Ajker Patrika

২০২৪ সালে সড়কে ঝরেছে ৮৫৪৩ প্রাণ, দুর্ঘটনা বেড়েছে ছোট যানে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা

দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। ২০২৪ সালে ৬ হাজার ৩৫৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৮ হাজার ৫৪৩ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১২ হাজার ৬০৮ জন। আর ২০২৩ সালে ৬ হাজার ২৬১ সড়ক দুর্ঘটনায় ৭ হাজার ৯০২ জন নিহত, ১০ হাজার ৩৭২ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া গত ১০ বছরে সড়কে ছোট যানবাহনের সংখ্যা অবাধে বেড়েছে। এসব যানবাহনের কারণে প্রাণহানির সংখ্যাও বেড়েছে।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। আজ শনিবার (৪ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হয়। যাত্রী কল্যাণ সমিতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে সড়কে দুর্ঘটনা বেড়েছে ১ দশমিক ৫৪ শতাংশ, মৃত্যু বেড়েছে ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ, আর আহতের সংখ্যা বেড়েছে ১৭ দশমিক ৭৩ শতাংশ।

গত বছর রেলপথে ৪৯৭টি দুর্ঘটনায় ৫১২ জন নিহত এবং ৩১৫ জন আহত হয়েছেন। নৌপথে ১১৮টি দুর্ঘটনায় ১৮২ জন নিহত, ২৬৭ জন আহত এবং ১৫৫ জন নিখোঁজ হয়েছেন। সড়ক, রেল ও নৌপথে মোট ৬ হাজার ৯৭৪টি দুর্ঘটনায় ৯ হাজার ২৩৭ জন নিহত এবং ১৩ হাজার ১৯০ জন আহত হয়েছেন বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিবেদন বলছে, গত বছর ২ হাজার ৩২৯টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটেছে, যা মোট সড়ক দুর্ঘটনার ৩৬ দশমিক ৬২ শতাংশ। এসব দুর্ঘটনায় ২ হাজার ৫৭০ জন নিহত এবং ৩ হাজার ১৫১ জন আহত হয়েছেন, যা মোট নিহতের ৩০ দশমিক ০৮ শতাংশ এবং মোট আহতের ২৪ দশমিক ৯৯ শতাংশ।

গত ১০ বছরে মোটরসাইকেলের সংখ্যা ১৫ লাখ থেকে বেড়ে ৬০ লাখ হয়েছে। নতুন করে ৬০ লাখ ব্যাটারিচালিত রিকশা রাস্তায় নামার পাশাপাশি ছোট যানবাহন অবাধে বেড়েছে। এসব যানবাহনের কারণে সড়কে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ভয়াবহভাবে বাড়ছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে, সড়ক দুর্ঘটনার ৩৫ দশমিক ৬৭ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ২১ দশমিক ৬৬ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ৩৫ দশমিক ৮১ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়েছে। এ ছাড়া দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৪ দশমিক ৯৩ শতাংশ ঢাকা মহানগরে, ১ দশমিক ২০ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরে এবং ০ দশমিক ৭৩ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংঘটিত হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদনটি তুলে ধরেন যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী। তিনি বলেন, সরকার বদল হলেও পরিবহন খাতে কাঠামোগত কোনো পরিবর্তন আসেনি। চাঁদাবাজির হাতবদল হয়েছে কেবল, ফিটনেসহীন যানবাহন সড়কে চলছে, আইনের অপপ্রয়োগ চলছে। বিআরটিএ রাজস্ব আদায়ে ব্যস্ত, ট্রাফিক বিভাগ জরিমানা আদায়ে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত, দুর্ঘটনা সংঘটিত হওয়ার যাবতীয় উপাদান সড়কে বিছিয়ে রাখা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে কেবল সভা-সমাবেশে, বক্তৃতা-বিবৃতি আর পত্রিকায় বিজ্ঞাপণ দিয়ে সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।

মোজাম্মেল হকের মতে, সড়ক দুর্ঘটনা প্রকৌশলগত ত্রুটির কারণে ঘটে থাকে। সমাধানও প্রকৌশলগত হওয়া জরুরি।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস। তাঁর মতে, সড়ক দুর্ঘটনার মাধ্যমে ‘কাঠামোগত হত্যাকাণ্ড’ হচ্ছে। গণ-অভ্যুত্থানের সুফল পরিবহন খাতে পড়েনি।

সিঙ্গাপুর বছরে সড়ক দুর্ঘটনার হার এক শতাংশে নামিয়ে এনেছে উল্লেখ করে রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, রাস্তা ঠিক থাকলে, চালকের লাইসেন্স থাকলে, সিগন্যাল ঠিক থাকলে এবং সবাই নির্দেশনা মেনে চললে তারা দুর্ঘটনা শূন্যে নামিয়ে আনার কথা বলছে। তার অর্থ, মানুষ চাইলেই এগুলো দূর করতে পারে। সরকার তা চাইছে না, বাস মালিকেরা তা চাইছেন না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১৩: ৩৬
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

রাজধানীর ফার্মগেটে মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে এক পথচারী নিহত হয়েছেন। আজ রোববার দুপুর ১২টা ২০ মিনিটের দিকে ফার্মগেট মেট্রোরেল স্টেশনের নিচে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর থেকে মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ রয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই ব্যক্তি ফুটপাত দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। মেট্রোরেল চলাচলের মুহূর্তে ওপর থেকে একটি বিয়ারিং প্যাড তাঁর মাথায় পড়ে। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। তবে নিহতের নাম-পরিচয় এখনো জানা যায়নি।

দুর্ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে।

তেজগাঁও থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শহিদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা ডিউটিরত অবস্থায় কাছেই ছিলাম। খবর পেয়ে দ্রুত গিয়ে দেখি একজন ব্যক্তি রাস্তায় মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন।’

এদিকে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) সূত্র জানিয়েছে, এ ঘটনার কারণে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত পুরো পথেই মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। কখন চালু হবে তা নিশ্চিত করা হয়নি।

এর আগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকা মেট্রোরেলে একটি বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে। এর ফলে আগারগাঁও থেকে মতিঝিলে পর্যন্ত ১১ ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে। এ ঘটনায় বিশেষজ্ঞ ও সংশ্লিষ্টদের মধ্যে গুরুতর নিরাপত্তা উদ্বেগ তৈরি হয়। এর মধ্যে দ্বিতীয়বার বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ল।

মেট্রোরেলের লাইনের নিচে উড়াল পথের পিলারের সঙ্গে রাবারের বিয়ারিং প্যাড থাকে। এগুলোর প্রতিটির ওজন ১৪০ বা ১৫০ কেজি। এসব বিয়ারিং প্যাড ছাড়া ট্রেন চালালে উড়াল পথ দেবে যাওয়া কিংবা স্থানচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ জন্যেই মেট্রোরেলের চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে ডিএমটিসিএল সূত্র।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দুর্গাপুর সীমান্ত থেকে মালিকবিহীন ২৬৯ বোতল ফেনসিডিল জব্দ

দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
জব্দ করা ফেনসিডিল। ছবি: সংগৃহীত
জব্দ করা ফেনসিডিল। ছবি: সংগৃহীত

নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলা সীমান্ত থেকে ২৬৯ বোতল ভারতীয় ফেনসিডিল জব্দ করেছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা। জব্দ করা এসব মাদক নেত্রকোনা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে জমা দেওয়া হবে। রোববার (২৬ অক্টোবর) সকালে এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানান নেত্রকোনা ব্যাটালিয়নের (৩১ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ এস এম কারুজ্জামান।

এর আগে গতকাল শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে দুর্গাপুর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের ফান্দা নামক এলাকা থেকে এসব মাদক জব্দ করেন বিজিবির সদস্যরা।

বিজ্ঞপ্তিতে ৩১ বিজিবির অধিনায়ক জানান, নিজস্ব গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে নেত্রকোনা ব্যাটালিয়নের অধীনস্থ বারমারী বিওপির (বর্ডার অবজারভেশন পোস্ট) ছয় সদস্যের একটি বিশেষ টহল দল মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে ওই বিওপির দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত পিলার ১১৬২ নম্বর হতে আনুমানিক ৪০০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ফান্দা নামক এলাকা থেকে টহল দলটি মালিকবিহীন ২৬৯ বোতল ভারতীয় ফেনসিডিল জব্দ করতে সক্ষম হয় বলে জানান বিজিবির এই কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গাইবান্ধায় স্বামীর ছুরিকাঘাতে আহত স্ত্রীর মৃত্যু

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে স্বামীর ছুরিকাঘাতে আহত আজেদা বেগম (৩৫) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। শনিবার দিবাগত রাতে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

এর আগে গত মঙ্গলবার গোবিন্দগঞ্জ পৌর শহরের এমপি পাড়ায় ছুরিকাঘাতের এই ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত স্বামী শামীম মিয়া (৪২) গোবিন্দগঞ্জের কামারদহ ইউনিয়নের বেতগারড়া গ্রামের মাফু মিয়ার ছেলে। তিনি স্থানীয় একটি হোটেলে কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন। তিনি ঘটনার পর থেকে পলাতক।

নিহত আজেদা বেগম উপজেলার চাঁদপাড়া গ্রামের রাজা মিয়ার মেয়ে। আট বছর বয়সী ছেলে আতিক ও ১৬ বছর বয়সী মেয়ে সোনিয়াকে নিয়ে তাঁরা কোনোমতে জীবন যাপন করতেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, অভাবের সংসারে আজেদা অন্যের বাসায় কাজ করতেন। শামীম হোটেলে কাজ করলেও নেশাজাতীয় দ্রব্যে আসক্তি ও মোবাইল ফোনে জুয়া খেলায় জড়িয়ে পড়েন। এসব নিয়ে দাম্পত্য জীবনে প্রায়ই কলহ লেগে থাকত।

গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসি বুলবুল ইসলাম বলেন, ‘স্বামীর ছুরিকাঘাতে আহত নারীর মৃত্যুর খবর স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে শুনেছি। তবে এখন পর্যন্ত কেউ থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গাংনীতে কারেন্ট পোকার আক্রমণে কৃষকের সর্বনাশ: ভেজাল কীটনাশকের অভিযোগ

রাকিবুল ইসলাম, গাংনী (মেহেরপুর) 
উপজেলার তেরাইল-দেবীপুর মাঠের কৃষক মিরাজুল ইসলামের ক্ষতিগ্রস্ত জমি থেকে গতকাল সকালে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
উপজেলার তেরাইল-দেবীপুর মাঠের কৃষক মিরাজুল ইসলামের ক্ষতিগ্রস্ত জমি থেকে গতকাল সকালে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

কার্তিকের এই সময়ে যখন কৃষকের মাঠভরা ধান দেখে আনন্দের নিশ্বাস ফেলার কথা, তখন মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার দেবীপুর-তেরাইল মাঠের রোপা আমনচাষি মিরাজুল ইসলামকে হতাশা নিয়েই ছুটতে হচ্ছে মাঠে। কারেন্ট পোকার (ঘাসফড়িং) আক্রমণে তাঁর দেড় বিঘা জমির ধান একেবারে শেষ হয়ে গেছে।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক মিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘এত কষ্টের সব ধান আমার নষ্ট হয়ে গেল। মাঠে আমার ধান ছিল সেরা, এখন একেবারে জিরো। কীটনাশক প্রয়োগ করে অনেকের সেরে গেছে, কিন্তু আমি সব ধরনের বিষ ব্যবহার করেও কোনো সুফল পাইনি। আমার এতটাই ক্ষতি হয়েছে, যা কল্পনা করা যায় না।’ তিনি আরও বলেন, ‘কৃষি অফিস থেকে তেমন সঠিক কোনো দিকনির্দেশনাও পাইনি। কৃষি অফিস থেকে যদি সঠিক নির্দেশনা পাওয়া যেত কোন কীটনাশক ব্যবহার করলে ভালো হবে, তাহলে আমাদের অনেক উপকার হতো।’

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মজুরি খরচ, সার ও কীটনাশকের বাড়তি দামে কৃষকের নাভিশ্বাস উঠেছে। এর মধ্যেই আমনে কারেন্ট পোকার আক্রমণ মারাত্মক রূপ নিয়েছে। পোকার আক্রমণে কৃষক মিরাজুল ইসলামের ধানের গাছ শুকিয়ে সাদা হয়ে শুধু খড় দেখা যাচ্ছে। যেটুকু আছে, তা-ও দিন দিন নষ্ট হচ্ছে।

স্থানীয় চাষি আব্দুল মজিদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আগে থাইডন, বাসোডিনের মতো বিষ ছিল, যা প্রয়োগ করলে সঙ্গে সঙ্গে কাজ হতো। কিন্তু এখনকার বিষে কোনো কাজ হয় না, এগুলো ভেজালে পরিপূর্ণ। বিষ কোম্পানিগুলো আসলে কী বিষ দেয়? এভাবে চাষি ক্ষতিগ্রস্ত হলে কোথায় যাবে?’

আরেক ধানচাষি মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘মিরাজ নামের এই চাষির ধান কারেন্ট পোকার আক্রমণে এতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যে বিচালি (খড়) করাও সম্ভব না। ধানের জমি খড়ের মতো হয়ে গেছে। এই মাঠে তার ধান অত্যন্ত সুন্দর হয়েছিল এবং সে তার ধানের প্রতি খুবই যত্নবান ছিল। সে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’

গাংনী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. আরাফাত মিয়া বলেন, ‘রোপা আমন মৌসুমে স্বাভাবিকভাবে এই ধরনের রোগ দেখা দেয়। আমরা অনেক ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণে এনেছি পুরোপুরি। বাজারে বিভিন্ন ভেজাল কীটনাশক রয়েছে। এর মধ্য থেকে আসলটা বাছাই করে যদি সঠিকভাবে ব্যবহার করা যায়, তাহলে এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এ ছাড়া ইউনিয়ন পর্যায়ে যেসব উপসহকারী রয়েছে, তাদের বলা আছে কৃষকদের সঙ্গে সার্বিক যোগাযোগ রেখে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত