Ajker Patrika

গ্রামীণ টেলিকম: ১২ কোটি টাকা ‘ফি’ নেওয়া আইনজীবীর ব্যাংক হিসাব জব্দ 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
Thumbnail image

গ্রামীণ টেলিকমের অবসায়ন চাওয়া চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের আইনজীবী ইউসুফ আলীর ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। আজ রোববার সুপ্রিম কোর্টে ইউসুফ আলী নিজেই সাংবাদিকদের বিষয়টি জানান।

ইউসুফ বলেন, ‘আমি সকালে গিয়ে দেখেছি, সবগুলো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে। আমার ব্যক্তিগত তিনটি, আমার পার্টনারের দুইটি এবং চেম্বারের একটি অ্যাকাউন্ট।’

এ আইনজীবী বলেন, ‘তথাকথিত সামাজিক ব্যবসার ধ্বজাধারী সুদখোর ইউনূসকে চুবানি দিয়েই সুদে-আসলে গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক বন্ধুদের ন্যায্য পাওনা আদায় করে দিয়েছি। ১২ কোটি টাকা নিয়ে মামলায় সমঝোতার যে গল্প বানানো হয়েছে, তা সম্পূর্ণ কাল্পনিক ছাড়া আর কিছু না।’

তিনি আরও বলেন, ‘লিখিত চুক্তির শর্ত মোতাবেক গ্রামীণ টেলিকম সেটেলমেন্ট অ্যাকাউন্টে ৪৩৭ কোটি টাকা প্রদান করার পর শ্রমিক-কর্মচারীরা বিজ্ঞ তৃতীয় শ্রম আদালতে উপস্থিত হয়ে জবানবন্দি দিয়ে স্ব স্ব মামলা প্রত্যাহার করে নেন। একইভাবে তাঁদের অনুরোধে হাইকোর্ট বিভাগে বিচারাধীন সব রিট মামলা, আদালত অবমাননার মামলা এবং গ্রামীণ টেলিকম অবসায়নের মামলা প্রত্যাহার করি।’

নিজের ফি-এর বিষয়ে সাংবাদিকেরা জানতে চাইলে এ আইনজীবী বলেন, ‘আমি কত পেয়েছি সেটা বলতে চাই না। ক্লায়েন্টদের মধ্যে যারা ৩ কোটি বা তার ওপরে পেয়েছে তারা নিজেরা ঠিক করেছিল আমাকে ১৫/২০ লাখ টাকা করে দেবে। আমার ১০০ জন ক্লায়েন্ট ৩ কোটি টাকার ওপরে পেয়েছে। তারা আমাকে হাসি মুখে ফিস দিয়েছেন, কারো কাছে অভিযোগ করেননি।’

গত বৃহস্পতিবার শুনানির সময় ১২ কোটি টাকায় সমঝোতার খবরে বিস্ময় প্রকাশ করেন বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের একক বেঞ্চ। ওই সময় আদালত বলেন, ‘আমরা শুনেছি শ্রমিকদের আইনজীবীকে অর্থের বিনিময়ে হাত করে তাদের মামলায় আপস করতে বাধ্য করা হয়েছে। কোর্টকে ব্যবহার করে অনিয়ম যেন না হয়। যদি সবকিছু আইন অনুযায়ী না হয়, তবে বিষয়টি সিরিয়াসলি দেখা হবে। আমরা চাই না কোর্ট এবং আইনজীবীর সততা নিয়ে কোনো প্রশ্ন উঠুক।’

পরে গ্রামীণ টেলিকমের চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা পরিশোধের বিষয়ে জানতে চান হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে এ সংক্রান্ত নথিও দাখিল করতে বলা হয়। 

ওই সময় আদালতকে জানানো হয়, চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের জন্য ৪৩৭ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৩৮০ কোটি টাকা শ্রমিকদের পরিশোধ করা হয়েছে। আর আট শ্রমিকের মধ্যে চারজন দেশের বাইরে থাকায় তাঁদের টাকা পরিশোধ করা হয়নি। এ ছাড়া চারজন শ্রমিক মারা যাওয়ায় তাঁদের উত্তরাধিকারী নিয়ে জটিলতার কারণে টাকা পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি।

এর আগে গ্রামীণ টেলিকমের অবসায়ন চেয়ে শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়। তবে চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের শর্তে মামলা প্রত্যাহারে সমঝোতা করে গ্রামীণ টেলিকম। সে অনুযায়ী হাইকোর্টে আবেদনও করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত