Ajker Patrika

রোলেক্স ঘড়ি ব্যবসার নামে ৪৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা

শ্যামপুর-কদমতলী (ঢাকা) প্রতিনিধি 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর ডেমরায় রোলেক্স ব্র্যান্ডের হাতঘড়ির ব্যবসায় অংশীদার করার প্রলোভন দেখিয়ে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ৪৫ লাখ টাকা প্রতারণামূলক আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটে ডেমরার বাঁশেরপুল ইস্টার্ন হাউজিং সোসাইটি এলাকার রয়েল গার্ডেনের ৪/এ ফ্ল্যাটে। আসামিরা সবাই ওই ফ্ল্যাটের বাসিন্দা।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মামুন (৪২) গতকাল শুক্রবার রাতে ডেমরা থানায় অভিযুক্ত মানিক (৬৫), দেলোয়ার (৬০) ও আজাদসহ (৫৬) অজ্ঞাত কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। তবে এ ঘটনায় কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি।

জানা যায়, ১০ নভেম্বর জমি বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে কাগজপত্র নিয়ে মামুন ডেমরার ইস্টার্ন হাউজিং এলাকায় আগে থেকে কথা বলা মানিকের সঙ্গে দেখা করতে যান। এ সময় মানিকসহ অভিযুক্ত ব্যক্তিরা তাঁকে আটটি রোলেক্স ঘড়ি দেখিয়ে শেয়ারহোল্ডার করার প্রলোভন দেন এবং ঘড়ির চালান আনতে টাকা দাবি করেন। তাদের কথায় বিশ্বাস করে মামুন ১১ নভেম্বর রয়েল গার্ডেনের একটি ফ্ল্যাটে ১০ লাখ এবং ১৯ নভেম্বর একই স্থানে আরও ৩৫ লাখ টাকা দেন। তখন তিন আসামির পাশাপাশি এক বিদেশি ব্যক্তি ও অজ্ঞাত এক নারীও উপস্থিত ছিলেন। টাকা নেওয়ার পর আসামিরা টাকা গোনার কথা বলে পাশের রুমে গিয়ে কৌশলে সটকে পড়েন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ডেমরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহমুদুর রহমান বলেন, আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঢাকায় ভূমিকম্পের গভীরতা ১০ কিলোমিটার কেন

মহাখালীতে চলন্ত বাসে দেওয়া হয় আগুন, হুড়োহুড়ি করে নেমে প্রাণে বাঁচলেন যাত্রীরা

ভূমিকম্প আতঙ্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা, হল ছাড়ার নির্দেশ

বিমানবন্দরে দুই কোটি টাকার স্বর্ণসহ হজের মুয়াল্লিম গ্রেপ্তার

ট্রাম্প-মামদানির বৈঠকের পর ভারতের জন্য যে বার্তা দিলেন শশী থারুর

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ধানের শীষের বাইরে কেউ নির্বাচন করলে কোনো কেন্দ্রে এজেন্ট দিতে পারবে না: বিএনপি নেতা স্বপন

পাবনা ও চাটমোহর প্রতিনিধি 
আপডেট : ২৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৮: ২৮
বক্তব্য দেন ভাঙ্গুড়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নুর মোজাহিদ স্বপন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বক্তব্য দেন ভাঙ্গুড়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নুর মোজাহিদ স্বপন। ছবি: আজকের পত্রিকা

‘ধানের শীষের বাইরে যদি কেউ নির্বাচন করার চিন্তা করে, তাহলে কোনো কেন্দ্রে তারা এজেন্ট দিতে পারবে না’ বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নূর-মুজাহিদ স্বপন। শনিবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় পাবনার চাটমোহরে বিএনপি প্রার্থীর পক্ষে গণমিছিল শেষে বালুচর খেলার মাঠে সমাবেশ থেকে তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন।

বিএনপি নেতা স্বপনের এমন বক্তব্যের পর চাটমোহর উপজেলাসহ পাবনা-৩ এলাকার (চাটমোহর-ভাঙ্গুড়া-ফরিদপুর) বিএনপির নেতা-কর্মীসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। মুহূর্তে তাঁর এই বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।

প্রসঙ্গত, পাবনা-৩ আসনে বিএনপির মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সভাপতি ও সুজানগরের সন্তান কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিনকে। তাঁকে ‘বহিরাগত’ উল্লেখ করে স্থানীয় প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন মনোনয়নবঞ্ছিত বিএনপির একাংশের নেতা-কর্মীরা। তুহিনের মনোনয়ন বাতিল করে স্থানীয় প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া না হলে সাবেক এমপি কে এম আনোয়ারুল ইসলাম বা সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হাসাদুল ইসলাম হীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এ নিয়ে চলছে উত্তেজনা। চলছে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি।

এর অংশ হিসেবে শনিবার চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুর উপজেলার নেতা-কর্মীদের নিয়ে গণমিছিলের আয়োজন করেন কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন। গণমিছিল শেষে চাটমোহর বালুচর খেলার মাঠে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বিএনপির মনোনীত প্রার্থী কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিনসহ অন্য নেতারা বক্তব্য দেন।

সেখানে বক্তব্য দিতে গিয়ে ভাঙ্গুড়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নূর-মুজাহিদ স্বপন ধানের শীষের বাইরে স্বতন্ত্র বা বিদ্রোহী প্রার্থীদের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘কথা একটাই। আমরা ধানের শীষের বাইরের কেউ না। যদি ধানের শীষের বাইরে কেউ যায়, আমি ভাঙ্গুড়াবাসীর পক্ষ থেকে কথা দিয়ে যাচ্ছি, ধানের শীষের বাইরে যদি কেউ নির্বাচন করার চিন্তা করে, কোনো কেন্দ্রে তারা কেউ এজেন্ট দিতে পারবে না। ধানের শীষের বাইরে কোনো লোক থাকবে না।’

এ বিষয়ে ভাঙ্গুড়া উপজেলা বিএনপির আহবায়ক নূর-মুজাহিদ স্বপন বলেন, ‘আমি বোঝাতে চেয়েছি বিএনপির সিদ্ধান্তের বাইরে যদি কেউ নির্বাচন করে তাদের উদ্দেশে কথাটি বলা হয়েছে। আমি সব সময় চেষ্টা করব যাতে বিএনপির সবাই একসঙ্গে থাকে।’

পাবনা জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মাসুদ খন্দকার বলেন, ‘সে (নূর-মুজাহিদ স্বপন) এত কাঁচা রাজনীতিবিদ নয়। আপনারা (সাংবাদিকেরা) তার কথার ভুল ব্যাখ্যা করছেন। সে অন্য কিছু বোঝাতে চেয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঢাকায় ভূমিকম্পের গভীরতা ১০ কিলোমিটার কেন

মহাখালীতে চলন্ত বাসে দেওয়া হয় আগুন, হুড়োহুড়ি করে নেমে প্রাণে বাঁচলেন যাত্রীরা

ভূমিকম্প আতঙ্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা, হল ছাড়ার নির্দেশ

বিমানবন্দরে দুই কোটি টাকার স্বর্ণসহ হজের মুয়াল্লিম গ্রেপ্তার

ট্রাম্প-মামদানির বৈঠকের পর ভারতের জন্য যে বার্তা দিলেন শশী থারুর

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: ৬০ মিটার সেতুর কারণে ১০ কিলোমিটার পাড়ি

  • এক বছর ধরে বন্ধ রয়েছে নির্মাণাধীন সেতুর কাজ
  • নির্ধারিত সময় শেষ, নতুন করে বাড়ানো সময়েও কাজ শেষ হওয়া নিয়ে শঙ্কা
আব্দুল বাশির, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
আপডেট : ২৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৮: ২১
সেতুর মূল অবকাঠামো নির্মাণের পর দীর্ঘদিন বন্ধ রয়েছে কাজ। সম্প্রতি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নরেন্দ্রপুর কাচরার খালে। ছবি: আজকের পত্রিকা
সেতুর মূল অবকাঠামো নির্মাণের পর দীর্ঘদিন বন্ধ রয়েছে কাজ। সম্প্রতি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নরেন্দ্রপুর কাচরার খালে। ছবি: আজকের পত্রিকা

সাড়ে ৭ কোটি টাকার প্রকল্প। নির্ধারিত সময় পার হলেও সেতু নির্মাণকাজে অগ্রগতি নেই এক ইঞ্চিও। ফলে নতুন করে বাড়ানো সময়েও কাজ শেষ হওয়া নিয়ে দেখা দিয়েছে শঙ্কা। জমি অধিগ্রহণ জটিলতা আর এলজিইডির ঢিলেমির কারণে ভুক্তভোগী স্থানীয় লোকজন। মাত্র ৬০ সেতুর কারণে তিনটি ইউনিয়নের হাজারো মানুষকে প্রতিদিন ঘুরতে হচ্ছে বাড়তি ১০ কিলোমিটার সড়ক।

স্থানীয়রা জানিয়েছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর উপজেলার শাহজাহানপুর ইউনিয়নের নরেন্দ্রপুর কাচরার খালের ওপর প্রায় ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন সেতুর কাজ এক বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। কাজ শেষ না করেই ঠিকাদারের উধাও হয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, সদর উপজেলার শাহজাহানপুর, আলাতুলী ও চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়নের জনগণের যাতায়াত সহজ করতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) কাচরার খালের ওপর ৬০ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতু নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেয়। তবে সেতুর মূল অবকাঠামো নির্মাণের পর দীর্ঘদিন ধরে থমকে আছে বাকি কাজ।

এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০২৩ সালে ৭ সেপ্টেম্বর। আর কাজ শেষের মেয়াদ ছিল ২০২৫ সালের ৬ মার্চ। কাজের ব্যয় ধরা হয় ৬ কোটি ৯০ লাখ ৯২ হাজার ৩৪৩ টাকা। পরে সময় বাড়িয়ে নতুন করে ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদ নির্ধারণ করা হলেও কাজ শুরুর তেমন কোনো অগ্রগতি নেই।

স্থানীয় যুবক আবু সালেহ বলেন, সামান্য বৃষ্টি আর জলাবদ্ধতার সময় সেতুর নিচ দিয়েও চলাচল করা যায় না। ফলে প্রতিনিয়ত ভোগান্তি বাড়ছে। এলজিইডি ও স্থানীয় প্রশাসনকে বারবার অবহিত করেও কাজ শুরুর কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি।

স্থানীয় বাসিন্দা রহমতুল্লাহ বলেন, ‘এক বছর ধরে সেতুটা দাঁড়িয়ে আছে, কিন্তু একটুও কাজে লাগছে না। স্কুল-কলেজে যাওয়া থেকে শুরু করে রোগী নিয়ে হাসপাতালে যেতে হলেও আমাদের ঘুরতে হয় অনেক দূরের পথ।’ পল্লিচিকিৎসক আসরাফুল ইসলাম বলেন, ৩০০ মিটার সড়কের কারণে এখন অতিরিক্ত ১০ কিলোমিটার সড়ক পাড়ি দিতে হচ্ছে।

জানতে চাইলে জমি অধিগ্রহণের টাকা না পাওয়ায় স্থানীয়দের বাধার মুখে কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছে দাবি ঠিকাদার মো. সেলিমের। তিনি বলেন, ‘জমি অধিগ্রহণ-সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান না হওয়ায় কাজ এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়নি। বিষয়টি সমাধান হলেই আমরা কাজ শুরু করব।’

এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মো. আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘কিছু জটিলতা থাকায় কাজ বন্ধ ছিল। খুব শিগগির পুনরায় কাজ শুরু করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করার চেষ্টা করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঢাকায় ভূমিকম্পের গভীরতা ১০ কিলোমিটার কেন

মহাখালীতে চলন্ত বাসে দেওয়া হয় আগুন, হুড়োহুড়ি করে নেমে প্রাণে বাঁচলেন যাত্রীরা

ভূমিকম্প আতঙ্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা, হল ছাড়ার নির্দেশ

বিমানবন্দরে দুই কোটি টাকার স্বর্ণসহ হজের মুয়াল্লিম গ্রেপ্তার

ট্রাম্প-মামদানির বৈঠকের পর ভারতের জন্য যে বার্তা দিলেন শশী থারুর

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অতি ঝুঁকিপূর্ণ ৪৪ ভবন: ঝুঁকিতে হাজারো শিক্ষার্থীর জীবন

  • ৭ দিনের মধ্যে ভবনগুলো সিলগালা বা ভেঙে ফেলার নির্দেশনা ছিল মাউশির
  • দেড় বছরেও নির্দেশনা বাস্তবায়ন করেনি সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
  • ভূম্পিকম্পের উচ্চ ঝুঁকি থাকায় বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা
  • বাস্তবায়ন না হওয়ার কারণ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে: শিক্ষা মন্ত্রণালয়
রাহুল শর্মা, ঢাকা 
আপডেট : ২৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৮: ৫৫
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের জেলার সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৪৪টি ‘অতি ঝুঁকিপূর্ণ’ ভবন ৭ দিনের মধ্যে খালি করে সিলগালা কিংবা ভেঙে ফেলতে দেড় বছর আগে নির্দেশ দিয়েছিল মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তর। রাজউকের সুপারিশের ভিত্তিতে জারি করা নির্দেশনাটি এখনো শুধু কাগজেই রয়ে গেছে। এতে হাজারো শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মচারীর জীবন ঝুঁকিতে পড়েছে—বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশ ভূমিকম্পের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। গত দুই দিনে চারটি ভূমিকম্পে দেশে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর অতি ঝুঁকিপূর্ণ তালিকার ৪৪টি ভবন দ্রুত অচল না করলে বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

সংশ্লিষ্ট একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের কেউ কেউ বলছেন, মাউশি ভবন সিলগালা অথবা ভেঙে ফেলার নির্দেশনা দিলেও তা করলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালানো সম্ভব নয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালানোর বিকল্প কোনো উপায় নির্ধারণ না হওয়ায় নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। আবার কেউ কেউ বলছেন, এমন নির্দেশনার বিষয়টি তাঁরা এখনো জানেন না।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, নির্দেশনা বাস্তবায়ন না হওয়ার কারণ খতিয়ে দেখে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মাউশির এ-সংক্রান্ত অফিস আদেশ জারি করা হয় ২০২৪ সালের ৩ এপ্রিল। এতে বলা হয়, রাজউকের তালিকায় থাকা বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ ভবনগুলো মজবুত করতে হবে। ‘অধিক ঝুঁকিপূর্ণ’ ৪৪টি ভবন ৭ দিনের মধ্যে খালি করে সিলগালা করতে হবে অথবা ভেঙে ফেলতে হবে।

মাউশির সূত্র বলছে, ‘আরবান রেজিলিয়েন্স প্রকল্প: রাজউক অংশ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় নিয়োজিত পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ঢাকা মহানগর উন্নয়ন প্রকল্প (ডিএমডিপি) এলাকার সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সংস্থার মালিকানাধীন ‘অধিক ঝুঁকিপূর্ণ’ ভবনগুলো ভেঙে ফেলার সুপারিশ করে। এর মধ্যে রাজউকের তালিকায় মাউশির আওতাধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ‘অধিক ঝুঁকিপূর্ণ’ ভবন রয়েছে ৪৪টি।

মাউশির সাধারণ প্রশাসন শাখার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, গত দেড় বছরে অসংখ্যবার চিঠি দেওয়া হলেও এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অতি ঝুঁকিপূর্ণ ভবন নিয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এসব ভবনেই চলছে পাঠদান, দাপ্তরিক কাজ।

নির্দেশনা বাস্তবায়নের বিষয়ে জানতে চাইলে গতকাল শনিবার মাউশির মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক বি এম আব্দুল হান্নান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি মহাপরিচালকের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছি। বিষয়টি আমার জানা নেই। কেন নির্দেশনাটি বাস্তবায়ন হয়নি, এ বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হবে।’

রাজধানীতে গত শুক্রবার সকালে রিখটার স্কেলে ৫ দশমিক ৭ মাত্রার এবং গতকাল সকালে এক দফা ও সন্ধ্যায় দুই দফা মৃদু ভূমিকম্প অনুভূত হয়। শুক্রবারের ভূমিকম্পে প্রাণ গেছে ১০ জনের। আহত হয়েছেন ৬ শতাধিক মানুষ। রাজধানীর বহু ভবনে ফাটল ধরেছে, অনেক ভবন হেলে পড়েছে।

মাউশির নির্দেশনার বিষয়ে গত দুই দিনে (শুক্র ও শনিবার) অধিক ঝুঁকিপূর্ণ ভবন থাকা ১৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক বা দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেছে আজকের পত্রিকা। অধিক ঝুঁকিপূর্ণের ওই তালিকায় রাজধানীর খিলগাঁও সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের একটি দোতলা ভবন রয়েছে। মাউশির নির্দেশনার বিষয়ে গতকাল দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মেহেরুন্নেসা বলেন, বিকল্প ব্যবস্থা না করে ভবন সিলগালা বা খালি করলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালানো সম্ভব হবে না বলে নির্দেশনাটি বাস্তবায়ন করা যায়নি।

একই রকম কথা জানান গোড়ানের আলী আহমেদ স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ নাসিমা পারভীন। তাঁর প্রতিষ্ঠানের একটি পাঁচতলা ভবন ঝুঁকিপূর্ণের তালিকায় রয়েছে। তিনি বলেন, নতুন ভবন বা শ্রেণিকক্ষের ব্যবস্থা না করে এমন নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা কঠিন। ব্যবস্থাপনা কমিটির সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

মিরপুরের সরকারি বাঙলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. কামরুল হাসান বলেন, কিছুদিন হলো তিনি দায়িত্ব নিয়েছেন। কলেজের কোন ভবন ঝুঁকিপূর্ণ, তা তাঁর জানা নেই।

নারায়ণগঞ্জের দেলপাড়া সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ ফজলুল কবীর জানালেন, ‘অফিশিয়ালি কোনো নির্দেশনা আসেনি। আপনার কাছ থেকেই এমন নির্দেশনার কথা শুনলাম।’

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর অতি ঝুঁকিপূর্ণ ৪৪টি ভবনে কয়েক হাজার শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মচারী দিনের বেশ কয়েক ঘণ্টা থাকছেন। মাউশির নির্দেশনা বাস্তবায়ন না হওয়ায় তাঁরা ঝুঁকিতে রয়েছেন।

নগর পরিকল্পনাবিদ ইকবাল হাবিব বলেন, ‘দেড় বছর আগের নির্দেশনাটি এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। এর চেয়ে দুঃখজনক আর কী হতে পারে? জবাবদিহি না থাকার কারণে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। একটা ঘটনা ঘটার পর আমরা তৎপর হই। কিছুদিন পরই সে তৎপরতা থেমে যায়।’ তিনি বলেন, ‘ছোট ছোট শিক্ষার্থীকে আমরা ঝুঁকির মধ্যে রাখতে পারি না। কারা এ নির্দেশনাটি বাস্তবায়ন করেননি, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই।’

ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের (অব.) অধ্যাপক হুমায়ুন আখতার বলেন, ‘বাংলাদেশ ভূমিকম্পের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। তাই আমি মনে করি, দ্রুত ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। কারণ সময়মতো ব্যবস্থা না নিলে যেকোনো মুহূর্তে বড় বিপর্যয় ঘটে যেতে পারে।’

‘অধিক ঝুঁকিপূর্ণ’ ভবন রয়েছে এমন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে রাজধানীর বাড্ডার আলাতুন্নেছা উচ্চমাধ্যমিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, সায়েদাবাদের করাতিটোলা সিএমএস উচ্চবিদ্যালয়, যাত্রাবাড়ীর শহীদ জিয়া বালিকা স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ডেমরার হায়দার আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মিরপুর ১৩ নম্বরের হাজী আলী হোসেন উচ্চবিদ্যালয়, দনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, কদমতলীর এ কে উচ্চবিদ্যালয় ও ব্রাইট কলেজ, কদমতলীর কে এম মাইনুদ্দিন উচ্চবিদ্যালয়, আদর্শ উচ্চবিদ্যালয় (মিঠাব), তেজগাঁও মডেল উচ্চবিদ্যালয়, বাড্ডার এ কে এম রহমতুল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, আজিমপুরের অগ্রণী স্কুল অ্যান্ড কলেজ, কোতোয়ালির আহমেদ বাওয়ানী একাডেমি, পল্টনের আরামবাগ উচ্চবিদ্যালয়, লালবাগের আনন্দময়ী বালিকা বিদ্যালয়, সাভারের ভাকুর্তা সরকারি উচ্চবিদ্যালয় ও শ্যামনগর স্কুল অ্যান্ড কলেজ, কেরানীগঞ্জ বালিকা স্কুল অ্যান্ড কলেজ, নারায়ণগঞ্জের সরকারি কদম রসুল কলেজ, নারায়ণগঞ্জ সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজ, গাজীপুরের সরকারি কালিগঞ্জ শ্রমিক কলেজ ও কালিগঞ্জ আর আর এন পাবলিক উচ্চবিদ্যালয়।

নির্দেশনার দেড় বছর পরও অতি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো সিলগালা না করা অথবা ভেঙে না ফেলার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলে জানান শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) বেগম বদরুন নাহার। গতকাল তিনি বলেন, কেন দেড় বছর আগের নির্দেশনা এখনো বাস্তবায়ন করা হয়নি, তা খতিয়ে দেখা হবে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঢাকায় ভূমিকম্পের গভীরতা ১০ কিলোমিটার কেন

মহাখালীতে চলন্ত বাসে দেওয়া হয় আগুন, হুড়োহুড়ি করে নেমে প্রাণে বাঁচলেন যাত্রীরা

ভূমিকম্প আতঙ্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা, হল ছাড়ার নির্দেশ

বিমানবন্দরে দুই কোটি টাকার স্বর্ণসহ হজের মুয়াল্লিম গ্রেপ্তার

ট্রাম্প-মামদানির বৈঠকের পর ভারতের জন্য যে বার্তা দিলেন শশী থারুর

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খুলনায় দেড় বছরে ৯৫ খুন

  • শতকোটির মাদকের বাজার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে খুনোখুনি
  • ২০২৪-এর ৫ আগস্টের পর এসব হত্যাকাণ্ড ঘটে
  • বেশির ভাগ আগ্নেয়াস্ত্রে লেখা ‘মেইড ইন ইন্ডিয়া’
  • খুনোখুনিতে লিপ্ত খুলনার ৬টি সন্ত্রাসী বাহিনী
  • হত্যাকাণ্ডে প্রশিক্ষিত ও পেশাদার লোক জড়িত: পুলিশ
কাজী শামিম আহমেদ, খুলনা
আপডেট : ২৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৭: ৩৪
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

আবারও অশান্ত জনপদে পরিণত হয়েছে খুলনা। ১৯৯৯-২০০৬ সাল পর্যন্ত এ অঞ্চলে চরমপন্থী সংগঠনগুলো বহু ভাগে বিভক্ত হয়ে একে অপরের ওপর খুনোখুনিতে লিপ্ত হয়। খুলনার শীর্ষ সন্ত্রাসী এরশাদ শিকদারের সাম্রাজ্যের পতনের পর পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টি (এমএল) ভেঙে পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টি (এমএল জনযুদ্ধ) বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টি ভেঙে নিউ বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টিসহ একাধিক চরমপন্থী সংগঠন আত্মপ্রকাশ করে। ওই সময় দলীয় আধিপত্য ও চাঁদাবাজির ঘটনা নিয়ে প্রতিদিন একাধিক হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হতো। সন্ত্রাসীদের গুলি, বোমা হামলায় রাজনৈতিক নেতা, সাংবাদিক, ব্যবসায়ীরা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়। পরে র‍্যাব, পুলিশ, যৌথ বাহিনীর তৎপরতার কারণে ১৫ বছর অধিক সময় ধরে এ অঞ্চলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যথেষ্ট উন্নতি হয়। কিন্তু গত দেড় বছরে এ অঞ্চলের সন্ত্রাসীরা ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হওয়ার পর খুলনায় ৯৫টি হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। এর মধ্যে শুধু শতকোটি টাকার মাদকের চালান নিয়ন্ত্রণ নিয়ে খুন হয়েছে অর্ধশত। বর্তমানে আধিপত্য বিস্তার, মাদক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে খুনোখুনিতে লিপ্ত হয়েছে খুলনার ছয়টি সন্ত্রাসী বাহিনী।

যত হত্যাকাণ্ড

সূত্র জানায়, সর্বশেষ গত শুক্রবার রাতে নগরীর লবণচরা এলাকায় রাজু নামের এক সন্ত্রাসীকে মাদক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে পরপর ছয়টি গুলি করে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়। গুলিবিদ্ধ ওই যুবককে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাতেই ঢাকায় নেওয়া হয়েছে। এর আগে রোববার রাতে খুলনা নগরীর সোনাডাঙ্গা করিমনগর এলাকায় বাসায় ঢুকে স্ত্রীর সামনে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয় সালাহ উদ্দিন ওরফে আলাউদ্দিন মৃধা নামের এক মাদক কারবারিকে। একই রাতে নগরীর লবণচরা থানাধীন দরবেশ মোল্লা গলির একটি বাড়িতে নানি মহিদুন্নেছা (৫৫), নাতি মুস্তাকিম (৮) ও নাতনি ফাতিহাকে (৬) নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ) রাশিদুল ইসলাম বলেন, খুলনায় মাদকের নিয়ন্ত্রণ ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বেশির ভাগ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হচ্ছে।

জেলা ও মেট্রোপলিটন পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, গত ৫ আগস্ট থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত খুলনায় ৯৫টির ওপরে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। এর মধ্যে খুলনা নগরীতে ৫০টি হত্যা মামলা হয়েছে, যা ৫ আগস্ট-পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। এসব হত্যা মামলায় দেড় শতাধিক আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

খুনোখুনিতে ৬ গ্রুপ

বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, খুলনায় বর্তমানে ছয়টি সন্ত্রাসী গ্রুপ আধিপত্য বিস্তার নিয়ে খুনোখুনিতে লিপ্ত রয়েছে। এই গ্রুপগুলো হচ্ছে গ্রেনেড বাবুর বি কোম্পানি, চরমপন্থী হুমা বাহিনী, আশিক বাহিনী, পলাশ বাহিনী, নুর আজিম বাহিনী ও আরমান বাহিনী। এর মধ্যে আরমান এবং নুর আজিম কারাগার থেকে নিজ নিজ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছেন। আরমান বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির সেকেন্ড ইন কমান্ড। কিছুদিন আগে প্রতিপক্ষের গুলিতে নিহত বিএনপির নেতা মাহবুবের নিকটতম আত্মীয় আরমান জেলে বসেই পার্টি নিয়ন্ত্রণ করছেন বলে ওই সূত্রটি জানায়। এই ছয়টি বাহিনীপ্রধানের নির্দেশে চলে কিশোর গ্যাং।

সূত্র জানায়, ছয়টি সন্ত্রাসী গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে খুলনায় মাসে অন্তত ৭০ থেকে ১০০ কোটি টাকার মাদক কারবার হয়। মাদকের এই বিশাল বাজার নিয়ন্ত্রণে নিতে এসব বাহিনী প্রায়ই বিরোধে জড়ায়। এর মধ্যে মাদকের অর্ধেকের বেশি একাই নিয়ন্ত্রণ করেন গ্রেনেড বাবু। গোয়েন্দা সূত্র বলছে, পাঁচ শতাধিক সদস্যের বাহিনী নিয়ে খুলনা ও আশপাশের এলাকায় মাদকের সিন্ডিকেট চালান গ্রেনেড বাবু। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ১২ শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকা প্রস্তুত করে পুরস্কার ঘোষণা করলে বেশির ভাগ সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার হলেও গ্রেনেড বাবু ও আশিক ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন।

৫ আগস্টের পর সন্ত্রাসীরা নিয়ন্ত্রণহীন

সূত্র জানায়, ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর মাদকের এই গডফাদাররা আত্মগোপনে থাকায় বাজার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিজেদের মধ্যে সন্ত্রাসে লিপ্ত হন। রাজনৈতিক গডফাদার না থাকায় ছয়টি গ্রুপ নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ে। একটি রাজনৈতিক সরকার না আসা পর্যন্ত এদের অপতৎপরতা রোধ করা অসম্ভব বলে জানায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

সন্ত্রাসীদের কাছে অত্যাধুনিক অস্ত্র

৫ আগস্টের পর খুলনার সন্ত্রাসী বাহিনীর কাছে অত্যাধুনিক অস্ত্র এসেছে। তবে কিছু অস্ত্র উদ্ধার করা হলেও বড় অস্ত্রগুলো রয়েছে তাদের হাতে। গত এক বছরে যৌথ বাহিনী ও পুলিশ অভিযান চালিয়ে দুটি রাইফেল, পাঁচটি বিদেশি রিভলবার, বিদেশি পিস্তল ১৭টি, দেশি পিস্তল একটি, বন্ধুক একটি, কাটারাইফেল দুটি, পাইপ গান পাঁচটি, শাটারগান তিনটি ও তিনটি শটগান উদ্ধার করেছে পুলিশ।

অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ) রাশিদুল বলেন, ‘জব্দ হওয়া বেশির ভাগ অস্ত্রেই “মেইড ইন ইন্ডিয়া” লেখা। সীমান্ত এলাকা কাছে হওয়ায় বিভিন্ন মাধ্যমে মাদক কারবারের নিয়ন্ত্রণ নিতে কিশোর গ্যাং ও উঠতি সন্ত্রাসীদের হাতে পৌঁছে গেছে মরণঘাতী এসব আগ্নেয়াস্ত্র। এসব অস্ত্র উদ্ধারে বিশেষ অভিযান অব্যাহত আছে।’

হত্যাকাণ্ডে প্রশিক্ষিত ও পেশাদার লোক

কেএমপি কমিশনার জুলফিকার আলী হায়দার বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডে প্রশিক্ষিত ও পেশাদার লোক জড়িত। ঘটনা ঘটিয়ে তারা পালিয়ে যায়। তারপরও বিভিন্ন এলাকা থেকে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’

জুলফিকার আলী হায়দার আরও বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ এবং অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে পুলিশ তৎপর রয়েছে। কিন্তু স্থানীয় মানুষের সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে না। সবার সহযোগিতা ছাড়া পুলিশের পক্ষে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঢাকায় ভূমিকম্পের গভীরতা ১০ কিলোমিটার কেন

মহাখালীতে চলন্ত বাসে দেওয়া হয় আগুন, হুড়োহুড়ি করে নেমে প্রাণে বাঁচলেন যাত্রীরা

ভূমিকম্প আতঙ্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা, হল ছাড়ার নির্দেশ

বিমানবন্দরে দুই কোটি টাকার স্বর্ণসহ হজের মুয়াল্লিম গ্রেপ্তার

ট্রাম্প-মামদানির বৈঠকের পর ভারতের জন্য যে বার্তা দিলেন শশী থারুর

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত