Ajker Patrika

আদালতের নির্দেশে ভাঙার পরও গড়ে উঠছে ভাটা

নাঈম ইসলাম, ধামরাই
আদালতের নির্দেশে ভাঙার পরও গড়ে উঠছে ভাটা

ধামরাইয়ে হাই কোর্টের নির্দেশে গত ১ অক্টোবর জেলা প্রশাসন এবং উপজেলা প্রশাসনের যৌথ অভিযানে ৭টি অবৈধ ইটভাটার চিমনি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আবারও নতুন করে চিমনি গড়ে চালু করা হয়েছে ইটভাটা। প্রশাসন ভেঙে দেওয়ার পরও কার নির্দেশে এসব ভাটা নতুন করে গড়ে তোলা হচ্ছে সে বিষয়ে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি ভাটা-মালিকেরা। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তদারকির অভাবে ভাঙার পরও আবার নতুন করে চিমনি তৈরি করে ভাটা চালু করা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাই কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী ঢাকা জেলা প্রশাসন এবং ধামরাই উপজেলা প্রশাসন প্রায় ৭১টি অবৈধ ইটভাটার তালিকা করেছেন। এসব ভাটার ৩ থেকে ৪ বছর ধরে পরিবেশের ছাড়পত্র ও ডি. সি. লাইসেন্স নেই এবং ভবিষ্যতে এসব কাগজপত্র নতুন করে পাওয়ারও কোনো সম্ভাবনা নেই। এসব ইটভাটা ভেঙে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ধামরাই উপজেলা প্রশাসন।

সেই তালিকা অনুযায়ী চলতি মাসের ১ অক্টোবর ঢাকা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জনাব মো. মঈনুল হক ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফারজানা আক্তারের যৌথ নেতৃত্বে এসব অবৈধ ইটভাটায় অভিযান চালানো হয়। ওই দিন ধামরাইয়ের যুবলীগ নেতা মো. আবদুল লতিফের মালিকানাধীন নান্নার ইউনিয়নে অবস্থিত একতা ব্রিকস (বর্তমান নাম মেসার্স লামিয়া ব্রিকস-৫) এবং মেসার্স এমকেবি ব্রিকস নামের দুটি অবৈধ ইট ভাটার চিমনি ভেকু যন্ত্র দিয়ে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।

এর পর দিন ধামরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকীর নেতৃত্বে সোমভাগ ইউনিয়নের ডাউটিয়া এলাকার ডাউটিয়া ব্রিকস, হালিমা ব্রিকস, সান ব্রিকস নামের তিনটি ভাটার চিমনি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এ ছাড়া কুশুরা ইউনিয়নের মধুডাঙ্গা এলাকায় মেসার্স নূর ব্রিকস ও সানোড়া ইউনিয়নের বাটুলিয়া এলাকায় মেসার্স লুৎফর ব্রিকসের চিমনি ভেঙে দেওয়া হয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, নান্নার এলাকার ভাঙা একতা ব্রিকস আবার নতুন করে চিমনি তৈরি করা হচ্ছে এবং এর নাম একতা ব্রিকস থেকে পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে মেসার্স লামিয়া ব্রিকস-৫। মেসার্স এমকেবি ব্রিকসের (কালামপুর ব্রিকস) নতুন চিমনি বানিয়ে ইট পোড়ানো হচ্ছে। এ ছাড়া ডাউটিয়া এলাকার ডাউটিয়া ব্রিকস, হালিমা ব্রিকস, সান ব্রিকস নামের তিনটি ইটভাটাই নতুন চিমনি তৈরি করছে। 

এ নিয়ে ইট ব্যবসায়ী মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘প্রশাসন এসে ভাটার চিমনি ভেঙে দিয়ে গেলেন। এর পরেই আবার সেই ভাটার মালিক নতুন চিমনি তৈরি করে ভাটা চালাচ্ছেন। এতে লাভ হলো কার? ভেঙে না দিয়ে জরিমানা করলেও তো সরকারের কোষাগারে টাকা জমা হতো। আমি প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করব যে ভাটাগুলো অবৈধ সেগুলো একেবারেই বন্ধ করে দেওয়া হোক। ভাঙার পরও প্রশাসনের তদারকি করা প্রয়োজন। তাহলে ভাঙার পর নতুন করে তৈরি করতে সাহস পাবে না।’

অনুমোদন না থাকায় প্রশাসন ভেঙে দিলেও, নতুন করে কার অনুমোদন নিয়ে চিমনি তৈরি করছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে যুবলীগ নেতা ও একতা ব্রিকসের (বর্তমান নাম মেসার্স লামিয়া ব্রিকস-৫) মালিক মো. আবদুল লতিফ বলেন, ‘তাতে আপনার কি? আপনি কোন পত্রিকার সাংবাদিক, নাম কি আপনার? আমি মিটিংয়ে আছি পরে কথা বলব।’ 

 নতুন করে ভাটার অনুমোদন পেয়েছেন কি না জানতে চাইলে মোবাইল ফোনে হালিমা ব্রিকসের মালিক আমির হামজা বলেন, ‘হ্যাঁ পাইছি। আপনি এক সময় আইসেন কথা বলুমনি আপনার সাথে।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকী বলেন, ‘এ নিয়ে আমরা তথ্য পেয়েছি। আমরা আবারও অভিযান শুরু করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইতিহাস দরজায় কড়া নেড়ে বলছে, ১৯৭১ থেকে পাকিস্তান কি শেখেনি কিছুই

‘আমাদের মরদেহ বাড়িতে নিয়ো না’

কৃষি ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের খামারবাড়ি অবরোধের ঘোষণা

মারধর করে ছাত্রলীগ কর্মীর পিঠে পাড়া দিয়ে অটোরিকশায় শহর ঘোরাল ছাত্রদল, সঙ্গে উচ্চ স্বরে গান

যশোরে আত্মগোপনে থাকা আ.লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের বাড়িতে পুলিশের অভিযান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত