Ajker Patrika

আর্থিকভাবে ও ব্যক্তিজীবনে হতাশ ছিলেন সোহানা 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৪ জুলাই ২০২২, ১৮: ৩২
আর্থিকভাবে ও ব্যক্তিজীবনে হতাশ ছিলেন সোহানা 

বছর দুই আগে চাকরি হারিয়ে আর্থিক টানাপোড়েনে ভুগছিলেন সাংবাদিক সোহানা পারভীন। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে টুকটাক কাজের চেষ্টা করলেও কাটছিল না অর্থের টান। এরপর শুরু করেন অনলাইনে এগ্রো ব্যবসা। তাতেও মিলছিল না আশানুরূপ সাড়া। পাশাপাশি বিবাহিত জীবনেও খেয়েছেন বড় ধাক্কা। বিয়ের মাত্র পাঁচ মাসের মাথায় ভেঙে যায় নতুন সংসার। সব মিলিয়ে জীবনের বিষাদময় অধ্যায় পার করছিলেন এই নারী সাংবাদিক। 

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁও শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গের সমানে স্বজনেরা এ কথা জানান। হতাশার কারণেই গত মঙ্গলবার (১২ জুলাই) কোনো এক সময় নিজের বেডরুমে আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করছে পুলিশ ও তাঁর স্বজনেরা। 

সোহানার বড় চাচা গাজী রেজাউল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সোহানা ছোটবেলা থেকেই চুপচাপ স্বভাবের। সে মেধাবী ছাত্রী ছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতা বিভাগে পড়াশোনা করেছে। সোহানা ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে হতাশায় ছিল। বিয়ের পাঁচ মাসের মাথায় ডিভোর্স হয়ে যায়। চাকরি না থাকার কারণে আর্থিক টানাপোড়েন ছিল। সবকিছু মিলিয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিল।’ 

রেজাউল হক আরও জানান, ‘সোহানারা দুই ভাইবোন। ছোট ভাই মোহাইমিনুল ইসলাম একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে। বাবা অবসরপ্রাপ্ত সাবেক কাস্টমস কর্মকর্তা। মা হৃদ্‌রোগে ভুগছেন। বাবা-মা থাকতেন যশোর সদরের বাড়িতে। ছোট ভাইকে নিয়ে ঢাকায় থাকত সোহানা। যদিও ছোট ভাই মোহাইমিনুল সহপাঠীদের সঙ্গে অন্য বাসায় থাকত। মাঝে মাঝে এসে বোনের সঙ্গে দেখা করে যেত। পরিবারের বড় সন্তান হিসেবে আর্থিক সহযোগিতার দায়িত্ব ছিল তার ওপর, কিন্তু সেভাবে কিছু করতে পারছিল না। এ কারণেই বেশি হতাশ ছিল সে। এ কারণে বাড়িতে বেশি একটা যোগাযোগ করত না।’ 

গত ১২ তারিখ থেকে যোগাযোগবিচ্ছিন্ন ছিলেন জানিয়ে নিহতের ফুপাতো ভাই নাজমুল হাসান শাওন বলেন, ‘সোহানার বান্ধবীদের মাধ্যমে বুধবার বিকেলে খবর পেয়ে এসে দেখি বাসার দরজা লাগানো। কেউ দরজা খুলছে না। বাসার কেয়ারটেকারকে নিয়ে বাসার প্রধান দরজা ভেঙে দেখি এই অবস্থা। পরে আমি পুলিশে খবর দিলে তারা এসে মরদেহ নিচে নামায়। প্রাথমিকভাবে পুলিশ বলছে, এটা আত্মহত্যা। তবে বিস্তারিত ময়নাতদন্ত শেষে জানা যাবে।’ 

শাওন আরও বলেন, ‘হাজারীবাগের শেরেবাংলা সড়কের একটি বাসায় একাই থাকত সোহানা। ছোট ভাই বন্ধুদের সঙ্গে অন্য বাসায় থাকত। গত ১২ তারিখ থেকে কেউ চেষ্টা করেও তাকে পাচ্ছিল না। পরে তার বান্ধবী বাসায় এসে এই অবস্থা দেখতে পায়।’ 

শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন ও টক্সিকোলজি বিভাগের প্রভাষক ডা. কে এম মঈনুদ্দিন নিহত সোহানার ময়নাতদন্ত করেছেন। ময়নাতদন্ত শেষে তিনি জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে নিহতের রক্তসহ অন্যান্য নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। পরীক্ষার রিপোর্ট এলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। 

এ দিকে সাংবাদিক সোহানার মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় হাজারীবাগ থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেছেন তাঁর ছোট ভাই। বিষয়টি আজকের পত্রিকা’কে নিশ্চিত করেছেন হাজারীবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোক্তারুজ্জামান। 

প্রসঙ্গত, গতকাল বুধবার বিকেলে রাজধানীর হাজারীবাগ থানার শেরেবাংলা সড়কের বাসা থেকে সাংবাদিক সোহানার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সবশেষ একটি অনলাইন পত্রিকায় কাজ করতেন। ২০২০ সালে তিনি চাকরি ছেড়েছেন বলে জানা গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদল পুনর্বিন্যাস আনছে ভারত, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলে

‘বাবার অসুস্থতায় পরামর্শ নিতে’ চিকিৎসকের বাসায় নারী, দুজনকে পুলিশে দিল স্থানীয়রা

১৪৬ যাত্রী নিয়ে ব্যাংককের পথে এক ঘণ্টা উড়ে মিয়ানমার থেকে ফিরে এল বিমানের সেই ফ্লাইট

৬ বছর পর চীন সফরে যাচ্ছেন মোদি, আসবেন পুতিনও

রাশিয়ার তেল চীনও কেনে, তবে ট্রাম্পের শুল্ক শুধু ভারতের ওপর কেন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত