Ajker Patrika

ভৈরবে জুতার মার্কেটের ৪০ দোকান পুড়ে ছাই

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত দোকান। ছবি: আজকের পত্রিকা
আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত দোকান। ছবি: আজকের পত্রিকা

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে একটি জুতার মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে কমপক্ষে ৪০টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। দোকানিদের দাবি, আগুনে পুড়ে প্রায় ২ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

শুক্রবার (২৩ মে) দিবাগত রাত ১টার দিকে উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন জলপরী পার্ক রোডের লালু-কালু মার্কেটে এ দুর্ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ভৈরব বাজার ফায়ার সার্ভিস ও নদী ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট এক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

দোকানিরা বলেন, ভৈরব পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে অসংখ্য জুতার মার্কেট ও কারখানা। লক্ষাধিক মানুষ এই খাতে যুক্ত। উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সের বিপরীতে অবস্থিত হাজী লালু-কালু পাদুকা মার্কেটে শতাধিক দোকান আছে, যেগুলোর বেশির ভাগই কাঁচামালের। শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় রাত ১০টার মধ্যে মার্কেট বন্ধ হয়ে যায়। রাত ১টার দিকে মার্কেটের পেছনের দিক থেকে আগুনের শিখা দেখা যায়। মুহূর্তেই তা ছড়িয়ে পড়ে।

দোকানিদের ধারণা, মার্কেটের পেছনের অংশে আছে জুতার কার্টন তৈরির কারখানা। সেখানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকে কাগজ। রাতে কেউ কেউ সেখানে বসে মাদক সেবন করে। তাদের ফেলা সিগারেট থেকেই আগুন লেগে থাকতে পারে।

মার্কেটের জুতার বাক্স তৈরির দোকানদার মনা মিয়া বলেন, ‘রাতে দোকানে বসে আমিসহ কারিগররা জুতার বাক্স তৈরি করছিলাম। হঠাৎ করে চিৎকার শুনে বাইরে এসে দেখি আমাদের মার্কেটে আগুন লেগেছে। দেখতে দেখতে আমার দোকানে আগুন লেগে সব মালামাল পুড়ে যায়। আমরা ছোট ব্যবসায়ী, ধারদেনা করে কোনোভাবে ব্যবসা করে চলতাম। এখন তো আমার সব শেষ হয়ে গেল। কেমনে সংসার চালাব।’

লালু-কালু পাদুকা মার্কেটের ম্যানেজার ইউনুছ মিয়া বলেন, ‘রাত ১টার দিকে মার্কেটে কালো ধোঁয়া দেখে ছুটে আসি। দেখি মার্কেটের একটি দোকানে আগুন জ্বলছে। তারপর ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে ২৫ মিনিট পর তারা এসে মার্কেটে আগুন নেভাতে কাজ করে। আমাদের দোকানিরা পথে বসে গেছে।’

ক্ষতিগ্রস্ত মার্কেটের মালিক কাজী মাসুদ বলেন, যতটুকু জেনেছি, বিদ্যুতের শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। আমাদের মার্কেটের সামনের সারির প্রায় সব কটি দোকান পুড়ে গেছে। আনুমানিক ২ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

ভৈরব পাদুকা সমিতির সভাপতি আল-আমিন মিয়া বলেন, ‘আমাদের প্রায় ২ কোটি টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে। প্রায় ৩০-৪০টি দোকান পুড়ে গেছে।’

ভৈরব ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর রাজন আহমেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ও আগুনের সূত্রপাতের বিষয়টি তদন্ত ছাড়া বলা সম্ভব নয়। তবে প্রাথমিক ধারণা করা হচ্ছে, প্রায় ১ কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে।

ভৈরব নদী ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ইনচার্জ আজিজুল হক বলেন, মার্কেটের পাশেই ফায়ার সার্ভিস হওয়ায় দ্রুত পানি ছিটানো সম্ভব হয়েছে। না হলে ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়ত। মার্কেটের বেশির ভাগ দোকানে জুতা তৈরির আঠা, রাবার, সলিউশন ও পেস্টিং-জাতীয় দাহ্য পদার্থ মজুত ছিল। এ কারণে অল্প সময়েই আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। তবে আগুনের উৎস এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত