Ajker Patrika

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ৯ কোটি টাকার ১৮টি ডিজিটাল ল্যাব এখন ই-বর্জ্য

তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) সংবাদদাতা
নওগাঁ জিন্দানী ডিগ্রি কলেজের ডিজিটাল ল্যাবের ৩০টি ডেস্কটপ কম্পিউটারসহ অন্যান্য সরঞ্জাম সম্পূর্ণ অচল। ছবি: আজকের পত্রিকা
নওগাঁ জিন্দানী ডিগ্রি কলেজের ডিজিটাল ল্যাবের ৩০টি ডেস্কটপ কম্পিউটারসহ অন্যান্য সরঞ্জাম সম্পূর্ণ অচল। ছবি: আজকের পত্রিকা

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি অধিদপ্তরের আওতায় ১৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্থাপন করা হয় স্কুল অব ফিউচার ও শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব (বর্তমান নাম আইসিটিডি)। পাশাপাশি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্প থেকে আরও পাঁচ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হয়। 

শিক্ষার্থীদের তথ্য ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে দক্ষতা, সক্ষমতা বাড়ানো ও স্বাবলম্বী হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করা এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হলেও বাস্তবে তা এখন গলার কাঁটা হয়েছে। নিম্নমানের উপকরণ সরবরাহের ফলে শুরুতেই এসব ডিজিটাল ল্যাব মুখ থুবড়ে পড়েছে। পরিণত হয়েছে ই-বর্জ্যে। অথচ এসব ল্যাব পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একজন করে ল্যাব সহকারী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাঁরা সরকারিভাবে নিয়মিত মাসিক বেতন-ভাতা উত্তোলন করছেন। ল্যাবে কাজ না থাকায় তাঁরা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পিয়নের দায়িত্ব পালন করছেন। এসব ল্যাব স্থাপনে এই উপজেলায় সরকারের প্রায় ৯ কোটি টাকা জলে গেছে।

অভিযোগ উঠেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে একটি সিন্ডিকেট পুরোনো সংস্করণের ল্যাপটপ, ডেস্কটপ, প্রিন্টার, স্ক্যানার, ওয়েবক্যাম, এলিইডি টিভি, হোয়াইটবোর্ড, রাউটার, ইন্টারনেট, ট্যাব, সার্ভার সিস্টেমসহ যাবতীয় হার্ডওয়ার ও ফার্নিচার সরবরাহ করায় এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তারা মানহীন পণ্য সরবরাহ করে এসব ল্যাব থেকে দুই থেকে তিন কোটি টাকা সুকৌশলে হাতিয়ে নিয়েছে।

জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিভিন্ন সময়ে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি অধিদপ্তরের প্রকল্পের আওতায় তাড়াশ উপজেলায় ১৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে পৌর সদরের তাড়াশ ইসলামিয়া পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ে স্থাপন করা হয় স্কুল অব ফিউচার। অবশিষ্ট সাতটি স্কুল, চারটি কলেজ ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং একটি মাদ্রাসায় শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করা হয়। এ ছাড়া আরও পাঁচটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প থেকে ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করা হয়। সরেজমিনে অধিকাংশ ডিজিটাল ল্যাবের করুণ দশা দেখা গেছে।

তাড়াশ ইসলামিয়া পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, এখানে স্থাপিত ‘স্কুল অব ফিউচার’ কার্যত বন্ধ। প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুস সালাম জানান, অপারেটর না থাকায় কার্যক্রম বন্ধ। টেকনিশিয়ান চেয়ে বারবার আইসিটি অধিদপ্তরে আবেদন করেও সাড়া মেলেনি।

নওগাঁ জিন্দানী ডিগ্রি কলেজের ডিজিটাল ল্যাবের ৩০টি ডেস্কটপ কম্পিউটারসহ অন্যান্য সরঞ্জাম সম্পূর্ণ অচল। ছবি: আজকের পত্রিকা
নওগাঁ জিন্দানী ডিগ্রি কলেজের ডিজিটাল ল্যাবের ৩০টি ডেস্কটপ কম্পিউটারসহ অন্যান্য সরঞ্জাম সম্পূর্ণ অচল। ছবি: আজকের পত্রিকা

নওগাঁ জিন্দানী ডিগ্রি কলেজের ডিজিটাল ল্যাবের ৩০টি ডেস্কটপ কম্পিউটারসহ অন্যান্য সরঞ্জাম সম্পূর্ণ অচল এবং ল্যাবটি এখন ই-বর্জ্য ছাড়া আর কিছুই নয়। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. বেলাল হোসেন আনছারী বলেন, নিম্নমানের সরঞ্জামের কারণে ল্যাবটি অচল হয়ে পড়েছে।

গুল্টা বাজার শহীদ এম মনসুর আলী ডিগ্রি কলেজে ল্যাপটপ নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পাঁচ থেকে সাতটি কম্পিউটার উধাও। অভিযোগ উঠেছে, কলেজের অধ্যক্ষ মো. আসাদুজ্জামান ও তাঁর নিকটজনেরা এসব ল্যাপটপ ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহার করছেন।

অন্যান্য ল্যাবের অবস্থাও এই তিন ল্যাবের মতো। তবে তাড়াশ সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে কয়েকটি কম্পিউটার এখনো সচল রয়েছে। ৫ আগস্ট পটপরিবর্তনের পর ল্যাবের কক্ষটি কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে।

শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন প্রকল্পের (দ্বিতীয় পর্যায়) এক বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, ল্যাব প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ১৪টি শর্ত প্রযোজ্য থাকলেও বাস্তবে তা মানা হয়নি। মূলত সংশ্লিষ্ট আসনের সংসদ সদস্যরা নিয়মকানুন অমান্য করে তাঁদের পছন্দের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ডিও লেটার দিয়েছেন এবং সেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। এসব ল্যাব প্রতিষ্ঠায় ঠিক কত টাকা ব্যয় করা হয়েছে, তার সঠিক হিসাব তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়নি।

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন আইটি বিশেষজ্ঞ বলেন, প্রতিটি ল্যাব স্থাপনে গড়ে প্রায় ৫০ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। সেই হিসাবে তাড়াশের ১৮টি ল্যাবে ৯ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে, যা এখন ব্যর্থতায় পর্যবসিত।

সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানেরা অভিযোগ করেন, ল্যাবগুলোর সমস্যার বিষয়ে বারবার তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি অধিদপ্তরে আবেদন করেও কোনো সাড়া মেলেনি। উপজেলা আইসিটি অফিসারের কার্যালয় থেকে সমস্যা নিয়ে প্রতিবেদন পাঠানো হলেও তা শুধু কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ রয়েছে।

তাড়াশ উপজেলা আইসিটি কর্মকর্তা মো. আবু রায়হান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ল্যাব পরিদর্শনের প্রতিবেদন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, ল্যাব প্রতিষ্ঠার সময় বরাদ্দ বা সরঞ্জামের মান সম্পর্কে তাঁদের অন্ধকারে রাখা হয়েছিল। ইলেকট্রনিকস যন্ত্রপাতি নষ্ট হলে প্রতিষ্ঠানের প্রধানেরা এগুলো ফেলে রাখেন। যার ফলে তা একদিন অচল হয়ে যায়। তাঁর মতে, দ্রুত অর্থ বরাদ্দ করে বিশেষজ্ঞ দ্বারা ল্যাবগুলো নিয়মিত সার্ভিস করা না গেলে সরকারের আইসিটি শিক্ষা প্রদান কোনোভাবেই সম্ভব হবে না।

এ বিষয়ে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি অধিদপ্তরের বর্তমান প্রকল্প পরিচালক এ এস এম লোকমান কোনো তথ্য দিতে পারেননি এবং আগের প্রকল্প পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইউএস-বাংলার বহরে যুক্ত হলো তৃতীয় এয়ারবাস ৩৩০, এয়ারক্র্যাফট দাঁড়াল ২৫টিতে

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ভাতা বাড়ল ১৫ শতাংশ, সঙ্গে শর্ত

আজকের রাশিফল: আপন গোপন তথ্য সামলে রাখুন, প্রচুর ভালোবাসুন

গাজায় যুদ্ধবিরতি ভেঙে এক দিনে ১৫৩ টন বোমা ফেলেছে ইসরায়েল

যুগান্তকারী উদ্ভাবন: চোখে চিপ বসিয়ে দেখতে পাচ্ছেন দৃষ্টিহীনেরা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল: রাজধানীতে সারা দিনে ১৩১ জন গ্রেপ্তার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল: রাজধানীতে সারা দিনে ১৩১ জন গ্রেপ্তার

রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ঝটিকা মিছিলে অংশ নেওয়ার অভিযোগে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের ১৩১ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। আজ মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

ডিএমপির উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগ) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।

ডিএমপির ক্রাইম কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল বিভাগ সূত্রে জানা যায়, আজ সারা দিন রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ঝটিকা মিছিলে অংশগ্রহণকারী কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের ১৩১ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা ডিএমপির বিভিন্ন থানা-পুলিশ।

এর মধ্যে উত্তরা পূর্ব থানা-পুলিশ ঝটিকা মিছিলে অংশগ্রহণকারী ছয়, উত্তরা পশ্চিম থানা-পুলিশ দুই, গুলশান থানা-পুলিশ ২৪, খিলক্ষেত থানা-পুলিশ চার, ক্যান্টনমেন্ট থানা-পুলিশ তিন, ধানমন্ডি থানা-পুলিশ ছয়, নিউমার্কেট থানা-পুলিশ ছয়, শাহবাগ থানা-পুলিশ তিন, মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ আট, হাতিরঝিল থানা-পুলিশ এক, পল্টন থানা-পুলিশ ছয়, মতিঝিল থানা-পুলিশ ৪০ ও ডিবি, ওয়ারী ২২ জনকে গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া প্রক্রিয়াধীন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইউএস-বাংলার বহরে যুক্ত হলো তৃতীয় এয়ারবাস ৩৩০, এয়ারক্র্যাফট দাঁড়াল ২৫টিতে

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ভাতা বাড়ল ১৫ শতাংশ, সঙ্গে শর্ত

আজকের রাশিফল: আপন গোপন তথ্য সামলে রাখুন, প্রচুর ভালোবাসুন

গাজায় যুদ্ধবিরতি ভেঙে এক দিনে ১৫৩ টন বোমা ফেলেছে ইসরায়েল

যুগান্তকারী উদ্ভাবন: চোখে চিপ বসিয়ে দেখতে পাচ্ছেন দৃষ্টিহীনেরা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফরিদপুর নয়, ঢাকা বিভাগে থাকার দাবিতে মাদারীপুরে সড়ক অবরোধ

মাদারীপুর প্রতিনিধি
মাদারীপুরে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা
মাদারীপুরে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা

প্রস্তাবিত ফরিদপুর বিভাগে মাদারীপুরকে যেন অন্তর্ভুক্ত না করা হয়, সে দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী। আজ মঙ্গলবার সদর উপজেলার মস্তফাপুরে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে এ বিক্ষোভ করেন তাঁরা। এ সময় যান চলাচল বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েন দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীরা।

খবর পেয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। প্রায় এক ঘণ্টা পর প্রশাসনের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।

মাদারীপুরে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা
মাদারীপুরে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা

আন্দোলনকারীরা জানান, বৃহত্তর ফরিদপুরের পাঁচ জেলা নিয়ে ঘোষণা হতে পারে ফরিদপুর বিভাগ। এই বিভাগে অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে মাদারীপুর জেলাকে। সেই আশঙ্কায় আন্দোলনে নেমেছেন জেলাবাসী।

তাঁদের দাবি, পদ্মা সেতু চালুর পর ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে। তাই ফরিদপুর বিভাগে নয়, ঢাকা বিভাগেই থাকতে চান মাদারীপুর জেলাবাসী।

এ সময় জাতীয় নাগরিক পার্টির মাদারীপুর জেলা শাখার সদস্য রুবেল মৃধা, জহিরুল ইসলাম সানি, আশিকুল ইসলাম, নেয়ামুল হক, কিরণ আক্তার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইউএস-বাংলার বহরে যুক্ত হলো তৃতীয় এয়ারবাস ৩৩০, এয়ারক্র্যাফট দাঁড়াল ২৫টিতে

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ভাতা বাড়ল ১৫ শতাংশ, সঙ্গে শর্ত

আজকের রাশিফল: আপন গোপন তথ্য সামলে রাখুন, প্রচুর ভালোবাসুন

গাজায় যুদ্ধবিরতি ভেঙে এক দিনে ১৫৩ টন বোমা ফেলেছে ইসরায়েল

যুগান্তকারী উদ্ভাবন: চোখে চিপ বসিয়ে দেখতে পাচ্ছেন দৃষ্টিহীনেরা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জমি নিয়ে বিরোধ, ভাতিজাদের হাতে চাচা খুন

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজশাহীর চারঘাটে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ভাতিজাদের হাতে চাচা খুন হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার নিমপাড়া ইউনিয়নের বালাদিয়াড় মোল্লাপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তির নাম মোস্তফা শেখ (৪৭)। তিনি ওই গ্রামের মৃত সমেতউল্লাহ শেখের ছেলে।

অভিযুক্ত ভাতিজারা হলেন শফিক শেখ, রফিক শেখ, ফরহাদ শেখ ও কদু শেখ। তাঁদের বাবার নাম রহমতউল্লাহ শেখ। নিহতের আরেক ভাতিজা রমজান শেখ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

স্বজন ও পুলিশ জানায়, সমেতউল্লাহ শেখের দুই স্ত্রী ছিলেন। এক স্ত্রীর সন্তান রহমতউল্লাহ শেখ এবং অন্য স্ত্রীর সন্তান মোস্তফা শেখ, মুনজিল শেখ, ফজেল শেখ ও এন্দা শেখ। সমেতউল্লাহ শেখ মারা গেলেও তাঁর জমি এখনো সঠিকভাবে ভাগ-বণ্টন হয়নি। জমি নিয়ে বিরোধে উভয় পক্ষের মামলা আদালতে চলমান রয়েছে। এর মধ্যে দেড় বিঘা আয়তনের একটি পুকুরে মোস্তফারা চার ভাই মাছ চাষ করলেও রহমতউল্লাহ শেখকে ভাগ দেওয়া হয়নি। এ নিয়ে কয়েক দিন ধরে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে রহমতউল্লাহর ছেলেরা পুকুরের ভাগ বুঝে নিতে মোস্তফার কাছে গেলে তিনি শুক্রবার বসার কথা বলেন। পরবর্তী সময়ে মোস্তফার ভাই মুনজিল বালাদিয়াড় বাজারের দিকে গেলে রহমতউল্লাহর ছেলেরা তাকে পিটিয়ে আহত করেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দিতে যান মোস্তফার স্বজনেরা। অভিযোগ দেওয়ার খবর শুনে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন রহমতউল্লাহর ছেলেরা।

দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে দাওয়াত খাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হন মোস্তফা শেখ। এ সময় তাঁর ভাতিজা শফিক শেখ, রফিক শেখ, ফরহাদ শেখ ও কদু শেখসহ কয়েকজন তাঁকে বাড়ির পাশের রাস্তায় ঘিরে ধরেন। তর্কাতর্কির একপর্যায়ে ধারালো হাঁসুয়া দিয়ে মোস্তফাকে এলোপাতাড়ি কোপানো শুরু করেন। তাঁকে বাঁচাতে ছুটে আসা অন্য ভাতিজারাও হামলার শিকার হন।

স্থানীয়রা গুরুতর আহত মোস্তফা শেখকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ছাড়া লিটন শেখ, জাদু শেখ ও এনামুল শেখকে গুরুতর আহত অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ঘটনার পর বালাদিয়াড় গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, মোস্তফা শেখের বাড়ির সামনে ছোপ ছোপ রক্ত পড়ে রয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা পলাতক। তাঁদের কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। স্থানীয় নারী বিনা বেগম বলেন, ‘জমি নিয়ে আগেও ঝামেলা হতো, পুলিশ আসত। কিন্তু আজ এভাবে কুপিয়ে মেরে ফেলবে, তা কেউ ভাবেনি।’

এ বিষয়ে চারঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে একজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় মামলা ও জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইউএস-বাংলার বহরে যুক্ত হলো তৃতীয় এয়ারবাস ৩৩০, এয়ারক্র্যাফট দাঁড়াল ২৫টিতে

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ভাতা বাড়ল ১৫ শতাংশ, সঙ্গে শর্ত

আজকের রাশিফল: আপন গোপন তথ্য সামলে রাখুন, প্রচুর ভালোবাসুন

গাজায় যুদ্ধবিরতি ভেঙে এক দিনে ১৫৩ টন বোমা ফেলেছে ইসরায়েল

যুগান্তকারী উদ্ভাবন: চোখে চিপ বসিয়ে দেখতে পাচ্ছেন দৃষ্টিহীনেরা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ধলেশ্বরী সেতুতে গাড়িচাপায় প্রাণ গেল ২ বন্ধুর

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
ইমন ভূঁইয়া ও সামিউল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত
ইমন ভূঁইয়া ও সামিউল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

বাড়ি ফেরার পথে মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে অজ্ঞাতনামা গাড়ির চাপায় দুই বন্ধুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সোমবার রাতে উপজেলার কুচিয়ামোড়া ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের সার্ভিস সড়কের ধলেশ্বরী সেতুর ওপর এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন ইমন ভূঁইয়া (২৬) ও সামিউল ইসলাম (২৭)। ইমন ভূঁইয়া সিরাজদিখান উপজেলার শেখরনগর ইউনিয়নের ঘনশ্যামপুর গ্রামের সেন্টু মিয়ার ছেলে আর সামিউল ইসলাম ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার কলাকোপা এলাকার লিয়াকত মিয়ার ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৫ থেকে ২০টি মোটরসাইকেল নিয়ে প্রায় ৩০ জন তরুণের একটি দল ১৫ অক্টোবর কক্সবাজার ও বান্দরবানে ভ্রমণে যায়। তাঁদের মধ্যে ছিলেন ইমন ও সামিউল। ফেরার পথে রাত সাড়ে ১০টার দিকে ধলেশ্বরী সেতুর ওপর পৌঁছালে তাঁদের মোটরসাইকেলটি অজ্ঞাতনামা একটি গাড়ি চাপা দিয়ে চলে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই দুই বন্ধু নিহত হন।

খবর পেয়ে হাসাড়া হাইওয়ে থানা-পুলিশ লাশ উদ্ধার করে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করে। দুই তরুণ বন্ধুর এমন মৃত্যুতে এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। পরিবারে চলছে আহাজারি।শেখরনগর ইউনিয়ন (ইউপি) পরিষদের চেয়ারম্যান দেবব্রত সরকার টুটুল বলেন, ‘নবাবগঞ্জের সামিউল আর আমাদের এলাকার ইমন দুজন ভালো বন্ধু ছিল। তারা একসঙ্গে ঘুরতে গিয়েছিল। ফেরার পথে দুর্ঘটনায় দুজনই মারা যায়। ইমন ভালো ফুটবল খেলোয়াড় ছিল।’

এ বিষয়ে হাসাড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ টি এম মাহমুদুল হক বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, ফেরার পথে অজ্ঞাতনামা গাড়ির চাপায় দুই বন্ধু নিহত হয়। লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন, ঘাতক গাড়ি শনাক্তের চেষ্টা চলছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইউএস-বাংলার বহরে যুক্ত হলো তৃতীয় এয়ারবাস ৩৩০, এয়ারক্র্যাফট দাঁড়াল ২৫টিতে

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ভাতা বাড়ল ১৫ শতাংশ, সঙ্গে শর্ত

আজকের রাশিফল: আপন গোপন তথ্য সামলে রাখুন, প্রচুর ভালোবাসুন

গাজায় যুদ্ধবিরতি ভেঙে এক দিনে ১৫৩ টন বোমা ফেলেছে ইসরায়েল

যুগান্তকারী উদ্ভাবন: চোখে চিপ বসিয়ে দেখতে পাচ্ছেন দৃষ্টিহীনেরা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত