Ajker Patrika

সংস্কারের নামে কিশোরগঞ্জ হর্টিকালচার সেন্টারের শতবর্ষী পুকুর ভরাটের অভিযোগ 

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
সংস্কারের নামে কিশোরগঞ্জ হর্টিকালচার সেন্টারের শতবর্ষী পুকুর ভরাটের অভিযোগ 

বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় একটি তিন তলা ভবন নির্মিত হচ্ছে কিশোরগঞ্জের জেলা শহরের উদ্যানতত্ত্ববিদের কার্যালয় হর্টিকালচার সেন্টারে। নির্মাণকাজ চলমান অবস্থায় ভবনটির পেছনে একটি শতবর্ষী পুকুর ভরাট করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে সচেতন মহল। তবে উদ্যানতত্ত্ববিদ বলছেন, তিনি পুকুর পাড় মেরামত ও মজবুত করার জন্য মাটি ফেলে ভরাট করেছেন। 

হর্টিকালচার সেন্টার সূত্র জানায়, ৪ একরের হর্টিকালচার সেন্টার মূলত চারা উৎপাদন হয়। এখানে কিছু বিল্ডিংয়ের কারণে চারা উৎপাদনের জায়গা কম। বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ভূমি উন্নয়নের জন্য বরাদ্দকৃত মাটি দিয়ে আয়তন ঠিক রেখে একদিক করে পুকুরের পাড় মেরামত করা হচ্ছে। এই মেরামতকৃত পাড়ে চারা উৎপাদন করে রাখা হবে বলে জানিয়েছেন ওই সূত্র। 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পুকুরটির বয়স অন্তত ১০০ বছর। পুকুরের সবদিকের পাড় ভাঙা ছিল। পুকুরের সবদিকের পাড় মেরামত না করে ১৫–২০ দিন আগে পুকুরটির অর্ধেক অংশ ভরাট করা হয়েছে। খুব দ্রুতগতিতে ভরাটের কাজটি হয়েছে। 

হর্টিকালচার সেন্টারের ভেতর গিয়ে দেখা যায়, পুকুরটির এক পাশে মাটি ফেলে ভরাট করা হয়েছে। তবে আজ শনিবার ভরাটের কাজ হচ্ছিল না। 

পুকুরের কতটুকু অংশ ভরাট করা হবে, জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, ‘পুকুরের পানিতে যে খুঁটি দেখছেন ওইটুকু পর্যন্ত ভরাট হবে।’ সরেজমিন পুকুরটির যে অংশে খুঁটি দেখা গেছে সে হিসাবে পুকুরটির বেশির ভাগ অংশই ভরাট করা হবে। 

স্থানীয় পরিবেশকর্মীরা বলেন, বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী, অপরিহার্য জাতীয় স্বার্থে জলাশয় ভরাটের বাধানিষেধ শিথিল করা যেতে পারে। কিন্তু কেন ও কি এমন কারণ যে একটি প্রাচীন পুকুর ভরাট করতে হবে। স্থান বা নকশা পরিবর্তন করে পুকুরটি রক্ষা করা সম্ভব বলে মনে করেন তাঁরা। 

হর্টিকালচার সেন্টারের শতবর্ষী পুকুর পাড়ে মাটি ভরাট করা হয়েছেবাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ (সংশোধিত, ২০১০) এ বলা হয়েছে, ‘জলাধার হিসাবে চিহ্নিত জায়গা ভরাট বা অন্য কোনোভাবে শ্রেণি পরিবর্তন করা যাইবে না, তবে শর্ত থাকে যে, অপরিহার্য জাতীয় স্বার্থে অধিদপ্তরের ছাড়পত্র গ্রহণক্রমে জলাধার সম্পর্কিত বাধা-নিষেধ শিথিল করা যাইতে পারে।’ 

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম জুয়েল বলেন, ‘সরকারি লোকই যদি সরকারি পুকুর ভরাট করে ফেলে তাহলে সাধারণ মানুষ কই যাবে? আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। অচিরেই আমরা এ বিষয়ে প্রতিকার চাই।’ 

হর্টিকালচার সেন্টারের উদ্যানতত্ত্ববিদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, পুকুর ভরাট করা হচ্ছে না। লিখিত রেকর্ড অনুযায়ী পুকুরটির আয়তন ৮৬ শতাংশ। পাড় ভেঙে অনেক দূর পর্যন্ত চলে গেছে। পাড় মেরামত ও মজবুত করার জন্য মাটি ফেলা হয়েছে। পাড় মেরামত ও মজবুত করার পরও ৯০ শতাংশ জায়গায় পুকুরটির আয়তন আছে। 

পরিবেশ অধিদপ্তর কিশোরগঞ্জ জেলার সহকারী পরিচালক মো. আবদুল্লাহ আল মতিন বলেন, বিষয়টি জানার পর হর্টিকালচার সেন্টারকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। 

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, পুকুরের যে আয়তন আছে সেই আয়তন ঠিক রেখে পাড় মেরামত করতে পারবে। এ ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রশিক্ষণ ছাড়াই মাঠে ৪২৬ সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা

গ্রাহকের ২,৬৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে না ৪৬ বিমা কোম্পানি

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত