Ajker Patrika

কাপাসিয়ায় মাদকাসক্ত যুবককে বড় ভাইয়ের মারধর, পরে ঘরে মিলল লাশ

কাপাসিয়া (গাজীপুর) প্রতিনিধি 
আপডেট : ১৮ জুলাই ২০২৫, ২১: ০১
কাপাসিয়া থানা। ছবি: সংগৃহীত
কাপাসিয়া থানা। ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুরের কাপাসিয়ায় বড় ভাই বনি আমীনের পিটুনিতে মাদকাসক্ত ছোট ভাই নূরুল আমীন (১৯) প্রাণ হারিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এই দুই ভাই উপজেলার বারিষাব ইউনিয়নের সেলদিয়া গ্রামের মো. শাহজাহানের ছেলে। আজ শুক্রবার দুপুরে ঘর থেকে নূরুলের লাশ উদ্ধার করা হয়।

বারিষাব ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. বাবুল হোসেন জানান, সেলদিয়া গ্রামের হতদরিদ্র শাহজাহানের (৬০) ভিটেমাটি ছাড়া আর তেমন কোনো জমিজমা নেই। তিনি ও তাঁর স্ত্রী আশপাশের কয়েক গ্রামে মাটি কেটে জীবিকা নির্বাহ করেন। কয়েক বছর আগে বড় ছেলে বনি আমীনকে সৌদি আরবে শ্রমিক ভিসায় পাঠিয়েছিলেন তিনি। ছেলেকে সৌদি আরব পাঠানোর জন্য অনেক কষ্টে টাকা জোগাড় করেছিলেন তিনি। দুই মাস আগে বনি আমীন ছুটিতে দেশে আসেন। অন্যদিকে তাঁর ছোট ছেলে নূরুল আমীন কয়েক বছর ধরে মাদকাসক্ত। মাদকের টাকা জোগাড় করতে ঘরের জিনিসপত্র, এমনকি কাপড়চোপড় বিক্রি করে দিতেন তিনি। লোকজনের সঙ্গেও তিনি জঘন্য আচরণ করতেন। বিশেষ করে, মাথায় নেশার ভূত চাপলে বাবার কাছে টাকা না পেলে সামনে যা পেতেন, তা ভাঙচুর করতেন। নেশার টাকার জন্য মা-বাবাকে মারধরও করতেন।

শাহজাহান জানান, নেশা ছাড়ানোর জন্য ছোট ছেলে নূরুলকে দুই দফায় প্রায় তিন মাস মাদকাসক্ত নিরাময়কেন্দ্রে রেখেছিলেন। এতে তাঁর প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। পুরো খরচটাই তিনি সৌদি আরবে থাকা বড় ছেলের পাঠানো টাকা থেকে মিটিয়েছেন। কিন্তু বাড়ি ফিরে নূরুল আবার নেশা করতে শুরু করেন। আজ সকালেও নূরুল তাঁর কাছে মাদক কিনতে দুই হাজার টাকা দাবি করেন। তিনি তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এ সময় নূরুল ভাঙচুর শুরু করলে শাহজাহান ভয়ে বাড়ি থেকে চলে যান। পরে তিনি তাঁর মায়ের কাছে টাকা দাবি করে গালিগালাজ শুরু করলে বড় ভাই এসে তাঁকে বেধড়ক পিটুনি দিয়ে ঘরে আটকে রাখেন। দুপুরের দিকে ঘরে গিয়ে নূরুলকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। এ ঘটনার পর পালিয়েছেন বড় ভাই বনি আমীন।

কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল জানান, পারিবারিক কলহের জেরে বড় ভাইয়ের আঘাতে ছোট ভাই নিহত হয়েছেন। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত