Ajker Patrika

স্বাস্থ্যকেন্দ্রের করুণ হালে ভোগান্তি মাতুয়াইলবাসীর

শ্যামপুর-কদমতলী (ঢাকা) প্রতিনিধি 
আপডেট : ১০ জুলাই ২০২৫, ০৭: ২২
দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ ও পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে রাজধানীর ডেমরার মাতুয়াইল ইউনিয়ন স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্র। এতে স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন স্থানীয় লোকজন। আজকের পত্রিকা
দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ ও পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে রাজধানীর ডেমরার মাতুয়াইল ইউনিয়ন স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্র। এতে স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন স্থানীয় লোকজন। আজকের পত্রিকা

রাজধানীর ডেমরার মাতুয়াইল ইউনিয়ন স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্রের মূল কার্যক্রম অস্থায়ীভাবে চলছে ভবনের বাইরে রাস্তার পাশে বিভিন্ন দোকানে। পূর্ব ডগাইর এলাকায় অবস্থিত স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির অবকাঠামো দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ এবং পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। এতে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা নিম্ন আয়ের অসহায় মানুষের পোহাতে হচ্ছে চরম ভোগান্তি।

স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রটিতে গিয়ে দেখা যায়, তিনটি একতলা ভবনে বহু বছরের অযত্ন-অবহেলার চিহ্ন। ভবনের সামনে খালি জায়গা কার্যত জঙ্গলে পরিণত হয়েছে। সেখানে ফেলা হচ্ছে আশপাশের বাসাবাড়ির ময়লা-আবর্জনা। সাইনবোর্ডটি আংশিকভাবে ঢাকা পড়েছে ভবনের পাশের কাঠের দোকানের মালপত্রে। চারপাশের রাস্তা উঁচু হয়ে যাওয়ায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি নিচু হয়ে গেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, বর্ষায় এখানে জলাবদ্ধতা হয়।

স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রটিতে একজন উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল কর্মকর্তা, দুজন পরিবারকল্যাণ পরিদর্শিকা, একজন আয়া, একজন ফার্মাসিস্ট, একজন অফিস সহায়ক, একজন পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শকসহ সাতজন কর্মী কাজ করেন। মাঠপর্যায়ে কাজের জন্য আরও ১৬ জন পরিবারকল্যাণ সহকারী রয়েছেন। স্বাস্থ্য কর্মীরা জন্মনিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম, অন্তঃসত্ত্বাদের ফলোআপ, শিশুদের বিনা মূল্যে ওষুধ বিতরণ, প্রসবপূর্ব ও প্রসবোত্তর সেবা দেন। এ ছাড়া এমআর সেবা, যৌন ও প্রজননতন্ত্রবিষয়ক চিকিৎসা, ইপিআই টিকাদান এবং ভিটামিন ক্যাপসুলও বিতরণ করা হয়। এসব সেবা এখন চলছে দোকানঘরের অস্থায়ী স্থানে। কয়েক বছর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয়ে সেবাদান চললেও গত বছর সেখান থেকে সরতে বাধ্য হয়ে রাস্তার পাশের একটি দোকানে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সেবাগ্রহীতারা। বিশেষ করে নারী সেবাগ্রহণকারীরা চরম অস্বস্তিতে পড়ছেন। রাস্তার পাশে প্রায় জনসম্মুখে একান্ত ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যসেবা নিতে হচ্ছে তাঁদের।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি ১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ডগাইর এলাকার বাসিন্দা মো. রোস্তম আলী অসহায় মানুষের চিকিৎসাসেবার জন্য ৪৮ শতাংশ জমি দান করেছিলেন। দলিলের শর্ত অনুযায়ী অন্য কোনো কাজে জমি ব্যবহার হলে তিনি তা ফেরত নিতে পারবেন। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, জমির একাংশ দখল করে ডিএসসিসির তৎকালীন মেয়র সেখানে ময়লার ডাম্পিং স্টেশন স্থাপন করেছেন।

এ বিষয়ে তেজগাঁও থানা সার্কেলের পরিবার পরিকল্পনা মেডিকেল কর্মকর্তা ছেরাজুন নাহার বলেন, ‘দেশজুড়ে ৫৯২টি জরাজীর্ণ স্বাস্থ্যকেন্দ্র পুনর্নির্মাণের প্রস্তাব ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। এর কাজ দ্রুত শুরু হবে বলে আমরা আশাবাদী। মাতুয়াইল কেন্দ্রটির নতুন ভবন নির্মাণকেও অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।’

মাতুয়াইল স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নতুন ভবন নির্মাণের বিষয়ে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) মীর সাজেদুর রহমানের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত