Ajker Patrika

খুলেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান: সুদিনের আশায় ফুচকা-ভেলপুরি বিক্রেতারা

প্রতিনিধি, শিবচর (মাদরীপুর)
আপডেট : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৫: ৫৮
খুলেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান: সুদিনের আশায় ফুচকা-ভেলপুরি বিক্রেতারা

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বাইরে বসে আচার, ঝালমুড়ি, আইসক্রিম, ফুচকা আর ভেলপুরি বিক্রি করে থাকেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। স্বাস্থ্যগত দিক নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও শিক্ষার্থীদের পছন্দের শীর্ষেই রয়েছে এসব মুখরোচক খাবার। করোনার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এই ব্যবসায়ও নেমেছে ধস। ক্ষুদ্র এই ব্যবসায়ীরা করোনার সময়ে দিনমজুরি করে কোনোমতে চালিয়েছেন সংসার।  প্রায় দেড় বছর পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু হওয়ায় স্বস্তি এসেছে তাঁদের মনেও। মুখরোচক খাবার নিয়ে নতুন করে পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিদ্যালয়ের প্রাচীরের বাইরে। 

শিবচর উপজেলার শিরুয়াইল ইউনিয়নের উৎরাইল হাইস্কুলের প্রবেশপথে রাস্তার পাশে বসে ফুচকা বিক্রি করা মো. জুয়েল মাতুব্বরের বক্তব্য অনেকটা এমনই। আলাপচারিতায় তিনি জানান, তিন ভাইয়ের মধ্যে বয়সে ছোট জুয়েল মাতুব্বর করোনার আগে ঢাকায় রঙের কাজ করতেন। ওই সময় রঙের কাজ না থাকলে ঢাকাতেই ফুচকা-ভেলপুরি বিক্রি করতেন স্কুলের আশপাশে। করোনাকালে কাজ না থাকায় গত বছর বাড়ি চলে আসেন। এরই মধ্যে  বাবা বজলু মাতুব্বরের মৃত্যুর পর মা-ও রোগাক্রান্ত হয়ে পড়েন। ঢাকায় ফিরে যাওয়া হয়নি আর। গত তিন মাস ধরে গ্রামে ঘুরে ঘুরে ফুচকা-ভেলপুরি বিক্রি করেছেন। তবে আয়রোজগার তেমন হতো না। মূলত স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাই ফুচকা-ভেলপুরি বেশি কেনে। ঢাকার পুরোনো অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে অপেক্ষায় ছিলেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার। 

ফুচকা বিক্রেতা জুয়েল বলেন, `ভাই, স্কুল-কলেজ খোলার খবরে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে যেরকম আনন্দ কাজ করছে, আমার ভেতরও ঠিক তেমনই আনন্দ। শুধু বিষয়টা ভিন্ন। স্কুল চালু থাকলে আমার বিক্রি ভালো হয়। গত রোববার এই স্কুলের বাইরে রাস্তায় বসেছি ফুচকা-ভেলপুরি নিয়ে। আলহামদুলিল্লাহ, বেশ ভালো বিক্রি হয়েছে। বাড়িতে মা অসুস্থ। ওষুধপত্রের জন্য বেশ টাকাপয়সা খরচ হয়। সব মিলিয়ে বেচাকেনা ভালো হলে মনে শান্তি লাগে।’ 

প্রতিদিন গড়ে ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা আয় হয় জানিয়েছে এই বিক্রেতা বলেন, `ফুচকা, ভেলপুরি স্থানীয় বাজার থেকে কিনে আনি। এ ছাড়া সব মসলা, ঘুমনি (ডালের মিশ্রণ), আর টক পানি নিজের বাড়িতে তৈরি করা। টক পানি তেঁতুল দিয়ে তৈরি করা হয়। কোনো ভেজাল কিছু মেশানো হয় না।'

শিক্ষার্থীরা জানান, ‘স্কুলে আসার পর কিছু খেতে ইচ্ছে করে। এর মধ্যে ফুচকা আর ভেলপুরি বেশ মজার। ঝালমুড়িও ভালো লাগে। বন্ধুরা একজন অন্যজনকে কিনে দেয়। পরস্পর একসঙ্গে কিছু কিনে খাওয়ার আনন্দই অন্যরকম।’

শিবচর উপজেলার পার্শ্ববর্তী ভাঙ্গা উপজেলার দীঘিরপাড় এলাকার এই ফুচকা-ভেলপুরি বিক্রেতার মতো অসংখ্য ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আশপাশে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন মুখরোচক খাবার বিক্রি করে দিব্যি চলে যাচ্ছে তাঁদের সংসার। আর যেন বন্ধ না হয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান—এমনটাই প্রত্যাশা তাঁদের। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত