Ajker Patrika

ল্যাসিক মেশিন অকেজো, চিকিৎসাবঞ্চিত রোগীরা

আয়নাল হোসেন, ঢাকা 
আপডেট : ১২ মার্চ ২০২৫, ০৯: ০১
স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতাল। ছবি: সংগৃহীত
স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতাল। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালের চক্ষু বিভাগে এক দশক ধরে অকেজো পড়ে আছে প্রায় ১১ কোটি টাকার ল্যাসিক মেশিন। এতে চোখের চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। এদিকে পুরোপুরি নষ্ট হওয়া থেকে মেশিনটি বাঁচাতে দুটি শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র পরিচালনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে পরিশোধ করতে হচ্ছে হাজার হাজার টাকার বিদ্যুৎ বিল।

ল্যাসিক হচ্ছে আমাদের চোখে আলোর প্রতিসরণজনিত দৃষ্টির ত্রুটিকে লেজার প্রযুক্তির মাধ্যমে স্থায়ীভাবে সারিয়ে দেওয়ার একধরনের অত্যাধুনিক পদ্ধতি। চশমা পরা বাদ দিতে অনেকে ল্যাসিকের দিকে ঝুঁকছেন। সাধারণত দূরদৃষ্টি সমস্যায় ভোগা রোগীরা মোটা লেন্সের চশমা ব্যবহার করেন। ল্যাসিক চিকিৎসা নিলে তাঁদের চশমার প্রয়োজন হয় না।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালের ৭ মার্চ মিটফোর্ড হাসপাতালের চক্ষু বিভাগে স্থাপন করা হয় অত্যাধুনিক ল্যাসিক মেশিন। তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. আ ফ ম রুহুল হক মেশিনটি উদ্বোধন করেন। এটি সরবরাহ করে লেক্সিকন মার্চেন্ডাইসের মালিক মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠু। ওই সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী, মিটফোর্ড হাসপাতালের তৎকালীন উপপরিচালক ডা. আবুল হাসেম খান, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ সামিউল ইসলাম সাদীসহ কয়েকজন আর্থিক সুবিধা আদায় করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ল্যাসিক মেশিনটি স্থাপনের পর গুটিকয়েক রোগীর অস্ত্রোপচার হয়েছিল। এরপর সেটি অকেজো হয়ে পড়ে। মূলত সরকারিভাবে মিটফোর্ড হাসপাতালে প্রথম এটি স্থাপিত হয়েছিল।

জানা গেছে, মেশিনটি স্থাপনের আগে মিটফোর্ড হাসপাতালের তৎকালীন সহকারী অধ্যাপক আনিস উদ্দীন ও রেজিস্ট্রার এনামুল হককে ১৫ দিনের জন্য ভিয়েতনামে পাঠানো হয় প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য। প্রশিক্ষণ শেষে দেশে ফেরার পরপরই ডা. এনামুল হককে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে বদলি করা হয়। এরপর ডা. আনিস উদ্দীন একাই বিভাগের কাজ চালিয়ে যান। তবে ২০১৫ সালের পর মেশিনটি আর কাজ করেনি।

গত রোববার দুপুরে মিটফোর্ড হাসপাতালের চক্ষু বিভাগে গিয়ে দেখা যায়, ল্যাসিক মেশিনটি তালাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। চক্ষু বিভাগের চিকিৎসকেরা জানান, বিভাগের দুটি বড় কক্ষ দখল করে রেখেছে মেশিনটি। সেটি কোনোরকমে বাঁচিয়ে রাখতে দুটি এসি প্রতিদিন দুই ঘণ্টার জন্য চালানো হয়।

এ বিষয়ে মিটফোর্ড হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাজহারুল ইসলাম খানকে বেশ কয়েকবার কল দিয়ে এবং খুদে বার্তা পাঠিয়ে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। পরে হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মফিজুর রহমান মোল্লার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, মেশিনটির বিষয়ে সরকারি যন্ত্রপাতি মেরামতকারী প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ইলেকট্রো-মেডিকেল ইকুইপমেন্ট মেইনটেন্যান্স ওয়ার্কশপ অ্যান্ড টিসিতে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। সেখানকার লোকজন এসে মেশিনটি সম্পর্কে মতামত দেবে। মেরামত খরচ বেশি হলে সেটি অকেজো ঘোষণা করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত