Ajker Patrika

রোববার শিক্ষা ভবন অভিমুখে থালা-বাটি নিয়ে শিক্ষকদের ‘ভুখা মিছিল’

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৯: ৩০
আজ তিন দফা দাবিতে হাইকোর্টের সামনে কদম ফোয়ারাসংলগ্ন সড়কে শিক্ষকদের কালো পতাকা মিছিল। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ তিন দফা দাবিতে হাইকোর্টের সামনে কদম ফোয়ারাসংলগ্ন সড়কে শিক্ষকদের কালো পতাকা মিছিল। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাড়িভাড়া ভাতা বৃদ্ধিসহ তিন দফা দাবিতে নতুন কর্মসূচি হিসেবে আগামীকাল রোববার শিক্ষা ভবন অভিমুখে ভুখা মিছিল করবেন আন্দোলনরত এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা। দাবি আদায়ে টানা সাত দিন ধরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থানরত করছেন এই শিক্ষকেরা। আজ শনিবার এই আন্দোলনের অংশ হিসেবে তাঁরা কালো পতাকা মিছিল করেন।

আজ সন্ধ্যায় এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্যসচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বলেন, ‘মৃত্যুর শপথ নিয়ে শিক্ষকেরা শহীদ মিনারে এসেছেন। দাবি আদায়ে কাল রোববার দুপুর ১২টায় শিক্ষা ভবন অভিমুখে থালা-বাটি নিয়ে ভুখা মিছিল করবেন শিক্ষকেরা।’

এর আগে আজ দুপুর ১২টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের কালো পতাকা মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি দোয়েল চত্বর হয়ে কদম ফোয়ারা চত্বরে আসে। সেখানে তাঁরা বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। এতে হাজারো শিক্ষক-কর্মচারী অংশ নেন। এ সময় তাঁরা ‘সি আর আবরার, আর নয় দরকার’, ‘রাজপথে কে রাজপথে কে, শিক্ষক শিক্ষক, ছাত্র-শিক্ষক-জনতা, গড়ে তোলো একতা’, ‘সারা বাংলার শিক্ষক, এক হও লড়াই করো’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।

কদম ফোয়ারায় বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষক-কর্মচারীদের আন্দোলনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান। তিনি বলেন, ‘শিক্ষকেরা সামান্য অধিকার আদায়ে প্রচণ্ড গরমে রাস্তায় আন্দোলন করছেন। এটা আমাদের জন্য লজ্জাজনক।’

গণঅধিকার পরিষদের অবস্থান তুলে ধরে রাশেদ খান বলেন, তাঁরা মনে করেন, আমলাদের চেয়ে শিক্ষকদের বেতন বেশি হওয়া উচিত।

বিক্ষোভ সমাবেশে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্যসচিব দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বলেন, ‘সরকারকে বেকায়দায় ফেলার কোনো চিন্তা আমাদের নেই। আমাদের কর্মসূচির ধরন দেখে আপনারা সেটা বুঝতে পারছেন।’

প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, বিগত সময়ে অনেক বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অর্থের বিনিময়ে এমপিওভুক্তি নিয়েছে। এ প্রসঙ্গে দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বলেন, ‘যদি তারা টাকার মাধ্যমে এমপিওভুক্তি নেয়, তাহলে কোন কোন আমলা টাকা খেয়ে এই এমপিওভুক্তি দিয়েছেন, তাঁদের অবিলম্বে বের করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।’

১২ অক্টোবর থেকে শিক্ষক-কর্মচারীরা জাতীয় প্রেসক্লাব ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান, সচিবালয় অভিমুখে লংমার্চ ও শাহবাগ মোড় অবরোধের মতো কর্মসূচি পালন করছেন।

গত শুক্রবার বেলা সোয়া ২টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তাঁরা অনশন কর্মসূচি শুরু করেন। এতে অংশ নিয়েছেন শতাধিক শিক্ষক-কর্মচারী। এর মধ্যে অনশনরত অন্তত ১০ জন শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়ার খবর পাওয়া গেছে।

এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা তাঁদের মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া ভাতা, চিকিৎসা ভাতা ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার ৫০০ টাকা করা এবং উৎসব ভাতা মূল বেতনের ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭৫ শতাংশ করার দাবি তুলেছেন। ১২ অক্টোবর থেকে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের ব্যানারে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। সেদিন সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু হলেও দুপুরে পুলিশের অনুরোধে তাঁরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে চলে যান। ওই দিন দুপুরে শিক্ষকদের একটি অংশের ওপর পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে, জলকামান ও লাঠিপেটা করে তাঁদের সরিয়ে দেয়। পরবর্তী সময় শিক্ষকদের ওপর ‘পুলিশের হামলার’ প্রতিবাদে গত সোমবার থেকে সব বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লাগাতার কর্মবিরতি ঘোষণা করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত