Ajker Patrika

পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নে ৭ দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০: ৪৭
Thumbnail image
পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নে সাতটি দাবি জানিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলন।

ভূমি সমস্যার স্থায়ী সমাধানসহ পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নে সাতটি দাবি জানিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলন। আজ সোমবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের সেমিনার কক্ষে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২৭ বছর: প্রত্যাশা ও অগ্রগতি’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় সংগঠনের যুগ্ম সমন্বয়কারী জাকির হোসেন লিখিত বক্তব্যে দাবিগুলো তুলে ধরেন।

দাবি গুলোর মধ্যে রয়েছে—পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য সময়সূচি ভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করে এই চুক্তির দ্রুত ও যথাযথ বাস্তবায়ন করতে হবে; পাহাড়ে সামরিক কর্তৃত্ব ও পরোক্ষ সামরিক শাসনের স্থায়ী অবসান করতে হবে; আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ সমূহকে প্রতিনিধিত্বমূলক গণতান্ত্রিকীকরণ ও স্থানীয় শাসন নিশ্চিতকরণে পার্বত্য চুক্তি মোতাবেক যথাযথ ক্ষমতায়ন করতে হবে; পার্বত্য ভূমি সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনকে কার্যকরের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তু ও ভারত প্রত্যাগত জুম শরণার্থীদের পুনর্বাসন করে তাঁদের ভূমি অধিকার নিশ্চিত করতে হবে; দেশের মূলস্রোতধারার অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও স্থায়িত্বশীল উন্নয়নে পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীদের অংশীদারত্ব নিশ্চিত করতে হবে; ইউনিয়ন পরিষদসহ সকল স্তরের স্থানীয় সরকারে সমতলের আদিবাসীদের জন্য বিশেষ আসন সংরক্ষণ ও আদিবাসী জনগণের জীবনমান উন্নয়নে বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে ও সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন গঠন করতে হবে।

জাকির হোসেন বলেন, বাংলাদেশ একটি বহুজাতি, বহুভাষা এবং বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির দেশ। বৃহত্তর বাঙালি জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি এখানে ৫৪টিরও বেশি আদিবাসী জাতি সুপ্রাচীনকাল থেকে নিজস্ব সংস্কৃতি, ধর্ম এবং সমাজব্যবস্থা নিয়ে বসবাস করছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলায় ১১টি জুম আদিবাসী সম্প্রদায়সহ অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর উপস্থিতি দেশের সাংস্কৃতিক ও জাতিগত বৈচিত্র্যের অন্যতম প্রমাণ। তবে বিশ্বায়ন এবং তথাকথিত আকাশ-সংস্কৃতির প্রভাবে তাদের নিজস্ব জীবনধারা ও সংস্কৃতি ক্রমশ বিলুপ্তির পথে।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ জাসদ সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান বলেন, ‘শেখ হাসিনার আমলে শান্তি চুক্তি হয়েছে। এই চুক্তির জন্য তিনি নোবেল পাওয়ার অনেক চেষ্টা করেছেন। অনেক টাকাও খরচ করেছেন। নোবেল না পেয়ে ডক্টরেট ডিগ্রি কিনেছেন। ২৭ বছর হয়ে গেলেও সেই চুক্তির এখনো বাস্তবায়ন হয়নি।’

সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘হাজারো মানুষের রক্ত দেওয়ার মধ্য দিয়ে এবারের যে গণ-অভ্যুত্থান, তার অন্যতম কথা হচ্ছে বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ। এটা কি কথার কথা থেকে যাবে। আসলে এটা বাস্তবায়ন হয় না কেন। ২৭ বছর আগে যে পার্বত্য চুক্তি হয়েছে, যেটাকে আমরা শান্তি চুক্তি বলে অবহিত করলাম, সেটাও বাস্তবায়ন না হওয়া প্রশ্নবিদ্ধ।’

বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫৩ বছরে ক্ষমতাসীন দলগুলো যেসব চুক্তি করেছেন সেগুলো ভাঙার জন্য করেছেন। সংবিধানে অনেক অসম্পূর্ণতা রয়েছে। দেশে পঞ্চাশের বেশি জাতিগোষ্ঠী থাকলেও তার স্বীকৃতি নেই।’

এ আলোচনায় আরও অংশ নেয় সাংবাদিক আবু সাঈদ খান, এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য অনিক রায়, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের অর্থ সম্পাদক প্রমিলা মেনথেইন প্রমুখ।

সভায় সভাপতিত্ব করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম সমন্বয়কারী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক খায়রুল ইসলাম চৌধুরী। সঞ্চালনা করেন আরেক যুগ্ম সমন্বয়কারী দীপায়ন খীসা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত