Ajker Patrika

চেয়ারম্যান-ভাইস চেয়ারম্যানের কাস্টিং ব্যালটের ফারাক ৫ হাজার, পুনঃভোটের দাবি পরাজিত প্রার্থীর

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ১০ মে ২০২৪, ১০: ২৭
চেয়ারম্যান-ভাইস চেয়ারম্যানের কাস্টিং ব্যালটের ফারাক ৫ হাজার, পুনঃভোটের দাবি পরাজিত প্রার্থীর

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ভোট কারচুপি, কেন্দ্র দখল, জালিয়াতি ও ভুয়া রেজাল্ট শিট তৈরির অভিযোগ করেছেন এক প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ অভিযোগ করেন। 

সংবাদ সম্মেলনে ভোট পুনর্গণনা অথবা নির্বাচন বাতিল করে নতুন করে ভোট গ্রহণের দাবি করেন তিনি। সেই সঙ্গে দুই দিনের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন এই প্রার্থী। 

ওই চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হলেন মো. রফিকুল ইসলাম রেনু। তিনি পাকুন্দিয়া উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান। পরপর দুইবার তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হন। এ ছাড়া তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও পাকুন্দিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক। এবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তিনি। 

তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আনারস প্রতীকের প্রার্থী এমদাদুল হক (নির্বাচিত)। 

অভিযোগের উল্লেখযোগ্য প্রমাণ হিসেবে সংবাদ সম্মেলনে রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচনে একজন ভোটারকে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান তিনটি পদের জন্যই একটি করে ব্যালট দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী তিনটি পদেই নির্বাচনে প্রদত্ত ভোটসংখ্যা সমান হওয়ার কথা। ৫ থেকে ১০টি এদিক-সেদিক হলে সেটি ধর্তব্যের মধ্যে পড়ে না। অথচ এখানে চেয়ারম্যান পদে কাস্টিং ব্যালট এবং ভাইস চেয়ারম্যান পদে কাস্টিং ব্যালটের ব্যবধান প্রায় ৫ হাজার। রেজাল্ট শিটটি যে জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে, কাস্টিং ব্যালটের এই ব্যবধানই এর উত্তম প্রমাণ।’ 

এ ছাড়া নির্বাচনসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিভিন্ন সময়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েও তাঁদের কোনো তৎপরতা পাননি বলেও দাবি করেছেন এ প্রার্থী। সেই সঙ্গে ভোটের দিন বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে তাঁর এজেন্টদের মারধর করে বের করে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। 

নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাচন অফিসার মো. আবুল কালাম আজাদ স্বাক্ষরিত ফলাফলের শিট অনুযায়ী চেয়ারম্যান পদে আনারস প্রতীকের প্রার্থী এমদাদুল হক ২৮ হাজার ৭৩৮ ভোট পেয়ে ৯৪৭ ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মো. রফিকুল ইসলাম রেনু পেয়েছেন ২৭ হাজার ৭৯১ ভোট। 

এতে দেখা যায়, চেয়ারম্যান পদে মোট ভোট পড়েছে ৭০ হাজার ৩৩৪, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭৫ হাজার ৪১৬ এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মোট ভোট পড়েছে ৭০ হাজার ২০৬টি। এ হিসেবে চেয়ারম্যান পদে মোট প্রদত্ত ভোটের চেয়ে ভাইস চেয়ারম্যান পদের প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা ৫ হাজার ৮২ ভোট বেশি। এ ছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদের ফলাফলে তিনজন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর যে ভোট দেখানো হয়েছে, তাদের মোট ভোটের যোগফলেও গরমিল রয়েছে। 

চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ও বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রেনু জানান, ভোটের দিন রাত ৮টা ২০ মিনিট পর্যন্ত একটানা ধারাবাহিকভাবে উপজেলার ৮৫টি কেন্দ্রের মধ্যে ৭৪টি কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণা করা হয়। ৭৪টি কেন্দ্রের ফলাফলে তিনি ২৪ হাজার ৬৯৮ ভোট পেয়ে এগিয়ে ছিলেন এবং এমদাদুল হক জুটনের ভোটসংখ্যা ছিল ২৪ হাজার ৫১ ভোট। এরপর প্রায় ৩০ মিনিট আর কোনো ফলাফল ঘোষণা করা হয়নি। পরে রাত ৮টা ৫০ মিনিটে পুনরায় ফলাফল ঘোষণা করা শুরু হয়। ৯টা ৩৮ মিনিটে সমস্ত কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণা করে তাদের পরাজিত ঘোষণা করা হয়। 

ফল ঘোষণার পরপরই তিনি এ ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং ওই সময়ের মধ্যে আরও ভোট কারচুপি, জালিয়াতি ও ভুয়া রেজাল্ট শিট তৈরির অভিযোগ করেছেন তিনি। 

তবে এসব অভিযোগের বিষয়ে সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাচন অফিসার মো. আবুল কালাম আজাদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তিনি (রফিকুল ইসলাম রেনু) যদি অভিযোগ করে থাকেন, বিষয়টি তাঁকেই প্রমাণ করতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত