Ajker Patrika

সোহাগ হত্যা মামলার আসামি মহিন আবার ৫ দিনের রিমান্ডে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

রাজধানীর পুরান ঢাকায় ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে মো. সোহাগকে (৪৩) পাথর দিয়ে আঘাত করে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আসামি মাহমুদুল হাসান মহিনকে আবার ৫ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মিনহাজুর রহমান তাকে ফের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেন।

বিকালে আসামিকে ৫ দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করে কোতোয়ালি থানা পুলিশ। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মনিরুজ্জামান আবার ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন।

রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, জিজ্ঞাসাবাদে তার কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তবে মামলার মূল রহস্য ও এ মামলায় জড়িতদের চিহ্নিত করার জন্য তাকে আবারও রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।

শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেকের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তার পক্ষে কোন আইনজীবী ছিলেন না।

ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের কোতোয়ালি থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই তানভীর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

গত ১০ জুলাই এই মামলায় গ্রেপ্তার মাহমুদুল হাসান মহিনকে ৫ দিন, ১১ জুলাই আসামি টিটন গাজীকে ৫ দিন, ১২ জুলাই আলমগীর ও মনির ওরফে লম্বা মনিরকে ৪ দিন এবং ১৪ জুলাই সজীব বেপারী ও রাজিব বেপারীকে ৫ দিন করে রিমান্ডে নেওয়া হয়।

গত ৯ জুলাই (বুধবার) সন্ধ্যা ৬টার দিকে মিটফোর্ড হাসপাতালের ৩ নম্বর গেটসংলগ্ন রজনী ঘোষ লেনে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। মিটফোর্ড এলাকায় চার নম্বর রজনী ঘোষ লেনে দীর্ঘদিন ধরে ভাঙ্গারি ব্যবসা করতেন সোহাগ। ভাঙ্গারি ব্যবসা নিয়ে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে তাকে পাথর দিয়ে আঘাত করে হত্যা করে সোহাগসহ কয়েকজন।

নিহত মো. সোহাগ কেরানীগঞ্জ মডেল থানার পূর্ব নামাবাড়ি গ্রামের ইউসুফ আলী হাওলাদারের ছেলে।

ঘটনার পরে ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে। ফেসবুকে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, কালো প্যান্ট পরা খালি গায়ের এক যুবক সোহাগের মুখে চড় মারছেন। এরপর কালো গেঞ্জি পরা এক যুবক তাঁর বুকের ওপর লাফিয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে আরও একজন এসে একই কায়দায় আক্রমণ চালান। এর কিছুক্ষণ পর সোহাগের মাথায় লাথিও মারা হয়। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পরও দুর্বৃত্তদের বর্বরতা থেমে থাকেনি। তাকে হাসপাতালের ফটকের ভেতর থেকে টেনে-হিঁচড়ে রাস্তায় নিয়ে যাওয়া হয়।

হাসপাতাল চত্বরে শতাধিক পথচারী ও রোগীর স্বজন এই দৃশ্য প্রত্যক্ষ করলেও কেউ এগিয়ে আসেনি। আশপাশেই আনসার ক্যাম্প থাকলেও নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কেউ ঘটনাস্থলে হস্তক্ষেপ করেননি। হামলাকারীদের একজনকে ভিডিওতে উপস্থিত জনতাকে উদ্দেশ্য করে হাত উঁচিয়ে চিৎকার করে কিছু বলতে শোনা যায়।

এ ঘটনায় নিহতের বোন মঞ্জুয়ারা বেগম বাদী হয়ে ১৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলার এজাহারে বাদী বলেছেন, সোহাগ দীর্ঘদিন ওই এলাকায় ব্যবসা করায় ব্যবসায়িক বিভিন্ন বিষয়সহ আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আসামিদের সঙ্গে তাঁর বিরোধ চলে আসছিল। এর জের ধরে তারা সোহাগের গুদাম তালাবদ্ধ করে রেখেছিলেন। সেই সঙ্গে তাঁকে এলাকাছাড়া করতে নানারকম ভয় দেখিয়ে আসছিল। এরপর বুধবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে তারা পূর্বপরিকল্পিতভাবে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সোহাগের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ঢুকে তাঁকে টেনেহিঁচড়ে বের করে। তাঁকে মারধর করতে করতে মিটফোর্ড হাসপাতালের ৩ নম্বর ফটকের ভেতরে নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে রড, লাঠি, সিমেন্টের ব্লক বা ইট দিয়ে আঘাত করে। মারতে মারতে তাঁকে বিবস্ত্র করে ফেলে। এক পর্যায়ে সোহাগ নিস্তেজ হয়ে ড্রেনের পাশে লুটিয়ে পড়েন। তখন তাঁর নিথর দেহ টেনে হাসপাতালের সামনের রাস্তায় নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বদলির আদেশ ছিঁড়ে বরখাস্ত হলেন এনবিআরের ১৪ কর্মকর্তা

বাংলাদেশের সোনালি মুরগিতে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়া: গবেষণা

দরপত্র ছাড়াই জুলাই স্মৃতি জাদুঘরের কাজ পেল দুই প্রতিষ্ঠান, এরা কারা

ট্রাকে করে ৪৩ হাজার পৃষ্ঠার নথি ইসিতে জমা দিয়েও নিবন্ধন পেল না এনসিপি

প্রেক্ষাপটবিহীন প্রতিবেদন কি সাংবাদিকতা হতে পারে?

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত