ্ববর্তী ইসলামপুর ও মেলান্দহ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন প্রসঙ্গ টেনে নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘ধর্মমন্ত্রী ও জামালপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. ফরিদুল হক খান দুলাল ইসলামপুরে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী চূড়ান্ত করেছেন। এ ছাড়া মেলান্দহেও দলের একক প্রার্থী করা হয়েছে। আপনারা মন খোলে আমাকে বললে এখানেও একক প্রার্থী করা সম্ভব।’ 

সংসদ সদস্য বলেন, ‘এখানে চার মেয়াদে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রৌফ তালুকদার। তিনি অবশ্যই শক্তিশালী প্রার্থী। আমিও একসময় তাঁকে সমর্থন দিয়েছি। তাঁকে এখানকার মানুষ বটগাছ আখ্যা দিয়ে বক্তব্য দেন। কাজেই তাঁকে পরাস্ত করতে হলে অবশ্যই আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী থাকতে হবে। আপনারা যদি একক প্রার্থী চূড়ান্ত করতে পারেন, সে ক্ষেত্রে আমি বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুর রৌফ তালুকদারকে নির্বাচন থেকে বসিয়ে দেব। তাঁকে বসানোর শক্তি আল্লাহ তায়ালা আমাকে দিয়েছে।’ 

মতবিনিময় সভায় দলীয় নেতা-কর্মীরামতবিনিময় সভায় দলের সাতজন নেতা উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়ে বক্তব্য দেন। তাঁরা হলেন সংসদ সদস্য নূর মোহাম্মদের ছোট ভাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও নীলাখিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম সাত্তার, উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য এমদাদুল হক, সভাপতি শাহীনা বেগম, সিনিয়র সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ ফড়িং, সাবেক সহসভাপতি আবু জাফর, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বিজয় এবং সাবেক পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম সওদাগর। 

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহীনা বেগম এতে সভাপতিত্ব করেন। সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন বাবুল তালুকদার সঞ্চালনা করেন। 

বক্তারা বলেন, বিএনপি ছাড়া দীর্ঘ ৩৫ বছরেও আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থী বকশীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিজয় হতে পারেনি। তাই এবার সব ভেদাভেদ ভুলে জনপ্রিয় নেতাকে একক প্রার্থী করতে চান তাঁরা। তা না হলে, দলীয় নেতা প্রার্থী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হতে পারবে না।

উল্লেখ্য, সর্বশেষ ২০১৯ সালে বকশীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। টানা চার মেয়াদে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পালন করে আসছেন বিএনপি-সমর্থিত আব্দুর রৌফ তালুকদার। নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ২১ মে এই উপজেলায় ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইউএস-বাংলার বহরে যুক্ত হলো তৃতীয় এয়ারবাস ৩৩০, এয়ারক্র্যাফট দাঁড়াল ২৫টিতে

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ভাতা বাড়ল ১৫ শতাংশ, সঙ্গে শর্ত

আজকের রাশিফল: আপন গোপন তথ্য সামলে রাখুন, প্রচুর ভালোবাসুন

গাজায় যুদ্ধবিরতি ভেঙে এক দিনে ১৫৩ টন বোমা ফেলেছে ইসরায়েল

ঝালকাঠিতে পদ স্থগিত নেতাদের নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতার সভা: দলে ক্ষোভ ও বিভক্তি বাড়ছে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

উত্তরায় আওয়ামী লীগের একাধিক মিছিল, ককটেলসহ আটক ৮

উত্তরা-বিমানবন্দর (ঢাকা) প্রতিনিধি 
আজ সকালে উত্তরায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগের একাধিক বিক্ষোভ মিছিল থেকে ৮ জনকে আটক করে পুলিশ। ছবি: ডিএমপি
আজ সকালে উত্তরায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগের একাধিক বিক্ষোভ মিছিল থেকে ৮ জনকে আটক করে পুলিশ। ছবি: ডিএমপি

রাজধানীর উত্তরায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগের একাধিক বিক্ষোভ মিছিল ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এসব মিছিল থেকে অবিস্ফোরিত দু’টি ককটেলসহ ৮ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১০টার মধ্যে উত্তরার জসীম উদদীন রোড, রাজলক্ষ্মী ও হাউস বিল্ডিং এলাকায় এসব মিছিল ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উত্তরা রাজলক্ষ্মী এলাকায় সকাল সোয়া ১০টার দিকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। মিছিলে ১৫/১৬ জন উপস্থিত ছিল। ওই সময় স্থানীয় জনতা তাদের ধাওয়া করে দু’জনকে আটক করে। পরে তাদের গণধোলাই দিয়ে পুলিশে হস্তান্তর করা হয়।

অপরদিকে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হাউস বিল্ডিং সংলগ্ন ৮ নম্বর সেক্টরের পুলিশ স্টাফ কোয়ার্টারের পাশের সড়কে আরেকটি বিক্ষোভ মিছিল করে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। ওই মিছিলের পর সেখান থেকে অবিস্ফোরিত দু’টি ককটেল উদ্ধার করে পুলিশ।

একই সময় উত্তরার জসীম উদদীন রোড এলাকায় বিক্ষোভ মিছিলের চেষ্টা করে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। তবে মিছিল করতে না পেরে তারা পর পর দু’টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে যায়।

ডিএমপির উত্তরা পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ৮ নম্বর সেক্টরে কার্যক্রম নিষিদ্ধ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল ও নাশকতার চেষ্টা করলে জনতার সহযোগিতায় ৬ জনকে আটক করা হয়। সেই সঙ্গে ঘটনাস্থল থেকে দু’টি অবিস্ফোরিত ককটেল সদৃশ বস্তু পাওয়া যায়। এগুলো নিষ্ক্রিয় করতে ডিএমপির বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটকে খবর দেওয়া হয়েছে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইউএস-বাংলার বহরে যুক্ত হলো তৃতীয় এয়ারবাস ৩৩০, এয়ারক্র্যাফট দাঁড়াল ২৫টিতে

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ভাতা বাড়ল ১৫ শতাংশ, সঙ্গে শর্ত

আজকের রাশিফল: আপন গোপন তথ্য সামলে রাখুন, প্রচুর ভালোবাসুন

গাজায় যুদ্ধবিরতি ভেঙে এক দিনে ১৫৩ টন বোমা ফেলেছে ইসরায়েল

ঝালকাঠিতে পদ স্থগিত নেতাদের নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতার সভা: দলে ক্ষোভ ও বিভক্তি বাড়ছে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পিরোজপুরে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

পিরোজপুর প্রতিনিধি
পিরোজপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালত। ছবি: আজকের পত্রিকা
পিরোজপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালত। ছবি: আজকের পত্রিকা

পিরোজপুরে স্ত্রী হত্যার দায়ে মো. ফিরোজ আলম নামের এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার দুপুরে পিরোজপুরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. মজিবুর রহমান আসামির উপস্থিতিতে এ রায় দেন। একই সঙ্গে তাঁকে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও আট মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।  

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি বরগুনা জেলার বেতাগী উপজেলার ভোরা গ্রামের মৃত মোফাজ্জেল হোসেনের ছেলে মো. ফিরোজ আলম।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, দণ্ডপ্রাপ্ত ফিরোজ আলমের সঙ্গে ১৯৯৭ সালে পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার পৈকখালী গ্রামের মৃত আমীর মল্লিকের মেয়ে বিউটি বেগমের বিয়ে হয়। এ দম্পতির মধ্যে পারিবারিক কলহের জেরে ২০১৯ সালের ৫ অক্টোবর রাতে ফিরোজ আলম তাঁর স্ত্রী ছয় সন্তানের জননী বিউটিকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে। হত্যার দায় থেকে নিজে বাঁচতে জমিজমা নিয়ে বিরোধ থাকা প্রতিবেশীদের ফাঁসানোর চেষ্টা করেন ফিরোজ।

হত্যার ঘটনায় বিউটির ভাই মো. ইউনুস মল্লিক বাদী হয়ে ফিরোজকে নামীয় এবং কয়েকজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে ভান্ডারিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। পরে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করে। পুলিশ তদন্ত করে ফিরোজের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেয়। সাক্ষ্য-প্রমাণে সে দোষী সাব্যস্ত হলে আদালত এ রায় দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পাবলিক প্রসিকিউটর) আবুল কালাম আকন বলেন, ‘আমরা এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইউএস-বাংলার বহরে যুক্ত হলো তৃতীয় এয়ারবাস ৩৩০, এয়ারক্র্যাফট দাঁড়াল ২৫টিতে

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ভাতা বাড়ল ১৫ শতাংশ, সঙ্গে শর্ত

আজকের রাশিফল: আপন গোপন তথ্য সামলে রাখুন, প্রচুর ভালোবাসুন

গাজায় যুদ্ধবিরতি ভেঙে এক দিনে ১৫৩ টন বোমা ফেলেছে ইসরায়েল

ঝালকাঠিতে পদ স্থগিত নেতাদের নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতার সভা: দলে ক্ষোভ ও বিভক্তি বাড়ছে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাইবার অপরাধ মামলায় সাবেক সমন্বয়ক গ্রেপ্তার

বগুড়া প্রতিনিধি
সাবেক সমন্বয়ক সাকিব খান। ছবি: সংগৃহীত
সাবেক সমন্বয়ক সাকিব খান। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়া জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক সাকিব খানকে (২০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার ভোরে ঢাকার শাহবাগ থানা-পুলিশ বগুড়া শহরের নারুলী এলাকায় তাঁর বাসা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে ঢাকায় নিয়ে যায়।

বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান বাসির এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ওসি বলেন, ঢাকার শাহবাগ থানায় দায়ের করা সাইবার অপরাধ মামলায় সাকিব খানকে গ্রেপ্তারের জন্য শাহবাগ থানা-পুলিশ বগুড়ায় আসে। পরে সদর থানা-পুলিশকে মামলার বিষয় জানিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়।

এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহবাগ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আসাদুজ্জামান বলেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখস চৌধুরীকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখালেখি করার অভিযোগে ২০ অক্টোবর শাহবাগ থানা-পুলিশ বাদী হয়ে সাকিব খানসহ অজ্ঞাত কয়েকজনের নামে থানায় মামলা করে। সেই মামলায় সাকিব খানকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইউএস-বাংলার বহরে যুক্ত হলো তৃতীয় এয়ারবাস ৩৩০, এয়ারক্র্যাফট দাঁড়াল ২৫টিতে

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ভাতা বাড়ল ১৫ শতাংশ, সঙ্গে শর্ত

আজকের রাশিফল: আপন গোপন তথ্য সামলে রাখুন, প্রচুর ভালোবাসুন

গাজায় যুদ্ধবিরতি ভেঙে এক দিনে ১৫৩ টন বোমা ফেলেছে ইসরায়েল

ঝালকাঠিতে পদ স্থগিত নেতাদের নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতার সভা: দলে ক্ষোভ ও বিভক্তি বাড়ছে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ৯ কোটি টাকার ১৮টি ডিজিটাল ল্যাব এখন ই-বর্জ্য

তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) সংবাদদাতা
নওগাঁ জিন্দানী ডিগ্রি কলেজের ডিজিটাল ল্যাবের ৩০টি ডেস্কটপ কম্পিউটারসহ অন্যান্য সরঞ্জাম সম্পূর্ণ অচল। ছবি: আজকের পত্রিকা
নওগাঁ জিন্দানী ডিগ্রি কলেজের ডিজিটাল ল্যাবের ৩০টি ডেস্কটপ কম্পিউটারসহ অন্যান্য সরঞ্জাম সম্পূর্ণ অচল। ছবি: আজকের পত্রিকা

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি অধিদপ্তরের আওতায় ১৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্থাপন করা হয় স্কুল অব ফিউচার ও শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব (বর্তমান নাম আইসিটিডি)। পাশাপাশি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্প থেকে আরও পাঁচ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হয়। 

শিক্ষার্থীদের তথ্য ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে দক্ষতা, সক্ষমতা বাড়ানো ও স্বাবলম্বী হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করা এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হলেও বাস্তবে তা এখন গলার কাঁটা হয়েছে। নিম্নমানের উপকরণ সরবরাহের ফলে শুরুতেই এসব ডিজিটাল ল্যাব মুখ থুবড়ে পড়েছে। পরিণত হয়েছে ই-বর্জ্যে। অথচ এসব ল্যাব পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একজন করে ল্যাব সহকারী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাঁরা সরকারিভাবে নিয়মিত মাসিক বেতন-ভাতা উত্তোলন করছেন। ল্যাবে কাজ না থাকায় তাঁরা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পিয়নের দায়িত্ব পালন করছেন। এসব ল্যাব স্থাপনে এই উপজেলায় সরকারের প্রায় ৯ কোটি টাকা জলে গেছে।

অভিযোগ উঠেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে একটি সিন্ডিকেট পুরোনো সংস্করণের ল্যাপটপ, ডেস্কটপ, প্রিন্টার, স্ক্যানার, ওয়েবক্যাম, এলিইডি টিভি, হোয়াইটবোর্ড, রাউটার, ইন্টারনেট, ট্যাব, সার্ভার সিস্টেমসহ যাবতীয় হার্ডওয়ার ও ফার্নিচার সরবরাহ করায় এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তারা মানহীন পণ্য সরবরাহ করে এসব ল্যাব থেকে দুই থেকে তিন কোটি টাকা সুকৌশলে হাতিয়ে নিয়েছে।

জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিভিন্ন সময়ে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি অধিদপ্তরের প্রকল্পের আওতায় তাড়াশ উপজেলায় ১৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে পৌর সদরের তাড়াশ ইসলামিয়া পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ে স্থাপন করা হয় স্কুল অব ফিউচার। অবশিষ্ট সাতটি স্কুল, চারটি কলেজ ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং একটি মাদ্রাসায় শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করা হয়। এ ছাড়া আরও পাঁচটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প থেকে ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করা হয়। সরেজমিনে অধিকাংশ ডিজিটাল ল্যাবের করুণ দশা দেখা গেছে।

তাড়াশ ইসলামিয়া পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, এখানে স্থাপিত ‘স্কুল অব ফিউচার’ কার্যত বন্ধ। প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুস সালাম জানান, অপারেটর না থাকায় কার্যক্রম বন্ধ। টেকনিশিয়ান চেয়ে বারবার আইসিটি অধিদপ্তরে আবেদন করেও সাড়া মেলেনি।

নওগাঁ জিন্দানী ডিগ্রি কলেজের ডিজিটাল ল্যাবের ৩০টি ডেস্কটপ কম্পিউটারসহ অন্যান্য সরঞ্জাম সম্পূর্ণ অচল। ছবি: আজকের পত্রিকা
নওগাঁ জিন্দানী ডিগ্রি কলেজের ডিজিটাল ল্যাবের ৩০টি ডেস্কটপ কম্পিউটারসহ অন্যান্য সরঞ্জাম সম্পূর্ণ অচল। ছবি: আজকের পত্রিকা

নওগাঁ জিন্দানী ডিগ্রি কলেজের ডিজিটাল ল্যাবের ৩০টি ডেস্কটপ কম্পিউটারসহ অন্যান্য সরঞ্জাম সম্পূর্ণ অচল এবং ল্যাবটি এখন ই-বর্জ্য ছাড়া আর কিছুই নয়। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. বেলাল হোসেন আনছারী বলেন, নিম্নমানের সরঞ্জামের কারণে ল্যাবটি অচল হয়ে পড়েছে।

গুল্টা বাজার শহীদ এম মনসুর আলী ডিগ্রি কলেজে ল্যাপটপ নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পাঁচ থেকে সাতটি কম্পিউটার উধাও। অভিযোগ উঠেছে, কলেজের অধ্যক্ষ মো. আসাদুজ্জামান ও তাঁর নিকটজনেরা এসব ল্যাপটপ ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহার করছেন।

অন্যান্য ল্যাবের অবস্থাও এই তিন ল্যাবের মতো। তবে তাড়াশ সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে কয়েকটি কম্পিউটার এখনো সচল রয়েছে। ৫ আগস্ট পটপরিবর্তনের পর ল্যাবের কক্ষটি কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে।

শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন প্রকল্পের (দ্বিতীয় পর্যায়) এক বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, ল্যাব প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ১৪টি শর্ত প্রযোজ্য থাকলেও বাস্তবে তা মানা হয়নি। মূলত সংশ্লিষ্ট আসনের সংসদ সদস্যরা নিয়মকানুন অমান্য করে তাঁদের পছন্দের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ডিও লেটার দিয়েছেন এবং সেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। এসব ল্যাব প্রতিষ্ঠায় ঠিক কত টাকা ব্যয় করা হয়েছে, তার সঠিক হিসাব তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়নি।

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন আইটি বিশেষজ্ঞ বলেন, প্রতিটি ল্যাব স্থাপনে গড়ে প্রায় ৫০ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। সেই হিসাবে তাড়াশের ১৮টি ল্যাবে ৯ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে, যা এখন ব্যর্থতায় পর্যবসিত।

সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানেরা অভিযোগ করেন, ল্যাবগুলোর সমস্যার বিষয়ে বারবার তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি অধিদপ্তরে আবেদন করেও কোনো সাড়া মেলেনি। উপজেলা আইসিটি অফিসারের কার্যালয় থেকে সমস্যা নিয়ে প্রতিবেদন পাঠানো হলেও তা শুধু কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ রয়েছে।

তাড়াশ উপজেলা আইসিটি কর্মকর্তা মো. আবু রায়হান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ল্যাব পরিদর্শনের প্রতিবেদন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, ল্যাব প্রতিষ্ঠার সময় বরাদ্দ বা সরঞ্জামের মান সম্পর্কে তাঁদের অন্ধকারে রাখা হয়েছিল। ইলেকট্রনিকস যন্ত্রপাতি নষ্ট হলে প্রতিষ্ঠানের প্রধানেরা এগুলো ফেলে রাখেন। যার ফলে তা একদিন অচল হয়ে যায়। তাঁর মতে, দ্রুত অর্থ বরাদ্দ করে বিশেষজ্ঞ দ্বারা ল্যাবগুলো নিয়মিত সার্ভিস করা না গেলে সরকারের আইসিটি শিক্ষা প্রদান কোনোভাবেই সম্ভব হবে না।

এ বিষয়ে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি অধিদপ্তরের বর্তমান প্রকল্প পরিচালক এ এস এম লোকমান কোনো তথ্য দিতে পারেননি এবং আগের প্রকল্প পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইউএস-বাংলার বহরে যুক্ত হলো তৃতীয় এয়ারবাস ৩৩০, এয়ারক্র্যাফট দাঁড়াল ২৫টিতে

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ভাতা বাড়ল ১৫ শতাংশ, সঙ্গে শর্ত

আজকের রাশিফল: আপন গোপন তথ্য সামলে রাখুন, প্রচুর ভালোবাসুন

গাজায় যুদ্ধবিরতি ভেঙে এক দিনে ১৫৩ টন বোমা ফেলেছে ইসরায়েল

ঝালকাঠিতে পদ স্থগিত নেতাদের নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতার সভা: দলে ক্ষোভ ও বিভক্তি বাড়ছে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত