Ajker Patrika

রাবিতে তাহের হত্যার দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
রাবিতে তাহের হত্যার দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস তাহের হত্যা মামলায় দুজনকে মৃত্যুদণ্ড ও দুজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের করা আপিল খারিজ করে আজ মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এই রায় দেন।

রায়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের তৎকালীন সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও নিহত ড. তাহেরের বাসার তত্ত্বাবধায়ক (কেয়ারটেকার) মো. জাহাঙ্গীর আলমের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়েছে। এ ছাড়া জাহাঙ্গীর আলমের ভাই নাজমুল আলম ও নাজমুল আলমের স্ত্রীর ভাই আব্দুস সালামের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।

এখন আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ করার সুযোগ পাবেন সংক্ষুব্ধরা। রিভিউ খারিজ হলে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করার সুযোগ পাবেন আসামিরা। প্রাণ ভিক্ষার আবেদন না করলে বা ওই আবেদন করার পর তা খারিজ হলে জেল কোড অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে পারবে সরকার।

রায়ের পর অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘এটি দেশের ইতিহাসে জঘন্যতম হত্যা মামলা। অধ্যাপক তাহের বলেছিলেন, নিয়ম অনুসারে মহিউদ্দিনের পদোন্নতি হবে না। তিনি শুধু তাঁর নিজের প্রমোশনের জন্য একজন মানুষকে এভাবে হত্যা করেছেন। কোনোভাবে এটা মেনে নেওয়া যায় না। এটা ঘৃণ্য কাজ। এর মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হয়েছে। এই রায়ের ফলে অন্যদের কাছে বার্তা যাবে যে, এ ধরনের কাজ করলে আদালতের কাছ থেকে সর্বোচ্চ শাস্তি পেতে হবে।’

এদিকে আপিল বিভাগের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অধ্যাপক তাহেরের পরিবারের সদস্যরা। তাহেরের স্ত্রী সুলতানা আহমেদ বলেন, ‘১৬ বছর রায়ের জন্য অনেক সংগ্রাম করেছি, অনেক দুঃখ-কষ্ট ভোগ করেছি। রায় কার্যকর হলে পরিপূর্ণভাবে সন্তুষ্ট হব।’

গত ২২ ফেব্রুয়ারি তাহের হত্যা মামলায় হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানি শুরু হয়। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ। আসামি পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, এস এম শাহজাহান ও ব্যারিস্টার ইমরান সিদ্দিকী। গত ১৬ মার্চ উভয় পক্ষের শুনানি শেষে মঙ্গলবার রায়ের দিন ধার্য করা হয়েছিল।

প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কোয়ার্টারের ম্যানহোল থেকে অধ্যাপক তাহেরের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনায় নিহতের ছেলে সানজিদ আলভি আহমেদ মতিহার থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা করেন। ওই মামলায় ২০০৮ সালের ২২ মে রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল চারজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং দুজনকে খালাস দেন। পরে ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের করা আপিল নিষ্পত্তি করে হাইকোর্ট দুজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখে অন্য দুজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।

হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধেও আপিল করেন আসামিরা। অন্যদিকে সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া দুজনের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। আসামিপক্ষের আইনজীবী ইমরান এ সিদ্দিক সাংবাদিকদের বলেন, আসামিদের অনুমতি পেলে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হলে আমরা রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) আবেদন করব।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত