Ajker Patrika

বামপন্থী ছাত্রসংগঠন সমূহের সমাবেশে ‘লাঠিপেটা’ করে পুলিশের মামলা 

ঢাবি প্রতিনিধি
বামপন্থী ছাত্রসংগঠন সমূহের সমাবেশে ‘লাঠিপেটা’ করে পুলিশের মামলা 

জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ডাকা সমাবেশে ‘লাঠিপেটা’র পর বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ২১ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত ২০-৩০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। মামলার বাদী শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক পলাশ সাহা। 

আজ সোমবার ‘বেআইনিভাবে দাঙ্গার উদ্দেশ্যে পূর্বপরিকল্পিতভাবে লাঠিসোঁটা, ইট-পাটকেলসহ পুলিশের কাজে বাধা দেওয়াসহ হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমণ করে গুরুতর রক্তাক্ত ও হাড়ভাঙা জখমের’ অভিযোগ এনে শাহবাগ থানায় এ মামলা দায়ের করা হয়। 

গতকাল রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে ‘প্রগতিশীল ছাত্রসংগঠনসমূহ’ ব্যানারে বাম ছাত্রসংগঠনগুলো বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেয়। সমাবেশের শেষ পর্যায়ে লাঠিপেটা করে পুলিশ। ছাত্রসংগঠনগুলোর অভিযোগ, তাদের বিক্ষোভ সমাবেশে হামলা চালায় পুলিশ। তবে পুলিশের দাবি, বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলোই আগ বাড়িয়ে হামলা শুরু করে। 

শাহবাগ থানা সূত্রে জানা গেছে, ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের সহসভাপতি অনিক রায়কে প্রধান আসামি করে এ মামলা করা হয়েছে। ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মশিউর রহমান খান রিচার্ড, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি সাদেকুল ইসলাম সোহেল, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সভাপতি আরিফ মঈনুদ্দীন, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি সুনয়ন চাকমা, বিপ্লবী ছাত্র-যুব আন্দোলনের সভাপতি তৌফিকা প্রিয়া, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জয়দীপ ভট্টাচার্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি সালমান সিদ্দিকী, ছাত্র ইউনিয়নের সদস্য শান্তা ও ছাত্র ফেডারেশনের জুবা মনি। সাংগঠনিক পরিচয় উল্লেখ না করে সামি আবদুল্লাহ, জাবির আহম্মেদ জুবেল, জাওয়াদ, বাঁধন, আদনান, শাহাদাত, ইভান, অনিক, দিয়া মল্লিক, তানজিদ ও তামজিদের নামও মামলায় উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া, এজাহারে আরও ২০-৩০ জনকে অজ্ঞাত হিসেবে উল্লেখ করা হয়। 

শাহবাগ থানা ও এজাহার সূত্রে আরও জানা গেছে, শাহবাগ মোড়ে ডিএমপির রমনা অঞ্চলের অতিরিক্ত উপকমিশনার হারুন অর রশীদ, সহকারী কমিশনার বায়েজীদুর রহমান, সহকারী কমিশনার (পেট্রল) বাহা উদ্দীন ভূঞা, শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুত হাওলাদার, পরিদর্শক (নিরস্ত্র) গোলাম মোস্তফা পুলিশ বাহিনীকে নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালন করছিলেন। তখন প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনের নেতারা অন্যায়ভাবে, বিনা অনুমতিতে শাহবাগ অবরোধ করতে চাইলে পুলিশ বাধা দিলে তাঁরা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। বিক্ষোভকারীদের পুলিশ থামানোর চেষ্টা করে। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা লাঠিসোঁটা ও ইটের টুকরা দিয়ে পুলিশকে হত্যার উদ্দেশ্যে পুলিশের ওপর আঘাত করে। আসামিদের লাঠির আঘাতে রমনা অঞ্চলের সহকারী কমিশনার বায়েজীদুর রহমান, সহকারী কমিশনার (পেট্রল) বাহা উদ্দীন ভূঞা আহত হন। 

এ সময়, বিক্ষোভকারীদের লাঠির আঘাতে উপপরিদর্শক রাশেদুল আলম আহত হন। পরে পুলিশ নিজেদের জানমাল ও জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে লাঠিপেটা করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। ঘটনাস্থল থেকে বিক্ষোভকারীদের ব্যবহৃত তিনটি বিভিন্ন আকারের বাঁশের লাঠি, সাতটি বিভিন্ন আকারের কাঠের লাঠি ও ১২টি ইটের টুকরা জব্দ করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয় এজাহারে। 

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুত হাওলাদার আজকের পত্রিকা কে বলেন, ‘পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় আজ মামলা হয়েছে। হামলায় যারা সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে।’ 

মামলার বিষয়ে ছাত্র ইউনিয়ন একাংশের সহসভাপতি অনিক রায় আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মামলার বিষয় নতুন নয়। হামলা-মামলা দিয়ে আন্দোলন দমিয়ে রাখা এই সরকারের পুরোনো সংস্কৃতি। গতকাল শাহবাগে কী হয়েছে সারা দেশবাসী জানে। ভিডিও আছে, ফুটেজ আছে। হামলা-মামলা দিয়ে আমাদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনকে দমিয়ে রাখা যাবে না।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত