মোস্তাকিম ফারুকী
নবাবপুর (ঢাকা): ময়মনসিংহের ময়দর আলী ঢাকার নবাবপুরে এসেছিলেন কাজের সন্ধানে। স্বপ্ন ছিল ঢাকা থেকে রমজান মাসে মোটা অঙ্কের টাকা পাঠাবেন বাড়িতে। সে টাকায় ছেলেমেয়ে, স্ত্রীর কষ্ট লাঘব হবে। ঈদের সময় বাড়িতে নিয়ে যাবেন নতুন জামাকাপড়। সেই স্বপ্ন এখন শুধুই কষ্টকল্পনা। শুধু ময়দর আলী নন, করোনার কারণে আয়–রোজগারের স্বপ্ন নিয়ে ঢাকায় আসা অনেকেই এখন মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
ব্যবসা কেন্দ্র হিসেবে ব্রিটিশ আমল থেকেই রাজধানীর নবাবপুর এলাকা পরিচিত। তবে স্বাধীনতার পর থেকে নবাবপুর পরিচিতি পায় বৈদ্যুতিক পণ্যের পাইকারি বাজার হিসেবে। আজিজ ইলেকট্রিক মার্কেটের মাধ্যমে এর শুরু। এখন সেখানে অজস্র ইলেকট্রিক পণ্যের দোকান। মার্কেটও আছে আগণিত। আর এসবকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে কর্মসংস্থান। প্রতিদিন অসংখ্য দিনমজুর এখানে ভিড় করেন কাজের আশায়। নবাবপুর তাদের হতাশ করে না। কাজ যেমন জোটে, তেমনি হয় আয়ও। কিন্তু এখন পরিস্থিতি ভিন্ন। করোনার কারণে থমকে গিয়েছে সবকিছু। মার্কেট দোকানপাট বন্ধ। এতে সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েছেন এই খেটে খাওয়া মানুষেরা।
বাংলাদেশ ইলেকট্রিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের তথ্যমতে, বর্তমানে নবাবপুরে শতাধিক ইলেকট্রিক্যাল মার্কেট রয়েছে। সড়কের দুপাশের প্রতিটি ভবনই একেকটি আলাদা মার্কেট। অধিকাংশই ইলেকট্রিক পণ্যের। এর পাশাপাশি হার্ডওয়্যার ও মেশিনারিজ পণ্যের মার্কেটও রয়েছে। বৈদ্যুতিক সুইচ-সকেট থেকে শুরু করে পাম্প, জেনারেটর সবই পাওয়া যায় এসব মার্কেটে। দেশে উৎপাদিত পণ্যের পাশাপাশি এই বাজারে মিলছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা পণ্য। নবাবপুরকে কেন্দ্র করে পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে কয়েক শ বৈদ্যুতিক পণ্য তৈরির কারখানা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিপণন ও উৎপাদন মিলে হাজারের বেশি প্রতিষ্ঠান কাজ করছে নবাবপুরে। এসব ঘিরে দৈনিক কোটি কোটি টাকার লেনদেন হচ্ছে। তৈরি হচ্ছে কর্মসংস্থান। দিনমজুর শ্রমিকদের জন্য `আলাদীনের প্রদীপ'–এর মতো রাজধানীর পুরান ঢাকার এই নবাবপুর। দিনমজুরের কাজগুলো যদিও খুব কষ্টের, তাও তো মিলছে কাজ, হচ্ছে আয়।
আমদানি করা বিভিন্ন পণ্যের ট্রাক এসে হাজির হয় নবাবপুরে, গাড়ি থেকে পণ্য নামানোর জন্য তখনই কাজের হিড়িক পড়ে দিনমজুর শ্রমিকদের মধ্যে। সেই কাজের স্বপ্ন নিয়েই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দিনমজুর শ্রমিকেরা জমায়েত হন নবাবপুর রোডে। বেশ কয়েকদিন কাজ করে, টাকা জমিয়ে বাড়িতে বউ–বাচ্চাদের জন্য তাঁরা নিয়ে যান নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, পূরণ করেন তাদের চাহিদা। এমন স্বপ্ন নিয়েই ময়মনসিংহ থেকে নবাবপুর এসেছিলেন। কিন্তু এবার করোনাভাইরাসের কারণে সেই আশা দুরাশায় পরিণত হয়েছে।
সরজমিনে টিপুসুলতান রোড, ননবাবপুর রোড পরিদর্শন করে দেখা যায়, এমন শতাধিক ময়দর আলী রাস্তায় বসে আছেন। তাঁদের না আছে কাজ, না পাচ্ছেন খাবার। একরকম অনাহারেই তাঁদের দিন কাটছে। আবার কাজ করা দুটি হাত পাততেও পারছেন না তাঁরা। নবাবপুরের বন্ধ মার্কেটগুলোর তালাবদ্ধ দোকানগুলোর দিকে তাকিয়ে থাকেন। কোনো উপায় খুঁজে পান না। নিজের ক্ষুধার মধ্যেই তাঁদের মন প্রতিনিয়ত হাহাকার করে বাড়িতে রেখে আসা পরিবারের সদস্যদের জন্য।
নবাবপুর টাওয়ারের নিচে অবস্থানরত কিছু শ্রমিকের সঙ্গে আলাপকালে তাঁরা জানান, আগে তাঁরা নিয়মিত ট্রাক থেকে মাল নাোতেন। ঠেলা গাড়ি দিয়ে পণ্য গোডাউনে পৌঁছে দিতেন। এখন তাঁদের সেই কাজ বন্ধ। ঘরবাড়ি ছেড়ে তাঁরা এখন রাস্তায়।
বাড়িতে যাচ্ছেন না কেন—এমন প্রশ্নের উত্তরে সিরাজগঞ্জ থেকে আগত শরীফ মিয়া নামের এক শ্রমিক আজকের পত্রিকা বলেন, `বাড়িতে যাওয়ার গাড়ি পাব কোথায়? আর ভেঙে ভেঙে যাওয়ার সুযোগ থাকলেও দিতে হচ্ছে তিনগুণ, চারগুণ টাকা।'
আক্তার মিয়া নামের আরেক শ্রমিক বলেন, `বাড়িতে গিয়ে মরব নাকি! গতবারের লকডাউনে যে ধারদেনা (ঋণ) করেছি, তা–ই তো পরিশোধ করতে পারিনি। তা ছাড়া চোখের সামনে বউ–বাচ্চা না খেয়ে থাকবে। কীভাবে সহ্য করব।'
লকডাউন এখন এই শ্রমিকদের কাছে অভিশাপ। আশ্রয় বলতে মার্কেটগুলোর সামনের খালি জায়গা। খাবারের কোনো নিশ্চয়তা নেই। এভাবেই প্রায় দশ–বারো দিন ধরে চলছে পুরান ঢাকার নবাবপুরে শতাধিক দিনমজুরের জীবন। লকডাউনের প্রথম দিকে সরকারিভাবে, বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী সংগঠনের ইফতার ও খাবার পেয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু তা দিন দু–একের মধ্যেই শেষ হয়ে যায়। এখন তাঁদের আশা ঈদের আগে আগামীকাল রোববার থেকে মার্কেট ও শপিংমল খুললে আবার কাজ পাবেন, আয় করবেন। সেই আয় থেকে ঈদের আনন্দ না হোক, পরিবারকে খেয়ে–পরে বাঁচার মতো টাকা পাঠাতে পারবেন।
নবাবপুর (ঢাকা): ময়মনসিংহের ময়দর আলী ঢাকার নবাবপুরে এসেছিলেন কাজের সন্ধানে। স্বপ্ন ছিল ঢাকা থেকে রমজান মাসে মোটা অঙ্কের টাকা পাঠাবেন বাড়িতে। সে টাকায় ছেলেমেয়ে, স্ত্রীর কষ্ট লাঘব হবে। ঈদের সময় বাড়িতে নিয়ে যাবেন নতুন জামাকাপড়। সেই স্বপ্ন এখন শুধুই কষ্টকল্পনা। শুধু ময়দর আলী নন, করোনার কারণে আয়–রোজগারের স্বপ্ন নিয়ে ঢাকায় আসা অনেকেই এখন মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
ব্যবসা কেন্দ্র হিসেবে ব্রিটিশ আমল থেকেই রাজধানীর নবাবপুর এলাকা পরিচিত। তবে স্বাধীনতার পর থেকে নবাবপুর পরিচিতি পায় বৈদ্যুতিক পণ্যের পাইকারি বাজার হিসেবে। আজিজ ইলেকট্রিক মার্কেটের মাধ্যমে এর শুরু। এখন সেখানে অজস্র ইলেকট্রিক পণ্যের দোকান। মার্কেটও আছে আগণিত। আর এসবকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে কর্মসংস্থান। প্রতিদিন অসংখ্য দিনমজুর এখানে ভিড় করেন কাজের আশায়। নবাবপুর তাদের হতাশ করে না। কাজ যেমন জোটে, তেমনি হয় আয়ও। কিন্তু এখন পরিস্থিতি ভিন্ন। করোনার কারণে থমকে গিয়েছে সবকিছু। মার্কেট দোকানপাট বন্ধ। এতে সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েছেন এই খেটে খাওয়া মানুষেরা।
বাংলাদেশ ইলেকট্রিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের তথ্যমতে, বর্তমানে নবাবপুরে শতাধিক ইলেকট্রিক্যাল মার্কেট রয়েছে। সড়কের দুপাশের প্রতিটি ভবনই একেকটি আলাদা মার্কেট। অধিকাংশই ইলেকট্রিক পণ্যের। এর পাশাপাশি হার্ডওয়্যার ও মেশিনারিজ পণ্যের মার্কেটও রয়েছে। বৈদ্যুতিক সুইচ-সকেট থেকে শুরু করে পাম্প, জেনারেটর সবই পাওয়া যায় এসব মার্কেটে। দেশে উৎপাদিত পণ্যের পাশাপাশি এই বাজারে মিলছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা পণ্য। নবাবপুরকে কেন্দ্র করে পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে কয়েক শ বৈদ্যুতিক পণ্য তৈরির কারখানা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিপণন ও উৎপাদন মিলে হাজারের বেশি প্রতিষ্ঠান কাজ করছে নবাবপুরে। এসব ঘিরে দৈনিক কোটি কোটি টাকার লেনদেন হচ্ছে। তৈরি হচ্ছে কর্মসংস্থান। দিনমজুর শ্রমিকদের জন্য `আলাদীনের প্রদীপ'–এর মতো রাজধানীর পুরান ঢাকার এই নবাবপুর। দিনমজুরের কাজগুলো যদিও খুব কষ্টের, তাও তো মিলছে কাজ, হচ্ছে আয়।
আমদানি করা বিভিন্ন পণ্যের ট্রাক এসে হাজির হয় নবাবপুরে, গাড়ি থেকে পণ্য নামানোর জন্য তখনই কাজের হিড়িক পড়ে দিনমজুর শ্রমিকদের মধ্যে। সেই কাজের স্বপ্ন নিয়েই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দিনমজুর শ্রমিকেরা জমায়েত হন নবাবপুর রোডে। বেশ কয়েকদিন কাজ করে, টাকা জমিয়ে বাড়িতে বউ–বাচ্চাদের জন্য তাঁরা নিয়ে যান নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, পূরণ করেন তাদের চাহিদা। এমন স্বপ্ন নিয়েই ময়মনসিংহ থেকে নবাবপুর এসেছিলেন। কিন্তু এবার করোনাভাইরাসের কারণে সেই আশা দুরাশায় পরিণত হয়েছে।
সরজমিনে টিপুসুলতান রোড, ননবাবপুর রোড পরিদর্শন করে দেখা যায়, এমন শতাধিক ময়দর আলী রাস্তায় বসে আছেন। তাঁদের না আছে কাজ, না পাচ্ছেন খাবার। একরকম অনাহারেই তাঁদের দিন কাটছে। আবার কাজ করা দুটি হাত পাততেও পারছেন না তাঁরা। নবাবপুরের বন্ধ মার্কেটগুলোর তালাবদ্ধ দোকানগুলোর দিকে তাকিয়ে থাকেন। কোনো উপায় খুঁজে পান না। নিজের ক্ষুধার মধ্যেই তাঁদের মন প্রতিনিয়ত হাহাকার করে বাড়িতে রেখে আসা পরিবারের সদস্যদের জন্য।
নবাবপুর টাওয়ারের নিচে অবস্থানরত কিছু শ্রমিকের সঙ্গে আলাপকালে তাঁরা জানান, আগে তাঁরা নিয়মিত ট্রাক থেকে মাল নাোতেন। ঠেলা গাড়ি দিয়ে পণ্য গোডাউনে পৌঁছে দিতেন। এখন তাঁদের সেই কাজ বন্ধ। ঘরবাড়ি ছেড়ে তাঁরা এখন রাস্তায়।
বাড়িতে যাচ্ছেন না কেন—এমন প্রশ্নের উত্তরে সিরাজগঞ্জ থেকে আগত শরীফ মিয়া নামের এক শ্রমিক আজকের পত্রিকা বলেন, `বাড়িতে যাওয়ার গাড়ি পাব কোথায়? আর ভেঙে ভেঙে যাওয়ার সুযোগ থাকলেও দিতে হচ্ছে তিনগুণ, চারগুণ টাকা।'
আক্তার মিয়া নামের আরেক শ্রমিক বলেন, `বাড়িতে গিয়ে মরব নাকি! গতবারের লকডাউনে যে ধারদেনা (ঋণ) করেছি, তা–ই তো পরিশোধ করতে পারিনি। তা ছাড়া চোখের সামনে বউ–বাচ্চা না খেয়ে থাকবে। কীভাবে সহ্য করব।'
লকডাউন এখন এই শ্রমিকদের কাছে অভিশাপ। আশ্রয় বলতে মার্কেটগুলোর সামনের খালি জায়গা। খাবারের কোনো নিশ্চয়তা নেই। এভাবেই প্রায় দশ–বারো দিন ধরে চলছে পুরান ঢাকার নবাবপুরে শতাধিক দিনমজুরের জীবন। লকডাউনের প্রথম দিকে সরকারিভাবে, বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী সংগঠনের ইফতার ও খাবার পেয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু তা দিন দু–একের মধ্যেই শেষ হয়ে যায়। এখন তাঁদের আশা ঈদের আগে আগামীকাল রোববার থেকে মার্কেট ও শপিংমল খুললে আবার কাজ পাবেন, আয় করবেন। সেই আয় থেকে ঈদের আনন্দ না হোক, পরিবারকে খেয়ে–পরে বাঁচার মতো টাকা পাঠাতে পারবেন।
মৌলভীবাজারের বড়লেখা ও সদর উপজেলায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ৪ জন নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন আরও একজন। গতকাল শনিবার (৭ জুন) রাত সাড়ে ৯টার দিকে সদর উপজেলার শ্যামের কোনা এলকায় মৌলভীবাজার-শমশেরনগর সড়কে দুটি মোটরসাইকেল মুখোমুখি সংঘর্ষে জুবেদ মিয়া (২৮) ও কমরুল মিয়া (৩০) নামে দুজন নিহত হন।
১ ঘণ্টা আগেবেজিন নামে একজন জানান, বিকেল থেকে কাজ শুরু হয়েছে আনুমানিক ভোর চারটা পর্যন্ত চলবে। এই কাজে অনেক পরিশ্রম করতে হয়। তারা পাঁচ থেকে ছয় জন লোক এখানে কাজ করতে এসেছেন।
১ ঘণ্টা আগেবরিশালে কোস্টগার্ডের দায়িত্ব পালনে বাধার অভিযোগে দায়ের করা মামলার পর ঢাকা-বরিশাল নৌরুটের যাত্রীবাহী নৌযান এমভি কীর্তনখোলা-১০ লঞ্চের রুট পারমিট সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে।
২ ঘণ্টা আগেচট্টগ্রামের আনোয়ারায় মাংস কাটতে গিয়ে প্রায় ১ শ মানুষ আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। পশু জবাই ও মাংস কাটতে গিয়ে হাত কেটে চিকিৎসা নিতে প্রায় ১০০ জন মানুষ এসেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। কেউ কেউ প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেলেও অনেকেই ভর্তি হয়েছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। কেউ গরু কোরবানি
২ ঘণ্টা আগে