Ajker Patrika

হাসপাতালে ভর্তি হাজি সেলিম 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৩ মে ২০২২, ১৮: ২৩
Thumbnail image

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) হাজি সেলিমকে কারাগার থেকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হৃদ্‌রোগ জটিলতায় আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

বর্তমানে হাসপাতালটির কার্ডিওলজি বিভাগের ৫১১ নম্বর কক্ষে বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. হারিসুল হকের তত্ত্বাবধানে তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন। 

বিষয়টি আজকের পত্রিকা'কে নিশ্চিত করেছেন অধ্যাপক হারিসুল হক। তিনি বলেন, ‘তাঁর (হাজি সেলিম) কী ধরনের জটিলতা রয়েছে এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। রিপোর্টই এখনো আসেনি। এলে বলতে পারব।’

এর আগে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নজরুল ইসলাম খান বলেন, সকাল সাড়ে দশটার দিকে হাজি সেলিমকে হাসপাতালে আনা হয়। পরে কার্ডিওলজি বিভাগের চেয়ারম্যান হারিসুল হক চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে ভর্তি করা হয়। অবস্থা বুঝে শিগগিরই একটি বোর্ড গঠন করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। 

গত রোববার আদালতে আত্মসমর্পণ করলে হাজি সেলিমকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭-এর বিচারক শহিদুল ইসলাম। একই দিনদুপুরের আগেই আত্মসমর্পণসহ জামিনের আবেদন করেন হাজি সেলিম। একই সঙ্গে আরও দুটি আবেদন করা হয়। একটি হচ্ছে উন্নত চিকিৎসার জন্য কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া এবং হাজি সেলিমের কারাগারে প্রথম শ্রেণির মর্যাদা দেওয়ার আবেদন। 

শুনানি শেষে আদালত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেন। অন্য দুটি আবেদনের বিষয়ে বলা হয়, কারাবিধি অনুযায়ী হাজি সেলিমকে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। সে অনুযায়ী আজ হাজি সেলিমকে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় ২০০৮ সালের ২৭ এপ্রিল তাঁকে ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেন বিশেষ জজ আদালত-৭। ২০০৯ সালের ২৫ অক্টোবর এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন হাজি সেলিম। আপিল শুনানি শেষে গত বছর ৯ মার্চ বিচারিক আদালতের দেওয়া ১৩ বছরের কারাদণ্ড কমিয়ে ১০ বছর বহাল রেখে রায় দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তাঁকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন হাইকোর্ট। জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের দায়ে এই সাজা দেওয়া হয়। তবে তথ্য গোপনের অভিযোগে বিচারিক আদালতে তাঁর যে তিন বছরের সাজা হয়েছিল, তা বাতিল করা হয়। 

বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। ওই দিন রায়ে বলা হয়, রায় প্রকাশের তারিখ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে হাজি সেলিমকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে। 
তবে আত্মসমর্পণ না করেই বিদেশ ঘুরে এসেছেন হাজি সেলিম, যা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। দুদক আইনজীবী বলেন, আদালতের অনুমতি না নিয়ে দণ্ডিত আসামির বিদেশ যাওয়া বেআইনি।  

গত বছরের ৯ মার্চ হাইকোর্টের ওই রায়ে বিচারকের স্বাক্ষরের পর তা এ বছর ৯ ফেব্রুয়ারি প্রকাশ করা হয়। এরপর হাজি সেলিম আপিল বিভাগে হাইকোর্টের রায় স্থগিত করার আবেদন করলে গত ২৫ এপ্রিল আপিল বিভাগ তার আবেদন খারিজ করেন। রায় প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে তাঁকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়। ওই হিসেবে ২৫ মের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে। 

২০০৭ সালের ২৪ অক্টোবর হাজি সেলিমের বিরুদ্ধে লালবাগ থানায় ১৪ কোটি ৬৫ লাখ ৬২ হাজার ৫০৩ টাকার অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন ও ৮ কোটি ৭০ লাখ ৯ হাজার ৭৫৮ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করার অভিযোগে মামলা করে দুদক। এ মামলায় ২০০৮ সালের ২৭ এপ্রিল তাঁকে দুই ধারায় ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। ২০০৯ সালের ২৫ অক্টোবর এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন হাজি সেলিম। ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি হাইকোর্ট এক রায়ে তাঁর সাজা বাতিল করেন। পরবর্তী সময়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে দুদক। ওই আপিলের শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি হাইকোর্টের রায় বাতিল করে পুনরায় হাইকোর্টে শুনানির নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত