Ajker Patrika

দখলমুক্ত হচ্ছে ঢাকার ৫৮ পুকুর

তোফাজ্জল হোসেন রুবেল, ঢাকা 
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৫: ৩০
দখলমুক্ত হচ্ছে ঢাকার ৫৮ পুকুর

রাজধানী ঢাকায় বাস্তবে উধাও হয়ে যাওয়া ৫৮টি সরকারি পুকুর চিহ্নিত করা হয়েছে। জরিপে পুকুর থাকলেও সেসব স্থান ভরাট করে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করেছে দখলদারেরা। এসব পুকুরের বেশির ভাগ মতিঝিল, মোহাম্মদপুর, মিরপুর ও তেজগাঁও রাজস্ব সার্কেলে।

সম্প্রতি সরকারের উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্তের পর এই ৫৮ পুকুর চিহ্নিত করা হয়েছে। পুকুরগুলো উদ্ধার করে স্বরূপে ফিরিয়ে আনতে ঢাকার জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে মালিকানা হস্তান্তর করা হয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (রাজউক)। রাজউকের সূত্র বলেছে, পুকুরগুলো সংস্কারে প্রকল্প তৈরি করে দ্রুত দখলদার উচ্ছেদ শুরু করা হবে।

জানতে চাইলে রাজউকের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) ছিদ্দিকুর রহমান সরকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জেলা প্রশাসন থেকে পুকুরগুলো আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আমরা এসব পুকুর দ্রুত দখলে নেব। কিছু পুকুর ভরাট করে স্থাপনা করা হয়েছে, সেগুলো উচ্ছেদ করব। এরপর সেখানে ওয়াকওয়ে ও গাছ লাগানো হবে। এমনভাবে উন্নয়ন করা হবে, যাতে আগামী ১০০ বছরেও সেখানে কোনো দখলদার হাত না দিতে পারে।’

রাজউকের সূত্র জানায়, রাজধানীতে ঢাকা জেলা প্রশাসনের মালিকানাধীন পুকুরগুলোর নথিপত্র ঘেঁটে তথ্য-উপাত্ত নিয়ে রাজউককে হস্তান্তর করা হয়েছে। নথিতে এসব পুকুরের মধ্যে কোতোয়ালি মৌজায় রয়েছে সূত্রাপুরের আরএস ৭৩৯৬ দাগে ৮০ শতাংশ, সিটি জরিপ ২০০০৫ দাগে ৭০ শতাংশ, আরএস ১৪০২৪ দাগে ১৮ শতাংশ, ওয়ারীর আরএস ৪১১৫ দাগে ৫০ শতাংশ, রমনা মৌজায় আরএস ৩৯৫ দাগে ১ একর ৮৫ শতাংশ, আরএস ৭৮৩ দাগে ৭০ শতাংশ, আরএস ৭৯৮ দাগে ১৮ শতাংশ আয়তনের পুকুর রয়েছে।

সরকারি নথিতে মতিঝিল রাজস্ব সার্কেলে ১৩টি পুকুর থাকলেও এখন সেসব স্থানে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বা বাড়ি তৈরি করা হয়েছে। এই ১৩টির মধ্যে যাত্রাবাড়ী মৌজায় সিটি জরিপ ৪৮০৮ দাগে ৮৫ শতাংশ ও সিটি জরিপ ২৭৫২ দাগে ১৪ শতাংশ, মাণ্ডায় ১৮২৫ দাগে ১৭ শতাংশ, দনিয়ায় ৭৭৮২ দাগে ২১ শতাংশ ও ১৭৬০ দাগে ২১ শতাংশ, কদমতলীতে ৯৩০১ দাগে ১ একর ৯৭ শতাংশ ও ৯৭১৩ দাগে ৪ একর ৮৮ শতাংশ, ব্রাহ্মণচিরণে ২৪৩৩ দাগে ২০ শতাংশ ও ২১১০ দাগে ২৬ শতাংশ, মতিঝিলে ২১০৮ দাগে ১ একর ৯২ শতাংশ, রাজারবাগে ৯০১০ দাগে ৪৭ শতাংশ ও ৭৩৪০ দাগে ১১ শতাংশ এবং ১৯০৪ দাগে ২৬ শতাংশে পুকুর ছিল। লালবাগ রাজস্ব সার্কেলের কালুনগরে আরএস ৫৮০ দাগে ২০ কাঠা, আরএস ১৫৩০ দাগে ৬১ শতাংশ এবং আরএস ১৬৬৫ দাগে ২০ শতাংশ, লালবাগে আরএস ৫৬৫৭ দাগে ১ একর ২০ শতাংশ এবং সিটি জরিপ ১৭১১ দাগে ৫৮ শতাংশ, হাজারীবাগ মৌজায় আরএস ৬০৩৪ দাগে একটি পুকুর, ক্যান্টনমেন্ট সার্কেলে আরএস ২৮২৭ দাগে ৪৩ শতাংশ, দক্ষিণখান ভূমি অফিসের আওতায় আরএস ৫৬৮২ দাগে ২৯ শতাংশ, আরএস ১১৬৬৩ দাগে ৫৯ শতাংশ, দক্ষিণখানে ৫০ শতাংশ, আরএস ১১৫৬২ দাগে একটি, ১১৫১২ দাগে ৩৬ শতাংশ, আরএস ৫৭৪৭ দাগে ১ একর ২৯ শতাংশ, ১১২৭০ দাগে ৩০ শতাংশ, উত্তরখানে এসএ ১৯২৩ দাগে ৩৪ শতাংশ, আনুলে আরএস ৪১ দাগে ৪৩ শতাংশ, আরএস ৯৩ দাগে ৪৮ শতাংশ, উত্তরখানে সিটি জরিপ ৫৫১৬ দাগে ৩৫ শতাংশ জমিতে পুকুরের তথ্য রয়েছে।

সূত্র জানায়, মোহাম্মদপুর রাজস্ব সার্কেলের লালমাটিয়া মৌজায় সিটি জরিপে ২ একর ১১ শতাংশ, মিরপুর রাজস্ব সার্কেলের বসুপাড়া মৌজায় ১১৩৫ দাগে ৬৮ শতাংশ, ছোট দিয়াবাড়িতে ২৩৪ দাগে ৭৫ শতাংশ, মিরপুরে ৩৪৩ দাগে ১৫ শতাংশ, গড়ান চটবাড়িতে ২৪৩৪ দাগে ১৩ শতাংশ, বাউনিয়া মৌজায় ১২৫৫২ দাগে ৭৮ শতাংশ, চণ্ডালভোগে ৩০ দাগে ৬৩ শতাংশ এবং দিয়াবাড়িতে ২০২৫ দাগে ৪৫ শতাংশ আয়তনের পুকুর রয়েছে। তেজগাঁও রাজস্ব সার্কেলে ছোট বেরাইদে সিটি জরিপে ৪৪২ দাগে ১৮ শতাংশ, গজারিয়ায় ১০৩৫০ দাগে ৪০ শতাংশ, বাড্ডায় ৫৪০৮ দাগে ৬৮ শতাংশ, সাতারকুলে ৩৮৬০ দাগে ২৮ শতাংশ, ৮৪৯ দাগে ৯৩ শতাংশ, ৪৯৪৪ দাগে ৪০ শতাংশ, ২১৯১৩ দাগে ১১ শতাংশ, ২১৯১৫ দাগে ১৭ শতাংশ এবং ২১৯১৮ দাগে ২৪ শতাংশে পুকুর ছিল।

গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টারের (আরডিআরসি) এক সমীক্ষা অনুযায়ী, তিন-চার দশকে ঢাকার প্রায় ১ হাজার ৯০০ পুকুর ও জলাশয় দখল এবং ভরাট হয়েছে। ১৯৮৫ সালেও রাজধানীতে ২ হাজারের বেশি পুকুর ছিল। ২০২১ সালেও আরডিআরসির হিসাব অনুযায়ী, ছোট-বড় মিলিয়ে পুকুরের সংখ্যা ছিল মাত্র ২৪১। তবে বাস্তবে এসব পুকুরের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।

অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে এই ৫৮ পুকুর উদ্ধার করে সরকারি ব্যবস্থাপনায় নেওয়া হলে তা মাইলফলক অর্জন হবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজউকের প্রধান স্থপতি মো. মোশতাক আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পুকুরগুলো সংস্কার ও সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য আমরা প্রকল্প প্রস্তাব তৈরি করেছি। এটি পাস হয়ে এলে কাজ শুরু হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তাড়াশে গরুবোঝাই নছিমনের চাপায় প্রতিবন্ধী যুবক নিহত

তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) সংবাদদাতা
লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে গরুবোঝাই নছিমনের চাপায় হাফিজুর রহমান (৩৭) নামের এক প্রতিবন্ধী যুবক নিহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টায় তাড়াশ পৌর সদরের বারোয়ারিতলা মোড়ে এই ঘটনা ঘটে। নিহত হাফিজুর রহমান তাড়াশ দক্ষিণপাড়ার রবিউল করিমের ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হাফিজুর রহমান রাস্তা পারাপারের সময় একটি গরুবোঝাই নছিমন গাড়ি তাঁকে চাপা দিলে তিনি গুরুতর আহত হন। স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধার করে তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউর রহমান বলেন, লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নছিমনটি থানার হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে। ,

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জামালপুরে ৩৫ বছরেও হয়নি সেতু, দুই জেলার মানুষের দুর্ভোগ চরমে

জামালপুর প্রতিনিধি 
এলাকাবাসী নিজেদের অর্থে তৈরি করে বাঁশ ও কাঠের সেতু। সেই সেতু দিয়ে এলাকার মানুষ চলাচল করছে বছরের পর বছর। ছবি: আজকের পত্রিকা
এলাকাবাসী নিজেদের অর্থে তৈরি করে বাঁশ ও কাঠের সেতু। সেই সেতু দিয়ে এলাকার মানুষ চলাচল করছে বছরের পর বছর। ছবি: আজকের পত্রিকা

জামালপুরের মাদারগঞ্জে একটি সেতুর অভাবে ৩৫ বছর ধরে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে ১৩টি গ্রামের অর্ধলক্ষাধিক মানুষ। চলাচল ও কৃষিপণ্য পরিবহনে এই দুর্বিষহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে ১৯৯০ সালের এক ভয়াবহ বন্যার পর, যখন যমুনার ভাঙনে গ্রামগুলো উপজেলা সদর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্যোগে নির্মিত নড়বড়ে বাঁশ ও কাঠের সেতুটিই এখন এই এলাকার মানুষের একমাত্র ভরসা। তবে ঝুঁকিপূর্ণ এই সেতু পার হতে গিয়ে প্রতিনিয়ত সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাদের।

১৯৯০ সালের বন্যায় যমুনা নদীর তীব্র ভাঙনে জামালপুরের মাদারগঞ্জের বালিজুড়ী ইউনিয়নের নাংলাসহ ১৩টি গ্রাম উপজেলা সদর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সেই ভাঙনে যমুনার শাখা নদী বড় নদীতে পরিণত হয়, যা পারাপারের জন্য কোনো পাকা সেতু নির্মিত হয়নি।

সেতুবিহীন এই দুর্ভোগ পোহাচ্ছে মাদারগঞ্জ উপজেলার বালিজুড়ী ইউনিয়নের নাংলা, নাদাগাড়ী, পশ্চিম সুখনগরী এবং জোড়খালী ইউনিয়নের ফুলজোড়, কাইজের চর, আতামারীর বাসিন্দারা। এ ছাড়া বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার কর্ণিবাড়ী ও বোহাইল ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের মানুষও এই পথে যাতায়াত করে।

নাংলা গ্রামের ৬৫ বছর বয়সী আলতাফুর রহমান জানান, ১৯৯০ সালের ভাঙনে যমুনার শাখা নদী বড় নদীতে পরিণত হয়। এলাকার মানুষ স্বেচ্ছাশ্রম আর চাঁদা তুলে বাঁশ-কাঠের এই সেতু তৈরি করেছে। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে। চরাঞ্চলের কৃষক ফসল—মরিচ, পেঁয়াজ, আলু, পাট সঠিক দামে বাজারে বিক্রি করতে পারেন না। যোগাযোগব্যবস্থার সমস্যার কারণে ফসলের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হতে হয়।

পশ্চিম সুখনগরী গ্রামের মো. আব্দুর রহিম বলেন, ‘৩৫ বছরেও সেতু হয়নি। মনে হয় মাদারগঞ্জ উপজেলার মানচিত্র থেকে আমরা বাদ পড়ে যাচ্ছি। সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। সাতবার ভোট দিয়েও স্থানীয় এমপির নজরে আসেনি এই দুর্ভোগ। ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে, অনেক কোমলমতি শিশু জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নড়বড়ে সেতু পার হতে ভয় পায়।’

নাদাগাড়ী গ্রামের ইব্রাহিম মিয়া জানান, জামালপুরের শেষ সীমান্ত, গাইবান্ধা জেলা এবং বগুড়ার হাজার হাজার মানুষ এই পথ ব্যবহার করে, কিন্তু ৩৫ বছরেও এখানে একটি পাকা সেতু নির্মাণ করা হয়নি, এটি খুবই দুর্ভাগ্যজনক।

মাদারগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাদির শাহ বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখানে বেইলি ব্রিজ করার সুযোগ নেই। তবে সড়ক ও জনপথ (সওজ) এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) সঙ্গে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা করা হবে।

এলাকাবাসীর জোর দাবি, দ্রুত একটি পাকা সেতু নির্মাণ করা হলে দীর্ঘদিনের অসহনীয় দুর্ভোগের অবসান হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাউজানে সিএনজি-কাভার্ড ভ্যান সংঘর্ষ, সবজি ব্যবসায়ী নিহত; আহত ৩

রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি 
নিহত নাজিম উদ্দীন । ছবি: সংগৃহীত
নিহত নাজিম উদ্দীন । ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও কাভার্ড ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে নাজিম উদ্দীন (৪০) নামের এক সবজি ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। এ সময় আরও তিনজন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সকাল ৭টার দিকে রাউজান উপজেলার গহিরা ইউনিয়নের অদুদিয়া সড়কের আতুন্নিরঘাটা এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত নাজিম উদ্দীন চিকদাইর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের রমজান আলী তালুকদার বাড়ির মোহাম্মদ ইদ্রিস মিয়ার ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম শহর থেকে মুরগির বাচ্চাবাহী একটি কাভার্ড ভ্যান আসার সময় নতুন হাট থেকে ছেড়ে আসা একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে সিএনজিচালিত অটোরিকশাটি দুমড়েমুচড়ে যায় এবং কাভার্ড ভ্যানটি সড়ক থেকে ছিটকে ধানখেতে পড়ে যায়।

এতে সিএনজিতে থাকা যাত্রী নাজিম উদ্দীন ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন। আহত তিনজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আহত ব্যক্তিদের পরিচয় পাওয়া যায়নি। নিহত নাজিমের সঙ্গে থাকা মানিক নামের এক যুবক জানান, নাজিম উদ্দীন ভোরে সবজি কেনার জন্য নতুন হাট থেকে অটোরিকশায় করে চট্টগ্রাম নগরীতে যাচ্ছিলেন। তাঁদের অভিযোগ, কাভার্ড ভ্যানটি রং সাইডে এসে অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয়। নিহত নাজিম উদ্দীন চার কন্যাসন্তানের জনক ছিলেন।

রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, দুর্ঘটনার পর রাউজান থানা-পুলিশ গাড়ি দুটি উদ্ধার করে থানায় নিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নারায়ণগঞ্জে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে যুবককে মারধর, হাসপাতালে মৃত্যু

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নারায়ণগঞ্জ শহরের খানপুরে ধর্ষণের অভিযোগে বাসা থেকে তুলে নিয়ে আবু হানিফ নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সোমবার (২০ অক্টোবর) রাত ৯টার দিকে নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার শাহাদাত হোসেন। নিহত আবু হানিফ (৩০) পেশায় নিরাপত্তাপ্রহরী। তিনি বাগেরহাটের শরণখোলার আবুল কালামের ছেলে।

সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাছির আহমদ বলেন, দুপুরে ওই যুবকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে এলাকার কয়েকজন যুবক মারধর করেন। বাসা থেকে তুলে নিয়ে খানপুর জোড়া ট্যাংকি এলাকায় তাঁকে মারধর করা হয়।

নিহত ব্যক্তির মেজ বোন রাবেয়া বলেন, ‘দুপুর ১২টার দিকে হানিফ বাসায় শুয়ে ছিলেন। এলাকার কিছু ছেলে বাসায় এসেই ভাইয়েরে মারতে মারতে নিয়ে চলে যায়। আমাদের কোনো বাধা শোনেনি, কী কারণে মারতেছে তা-ও বলেনি। অনেক পরে বলতেছে, সে (হানিফ) নাকি কোন বাচ্চারে ধর্ষণ করতে চাইছে। কিন্তু কোন মেয়ে, কবে তার কিছুই আমরা জানি না।’

নিহত ব্যক্তির ভগ্নিপতি মো. ইব্রাহিম বলেন, ‘শুরু থেকে আমি ছিলাম না। আমি ছিলাম ডিউটিতে। দুপুরে আমাকে ফোন দিয়ে জানায়, এলাকার কিছু যুবক বাসায় ঝামেলা করতেছে। ফোন পাইয়া আমি বাড়িতে আসি। বাসায় আসার পর ওই ছেলেরা আমাকে ধইরা খানপুর জোড়া টাংকির মাঠে নিয়া যায়। তখন দেখি, আমার সম্বন্ধীরে (হানিফ) ভেতরে বসায়া রাখছে। ১০-১২ জন যুবক পোলাপান ছিল। তাদের মধ্যে পাশের বাড়ির অভি নামে স্থানীয় একজনরে চিনছি। সন্ধ্যায় হানিফ ভাইরে অটোতে তুইলা নিয়ে কোথায় যেন চলে যায়। অনেক পরে আমরা তারে হাসপাতালে পাই।’

হানিফ খানপুরে একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। তাঁর স্ত্রী তিন শিশুসন্তানকে নিয়ে কিছুদিন আগে গ্রামের বাড়িতে গেছেন বলে জানান নিহত ব্যক্তির স্বজনেরা।

নিহত ব্যক্তির বাবা আবুল কালাম বলেন, ‘আমার ছেলে অপরাধ করলে তারে শাস্তি দিব আইনে। কিন্তু তারে মাইরা ফেলল কোন যুক্তিতে! আমি এর বিচার চাই।’

এই ঘটনার বিস্তারিত জানতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে বলে জানান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাছির। তিনি বলেন, ‘ধর্ষণচেষ্টার কোনো অভিযোগ আগে আমাদের থানায় কেউ করেনি। পুলিশ মরদেহ হাসপাতালে পায়। ধর্ষণের আসলেই কোনো চেষ্টা হয়েছে কি না, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ বিষয়ে পুলিশ কাজ করছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত